নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বার বার নিহত হব তোমার অবর্তমানে

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য

বিবাগী বাউল

ইদানিং জ্যোৎস্না দর্শনই হয়ে পড়ে আমার একান্ত জীবনদর্শন!!!

বিবাগী বাউল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় স্বার্থ বিরোধী টিকফা চুক্তির পক্ষে ডেইলি স্টারের বিজ্ঞাপনী প্রতিবেদনের জবাবেঃ

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২১

জাতীয় দৈনিক ডেইলি স্টারের প্রথম পাতায় আজ টিকফা চুক্তির পক্ষে সাফাই গেয়ে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে যার শিরোনাম ছিল, Ticfa with US signed at last Click This Link

এই প্রতিবেদনে এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের কি কি লাভ হবে তার একটা ফিরিস্তি দেয়া হয়েছে, অত্যন্ত চিত্তাকর্ষকভাবে বিজ্ঞাপনী ঢং এ ছক এঁকে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের লাভসমূহ। তো এসব স্টারীয় সুগার কোটেড বিজ্ঞাপনী শ্লোগানের জবাবেই এই লেখা .........



স্টারীয় বয়ানঃ স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা দূর করবে [Eliminate trade barrier to us market] এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের অধিক বাণিজ্য রপ্তানি আয়ের পরিমাণ বাড়াবে [Greater trade will lead to higher export earnings] “





জবাবঃ এই চুক্তির প্রস্তাবে বলা হয়েছে “উভয় পক্ষের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর করা হবে”

টিকফা চুক্তির পক্ষে এদের যুক্তি হচ্ছে শুল্কমুক্ত প্রবেশধিকার (?) পেলে এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বাড়বে। এশিয়ার দুটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি গণচীন এবং ভারত তার রপ্তানির যথাক্রমে ২১ এবং ১৯% পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলেও তারা এ চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। অর্থাৎ টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির সম্পর্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে প্রধান বাধা হচ্ছে শুল্ক বাধা। বর্তমানে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারকদের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৫.৩% শুল্ক দিতে হয় অন্যদিকে চীনকে পরিশোধ করতে হয় মাত্র ৩%। তাহলে দেখা যাচ্ছে চীন টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর না করেও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম শুল্কে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে। তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের লোভ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য এদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে কিন্তু টিকফা অ্যাগ্রিমেন্টে তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের কোন নিশ্চয়তা রাখা হয়নি কারণ চুক্তির ৭ নম্বর প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে উভয় দেশ নিজ নিজ বাজারে পণ্য প্রবেশে নন ট্যারিফ বা অশুল্ক বাধা দূর করবে। কিন্তু বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের অশুল্ক বাধা খুব সামান্যই। ট্যারিফ বা শুল্ক মুক্ত বাজার সুবিধার কিছুই নেই যখন টিকফা চুক্তিতে তখন এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সুবিধা বাড়বে বলে প্রচার প্রোপাগান্ডা চালিয়ে এই চুক্তি সই করার জন্য জনমতকে ধোঁকা দেয়ার হেতু কি?

বাংলাদেশ নন ট্যারিফ বা অশুল্ক বাধা দূর করলে তা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অশুল্ক বাধা হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশের শিল্প, কৃষি সহ সামগ্রিক অর্থনীতিকে বহুজাতিক কোম্পানিসহ উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক আগ্রাসন থেকে রক্ষার সর্বশেষ রক্ষাকবচ। বিদেশি কোম্পানির পণ্য আমদানিতে নানান অশুল্ক বাধা আরোপ করে বাংলাদেশ তার নিজের বাজার ও শিল্পের বিকাশ করতে পারে। কিন্তু এই নন ট্যারিফ বাধা অপসারণ করলে এদেশ হাইতির মত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের একচেটিয়া বাজারে পরিণত হওয়ার আশংকা আছে! মার্কিন বহুজাতিক এগ্রো-কেমিক্যাল করপোরেশন মনসেন্টো, ইউনিলিভার, ডুপন্ট এর জিএম হাইব্রিড শস্য বীজের আগ্রাসন বাংলাদেশের কৃষিতেও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে এবং এসব কোম্পানির জিএম ফুডে সয়লাব হয়ে যাবে এদেশের বাজার!



“উভয় পক্ষের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর করা হবে” প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের লাভ ১৬ আনা কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষতি মারাত্মক!



স্টারীয় বয়ানঃ স্টারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চুক্তির ফলে উভয় দেশের প্রাইভেট খাতে পারস্পরিক বাণিজ্যিক বন্ধন বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করবে [Encourage private sector contracts between two countries] এবং বিদেশি (মার্কিন) বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে [Foreign direct investment will increase]। ফলে বাংলাদেশে নতুন নতুন চাকরির ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে [ Generate employment]





জবাবঃ এই চুক্তির শর্তে বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরে বিশেষ করে সেবা খাতে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়লে পরিণতি হবে নিম্নরূপ ঃ



ক। সেবা খাত চলে যাবে মার্কিন কোম্পানির দখলে :

এ চুক্তির বিভিন্ন প্রস্তাবনায় (২, ৩, ৫, ৬,৭) এবং অনুচ্ছেদে (১, ৩) বাজার উন্মুক্তকরণ এবং সেবাখাতের ঢালাও বেসরকারিকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতগুলো বিশেষ করে সেবা খাতগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। এ চুক্তির চুক্তির ২, ৩, ৫, ৭ এবং ১৫ নম্বর প্রস্তাবনায় মাধ্যমে বিনিয়োগের বিশেষ সুরক্ষাসহ মার্কিন কোম্পানিগুলোকে সেবাখাতে বাণিজ্যের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ( বেসরকারিকরণ, সংরক্ষণবাদী বাণিজ্য নীতি বাদ দিয়ে ওপেন মার্কেট পলিসি নিরঙ্কুশভাবে গ্রহণ, নন ট্যারিফ বাধা দূরীভূতকরণ ইত্যাদি) দেশের জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর, টেলিযোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ইত্যাদি সেক্টরকে মার্কিন পুঁজিপতিদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ফলে চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে দেশের সেবাখাতগুলো রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির দখলে চলে যাবে। টিকফা চুক্তিতে বলাই আছে, বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালে স্বাক্ষরিত 'দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি' অনুযায়ী মার্কিন বিনিয়োগকারীদের অর্জিত মুনাফা বা পুঁজির ওপর কোন কর আরোপ করতে পারবে না এবং বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়া হলে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। [ “বিনিয়োগ বিষয়ে পারস্পরিক অনুপ্রেরণা এবং সংরক্ষণের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাঝে মার্চ ১২, ১৯৮৬ সালে স্বাক্ষরকৃত চুক্তিটিকে (Bilateral Investment Treaty)বিবেচনা করে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় উভয় দেশের নিজ নিজ অধিকার ও বাধ্যবাধ্কতাগুলোকে ক্ষুন্ন না করার বিষয়ে জোর দেয়” – প্রস্তাবনা ১৫]



খ। পরিণামে ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে সেবা ও পণ্যের দামঃ অবাধ মুনাফা অর্জনের জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলো সেবা ও পণ্যের দাম অত্যধিক বৃদ্ধি করবে। টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বন্দর প্রভৃতির ব্যবহার মূল্য বহুগুণ বেড়ে যাবে। সেবা খাতের বেসরকারিকরণ আর বাণিজ্যিকীকরণের ফলে আরো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ইত্যাদি সেবার দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে।



গ। দেশীয় কোম্পানির স্বার্থ বিপন্ন হবেঃ এই চুক্তির ভিত্তিতে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিকে উপরে বর্ণিত বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেয়া হলে এবং দেশীয় শিল্পের/কোম্পানির প্রতি সুবিধা প্রদানকারী বাণিজ্য সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ নীতি প্রত্যাহার করা হলে জায়ান্ট মার্কিন কোম্পানির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশীয় কোম্পানিগুলোর স্বার্থ বিঘ্নিত হবে। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের নিজস্ব কোম্পানির বিকাশে সরকার সংরক্ষণ সুবিধা প্রদান করতে পারবে না বলে দেশীয় শিল্পের বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির জন্য এই টিকফা চুক্তি তাই একটা বড় প্রতিবন্ধক আকারে কাজ করবে!



ঘ। সেবাখাতে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রনীতির ধারণা বাদ দিতে হবে বাংলাদেশকে, বিপাকে পড়বেন গরিব জনগোষ্ঠী ঃ সেবাখাতে বিদেশি প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর অবাধ ও বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করলে বাংলাদেশ তার কল্যাণমূলক রাষ্ট্রনীতির আওতায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সাধারণ মানুষকে কম মূল্যে সেবাদানের যেসব কর্মসূচি নিয়ে থাকে তা সংকুচিত হবে অথবা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে গরিব এবং সাধারণ মানুষের জীবনধারণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।



ঙ। উৎপাদনশীল অর্থনীতিতে আগ্রহ নেই মার্কিনীদেরঃ অনুচ্ছেদ ১-এ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু সার্ভিস সেক্টরের কথা উল্লেখ রয়েছে, 'পণ্য' উৎপাদনের বিষয়টি সংযুক্ত রাখা হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যে বিনিয়োগ করবে, তা শুধু সেবা খাতেই। তারা কোন পণ্য এ দেশে উৎপাদন করবে না। ফলে উৎপাদনশীল অর্থনীতিতে বাংলাদেশের কোন লাভ নেই। সেবা খাতে বাণিজ্যের নামে মুনাফা লুণ্ঠনেই ব্যস্ত থাকবে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি!



ডেইলি স্টারের কথা মত ধরে নিলাম এই চুক্তির ফলে মার্কিন কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়বে কিন্তু তাতে বাংলাদেশের লাভ নাই, কেননা যেসব শর্তে এই বিনিয়োগ করা হবে তাতে বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠনই বাড়বে। একটা উদাহরণ দেই- বাংলাদেশের পিএসসি ২০১২ (সংশোধিত) অনুযায়ী যদি দেশের জ্বালানী খাতে মার্কিন তেল কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়ে তাহলে কনকোফিলিপস , শেভ্রন এসব কোম্পানি আরও বেশি বাংলাদেশি তেল গ্যাস লুণ্ঠন করবে , কিভাবে এই লুণ্ঠন তরান্বিত হবে তা জানতে দেখতে পারেন [https://www.facebook.com/notes/zobaer-al-mahmud/বাংলাদেশের-তেল-গ্যাস-লুন্ঠনের-দলিল-পিএসসি-২০১২-সংশোধিত-বাতিল-করতে-হবে/10201139555073748]



স্টারীয় বয়ানঃ Technological know-how will rise in Bangladesh



জবাবঃ ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে যে বলা হয়েছে “ বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যাবহারের নিয়ম কানুন জানার পরিধি বাড়বে” তার ভিত্তি হচ্ছে চুক্তির ৮ নম্বর প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে বাণিজ্য সম্পর্কিত মেধাসত্ত্ব অধিকার (TRIPS) এবং অন্যান্য প্রচলিত মেধাসত্ত্ব আইনের যথাযথ এবং কার্যকরী রক্ষণাবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিবেদকরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় মেধাস্বত্ব আইনের বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের কোথায় কি কি ক্ষতি হবে তা তুলে ধরতে বেমালুম ভুলে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে পেটেন্ট আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের অনুপস্থিতির কারণে বহুজাতিক মার্কিন কোম্পানির অবাধ বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। টিকফা চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই মেধাসত্ত্ব আইন মানতে বাধ্য করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের আগেই মেধাস্বত্ব আইন মেনে চলতে হবে, যার ফলে বাংলাদেশের কৃষি, ওষুধশিল্প, কম্পিউটার সফটওয়্যারসহ গোটা তথ্যপ্রযুক্তি খাত হুমকির মুখে পড়বে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার আওতায় বাণিজ্য বিষয়ক মেধাসম্পদ স্বত্ব চুক্তি অনুসারে স্বল্পোন্নত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় এবং ২০১৬ পর্যন্ত ওষুধের ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব বিষয়ক বিধিনিষেধ থেকে ছাড় পেয়েছে। এমনকি প্রয়োজন হলে এ সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। কিন্তু টিকফায় সে ধরনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। এর ফলে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প, কম্পিউটার সফটওয়্যারসহ গোটা তথ্যপ্রযুক্তি খাত আমেরিকার কোম্পানিগুলোর পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক ইত্যাদির লাইসেন্স খরচ বহন করতে গিয়ে অভূতপূর্ব লোকসানের কবলে পড়বে। ফলে বিভিন্ন পণ্য এবং প্রযুক্তির দাম অভাবনীয়ভাবে বেড়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেই দেশকে সফটওয়্যার লাইসেন্স ফি বাবদ ৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। মেধাস্বত্ব আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো অনেক ওষুধ তৈরি করতে পারবে না। আমাদের কয়েকগুণ বেশি দামে বিদেশি কোম্পানির পেটেন্ট করা ওষুধ খেতে হবে। বাংলাদেশ ওষুধশিল্পে রফতানি সম্ভাবনা হারাবে। বাংলাদেশের ওষুধশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কেননা দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজ দেশেই তাদের ওষুধ বিক্রি করতে গিয়ে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে। ফলে অনেক মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। পেটেন্ট আইন বাস্তবায়ন আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য এবং কৃষিতেও বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের নিজস্ব জীববৈচিত্র্যের অনেক জীব-অণুজীব এবং উদ্ভিদ প্রজাতি এখন বহুজাতিক কোম্পানির পেটেন্টের দখলে। কৃষিতে পেটেন্ট বাস্তবায়ন হলে কৃষকদের শস্যবীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ, পুনরুৎপাদন এবং রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। মেধাস্বত্ব আইন অনুযায়ী রয়্যালিটি পাবে আমেরিকার বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আর ধ্বংস হবে দেশি প্রজাতি, পরিবেশ এবং কৃষি উৎপাদন কাঠামো। বীজ এবং কৃষিপণ্যের দাম অনেকগুণ বেড়ে যাবে বলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।



জাতীয় স্বার্থ বিরোধী টিকফা চুক্তির পক্ষে ডেইলি স্টারের বিজ্ঞাপনী প্রতিবেদন আমাদের অবাক করে, আমার তো মনে হয় মার্কিন পত্রিকাও এইভাবে এই চুক্তির পক্ষে এভাবে সাফাই গাইবে না, ডেইলি স্টার যেভাবে টিকফা চুক্তির পক্ষে বিজ্ঞাপন দিল তাতে মজিনাও লজ্জা পাবেন বলেই মনে হয়।



স্টার কার স্বার্থ দেখভালের দায়িত্ব নিচ্ছে? মার্কিন স্বার্থ রক্ষা দায়িত্ব পালন করে এই স্টার কিভাবে আবার নিজেদের বাংলাদেশের বিবেক বলে নিজেদের জাহির করে। স্টার এর মার্কিন দালালির জন্য তাকে নিন্দা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৮

নিকষ বলেছেন: এই চুক্তির একটা অনলাইন কপি পাওয়া যায়? সাংবাদিকদের নাকি সংবাদ সম্মেলনে দেয়া হইসে চুক্তির কপি।

টারমিনেশন ক্লজটা জানার ব্যাপারে আগ্রহী।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৩

বিবাগী বাউল বলেছেন: Click This Link TICFA November 25 2013 English.pdf

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩

রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: ব্লগার নিকষ-এর সাথে গলা মিলিয়ে একই প্রশ্ন করছি।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৩

বিবাগী বাউল বলেছেন: Click This Link TICFA November 25 2013 English.pdf

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.