নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজের স্বত্ত্বার সাথে নিজের পরিচয় - এটা আমার দর্শণের নোটখাতা নয় (বুক রিভিউ)

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫১



বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়।
বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে।
- মিলিত মৃত্যু


মানুষের জীবনের সুখ দুঃখ হাসি কান্না আনন্দ বেদনা সব কিছু একটি অপরটির সাথে জড়িয়ে আছে। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ তার জীবনের সকল কিছুতেই নিজকে খুজে বেড়িয়েছে। যদিও বলা যায় জীবন আর বেচে থাকার ভেতর পার্থক্য সীমাহীন। তবুও মানুষকে বেচে থাকতে হয় আর জীবন কে যাপন করতে হয়।

আমাদের এই বেচে থাকা ও জীবনের শুরুর কথা যদি বলা হয় তবে সেটার শুরু কবে আর কোথায় থেকে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। আলোচনা হতে পারে। কিন্তু এই যে আপনি আমি এখন রয়েছি, এটাই সত্য। এবার ভেবে দেখুন তো এর বাইরে কি রয়েছে। আর এর বাইরে কতটুকুই বা আমরা ভেবে দেখেছি।

পারিপার্শ্বিক অবস্থান বিবেচনায় একমাত্র মানুষ খুব সুন্দর ভাবে তার হাটা চলা বলা থেকে সব কিছু কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যেখানে তার অনুভূতির কথা, তার চিন্তা ভাবনা ও মানসিকতার বিকাশ ঘটাতে সে সক্ষম। যা পৃথিবীর অন্য কোন প্রানীর ভেতর নেই। মানুষের এই অনুভূতি থাকার কারণে সে বেচে থাকে আর জীবনকে যাপন করে থাকে।

এই যে মানুষের অনুভূতি এর ভেতর সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয় এম্পেথির বিষয়টি। এই এম্পেথির কারণের মানুষ সবার থেকে আলাদা ভাবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। বলা যায় এম্পেথির ব্যাপারটি মানুষকে সবার থেকে একদম আলাদা করে দিয়েছে। যাতে করে মানুষ তার ভেতরের মানুষের উপলব্ধিকে আরও প্রবল ভাবে অনুভব করতে সক্ষম হয়।

“To perceive is to suffer.”
― Aristotle


এখন প্রসঙ্গে বলতে হয় যে এম্পেথি কি, আসলে এম্পেথির ব্যাপারটি হচ্ছে আপনি অপর পাশের সুঃখ দুঃখ আনন্দ কে কতটা অনুভব করতে পারছেন সেটা। এখন এখানে বলা যায়, আপনি ব্যবসা লস করে শেষ হয়েছেন সেখানে আপনার এই কষ্টের অনুভূতি কাকে কিভাবে কতটুকু প্রভাবিত করেছে। অথবা কে কতটুকু অনুভব করেছে সেটাকেই আমরা এম্পেথি বলতে পারি।

মানব জাতির শুরু কথা যদি বলতে হয় তবে সেটাকে আমরা বিজ্ঞানের ভাষায় ধরে নেই এমিবা থেকে। ধরে নেই সেই প্রথম এমিবা বা আদমের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত মানুষ এসেছে তাদের ভেতর মিল কোথায় রয়েছে। তাদের কি একই সূত্রে আমাদের গাথা যাবে। ধর্ম বর্ণ জাতি গোত্র সব কিছুর শুরু বা তৈরি হবার সময় মানুষ কি ভবিষ্যতের চিন্তা করেছে নাকি তারা নিজের জন্য নিজেদের স্বার্থে সব তৈরি করেছে।

আপনি বা আমি নিজেকে কখন প্রশ্ন করে দেখেছি যে আমাদের ভেতরের আমিকে আমরা কতটুকু জেনেছি। অথচ সক্রেটিস কিন্তু বলেছেন, “নো দ্যই সেলফ বা নিজেকে জানো”। এটা ধ্রুব সত্য নয় যে নিজেকে মানুষ জানতে পারে। মানুষ জানার চেষ্টা করতে সক্ষম।

পৃথিবীর শুরুর সময় মানুষ নিজেকে জানত না। তবে সময়ের সাথে বিবর্তন ধারায় মানুষ আজকের সভ্যতায় এসেছে। এই সভ্যতায় আসার পেছনে অনেক গল্প রয়েছে অনেক কাহিনী রয়েছে। সেটার অনেক কিছু আমরা জানি আবার আমাদের অজানা অনেক কিছুই রয়েছে। যেমন সমুদ্রের গভীরতায় এমন জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষ আজও যেতে পারেনি।

শুরু করেছিলাম জীবনের সুখ দুঃখ নিয়ে। এখানে আসে এম্পেথির ব্যাপার। এম্পেথির ব্যাপারটি মানুষের ভেতরে আছে, তবে সব সময় সবখানে সেটা এক নয়। যেমন আপনার পা কেটে গেলে আপনার মা অনেক কষ্ট পায় কিন্তু আপনার বন্ধু সেটা কষ্ট পাবে না। দুজনের এম্পেথির বিষয়টি ভিন্ন হবে। একারণেই প্রতিটি মানুষ আলাদা।

“My religion is very simple. My religion is kindness.”
― Dalai Lama XIV


ধর্মের সাথে এম্পেথির সংযোগ অনেক পুরোন। এটাকে দেখতে হলে আমাদের অনেক পেছনে যেতে হবে। আপাতত আপনার জন্য বলি যে এম্পেথির কারণেই পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মের ক্ষেত্রে এম্পেথি কিন্তু অনেক বেশি কার্যকর। কারণ কোন ধর্মে হত্যা, চুরি, ডাকাতি বা কোন অন্যায় কে মেনে নেয়া হয়নি। মানুষের ভেদাভেদ কিন্তু ধর্ম করেনি, করেছে মানুষ নিজে। এই ভেদাভেদের উৎস মানুষ নিজের জন্য তৈরি করেছে। ধর্মকে পুজি করে মানুষ নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে।

যেমন ধরুন হিন্দু ধর্মে চারটি ভাগ করেছে, তার ভেতর আবার শাখা উপশাখা তৈরি করা হয়েছে। এখন সেখানেও মানুষ উচু নিচু ভেদাভেদ করেছে সেই শতাব্দীর পর শতাব্দী। আজও সেটা বিলুপ্ত করা যায়নি। তবে আপনি খেয়াল করলে দেখবে ধর্ম কিন্তু কোন ভেদাভেদ রাখেনি। সেটা সনাতন, ইসলাম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ যে ধর্ম বলুন না কেন।

আজ এই দর্শন বা এই এম্পেথি নিয়ে এত কথা কেন বলছি। শেষ করলাম আরিফ রহমানের লেখা “এটা আমার দর্শনের নোটখাতা নয়”। লেখক এই বইটি মুলত নিজের সাথে কথা বলেছেন। তবে তিনি শুধু নিজের সাথে কথা বলেছেন এমনটি নয়। তিনি এটা দেখিয়েছেন যে আসলে সব কিছুর সাথে একটা সংযোগ রয়েছে।

ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, সমাজ সব কিছুই কোন ভাবে একটি অপরটির সাথে সংযুক্ত। এটি মুলত পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যা এসেছে তার উপর ভিত্তি করেই লেখা হয়েছে। লেখক এখানে দেখাতে চেয়েছেন যে আপনি আমি বা আমরা সবাই কোন না কোন ভাবে একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে আছি।

সেটাকে এক ভাবে আপনি ভাবেন আর অপর মানুষটি অন্য ভাবে। তবে প্রতিটি মানুষের মাঝে ধর্মের প্রভাব কে লেখক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সেটা হতে পারে হিন্দু ধর্ম, ইসলাম ধর্ম বা খ্রিস্টান অথবা বৌদ্ধ।

এই যেমন ধরুন বৌদ্ধ ধর্মে বলা হয়েছে, জগতের সকল প্রানী সুখি হোক। এখানে কিন্তু ধর্মের উল্লেখ নেই। তারা সবার জন্য পুরো পৃথিবীর মানুষের কল্যান ও মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করেছেন। এখন সেখানে সব ধর্মের জাতির উপস্থিতি রয়েছে। আবার ইসলাম ধর্মেও কিন্তু শান্তির কথা বলা হয়েছে।

সব ধর্মের শেষ কথা সমর্পণ করুন। নিজেকে নিজেকে সমর্পণ করুন। খোদার কাছে আপনার ভাষায় আপনি যেভাবে স্মরন করবেন তিনি সেটাই বুঝবেন। তার কাছে কোন ভেদাভেদ নেই। মানুষের কাছে ভেদাভেদ আছে।

বইটিকে ঠিক দর্শণ বলা যায় না, আবার ধর্মকে দেখার আলাদা চোখও বলা যায় না। তবে আপনার চিন্তাকে আঘাত করবে এটা বলা যায়। আপনার ভাবনাকে আরও গভীরে নিয়ে যাবে এটা সুচিন্তিত ভাবে বলা যায়। আপনার দেখার ও বোঝার ভাবনা কে নতুন করে জাগিয়ে তুলবে এটাও বলা যায়।

“এটা আমার দর্শনের নোটখাতা নয়” বইটি সবার জন্য আবার সবার নয়। কারণ আপনি যদি আপনার চিন্তাকে উদার করে দেখতে না পারেন তবে এই বইটি আপনাকে কোন সহায়তা করতে পারবে না। তবে বইটি পড়ার আগে নিজেকে একটি নিরপেক্ষ জায়গা থেকে চিন্তা করবেন। আপনাকে ভেঙ্গে আবার নতুন ভাবে গড়ে নিজের স্বত্ত্বাকে চিনে নিন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: জীবনের প্রথম দর্শনের উপলব্ধি এই লাইন গুলোতেই হয়েছিলো। নোট টি কতদিন মানিব্যাগের ভেতরে নিয়ে ঘুরছিলাম।



---আর যাই করো সমস্ত কথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না।

মনে করিয়ে দিলেন। আপনার রিসেন্ট লেখা গুলো মুগ্ধ হয়ে পড়ছি।

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৫

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



ধন্যবাদ। আসলে আমরা অনেকেই আছি যারা সব কথায় হ্যা বা সম্মতি দিয়ে দেই।

লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৪

কামাল১৮ বলেছেন: লেখার ভিতর অনেক ভুল তথ্য আছে।আদম প্রথম মানুষ প্রমানিত সত্য নয়।এটা একটা মিথ।মানুষের আবির্ভাব বেশি দিনের না।ফসিল পরীক্ষা করে বোঝা যায়।
ডায়নোসোররাই পৃথিবীর আদিম অধিবাসী।তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে ছয় কোটি বছর আগে।মানুষ এসেছে বিবর্তনের মাধ্যমে।যা পরীক্ষিত সত্য।

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



আমি তো এখানে কোন প্রমানিত সত্য তুলে ধরতে চাইনি। এটা যার যার বিশ্বাসের জায়গা। আপনি কি বিশ্বাস করেন ও দর্শন আপনার সেটা তো আপনার ব্যাপার।

এটা কাউকে জোর করে চাপানোর ব্যাপার নয়। পৃথিবীর আদিম আদিবাসী ডায়নোসর হোক বা কোন এমিবা অথবা জীবন্ত কোন ফসিল সেটা প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা বিশ্বাসে উপর নির্ভর করবে।

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:১৬

সোনাগাজী বলেছেন:



ছাত্র, নাকি চাকুরী করেন?

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



আমি চাকুরীজীবি। তবে পড়াশোনার করা চেষ্টা করছি।

৪| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার একটি বাইক আছে।
আপনি বাইকে করে ঘুরে বেড়ান।

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


জী ভাই। ঘুরে বেড়াই। জীবন ও জীবিকার জন্য।

৫| ২৬ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৪৪

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: If I do good I feel good, if I do bad I feel bad, that's my religion.

-Abraham Linkon.

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


এটাই হয়ত সত্য। এটাই হয়ত জীবন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.