নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ঘুড্ডির পাইলট; বিমানের না।।

তুমি আমি সে

বহুপথ হেঁটে আমি বড় ক্লান্ত; দোর খুলে নেমেছি সেই কবে তোমার দুয়ারে দাঁড়াব বলে.

তুমি আমি সে › বিস্তারিত পোস্টঃ

নয়নাভিরাম হ্রদ আর প্রকৃতির রূপসীকন্যা রাঙ্গামাটি ভ্রমন

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪

ঢাকা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে রাতের শ্যামলী পরিবহন বাসে রাঙ্গামাটির অভিমুখে যাত্রা করলাম। বাসের ভেতরে চলন্ত অবস্থায় জানালার পাশ দিয়ে শীতের ঠাণ্ডা বাতাস প্রবেশ করছে। ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি ৩৩৮ কি.মি. দূরে। মাঝে মধ্যে দুই চোখে ঘুম চলে আসে। বাসের হর্ন মনে হচ্ছিল ঘুমের বিপরীত ক্রিয়া। বাস কুমিল্লায় কিছুক্ষণ বিরতি দেয়ার পর আবার ছাড়ে রাঙ্গামাটির উদ্দেশে। চট্টগ্রামের পরে পাহাড়ের কাছে রাস্তার ডানে-বামে রাঙ্গামাটি জেলার প্রবেশমুখে গেট দেখতে পেলাম। গেট দেখে আরও আগ্রহ বাড়ল রাঙ্গামাটি উপভোগ করার। গেট থেকে শুরু হল আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি রাস্তা। রাতের আলোয় সারা পাহাড়ের অরণ্য আলোকিত হয়ে ওঠেছে। ইচ্ছে হল গাড়ি থেকে নেমে বন-পাহাড়কে মনভরে দেখার। রাতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সত্যিই অভাবনীয়। যেতে যেতে পাহাড়ের প্রকৃতির গর্ভে হ্রদের জল দেখে লোভ আর সামলাতে পারিনি। আমাদের বাস বনরূপা বাজারে গিয়ে থামল, তখন ভোর ৫ টা।

সকালে ঘুম থেকে উঠে বন্ধুদের সঙ্গে পর্যটন ও ঝুলন্ত সেতু’তে সিএনজি নিয়ে গেলাম। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ। এর আয়তন ৭২৫ বর্গ কি.মি.। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই এ বিদ্যুৎ উৎপন্ন কেন্দ্র হিসেবে এ হ্রদটি নির্মাণ করা হয়েছে। ঝুলন্ত সেতু বাস্তবে দেখা খুবই সুন্দর এবং ভাগ্যেরও ব্যাপার বটে। ঝুলন্ত সেতুর আশ পাশ অনেক সময় নিয়ে ঘোরাঘুরি করি। এরপর বিকাল বেলা সিএনজি নিয়ে চললাম চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি ও চাকমাদের জুম চাষ এলাকায়। রাস্তার চারপাশে হ্রদের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ও আদিবাসীদের জুম চাষের দৃশ্য উপভোগ করার মতো। এখন রাত। রাতে বন্ধুরা মিলে চাকমাদের বাজার ঘুরে বেড়াতে নামলাম।

পরের দিন সকাল। কাপ্তাই হ্রদ এবং কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে বেড়ানোর জন্য দেশীয় ইঞ্জিন চালিত বোট ভাড়া করেছি আগের দিন রাতেই। সকাল ৯ টায় জলপথে রওনা হলাম শুভলং জলপ্রপাতের উদ্দেশ্যে। পানি পথে শুভলং এর দুরত্ব ২৫ কিলোমিটার। স্বচ্ছ টলটলে পানির দৃশ্য আর রোদের আলোয় পানি ঝিকিমিকি করছে। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা মনোরম পানির মধ্য দিয়ে পৌঁছলাম শুভলং আর্মি ক্যাম্পে। সেখানে আছে প্রায় ৩৫০ ফুট উঁচু পাহাড়। পাহাড়ে আমি উঠতে ব্যর্থ হলেও মামুন ও জাহিদ সফল ভাবে উঠে পারে। এরপর চলে আসি শুভলং জলপ্রপাতের দিকে। শীতের শুষ্কতায় জলপ্রপাত শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে আছে। তবে শুভলং জলপ্রপাতের দৃশ্যগুলো মন ভুলানোর মতো। শুভলং জলপ্রপাত থেকে রওনা দিলাম টুকটুক ইকো ভিলেজ ও রাইংখ্যং পুকুরে।

দুপুরের খাবার সেরে নিলাম পেদা টিং টিং নামক রেস্টুরেন্ট থেকে। পেদা টিং টিং থেকে চাং পোং এর দিকে রওনা দিলাম। এখানে বিশাল উচু পাহাড়। পাহাড়ে চাকমাদের জুম ও আনারস চাষ হয় এবং একটি চাং পোং নামের রেস্টুরেন্ট আছে। এরপর কাপ্তাই হ্রদ’এর বিস্তৃত পানির দৃশ্য আর রোদের আলোয় পানি ঝিকিমিকি উপভোগ করতে করতে ফিরে এলাম রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারে। বিকাল বেলা ডিসি বাংলো উদ্যানে কিছুক্ষণ বসে হ্রদ ও পাহাড়ের দৃশ্য উপভোগ করি। দৃষ্টিনন্দন পাহাড় আর অরণ্য হ্রদের দৃশ্যগুলো দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ডিসি বাংলো উদ্যানের গেটে বাম পাশে একটি বিশাল আকৃতির চাপালিশ গাছ দেখে আশ্চর্য হলাম। এত বড় চাপালিশ গাছ কয়েকটি বন ঘুরেও চোখে পড়েনি। গাছের গায়ে বয়স ৩০০ বছর লেখা রয়েছে। সেখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে রিজার্ভ বাজার অভিমুখে শহীদ মিনারের পাশে দাঁড়িয়ে, পূর্ব দিকে তাকিয়ে হ্রদের জল আর বন পাহাড়ের নয়নাভিরাম প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য ও পাহাড়ের দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করল।

রাঙ্গামাটি শহর দেখতে খুবই সুন্দর। শহরের চারপাশে হ্রদের পানি আর পানি। তবে রাঙ্গামাটি শহরে কোন রিকশা নেই, আছে রিকশার বিকল্প সিএনজি। রাস্তার চারপাশে হ্রদের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ও আদিবাসীদের জুম চাষের দৃশ্য উপভোগ করার মতো। হ্রদের জল আর পাহাড় অরণ্যে অপার সৌন্দর্যের কোল ঘেঁষে রয়েছে প্রকৃতির রূপসী কন্যা রাঙ্গামটির রূপবৈচিত্র্য। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করে রাতের বাসে ফিরে এলাম ঢাকায়। যারা এ অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাখেলা দেখতে চান বা উপভোগ করতে চান বা স্মৃতির পাতায় এই অপরূপ দৃশ্য বাঁধিয়ে রাখতে চান তারা দেরি না করে ঘুরে আসুন রাঙ্গামাটি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪০

শায়মা বলেছেন: আমিও ঘুরে এলাম রাঙ্গামাটি কিছুদিন আগেই! :)

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
বাহ! ভ্রমন কাহিনী ভালই লাগছে। কাপ্তাই এলাকাটা আসলেই সুন্দর!

৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: লেখার সাথে ছবি যুক্ত করলে আরও ভাল হত

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৫০

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া রাঙ্গামাটিকে।। আমার দৌড় চট্টগ্রাম পর্যন্তই।।
কিছু ছবি যুক্ত হলে কিন্তু আমরা পাঠকরা উপকৃতই হতাম।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.