নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বার বার নিহত হব তোমার অবর্তমানে

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য

বিবাগী বাউল

ইদানিং জ্যোৎস্না দর্শনই হয়ে পড়ে আমার একান্ত জীবনদর্শন!!!

বিবাগী বাউল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতকে আর ভারতের আদালতকে অভিনন্দন লুটেরা বহুজাতিক কোম্পানি নোভারটিসকে কষে একটা চড় মারার জন্য!

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯

ভারতকে আর ভারতের আদালতকে অভিনন্দন লুটেরা বহুজাতিক কোম্পানি নোভারটিসকে কষে একটা চড় মারার জন্য! তো ঘটনাটা একটু খুলে বলি- ২০০৬ সাল থেকেই নোভারটিস ক্যানসার নিরাময়ে ব্যবহূত ‘গ্লিভেক’ নামের ওষুধটির উপর মেধা সত্ত্বের দাবি জানিয়ে আসছে এবং ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো ওই ওষুধটি নকল করে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ করে। কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নোভারটিস এর মেধাসত্ত্বের দাবিকে বেআইনি ঘোষণা করে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নোভারটিস যে ওষুধটির স্বত্ব দাবি করছে,সেটির মধ্যে ‘নতুনত্ব বা নব-আবিষ্কারের কোনো বিষয়’ নেই। তাই ভারতীয় আইনে নোভারটিস সেটির স্বত্ব পেতে পারে না।ভারতের আইন অনুযায়ী, প্রচলিত ওষুধের চেয়ে খুব বেশি উন্নত বা আলাদা নয় এমন কোনো নতুন ওষুধ স্বত্ব পেতে পারে না। ভারতের ওষুধ কোম্পানি সিপলা লিমিটেড ও ন্যাটকো ফার্মা লিমিটেড ‘গ্লিভেক’ ওষুধটি তৈরি করে নোভারটিসের চেয়ে প্রায় দশ গুণ কম দামে বিক্রি করে। নোভারটিস এর মতলব ছিল এই ওষুধের সত্ত্ব আদায় করে নিয়ে ভারতের কোম্পানিগুলার ওষুধ উৎপাদনের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভারতের বিশাল বাজারে নিজে চড়া দামে এই ওষুধ বিক্রি করে অবাধে মুনাফা লুটা। কিন্তু ভারতের আদালত এই মতলববাজি আইনের মারপ্যাঁচেই রুখে দিয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের দরিদ্র জনগণের কম দামে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কেনার অধিকার সুরক্ষিত হল সাথে সাথে তাদের ওষুধ শিল্পও বহুজাতিকের অবৈধ আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেল।

ন্যাটকো ফার্মার সচিব এম আদিনারান্ন নোভারটিস এর বিরুদ্ধে এই আইনি বিজয়কে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও সরকারের জন্য বড় জয় বলে অভিহিত করেন, তার সাথে আমরা সহমত পোষণ করে বলতে চাই এই বিজয় শুধু ভারতের নয়, এই বিজয় আমাদেরও, এই বিজয় পেটেন্ট আগ্রাসনের শিকার আফ্রিকা ও এশিয়ার প্রতিটি দরিদ্র দেশসমূহের কেননা এর মধ্য দিয়ে আইনি লড়াইয়ে বহুজাতিক জায়ান্টের পরাজয় আমাদের সাহস জোগাবে, আমাদের পথ দেখাবে মেধাসত্ত্ব আইনের অন্তরালে অবাধ মুনাফা অর্জনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য!





রায়ের পর নোভারটিস এর বিবৃতিতে দেখে আরও মজা পেলাম , “ভারতীয় আইনে ‘সম্পত্তির মেধাস্বত্ব অধিকার খুব কম রক্ষিত হয়েছে’। এখন ভারতের আইনকে দুষে লাভ নাই, আমাদের সুস্পষ্ট কথা হচ্ছে একটা প্রচলিত ওষুধের মৌলিক কোন পরিবর্তন না করে (no drastic modification)সামান্য পরিবর্তন করেই তা পেটেন্ট করে নিয়ে বছরের পর বছর সত্ত্ব দাবি করে একচেটিয়া ব্যবসা করে কোটি কোটি ডলার মুনাফা কামানোর ধান্দাবাজি আইন বাদ দেন, আপনাদের এইসব অন্যায় সাম্রাজ্যবাদী আইন বাতিল করে লাইনে আসেন, প্রতিরোধ শুরু হয়ে গেছে, ভারত দেখিয়ে দিয়েছে আপনাদের এইসব ভণ্ড আইন যতই WTO থেকে পাস করিয়ে নেন না কেন তা মানতে আমরা চাই না! পশ্চিমাদের বিদ্যমান পেটেন্ট আইনটি উন্নত দেশগুলোর মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেই কাজ করবে, যাতে দরিদ্র দেশগুলোর কাছ থেকে অবাধে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা লুণ্ঠনের আইনি বৈধতা পাওয়া যায়। মেধাসত্ত্বের অধিকার আইনকে ব্যবসায়িকভাবে অবাধ মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার বানানোর যে পরিকল্পনা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা ঘোষণায় নেয়া হয়েছে তা একটা বড় সড় ধাক্কা খেল ভারতের আইনের কাছে।



বাংলাদেশকেও এখন ভারতের আদালতের মত উপর্যুক্ত আইন তৈরি করে জীবন রক্ষাকারী অনেক ওষুধের উপর বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির অবৈধ মেধাসত্ত্ব দাবিকে প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিতে হবে কেননা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী ২০১৬ সাল থেকে ওষুধ শিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেধাসত্ত্ব অধিকার আইন কার্যকর করতে হবে বাংলাদেশ সহ অনুন্নত দেশগুলোকে, এর আগ পর্যন্ত উন্নত দেশগুলা আমাদের দয়া(?) করে ছাড় দিয়ে যাচ্ছেন এল ডি সি হওয়ার কারনে। মেধাসত্ত্ব আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো অনেক ওষুধ তৈরি করতে পারবে না। আমাদের কয়েকগুণ বেশি দামে বিদেশি কোম্পানির পেটেন্ট করা ওষুধ খেতে হবে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে রপ্তানি সম্ভাবনা হারাবে। দরিদ্ররা ওষুধ কিনতে গিয়ে হিমশিম খাবে। আমাদের জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।



ভারতের মত বাংলাদেশ কি পারবে বহুজাতিকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে দরিদ্র জনগণের কম দামে ওষুধ পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধান করতে আর দেশীয় ওষুধ শিল্প রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ? বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী লুটেরা বহুজাতিক কোম্পানির সেবাদাসত্ত করলেও এদেশের ফার্মাসিস্ট, চিকিৎসক সহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের জনগণকে সাথে নিয়ে সরকারকে বাধ্য করতে হবে সাহসী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য!! http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-04-01/news/341412

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

আহলান বলেছেন: ভারত পারে, কারণ তারণ দেশ প্রেম , দেশাত্ববোধ চরম। আর আমাদের দেশাত্ববোধ বলতে কিছু আছে বলে মনে হয় না ... সুতরাং ..... ওদের মন্ত্রীরা চড়ে ওদের দেশের এম্বাসেডর গাড়িতে, আর আমাদের দেশের ইউপি চেয়াম্যানেই চড়ে জাপানি পাজেরো গাড়িতে ..... জনগনের পয়সা কোন দিক দিয়ে আসে আর যায় ...কোন হিসাব নাই ...

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০১

বিবাগী বাউল বলেছেন: বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী লুটেরা বহুজাতিক কোম্পানির সেবাদাসত্ত করলেও এদেশের ফার্মাসিস্ট, চিকিৎসক সহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের জনগণকে সাথে নিয়ে সরকারকে বাধ্য করতে হবে সাহসী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য!!

আমরা জানি আমাদের মন্ত্রীরা/ সরকারী কর্মকর্তারা যেন বহুজাতিক কোম্পানির কমিশনের লোভে কিংবা চাপে পড়ে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি না দেয় তার জন্য গনপ্রতিরোধ দরকার!

কিন্তু এসব ইস্যুতে কেউ এগিয়ে আসতে চায় না!

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮

ঘুির্নঝড় বলেছেন: কমিশন খাবো না তা কিভাবে হবে

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৭

বিবাগী বাউল বলেছেন: কমিশন খেয়েই তো সব জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করে, সংসদে আলোচনা ও করে না, সবাই লুকাইয়া চুক্তি করে বিদেশি দের লগে,

২০১৬ এর পর আমাদের পাবলিক ওষুধ কিনতে হবে বেশি দামে (কয়কগুন বৃদ্ধি পাবে) সরকার এখন নাকি আবেদন করছে পেটেন্ট আইন এর ছাড় ২০৩০ পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য, কিন্তু কতটুকু সফল হবে কে জানে, আবার আজ শুনলাম টিকফা চুক্তি সাক্ষরের ব্যাপারে অনেকদূর আগাইছে সরকার, এই চুক্তি সাক্ষর হলে বাংলাদেশ সাথে সাথে প্যাটেন্ট আইন মানতে হবে, সরকারের মার্কিন দালালি আর দাসত্ত এত বেশি এদের দিয়ে আশা নাই, ভারত কিন্তু ঠিকই বহুজাতিক কম্পানির বিরুদ্ধে লড়ে জয়ী হয়ে আসে, আর আমরা .।.।.।.।.।

৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৪

হাসান নাঈম বলেছেন: মেধাস্বত্বের নামে মুনাফাখোরী বন্ধ হোক। বিজ্ঞানের সকল আবিষ্কার মানব কল্যানে উম্মুক্ত করে দেয়া হোক।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩

বিবাগী বাউল বলেছেন: হাসান নাঈম ভাই, সহমত!!

প্যাটেন্ট আইনের নামে অবাধ লুণ্ঠন মানা যায় না,। এতে আগামীতে শুধু জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার কারনেই আফ্রিকা আর এশিয়ার দরিদ্র দেশ এর হাজার হাজার লোক মারা যাবে, আবার লক্ষ লক্ষ লোকের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার ভূলুণ্ঠিত হবে,

এই কালো আইন বাতিল করার জন্য দেশে দেশে বিশ্বায়ন বিরোধী সংগঠন সহ অনেক সামাজিক সংগঠন আন্দোলন চালালেও বাংলাদেশে এরকম কোন জোরালো মুভমেন্ট গড়ে উঠে নাই! আমাদের উচিত মেধাস্বত্ব আইনের আড়ালে লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.