নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ পথচারী

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ

তারপরও মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে ঘুরে দাড়াব.....।

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কেন দেশে থাকবো?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:১৮

ধরে নেই,

১.
দুটি শিশু ভালো আঁকতে পারে, তারা জানে তারা কী চায়। তারা পাগলের মতো আঁকতে চায়। কিন্তু চ্যালেঞ্জ তো এক জায়গায়।

ঐ শিশু দুটির, এক শিশুর জন্ম বস্তিতে আর আরেক শিশুর জন্ম, সচ্ছল একটি পরিবারে। দুই শিশু যে পরিবেশ আর পারিপার্শ্বিকতার মাঝে বেড়ে উঠছে, সেই দুই পরিবেশ পারিপার্শ্বিকতার পার্থক্য, আকাশ পাতাল সম। এক শিশুর পরিবার, চাহিদামাফিক আঁকার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই কেনে, এমন কি গৃহশিক্ষকও রাখে। অন্যদিকে বস্তিতে, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতায় বড় হতে থাকা শিশু ভয়ে হয়তো একটা 2B পেন্সিলও, তার মা বাবার কাছে চাইবে না। কোন ইতিবাচক ও কার্যকরী সাপোর্ট ছাড়া, বস্তির ঐ শিশু কতদূর যেতে পারবে?

এরপরও হয়তো, ঐ রকম অবস্থা থেকে উঠে এসে মূলধারায় জায়গা করে নেবে অনেকে। কিন্তু আমরা আম জনতা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর fractional একটা শতাংশের সাফল্যের কাহিনীই শুনি। ঝরে পড়া সংখ্যাগরিষ্ঠের কাহিনী, অবধারিতভাবেই আমাদের অন্ধ চোখে (শুধুমাত্র সাফল্যের কাহিনী ছাড়া) ধরা পড়ে না।

২.
চাকরীর বাজারে যে শিক্ষার্থী মাত্র ঢুকবে, তার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ, তার সার্টিফিকেটের মূল্য কত? চাকরি না পাওয়া বেকার যুবক যুবতী দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় যে, ২০-২৫ বছর ধরে এদেশে পড়াশোনার পিছনে ব্যয় করা সময়, শ্রম ও অর্থ একশতভাগ অর্থহীন হয়ে গেল কিনা। এখন হতে পারে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির কারণে সে চাকরি পাচ্ছে না আবার এরকমটা হওয়াও খুব অস্বাভাবিক না যে, যে বিদ্যা শিক্ষা সে অর্জন করেছে, তার চাহিদা চাকরি বাজারে নেই। উন্নত বিশ্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর সরকার যেভাবে যুথবদ্ধ ভাবে কাজ করে এবং প্রয়োজন মাফিক শিক্ষানীতি সময় সময় যুগোপযোগী করে, তা কি আমাদের দেশে আদৌ সম্ভব?

তাই বিদ্যমান বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে, সিলেটের এক তরুণের পরামর্শ হলো, এদেশের মানুষের ১৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যেই বিদেশে পাড়ি জমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। নইলে, এদেশের ভেঙে পড়া সিস্টেমের সাথে আপোষ করে নিজেকেই সিস্টেম হয়ে যেতে হবে।

৩.
২% ধনীর মধ্যে কত শতাংশ ট্যাক্স ফাঁকি না দেয়া জেনুইন ব্যবসায়ী আর কত শতাংশ oligarch, যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেয়, ঋণ খেলাপি এবং তাদের ব্যবসায়ীক স্বার্থে যাবতীয় সব অনিয়ম তারা করে, এমনকি, প্রয়োজনে জন প্রতিনিধিকে কাজে লাগিয়ে আইনও পরিবর্তন করে ফেলে। ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া ব্যবসায়ীরা কি কি নাগরিক সুবিধা পায় আর যথাযথ ভাবে ট্যাক্স দেওয়ার পরেও মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবীরা কি কি নাগরিক সুবিধা পায়? এ তো কারো অজানা নয়, যে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া ধনী শ্রেণীর চাইতে ট্যাক্স দেয়া মানুষজন, রাজস্ব বিভাগের ভোগান্তিতে পড়েন বেশি।

৪.
ব্যক্তিগত পর্যায়ে থেকে, বিবেকের দায়বদ্ধতা আমলে এনে, অতি প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা দূর্নীতি বান্ধব, অনিয়ম বান্ধব, জবাবদিহিতাহীনতার সংস্কৃতি লালনকারী একটি সিস্টেমের বিপরীতে যুদ্ধ করা যায়, কিন্তু তাতে কি সেই গণ বিরোধী সিস্টেমের পরিবর্তন সম্ভব, নূন্যতম হলেও? সুতরাং আগাছা পরগাছার দৌড়াত্মে , নিজেকে বট গাছের বনসাইয়ে রূপান্তরিত না করে যারা নিজ জীবনে ইতিবাচক একটা পরিবর্তন চায়, যারা নিজের ও তার পরিবারের ভালো একটা ভবিষ্যৎ মনে প্রাণে কামনা করে, তারা নিশ্চিতভাবেই সপরিবারে অন্য দেশে হিজরত করে, দেশান্তরী হয়। তার জীবনের মানচিত্র সে নিজেই এঁকে নেয়।

আগে শুধু শিক্ষার্থীরাই বিদেশ পাড়ি জমাতো। আর এখন ৩৫-৪৫ বছর বয়সের এই সীমায় থাকা দক্ষ কর্মী বাহিনীর অনেকেই, সমানে দেশ ছাড়ছে। দেশে আরো ২০-২৫ বছর চাকরী করার সম্ভাবনা থাকার পরও তারা জেনে বুঝে এবং সচেতন ভাবেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।

ওদিকে বৈধ অবৈধভাবে এদেশে কাজ করা বিদেশীদের (বিশেষতঃ ভারতীয়দের) সংখ্যা নাকি এখন সাকুল্যে ২৬ লাখ। এরকম চলতে থাকলে, এদেশের প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মী ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫০

নাহল তরকারি বলেছেন: আমি বিদেশে পলাইয়া যেতে ইচ্ছুক। কারনটা ব্যাক্তিগত। বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষের দ্ধারা অপমানিত হয়েছি। প্রতিনিয়ত মানুষের কাছ থেকে খোটা শুনতে হয়। বিদেশের মানুষ কত ভালো!! তারা একে অপরকে সাহায্য করে। কেউ কাউকে অপমান করে না। বিদেশী মানুষই হচ্ছে আসল মানুষ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ বলেছেন: আমিও ধান্দায় আছি। কারনটা মূলতঃ পারিবারিক।

আমি চাইনা আমার পরবর্তী প্রজন্ম ভন্ডামীতে পূর্ন একটা সমাজে আমৃত্যু স্ট্রাগল করুক।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০

বাউন্ডেলে বলেছেন: আমি যাদের সাথে বেড়ে উঠেছি,পাড়া-পড়শী, শহরবাসী,গ্রামবাসী, গরীব-ধনী আত্মিয়-স্বজন তাদের ছেড়ে কখনো অন্য দেশে যাবো না। এটা এক ধরনের সুবিধাবাদী মানসিকতা। সুখে-দুখে, সঠিক-বেঠিকে সব সময় সবাইকে নিয়ে চলতে চাই।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২৬

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ বলেছেন: এদেশেই যখন থাকবেন, তখন আশা করি সিস্টেম (যে সিস্টেমের হাত থেকে বাচতে মানুষ দেশান্তরী হয়) পরিবর্তন করে ফেলবেন আরব বসন্তের মত। কে চায় তার সন্তানেররাও তাদের পূর্বপুরূষদের মতো ভুক্তভোগী হবে? সন্তানের জন্য না হয় সুবিধাবাদী হলামই।

৪৫ বছর পার করেছি এদেশে, বেকার জীবন কাটাইনি। ঢেড় হয়েছে। এখন এটাই উপলব্ধি যে সিস্টেম আগাছা পরগাছা চায়। তো সেই মানদন্ডে আমি একেবারেই অচল মুদ্রা।

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪

কামাল১৮ বলেছেন: ১,শ্রেনী বৈষম্যের কাহিনী অনেক শুনেছি।এর জন্য যেটা প্রয়োজন সেই কথাটা কেউ বলে না।শ্রেনী বিভক্ত সমাজে প্রতিটা শ্রেনী তার নিজ নিজ শ্রেনীর সার্থে কাজ করে।এই শ্রেনীর সার্থে কাজ করার জন্য তাদের নিজস্ব সংগঠন লাগবে,সেটা নাই।

বাকি সব পলায়নবাদী মনোভাবের কথা।তাতে করে সমস্যার সমাধান হবে না।সংগ্রাম করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২৭

ডার্ক ম্যান বলেছেন: পুরুষের কথা বাদ দেন। নারীরাও এখন দেশের বাইরে পাড়ি জমাতে আগ্রহী।
আমার পরিচিত কয়েকজন নারী আছেন, যারা ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। আমাকেও উৎসাহ দিচ্ছেন।
যারা বাইরে যেতে চান তাদের কোনো দোষ দেখি না। সবাই ভালো থাকতে চায়

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:০০

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ বলেছেন: ধর্মীয় অনুভূতি আর চেতনার রাজ৭নীতির সৃষ্ঠ দৃষ্টি-বিভ্রম বা ইল্যুশনের মধ্যে আর কতকাল বাস করব? গত ৫২ বছরের অধিক সময় দেশ শাসনের পর, শাসক হিসেবে আমরা কেমন এলেমধারী, তা ইতোমধ্যে সবার বোঝা হয়ে গেছে।

৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশে লোকজন লেখাপড়া শেষ করেও সঠিক যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে না। এজন্য দেশে বড় বড় সব ইমারত তৈরি করার জন্য বিদেশ থেকে লোক আনতে হয়। বাংলাদেশে শিক্ষার মান তলায় এসে ঠেকেছে। যে'কজন মেধাবী আছেন, তারা উন্নত দেশে চলে যাচ্ছেন। যাওয়াই উচিৎ।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ বলেছেন: দৃশ্যমান উন্নয়নে লাগাম পড়ানোর সময় হয়ে এসেছে।

আমাদের প্রাইমারি থেকে শুরু করে হায়ার সেকেন্ডারি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি অত্যাবশ্যকীয় অংশগুলোর (শিক্ষাক্রমের বাস্তবধর্মী পরিবর্তন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষকের বেতন স্কেল বাড়ানো, বাধ্যতামূলক এলাকা ভিত্তিক ভর্তি.....ইত্যাদি) উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম শুরু করা উচিত।

এদেশে কর্মরত বিদেশীদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিগত দিনগুলোতে যদি অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েই থাকে তাহলে তো এসব বিদেশিদের সংখ্যা বরং কমার কথা। গার্মেন্টস সেক্টরের কাজ কি রকেট সাইন্স, যে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বিজ্ঞানী এনে কাজ করাতে হয়?

তার আগে এটিও পর্যালোচনা করা উচিত যে অন্যান্য এশিয়ান দেশের স্কুল (এই যেমন সিঙ্গাপুরের raffles institution) গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা থেকে হার্ভার্ড অথবা অক্সফোর্ডে কিভাবে প্রতিযোগিতা করে জায়গা করে নিচ্ছে। আমরা কেন পারিনা?

এবং অবশ্যই কর্মমুখী শিক্ষার (কাজ জানে এমন দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিক না শহরে পাওয়া যায় না গ্রামেগঞ্জে পাওয়া যায়, মিল ফ্যাক্টরিতেও দক্ষ শ্রমিকের হাহাকার আর বিদেশে যায় অদক্ষ শ্রমিক) উন্নয়ন ও প্রসারে জোর দিতে হবে।
আমাদের প্রাইমারি থেকে শুরু করে হায়ার সেকেন্ডারি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি অত্যাবশ্যকীয় অংশগুলোর (শিক্ষাক্রমের বাস্তবধর্মী পরিবর্তন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষকের বেতন স্কেল বাড়ানো, বাধ্যতামূলক এলাকা ভিত্তিক শিক্ষার্থী ভর্তি.....ইত্যাদি) উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম শুরু করা উচিত।



আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.