নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইদানিং জ্যোৎস্না দর্শনই হয়ে পড়ে আমার একান্ত জীবনদর্শন!!!
রানা প্লাজায় ঠিক কতজন শ্রমিককে হত্যা করা হল তার পরিসংখ্যান এখন এই রাষ্ট্রের জন্য একটা বড় দায় হয়ে গেছে, তাই লাশের রাজনীতিও এই অভাগা দেশকে দেখতে হচ্ছে! প্রথম দিনই কোন কোন পত্রিকায় বলা হয়েছে রানা প্লাজায় কর্মরত ছিলেন ৮ হাজারের মত শ্রমিক, এরপর ২ দিন পর বলা হল ৬ হাজার, এরপর এখন বলা হচ্ছে ৪ হাজার, এভাবে ক্রমাগত কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা জ্যামিতিকভাবে কমিয়ে উপস্থাপনের মতলব বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা না, নিখোঁজ শ্রমিকের সংখ্যা মানে লাশের সংখ্যাও গুম করে দেয়ার একটা প্রবণতা প্রথম থেকেই ছিল! বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের ভাষ্যমতে ৩য় তলায় শ্রমিকের সংখ্যা ছিলো প্রায় ৯০০ আর ৪-৮ তলায় প্রতি ফ্লোরে প্রায় ১০০০ জন। এই হিসাবে মোট শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৬ হাজার! আর গতকাল আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানায়, এ পর্যন্ত দুই হাজার ৪৩৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, মৃত ৩৮৭ (প্রথম আলো), আর বাকি ১৩০০ (ইত্তেফাক) এর মত নিখোঁজ! ৮ হাজার না আমরা যদি কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ৬ হাজারও ধরে নেই তাহলে উপস্থাপিত নিখোঁজ লোকের সংখ্যা প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে ২ হাজারেরও কম !
"রোববার আমরা ভেতরে ঢুকে অনেক লাশ দেখে এসেছি। কিন্তু আজ মাত্র একটা লাশ বের করা হয়েছে। লাশ নিশ্চিহ্ন করার জন্যই ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।” - স্বজনের লাশ না পেয়ে বিক্ষুব্ধ অনেকের প্রতিক্রিয়া ছিল এমনই!
এখন এই লাশের গণগুমের মাজেজা কি? এই রাষ্ট্র কি এই শ্রমিক গণহত্যার পরিসংখ্যানকে ভয় পায়?
এই লাশ এই খুনি রাষ্ট্রকে এখন তাড়া করে ফিরছে, এই হাজার হাজার শ্রমিককে খুন করে এই রাষ্ট্র টিকে থাকবে কিভাবে? তাই লাশকে তো ভয় পাবেই, এই লাশ এখন এই রাষ্ট্রের সমস্ত কাঠামোকেই নাড়িয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রশাসন যন্ত্রে যে মারাত্মক অব্যবস্থাপনা, নিয়মহীনতা, দুর্নীতি, লুণ্ঠন বাসা বেঁধেছে তাই এই গণ লাশ তাকে পুরোপুরি উদোম করে দিয়েছে নিমিষেই, এই রাষ্ট্র তাই তার এই অসভ্য বর্বর হিংস্র পাশবিক রূপকে ডেকে রাখতে চাচ্ছে "লাশের গণগুমের" অপরাজনীতির মাধ্যমেই ! লাশের সংখ্যা যত কম দেখান যাবে ততই এই নিপীড়ক খুনি রাষ্ট্রের শ্রমিক নিপীড়নের দগদগে ক্ষত লুকিয়ে রাখা যাবে বলে এই রাষ্ট্রের হর্তাকর্তারা মনে করেন!
লাশের রাজনীতি এতটাই নির্লজ্জভাবে চলছে যে স্বজন হারানো মানুষের প্রিয়জনের লাশ পাবার অধিকারও এই রাষ্ট্র আর স্বীকার করতে রাজী না, শ্রমিককে হত্যা করে তার লাশ মিসিং করে দিয়ে এই রাষ্ট্রযন্ত্র এখন এসব শ্রমিকের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করছে, এই লাশের রাজনীতির সবচেয়ে বাজে দিক হচ্ছে হত্যাযজ্ঞের স্বীকার শ্রমিকদের শুধু সংখ্যার মাঝে ইতিহাসে বেঁচে থাকার অধিকারও এরা দিতে চায় না!
ধিক এই হৃদয়হীন সমাজ আর রাষ্ট্র কাঠামোকে!!
০৩ রা মে, ২০১৩ রাত ১:০৭
বিবাগী বাউল বলেছেন: কষ্ট নিয়েই আমাদের এই বেঁচে থাকা
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা মে, ২০১৩ রাত ২:৫৮
মতিউর রহমান মিঠু বলেছেন: কিছু বলার ভাষা নেই। এই অভাগা দেশের জন্য বড্ড কষ্ট হয়...........