নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাফিব্লগ

রথো রাফি

রথো রাফি লেখালেখি গাণ্ডীব, অনিন্দ্য, শিড়দাঁড়া এবং দ্রষ্টব্যেই । মূলত কবিতা অন্তঃপ্রাণ তবে গদ্যও লিখেছি কিছু। অনুবাদেও আগ্রহ আছে। বই এখনো নাই। জন্ম: দক্ষিণ তারুয়া, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বসবাস ঢাকায়। প্রকাশনা সংস্থায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ফ্রিল্যান্স কাজ করছি। [email protected]

রথো রাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিমিক্স মৌয়ালের শব্দঠোঁট

১৩ ই মে, ২০০৮ দুপুর ১২:০৭

সাঁতার শিখিনি বলে আজো পারিনি কেন্দ্রে পৌঁছাতে...

রিমিক্স মৌয়ালের শব্দঠোঁট

অশিল্পিত আলাপের

নয়া মানচিত্র

(অ-মূল)-পাঠ-(কল্প-গল্প-স্বল্প)-ক্রিয়া-(কাণ্ড)



রথো রাফি





পড়ো লেখকের উছিলায় আর

নিজের ও লেখকের স্বাধীনতার নামে

- র. র.



যেকোন পাঠই আসলে আংশিক বা অতি পাঠ। যখন লেখক বা আলোচক দ্বিতীয়বার নিজের লেখা বা আলোচনাটি পড়তে যান তখন এ বিষয়টি অনুভব না করে পারেন না, তা দেশ-কাল পরিবর্তনজনিত কারণেই হোক বা অন্যের সাথে নিজের অভিমত বিনিময় জনিত কারণেই হোক। আবার যখন আলোচক বা লেখক ভিন্ন কোন পাঠক তাদের রচনা বা আলোচনা পড়তে যান, তখনও একই বিষয় ল্যযোগ্য হয়ে ওঠে, আর বিচারীমন পড়ুয়া হলে তো কথাই নেই ।



পাঠকের মনেও পঠনকালে একজন লেখক আবির্ভূত হয়। কেননা তার পাঠপ্রতিক্রিয়া বলেও একটা কিছু থাকে যা আশ্চর্য এক স্বাধীনতা বোধ এবং সবসময়ে বিরাজমান, বলা বা লিখিত রূপে না হলেও। পাঠকালীন পাঠকের মৌনতাও ভীষণ মুখর । সে পাঠবস্তুটির সাথে লড়াইয়ে, সহমতে, আপোসে তা অর্জন করে নেয়। এমন কি যে পাঠক আলোচনার কেন্দ্রে নিহিত বইটি পড়েন নি, তার পরেও তেমন কোন আলোচনার সাথে অনেক সময়েই পাঠ পরবর্তী একমত হওয়া সম্ভব হয় না। এখানে পাঠ বস্তুটির মাঝে নিহিত স্ববিরোধ এবং পাঠকের ব্যক্তিবীক্সাও প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। বা আরো ভিন্ন কিছু। তা ছাড়া পাঠ প্রতিক্রিয়া হয়তো বা পাঠ বস্তুটির স¤প্রসারণ বা সংকোচন ঘটায়। তা অন্য অর্থে পাঠকের ব্যাক্তিবীারও খন্ড-পরিচায়ক বটে। সবচেয়ে বড় কথা একটা বই গ্রহনীয় কি গ্রহনীয় নয় তা পাঠক না জেনে বা অনুমান বা অপর বা বণিকের অভিমতের উপর নির্ভর করেই কেনে এবং এই গ্রহণ যেকোন সময় বর্জনে রূপ নিতে পারে। বইটির প্রথম পৃষ্ঠা প্রথম শব্দ থেকে শুরু করে শেষ পৃষ্ঠার শেষ শব্দটির মাঝে যেকোন স্থানে বা পঠনের পরেও তা ঘটতে পারে। এর কোন আগাম ঘোষণা নেই। আমাদের ভাললাগা বা অন্যকথায় আমার লালিত ছদ্ম-বিবেক আঘাত প্রাপ্ত হওয়া, না হওয়া বা তৃপ্ত হওয়া এমনই সব বিষয়ের উপর তা নির্ভর করে। আবার কারো কাছে বইটির প্রসংশা শুনেও এমন ঘটতে পারে। এমন কি বি-শংসা শুনেও। তো এতো অনিশ্চায়তার ভেতর দিয়েই আমাদের সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক বোধ আমাদেরকে একটা গড়পড়তা বোধের সাথে সমন্বিত করে রাখে, এবং আমাদেরকে কোন একটি লেখার তাৎপর্য নির্ধারণে একটা গড়-ঐক্যে পৌঁছাতে সহযোগী হয়ে ওঠে। আমাদের বাঁচায় এবং মারে। সংরণপন্থী করে গড়েও তোলে। একেই ¯ী^কার-অস্বীকার-ও-অতিক্রমণের অভিপ্সা বা এদেরই কোন মাত্রাভেদ জেগে থাকে পাঠকের মনে। আর এটি সংগঠনের উপায় ঘুমন্ত থাকে লেখকেরই লেখায়। এবং পাঠক তাকে জাগিয়ে তোলে অভিজ্ঞতা আর অভিপ্সার বেনিবদ্ধ তাড়নায়। আর এই জাগিয়ে তোলা আবার যেভাবে লেখক পাঠক হিসেবে এবং এর লেখক হিসেবে চাগিয়ে তুলেছিলেন তেমন নয়। তবু লেখক ও পাঠক দুজনেই শতভিন্নতা স্বত্বেও একটা সেতু জেগে উঠুক তাদের মাঝে তেমন একটা বাসনা লালন করে চলে অধিকাংশ সময়েই, এমনই মনে হয় আমার। এবং এই সেতুটা প্রায়সবসময় মূল সেতু নয়, বরং দুজনের অনেক ইচ্ছের চাপে সেতুর ধুমড়ানোমোচড়ানো এক চেহারা। তথাপি এক সেতু যা হয়তো যৌথ বাসনার আভা, ক্রমে জাগতে থাকে অজর অর চরাচরে পঠনকালে এবং পাঠশেষে তা এক ছদ্ম-স্পষ্টতা পায় পাঠকের মনে। পাঠক তৃপ্ত বা অতৃপ্ত হন বা আরো হাজারও প্রশ্নের জন্ম দিয়ে বসেন যা লেখক ভাবেন নি। আর তাই হয়তো লেখক তার বইয়ের আলোচনা সমালোচনার মাঝে খুঁজে বেড়ান আর তার ভাবনার দিগন্ত পেরিয়ে গেলে বা ধসে পড়লে বিহ্বল হন আনন্দে বা শিহরিত হন ভয়ে।



আর এই অনুমান করেই বা লাভ কি। লেখক হলেন সেই ঈশ্বর যাকে কখনো নাগাল পাওয়া যায় না এই অর চরাচরে, বান্দা বিপদে পড়লেও। বা বিপথে চালিত হলেও। আর বান্দাও জানে তিনি সবর্ত্র বিরাজমান কিন্তু অদৃশ্য এবং অসহায়। এবং বান্দার কোন কাজে আসে না। আবার ইশ্বরও তেমনি অসহায় কোন পাঠক তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে তিনি অনুভব করেন বা দেখতে পান লেখকের চিন্তা ছাপিয়ে পাঠকটি নিজের বেগে এঁকেবেঁকে ভেসে চলেছে কোথায় যে। তখন আর নিজের অদৃশ্য চেহারা ছিড়ে দৃশ্যমান হওয়ার মতাই তার নাই অর্থাৎ এতো দিন যা ভেবে আসছিলো নিজেকে, সবেসর্বা তা ভেঙ্গে পড়ে এবং পড়তেই থাকে.... .... ....। এমনকি লেখক এবং পাঠক একই সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক উত্তাধিকার বহন করা সত্বেও। তা ঘটে এবং ঘটতে থাকে।



আর পাঠকেরও সুযোগ থাকে না স্বেচ্ছাচারিতার। কেননা সাধারণত সেও একটা গড় ঐক্য-বোধ তাড়িত এক মানস নিয়েই আসে এই চরাচরে। এছাড়া অন্যের সাথে নিজের পাঠ তুলনা করতে গেলেই ধরা পড়ে তার সাথে অন্যের পাঠপ্রতিক্রিয়ার গড়-নির্দিষ্ট মিল ও অমিল। আর পাঠকের পর পাঠকের পাঠপ্রতিক্রিয়ার একটা গড়পড়তা মিলের সন্ধানই চলতে থাকে একটা সময়পর্যন্ত কৌতুহল উদ্রেকী কোন বইকে ঘিরে। এবং সেটাই প্রতাপময় হয়ে ওঠে সকল পার্থক্য ধুয়েমুছে কিংবা ধূয়েমুছে দেয় না, কেবল ঝাঁপসা করে রাখে আর আমরা আমাদের অভ্যস্তমন নিয়ে তাদের না দেখার ভান করতে থাকি এবং তার উপর অর্থের ধূলো জমাই। আবার সময়ের ধারাবাহিকতায় আরো নতুন নতুন অর্থের জোগান দেয় একই লেখার উপর বিভিন্ন পাঠকের সম্মিলিত ও ধারাবাহিক সক্রিয়া।



তো থাক এসব কথা। কেননা এ সমালোচনা নয়, আলোচনা নয়, ব্যাখ্যা নয়, তার রচনার সারার্থ বা সর্বার্থ সন্ধানও নয়, রাজনৈতিক কূটকচালও নয়, এ কেবল এক ধরনের পাঠ। তবে এসবের কোনটা থেকেই সম্পূর্ণ মুক্তও নয়।



যেসব অভিজ্ঞানসমূহ যা রচনার কথক ও পাঠকের মাঝে যথাক্রমে নিহিত ও উদ্ভাসিত হয়ে ওঠেছে বইটির উসিলায়, রচনার লেখকের না ও হতে পারে, সেই সেতু-স্মারকগুলো উল্লেখ করবো এবার। এসব জ্যোতি’র বইয়ের কল্পিত কথকটির চিহ্নায়ন। এবং যে পড়ে ও জাগিয়ে তোলে এসব; তার মনোচেতনার, অর্থাৎ আমার। তো দেখে নেওয়া যাকÑ



১. এক বিক্রেতা

২. এক বিজ্ঞাপক

৩. এক অতৃপ্ত ভোক্তা

৪. গণিত শিক

৫. এক গণিত ব্যাবসায়ী

৬. পালানো একজন

৭. উপাধিশূন্য এক নাগরিক

৮. মুক্তবাজারের প্রশংসামুখর প্রচারক

৯. একজন পন্য

১০. একজন ব্যর্থ পন্য

১১. অসুখী শ্রমিক

১২. ক্রেতামুখু পন্য

১৩. ক্রেতাকে পন্য রূপান্তরকারী

১৪. সৌন্দর্য্য বিক্রেতা

১৫. মনোলোভা সেলস বয়

১৬. অশিল্পিত আলাপী

১৭. বাই প্রডাক্ট

১৮. ঋণী লোক

১৯. ব্যর্থ বিক্রেতা

২০. কারো স্বীকৃতিহীন এবং অনুক্ত

২১. সরবতাসৃজন অম

২২. একজন দর্শক

২৩. ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ লোক

২৪. দাস্যসুখের নোনামুখ তার দুঃখ উপচানো বাড়ি

২৫. যেকোন দামে নিজেকে বিক্রিতে প্রস্তুত

২৬. বেতনহীন শিক

২৭. ভূমিজরিপকারী

২৮. পিপাসার্ত প্রেমিক

২৯. একজন পরমাপ্রকৃতিবাদী

৩০. আত্মনিয়ন্ত্রণহীন

৩১. নিজেকে সরানোর পর একটা গর্ত

৩২. লোকাল মোকামে পর্যটনকারী

৩৩. একজন বাহারী রঙের ব্যাক্তি

৩৪. উষার বন্ধু

৩৫. নিজেকে সাজাতে পছন্দ করা এক ব্যাক্তি

৩৬. কামপ্রার্থী ফেরার

৩৭. ধ্বনি জীবাস্ম আবিষ্কারক

৩৮. আঁকিয়ে

৩৯. বাজারমুখি কবি

৪০. নির্জন সম্বন্ধের মৌয়াল

৪১. লৌকিক পোশাক ত্যাগকারী

৪২. হাটুরে

৪৩. শব্দ খোঁজা-লোক

৪৪. স্কুলে ভর্তিপ্রার্থী

৪৫. বারবার অনিচ্ছুক বাসাবদলকারী

৪৬. ভাড়াটে দেহধারী

৪৭. সাইবার ক্যাফে ব্যবহারকারী

৪৮. নিজের মাঝে ক্রেতামুখী রুচির পাঠকারী

৪৯. শেকড় ছিন্নতায় ব্যর্থ লোক

৫০. কালোবাজারীর অধীনে উৎপাদিত পন্য

৫১. শিানবীশ তীরন্দাজ

৫২. বায়োস্কোপ উপভোগকারী

৫৩. প্রাপকহীন মৌয়াল

৫৪. মার্বেল খেলোয়ার

৫৫. কেন্দ্র পৌছাতে ব্যর্থ

৫৬. লেখক

৫৭. শিাশ্রমিক ... ... ...

আরও অনেক পরিচয়ও এর মাঝে নিহিত আছে বলেই আমি মনে করি কিন্তু আমাকে হয়তো কেবল এইগুলো ভাবিয়েছে বা আমি হয়তো এই পরিচয়গুলোর মাঝেই ল্য যোগ্য ভাবে নিচের চারপাশে বা নিজের জীবনে বা কথকটির জীবনে ল্য করে বড় হয়েছি। ফলে এখন এই মুহূর্তে হ্যাঁ এইগুলোই আপাত...



কী কী ঘটছে এখানেÑ

১. আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে পর্যটন সেবা চলে

২. আলাপচারিতাকে পরিধির পরিধির দিকে প্রবল স্পর্শন করে তুলললে রাজা চেক দিতে পারে না

৩. হরতনের লাল গর্ভে ছড়িয়ে পড়ে হাইব্রিড মাগুড় বাজার

৪. আয়তত্রে তেপ্পান্ন বিদিশার দিকে হেঁটে হেঁটে ডেকে আনে গুঁড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাতের বানানো স্বপ্ন জাল

৫. গোয়ালিনির গরু দৌড়াতে দৌড়াতে গুঁড়ো দুধের কোটার ভেতর ঢুকে পড়া রেড কাউ ডেকে ওঠে হাম্বা হাম্বা

৬. ব্ল্যাকবোর্ডে বসে গণিতের বাজার

৭. ধানের বাজার পড়তির দিকে ল্য করতে হয়

৮. লোকাল বাজারও পড়তির দিকে না অনুভব কওে পারা যায় না

৯. কৃষকের দ্বিতীয় কন্যা হাইব্রিড ধানের বাজারে একা একা অন্ধগায়ক (অর্থাৎ উন্নত জাতের ফসল এসে তার আইডেন্টিটি পাল্টে দিয়েছেÑ পাঠক)

১০. ডিপোহোল্ডার একযোগে পৌঁছাচ্ছে সেনসেশন ডিজেল ইরেজার হাতমোজা ওরস্যালাইন বিপ্লব ৬২০২

১১. হাইব্রিড আম সারা বছর

১২. ছাটাই গার্মেন্টস কর্মী আলে বসে টিউকলের জলে কুলকুচি করে

১৩. নিজস্ব অনুভূতিতে পাওয়া যায় হ্যালো হ্যালো প্রিয়তা বাজার সমগ্র

১৪. জলউপজীব্য ফ্যাটবাড়ি-ই জল প্রচ্ছদ যৌনসুন্দরী যে রতিসন্ত্রাসের অনিবার্যতা বিপন্ন করে আনে এন-সংখ্যক প্রতœকলা

১৫. কোকাকোলা খায় আর হালুম হালুম স্বভাব নিয়ে খেলে নিজেকে কাদামাটি করে ফেলে এবং কুমোর পাড়ার কাছে প্রার্থনা করে তার কান্না ও হেঁচকি জুড়ে জুড়ে তাকে যেনো ক্রেতামুখি ট্রেডমার্ক পণ্য বানানো হয়

১৬. পনের শতাংশ ভ্যাট প্রয়োগে যে কেউ রাষ্ট্রের সেবক হয়ে ওঠে

১৭. যেকেউ ক্রেতামুখী পন্য কিনতে পন্যবিথিতে গেলে তাকে অন্য হাটের পণ্য বানিয়ে ফেলা হয়

১৮. লিপলাইনারে বেড়ে ওঠে ত্বকমুগ্ধতা এবং একে অপরকে দেখায় রংধনুর কাছ থেকে চুরি করা লিপস্টিকের একোহম বহুশ্যাম

১৯. শেয়ার বাজারের ওঠতি সূচক যুবতী ফোর থেকে ফোরে পৌঁছে দিচ্ছে মাদার কোম্পানির প্রস্তবিত লভ্যাংশের ঘোষণা

২০. ক্যালেন্ডার থেকে অবিরাম ঝরঝর তারিখবৃষ্টি ভেজাচ্ছে পোশাক বিলাস

২১. অনলাইন টিউটরিয়ালে হেসে ওঠে গমগম শব্দদের রাগী মিছিল

২২. রোলটানা নোটবুকে প্রাপ্ত রঙিন আঙুলগুলো রাখা হলে বিপণনের আগেই কালোবাজারে ছেড়ে দেয় এদের উৎপাদক

২৩. কোন কর্মী যখন একহাতে লাভলোকসানের হিসাব রাখে, অন্য হাতে সে নিজেই থাকে অনাদায়ী দেনা

২৪. লোকাল বাজার পড়তির দিকে এবং সেখানে হু হু করে ঢুকছে বিজ্ঞাপিত চাওয়া

২৫. গুজ্যদ্বার থেকে মগজ অবধি যন্ত্রণার সরাসরি বাসলাইন

২৬. জৈবরসায়ন ওঠানে মেলানো হাইব্রিড ধান অথচ কৃষকের দ্বিতীয় কন্যা একা একা হাটের আসরে গন্ধগায়ক

২৭. আর উঁমাচরণ কাধ কাত করে ভিজিএফ কার্ডের জুচ্চুরি পড়ে

২৮. ওঠানামা বাজার দরে কাউকে চেনা যায়

২৯. ব্লেডসময় তছনছ করে ঢাকগুড় গুড় ছায়া গল্প

৩০. এখানে নির্বাকতার কোন অনুবাদ হয় না

৩১. জমানোর পরও অনেকের গড়া হয় না পূঁজি কর্পোরেট

৩২. নির্বাকমুখের সবাক পাঠ হয়ে ওঠে বিটোভেনের নবম সিম্ফোনি

৩৩. বেহালাবাদক চলে গেলে কালচে ছায়াই বেহালার ছড়ে টুকে রাখে পথিকের ফ্যাকাশে চোখের সবুজ উচ্ছ্বাস

৩৪. বাস্তুহীন কেউ ফুটপাত বরাবর হেঁটে গেলে যেকোন প্রাপকের দিকে ঠেলে দেয় সময়... ... ...



কী কী বিষয় পণ্যের সৌন্দর্য্য(চাহিদা) বাড়ায়... ...

১. ফাটাফাটি মূল্যহ্রাস

২. সীমিত স্টক

৩. আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তি

৪. বানানো স্বপ্নজাল

৫. দুধের বিজ্ঞাপনে গাভীর হাম্বা হাম্বা ডাক

৬. হ্যালো হ্যালো প্রিয়তা

৭. লিপ লাইনারে বেড়ে ওঠা ত্বকমুগ্ধতা

৮. রোদ পিছল ফাগুন ডিজাইন

৯. উইন্টার স্যুট

১০. প্রেমধ্বনি

১১. সরষে রঙা ক্রেপ

১২. গোল্ড ও সিলভার জমির বর্ডার

১৩. ফ্যাশন মঞ্চ

১৪. শাড়ির পাড়ে বনসাইমেঘের গুড়গুড়

১৫. ব্লাউজের পিঠে কাচ বসানো প্যাঁচ নিচে ময়ূরের সঙ্গম

১৬. কবিতাফ্যাশন শোডাউন চ্যানেল মঞ্চ

১৭. মুষল ধারাপাতের মনিপুরি নৃত্য

১৮. খোদ টাঙ্গাইলে শ্রীমঙ্গলের তামাটে মেঘলার নকশা জরি

১৯. বাঁশের গয়না

২০. শোলক বলা কাজলা দিদির উন্মূখ সোহাগ

২১. কর্পোরেট নির্বাহীর জেল দিয়ে টেনে বাধা চুল

২২. মেরুন রঙের সঙ্গমের আঁচলে মন্দিরের সিংহ

২৩. অরণ্য দিনলিপির হালুম আল্পনা

২৪. ক্যাজুয়্যাল কিন্তু কিছুটা সাহসি মেঘ পোশাকে বেড়ে ওঠা শ্রাবণ শর্বরী

২৫. সোনালি নয় রূপালি নয় অফ হোয়াইট কামিজে টাই এন্ড ডাই

২৬. ব্লকপ্রিন্টের সঙ্গে বসানো পোড়া মাটির গহনা

২৭. ট্রাউজারে খাকি নীল রঙ

২৮. প্লাস্টিকের উজ্জলতা

২৯. স্ফটিক শীতল জলের মিথুন নকশার উড়াউড়ি

৩০. চোখের শেড

৩১. পার্ম করা চুল

৩২. ডেনড্রাফ ট্রিটমেন্ট ম্যাস্পু চুল

৩৩. মেকাপের বারবার পরিবর্তন

৩৪. এথনিক পোশাকের দাম্পত্য আলাপ

৩৫. কসমেটিক চোখ

৩৬. গোলাপি রঙের গ্যাস বেলুন

৩৭. স্ক্রীন মনিটরে ভেসে ওঠা মৌমাছির কণ্ঠস্বর

৩৮. দুধবালিকার লিপস্টিকগ্রাম... ... ...



যেসব রচনাপংক্তিতে হাত চালাতে মন লুকাতে কিংবা কমপে চোখ বোলাতে মন চায় বারংবার( পংক্তি উস্থাপনের দৃশ্যরূপ আমি বজায় রাখতে পারিনি বলে দুঃখিত)... ...

১. আমার অনুভূতির ভাষান্তর আমন মাঠের নির্জন সুন্দরম

২. বোবাটর্চের খিল খিল হাসি অন্ধপথের বাঁকে বাঁকে শাদাছড়িদের শুভেচ্ছা লেনদেন

৩. ব্রজেনদাস জলসঙ্গম করতে করতে পার হচ্ছে ইঙলিশ চ্যানেল

৪. একদিন ছায়ার শরীরে হিসি করতেই লেকের কম্পমান আলো জলে লাফিয়ে পড়েছিলো

৫. টেবিল ল্যাম্পের নিচু আলোর হাসিবুদ্বুদ মূলত চিঠি উঠোন

৬. শরীরে শরীর ঘর্ষণে বেরুচ্ছে বিদ্যুৎ পাখি

৭. এটাতো জেনেছি বৃ থেকে ডাল ডাল থেকে বিকেল খসে পড়লেও স্মৃতি ডালে দোলে বিকেলদের প্রতœপ্রতিমা

৮. সাঁতার শিখিনি বলে আজো পারিনি কেন্দ্রে পৌঁছাতে

৯. সঙ্গমোত্তর জৈবঘুমে উমার সশব্দ নির্বাক পন্ডস হাসি-ই আমার ডোরবেলের ফিলিংসস্টেশন

১০. লভিল জনম আমার সমদর্শী ক্রিয়াকোলে

১১. নাটাই ছিন্ন গুড্ডি হওয়া কি সহজ কথা কেবলই শেকড়ের টান পড়ে

১২. খোঁপায় ছড়ানো চুলজালে যৌনবৃষ্টি পুড়ে পুড়ে মোমশরীরে নেচে ওঠা অগ্নীফুল আমাকে শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লীর দিকে ঠেলে দিলো

১৩. টেপের ছিপি খুললেই জল নয় গড়িয়ে পড়ে ধ্বনিময় ভোর অথবা অপো নামক এক অস্থির বিন্দু

১৪. শব্দের জানালা খুললে স্ক্রীন মনিটরে ভেসে ওঠে মৌমাছির কণ্ঠস্বর

১৫. জেনেছি পোড়া মোবিল কীভাবে আকড়ে রেখেছে ধূলোর কাতরতা

১৬. নূপুরের ভেতর সঞ্চিত ঝুমুরের নির্বাক উল্লাস নিয়ে আমি নগর কীর্তনে ফেরি করছি উদ্বাহু চৈতন্যচন্দন মাত্র তিনসপ্তাহে আপনার ত্বক হবে স্নিগ্ধতার নির্বাক আলাপ

১৭. ভুলের রঙ ফ্যাকাশে হলুদ

১৮. বালিকা ফ্রকেই পেলে কিনা আবহাওয়া দপ্তরের ঝড়ো হাওয়ার গতিসীমা

১৯. বাসস্টপ তুমি তুমি দূরগামী মেইল এক্সপ্রেস পোড়াদহ থেকে শালচূড়া ঘাট কোথাও আমার মণ্ডপ নেই খুঁটি উপড়ে ভেঙ্গে ফেলি শৃঙ্খলারীর নিপূণ ঈশারা সবুজ হলুদের দিকে হলুদ লালের দিকে লালটিপ কেবলই সরে সরে দূরগামী

২০. চৌপাদিক শহর ঘুরে ঘুরে জেনেছি প্রিয়ার কাছ থেকে চৈতন্য উঠে গেলেও কীভাবে ধরে রেখেছে বিষ্ণুপ্রিয়া নিমাইশরীর

২১. যুগল ভ্র“পাখিদের জিরোপয়েন্টে শূন্যতার ভরাট সংসার

২২. এলোমেলো পায়ের ছাপ দেখে বুঝতে পারি মাতাল জ্যোৎস্না কেন গিটারের সব তার ছিঁড়ে ফুঁ দিয়ে ওড়াচ্ছে সব গান আর গানের ভেতর ল্যান্ড করা যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ক্যাপ্টেন ছাড়াই উড়ে গেছে

২৩. আমি কিন্তু ঠিক কাশবন কার্পেট থেকে তুলে নিয়ে আসবো রঙিন চুসনিকাঠি

২৪. আজকাল ভুল ঠিকানায় নির্জন সম্বন্ধের মৌয়াল হয়ে ওঠি

২৫. খুলির অন্দরে নির্ঘুম শহর শাঁ শাঁ শব্দে পেরিয়ে যাচ্ছে আন্তঃনগর ঘুমসার্ভিস

২৬. অপাপ শরীরের পুষ্পিত ঘ্রাণে ঘুরে ঘুরে ফেরার আমি বৃ দেহে খুঁজি আমি স্পন্দিত রূপ গন্ধ জেগে উঠি স্বপ্নভূমি রোদগন্ধ মাখা বাঁকানো পথ পায়ের কাছে পথিক ফিরে আসে

২৭. পথকে করেছো বহু আর আমি বাহারি রঙের ব্যক্তি ক্রিয়াকে মেনেছি আমার উপাস্য বিন্দু স্বরূপিনী

২৮. জেনেছি নির্বাক মুখের সবাক পাঠ মূলত নবম সিম্ফনির বিটাভেনের অর্কেষ্ট্রা

২৯. ছাদহীন রোদ শহরে হেঁটে হেঁটে নিজের মাথায় রেখেছি নিজেরই ছায়া

৩০. নামহীন ভবিষ্যৎ আঁকতে পারিনি বলে অখণ্ড বর্তমান শরীরে ফুটে ওঠছে অর জন্মের ভাষাবৃষ্টিপাত

৩১. আমি জানি ফুটপাত বরাবর হেঁটে গেলে আমাকে যেকোনো প্রাপকের দিকে ঠেলে দেবে বাস্তুহীন আমার সময় আমার প্রেরক

৩২. নীরবতার অন্তঃস্থে সরবতা আঁকতে পারিনি বলেই কি নির্বাক স্কুল কেবলই সরে সরে দূরগামী

৩৩. ব্যাকরণ পাঠে জেনেছি পরি উপসর্গটি কল্পনার পূর্বে বসেই বিলাতে থাকে বহুস্তরীয় জীবন পাঠ

৩৪. সমস্ত শহর আমার কাধে একুশ ফাগুন তুমি যত ইচ্ছে বেড়ে ওঠো রোদ পিছল ফাগুন ডিজাইনে আমি কিন্তু নিরুক্ত

৩৫. গমগম শব্দদের রাগী মিছিল রোলটানা নোটবুকে যে প্রাপ্ত রঙীন আঙুলগুলো রেখেছিলাম বিপণন করার আগেই কালোবাজারে ছেড়েছে আমার উৎপাদক

৩৬. তোমার দেহ উত্তাপে আমার সন্তান সুখ পরম্পরা ঢেউ আমি দারুণ তৃষ্ণায় জলের প্রার্থিত পুরুষ কিংবা স্তন্যপ শিশু অন্তঃস্থ বীজে তোর উষ্ণতা ঘিরে আমি এক পরমা প্রকৃতিবাদী

৩৭. জেনো, কতিপয় মুদ্রা পেলে খোলা বাজারে যেকোনো দামে নিজেকে বিক্রি করতে করতে দুহাতে ঝুলিয়ে রাখবো ধ্বংসের তীব্র সংকেত

৩৮. বিলম্বিত বিজ্ঞাপন বাজারই বৈষয়িক বিবৃতির সফলতার ঢেকুর

৩৯. আমার ভেতর আমি ঢুকে পড়ে টুকে নিচ্ছি ক্রেতার অনুসূè অপছন্দ

৪০. যখন ঝুঁকে পড়া বিকেলের সিঁদূর আলো অস্তিত্বে জেগে ওঠে তখন নেমে যাওয়া জলের মৃদু মৃদু নেচে ওঠা পলির আলাপ তোমার গৈরিক শুভ্রতা কম্পিত আলোর ফিসফাস নীরবতার মাঝে সরবতা, বুঝি, তোমার আপন দেহ বিদ্যালয়

৪১. উঁমাচরণ কাধ কাত করে ভি জি এফ কার্ডের জুচ্চুরি পড়ে

৪২. ঝিনুকে তুলেছি মুদ্রিত ঘুম জেনেছি জাগরণের প্রিন্টিং মিসটেক সংশোধন হবার নয় পড়তে এসে একপিঠ খোলাচুল মেলেছে নির্জন গেরস্থালি

৪৩. একহাত যখন রেখেছে লাভলোকসান হিসেবের বৈষয়িক বিবৃতি অন্য হাতে বাইপ্রোডাক্ট আমি কেবলই অনাদায়ী দেনা

৪৪. ঝুলকালি সংসার থেকে তুলছো তুমি লৌকিক খুনসুটির অন্তঃস্থকলহ

৪৫. লোকাল বাজার পড়তির দিকে হুঁ হুঁ করে ঢুকে পড়ছে বিজ্ঞাপিত চাওয়া

৪৬. হালুম হালুম স্বভাব চিৎকার নিয়ে খেলতে খেলতে নিজেকে কাদামাটি করে ফেলেছি আমাকে ট্রেডমার্ক পন্য করে দাও কুমার পাড়া হেঁচকি ও কান্না জুড়ে জুড়ে

৪৭. রোল টানা পথ ক্রমশ গ্রামায়নের লেন থেকে বাইলেনে নগর কীর্তনিয়া আই হেভ অ্যা নেম উইথাউট অ্যা টাইটেল

৪৮. গোয়ালিনীর গরু দৌড়াতে দৌড়াতে গুঁড়ো দুধের কৌটার ভেতর ঢুকে পড়া রেড কাউ ডেকে ওঠে হাম্বা হাম্বা... ... আহা মা যে কবে কৌটায় ঢুকবে আয় আয় খোকন সোনা দুধ খেয়ে যা

৪৯. শহর থেকে শহরে মধু বিক্রেতা আমি ব্যক্তিগত ইনডেক্সে তুলে রেখেছি উন্মূল জীবনের আঞ্চলিক জন্মদাগ

৫০. বাসযাত্রী ঘুমহীন তারিখের সিটে ঘুমিয়ে পড়লেও স্টিয়ারিঙের জ্যামিতিক চোখ ঠিক ঠিক স্টপেজে রেখে আসে

৫১. ক্রেতার সার্বভৌম সুখ যদিও কাশফুল উষ্ণতা ঘেরা পেন্থারই মূলত সঙ্গমের প্রফুল্লগ্রাহিতা

৫২. সে-প্রতœপ্রতিমার খোঁজে ভেসে বেড়ায় আমারই জীবাস্ম

৫৩. হাটের কণ্ঠ থেকে শব্দ কুড়িয়ে এনে ছুঁড়ে দেই ঢালু পথে যেমন মার্বেল গড়াড়ে গড়াতে নেশায় বুঁদ হতে হতে ধ্বনিহীন মরা ছেলের বোবাচাহনি

৫৪. অতিথিরা চলে গেলে ঘর শূন্যে পূর্ণ হয়ে ওঠে

৫৫. ফ্যাটবাড়ির কার্নিশ পেকে ওঠা একাকিÍের বাগান সেঁতারে তুলেছে মুষল ধারাপাতের মনিপুরি নৃত্য খোদ টাঙ্গাইলে শ্রীমঙ্গলের তামাটে মেঘলার নকশা জরি সঙ্গে মানানসই বাঁশের গয়নায় শোলক বলা কাজলা দিদির উন্মুখ সোহাগ

৫৬. ধরতে না ধরতেই দশ আঙ্গুল গড়িয়ে পড়ে গেল গুঞ্জন আমি কি এখন মাঠ পেরিয়ে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিরচিত আমেনার মুখ আনতে যাবো

৫৭. মুদ্রাহীন শ্রম বিনিয়োগে শিক্ষা শ্রমিক আমি ক্যালেন্ডারে বসা তারিখ ঘষে মেজে তুলছি পূর্বাশ্রমের অমীমাংসিত স্মৃতি স্মৃতি সড়ক ধরে ধরে হাঁটতে হাঁটতে কাসে উগড়ে দিচ্ছি প্রতিটি লেনদেন কীভাবে আকড়ে ধরেছে আর্থিক জীবন

৫৮. বুড়ো আঙ্গুল নগরের কোন মানচিত্র ভূগোল কাশে আঁকতে শেখেনি বলে পোস্ট লেটার বক্সকে ভেবেছে লালটুপি পরহিত লর্ড কর্নওয়ালিস

৫৯. যে ওঠান সুন্দর ছিলো তিলে ইদানিং লে-অফ হচ্ছে ভীষণ... .... ....



যে যে রচনাখণ্ড মোটামোটি হৃষ্টপুষ্ট লাগলো... ...

৩, ৪, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৭, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৮, ৩৯, ৪৪, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৫৭, ৫৯, ৬০, ৬৪, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭৮, ৭৯ = ৩৯টি



কথক সত্তাটির কাক্ষিত কি অনাকাক্ষিত হোক যে যে পরিচয় আমি আবিষ্কার করেছি , পাঠের দেশে কী ঘটে বলে আমি যা যা অনুধাবন করেছি এবং কী কী বিষয় পণ্যের সৌন্দর্য় বাড়ায় বলে কথকটির কথা ও মত অনুসরণ করতে পেরেছি তা যেমন তালিকাকারে জানিয়েছি তেমনি যে সব প্রত্যঙ্গ (রচনাপংক্তি) এবং যে সব অঙ্গ (রচনাখণ্ড) ভালো লাগলো তাও বলেছি। এর পর অধিক প্যাঁকপেকানো মানে তো কারো ঘাড়ে নিজের বক্তব্যভার চাপিয়ে দেয়ার খাসলত ত্যাগ করতে না পারার অভিজ্ঞান। তাই সংক্ষেপেই আমার বোধগম্যতার একটা ধারণা বা আমার পাঠ পরবর্তী অর্জন ব্যাক্ত করার চেষ্টা করেছি।



মুক্তবাজারেরই একজন লোক এই বইয়ের কথকটি, তার বসবাসও এখানেই, বাজারকে মেনে নিয়ে নিজের সফলতার সন্ধানরত এবং ব্যর্থতা সত্বেও তাকে ঘিরেই স্বপ্নজাল বা জালস্বপ্ন বুনে চলে, বিজ্ঞাপিত চাওয়ার সাথে জীবন যাপনের অমিল আবিস্কার করেও কোন বিকল্প অনুসন্ধান না করে তার মধ্যে মোলাভের অভিযান জারি রাখে এবং তাকেই স্বাধীনতার মোড়কে দার্শনিক বোধে উদ্ভাসনের চেষ্টা করে চলে এবং আর্থসামাজিক বাস্তবতার অধোপতন ল্য করে চলে। এবং এই মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে যে নয়া-ঔপনিবেশিক হেগেমনি এখন বিশ্বব্যাপী জারি আছে এবং আমাদের দেশেও, তারই চেহারায় নিজেকে জারিত করার প্রাণপন চেষ্টা, মতা নিয়ন্ত্রক রাষ্ট্রীয় ও কর্পোটেট বিশ্বের ভাষায় নিজেকে চারিয়ে দিয়ে টিকে থাকার লড়াই এবং তাপ্পিমারা জীবনকে সহনীয় করার বিচিত্র উন্মাদনা ল্য করি এই বইটিতে: কথকটি নিজের আইডেন্টি অর্জন করতে চায় মূলত মনোলোভা সেলসবয় হিসেবে। আর এটাই বলতে গেলে আমার চোখে প্রথম টেক্সট যেটা আমাদের নগুরে প্রান্তীয় বর্গের এক নাগরিক সত্তার সুসম্পূর্ণ ছবি। যেখানে প্রত্যেকেই দায়জ্ঞানহীন উন্মাদনায় তলিয়ে গেছে মনোলোভা সেলস বয় হবার লোভে। এখানে এমন সব বৈশিষ্ট্য দুই মলাটে ধরতে গিয়ে অনিবার্য ভাবেই ভেঙ্গে গেছে ভাষার পরিচিত আদলটি। বিশেষ করে ভাষার প্রচল ব্যকরণ লঙ্ঘনের নমুনা বহন করে, যতিচিহ্নের ব্যবহারে তা আর প্রচ্ছন্ন নয়, বিপরীতে বেশ প্রকট। এবং প্রচল কাব্য স্বাদে অভ্যস্ত জিভের আরামেরও বারোটা বাজিয়েছে এটা। এভাবে এই বই একটা নতুন চেহারা নিয়ে আমাদের সামনে এসে হাজির হয়েছে। এমনকি অভ্যস্তভাবনা যে গড়-ঐক্যবোধ লালন করে রচনার শ্রেনীকরণ(এখানে কবিতা) বিষয়ে তা ভাঙ্গে নীরবে নয়, সরবে, অস্থি বা বংশীর গিট ফাঁটার টাস টাস শব্দ হয় যেনো। আর তাই তাকে ঘিরে নিরবতাও স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছে। আবার এই নীরবতাই এর নতুত্বের অভিজ্ঞান বলেও মনে হচ্ছে।



বাংলা সাহিত্যে এটি বিতর্ক সৃষ্টি করবে, বা হারিয়ে যাবে, বা এটা বিস্বাদ বা কিছুই হয়নি এসব পাঠকের কাছে সবসময়েই বিবেচ্য বিষয়, আর সমালোচকের কাছে তা আরো বেশি। হলেও তা এই মুহর্তে বিবেচনা করছি না আমি। কেননাÑ

সৃজনশীলতার েেত্র যে বেপরোয়া ভাবটি জরুরি সেটা কিন্তু এখানে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।

সৃজনশীলতার েেত্র যে বেপরোয়া ভাবটি জরুরি সেটা কিন্তু এখানে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।

সৃজনশীলতার েেত্র যে বেপরোয়া ভাবটি জরুরি সেটা কিন্তু এখানে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।

সংরণপন্থী সমালোচক তো এই গাঁট ফাটার শব্দে অজ্ঞান হবেনই এবং জ্ঞান ফিরে পেয়ে আবার বইটি হাতে নেবেন এবং বড় বড় চোখে তাকাবেনই এর দিকে এবং বেশিণ সহ্য করতে না পেরে হাত থেকে দ্রুতই ছুড়েঁ ফেলবেন জ্বলন্ত কয়লার এই অসহ্য টুকরাটি। তাকে স্বাগতম জানিয়েছিলাম সেকারণেই। তাকে স্বাগতম জানিয়েছিলাম সেকারণেই। তার বই প্রকাশের ভেতর দিয়ে। নতুন সাহিত্য মানে নতুন ভাষার কথা যদি বলি। তা হলে তাও একটা নতুন ভাষা-বুনন। আরো একটা ব্যাপার আধুনিক সাহিত্যের ভেতর যে হাহাকার এবং গাম্ভির্যের মেঘ গুম গুম করতো তা এখানে সেভাবে নেই। কিন্তু কান্নাটুক ঠিকই আছে। প্রায় অগোচর। কোথায় পাবো বল আমি কান্নার অবসর, এই ব্যস্ত নগরে, যেনো এমনই ভাব কথকটির এই বইয়ে। ফলে ভাষায় ও সুরে এটা অবশ্যই ভিন্ন হয়ে আছে। সাহিত্য ঐতিহ্যকে ধুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে বলেই এই টেক্সট নীরবতায় কেমন সমাহিত। প্রায় অগোচর। আর আস্বাদের ভিন্নতাই হয়তো এটাকে অনেকের কাছে বিস্বাদ নিরতায় ঢেকে রাখে। নতুন ধরনের লেখা নাকি নতুন ধরনের পাঠকের দাবী নিয়ে আসে। খুব অল্প সংখ্যক পাঠকই নতুন অভ্যস্ততার দাবী নিয়ে দাঁড়ায়, প্রতিটি যুগেই। এবং ক্রমেই তারা বাড়ে সঙ্খ্যায় এবং তীè হয়ে ওঠে সময়ের ধারাবাহিকতায়। এইসব অনাগত পাঠকের জন্যই কি রইলো এই বই? এখানে কি কেবল জানান দিয়ে রাখা? আবার এ ভুল বলেও প্রমাণিত হতে পারে কালের পরিক্রমায়। তাই কেই বা নেবে এই ঝুঁকি? নতুনেরাই নেয়। সাধারণত। এখানেও তা-ই ঘটলো লেখক ও আলোচক দুজনের েেত্রই।



আমাদের নাগরিক জীবন হাজারো অস্থিরতায় ভরা। আমাদের কানে উপচানো তথ্যের কোলাহল ও কলহ, চোখে হাজারো দেশের এলাকার তথ্যভরাট স্থির ও অস্থির দৃশ্য এবং হাতে ভারী পুচকে পুচকে অরের সমাপ্তিহীন চাররঙা তথ্য-স্রোতের মুদ্রণ। আর আমরা ঘুমিয়ে গেলে অর্থাৎ চোখ, কান, হাত নিভিয়ে ফেললে সাময়িক ভাবে এসবের ভারমুক্ত হই। অবশ্য আমাদের ঘুমেও এসব হামলা চালাতে চায়, চালায় আর তথ্যের প্রতি আমাদের নিবিড় সাড়া প্রদানের যে মতা তা প্রকাশের যে ধরন হয়তো তাকেও পাল্টে ফেলে বা একঘেমেয়েমি আমাদের সংবেদন ভোঁতা করেই দিয়েছে ইতোমধ্যে। আর আমরা বাধ্য হয়ে এখন তথ্যের ভার বহন করে বেড়াই, তথ্য উপভোগ করি না আর। তথ্যের দিকে আমাদের শিশুসুলভ বিস্ময় ফুরিয়েছে সে কবে। আর তথ্যের অবাধ (আসলে তা নয়) বন্যায় আমরা বাধ্য হই আমাদের প্রয়োজনীয় সংবাদটি বাছতে। না হলে আমাদের কাজের প্রয়োজনীয় সময়টাতো খোয়াবোই, সাথে আমাদের ঘুমের সময়টা খোয়াবো। তবু প্রতিদিনের তথ্যের এক তিলও পড়ে উঠতে পারবো না আমরা। আর তথ্যজীবীরা জানে এসব। ফলে সমস্ত তথ্য হয়ে ওঠতে চায় এখন শিরোনাম এবং শিরোনামের নামে বিজ্ঞাপন এবং এই বিজ্ঞাপন দেখে আমরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিই কোনটা পড়বো, শুনবো বা দেখবো এবং কোনটা না। ফলে আমাদের মধ্যে জড়িয়ে গেছে একধরনের তাড়াহুড়া এবং বাছাইয়ের বোধ এবং একই সাথে হাজারো তথ্য বাতিল করার এবং নাগাল না পাওয়ার বোধ। তথ্য হাতের নাগালে থাকলেও, নাগাল মেলে না আর। তথ্যের একে অপরের গায়ে ধাক্কা দিয়ে পাঠকের কানে চোখে হাতে ওঠে আসার অনিবার্য এক প্রতিযোগিতা আমাদেরকে যেমন ঝলসাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে তেমনি আমাদের নির্বাচনের বোধকেও তীব্রতর করছে। বিরামহীন তথ্যস্রোত সারাণ একটা তীব্রগতির তাড়াহুড়া আমাদের মাঝেও জাগিয়ে রাখছে। আর এরই নমুনা এসে আছড় করেছে কথকটির জানানো-দেখানোর-হাতে-ওঠিয়ে-দেওয়ার বর্ণনা-কথা-শ্র“তি-স্থির-অস্থির-দৃশ্যাবলির উপস্থাপনে। নাম বা দৃশ্য শেষ হতে না হতে অন্য নাম বা অন্য দৃশ্য বা অন্য কিছু। বাক্য শেষ হতে না হতেই আরেক বাক্য, একটি বাক্যাংশের গায়ে এসে আছড়ে পড়ে অপর বাক্য বা বাক্যাংশ। বাক্য শেষ হতে না হতেই ভেঙ্গে বা উপচে পড়ে যায় নিচের পংক্তিতে অপর বাক্যের গায়: যেনো আগের বাক্যটিরও আগে তার আবির্ভাবের কথা ছিলো বা জরুরত বেশি। দাড়ি কমা সেমিকোলকে ঝেটিয়ে পিছু ফেলে, যেনো শব্দ স্রোতের প্রতিবন্ধক, বাক্য-দৃশ্য-বিষয় ভেঙেচুড়ে ফুরসতহীন একজটলা এক ভীড় এক অনিবার্য স্রোত তৈরি হয়, হতে থাকে: বেগবান, পড়–য়াকে ছাপিয়ে প্লাবিত করে চলে। পড়ৃয়া বরং পিছে পড়ে যায়। পাঠের প্রশান্ত ও ধীর, স্বচ্ছন্দ ও নির্ভার, উৎকন্ঠাশূন্য ও আয়েসি ভাবটাকে তছনছ করে দেয় এই বই এবং বিনিময় হয় অজস্র আকর্ষণীয় আবজর্না উপচে ওঠে আসা বিরক্তি। ধূর, এটা কী, কী লিখলো সে। আর নিজেকে দেখতে যে ভুলে না কেবল সে, যে দেশ-কাল সজাগ সে, বুঝবে কেমন একটা বিশ্রি এবং সংবেদন ভোঁতা করা এক নিশ্ছিদ্র আয়োজন পাকা হয়ে গেছে তাকে ও তার চারপাশ ঘিরে এবং এর মাঝে আটকা পড়ে আছে সে কত দিন। কত কত দিন এরই মধ্যে গড়িয়ে গেছে। সেই অনুভূতিটুকুই যেনো পুরো বইটির মধ্যে ফুটে ওঠেছে। বইটি যেনো পাঠককে বিট্রে করে, যেমন বেকেট বলেছিলেন আমি দর্শককে বিরক্তই করতে চাই। নিত্য তাড়াহুড়ার এক বিকট উপস্থাপন এই বই।



মজার ব্যাপার এখানে মানুষ নিজেকে পন্য হিসেবে কল্পনা করে কিন্তু সফল সকলে হতে পারে না। এবং এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি। আর নিজেদের সাজাতে চাওয়া মেয়েদের ছবিটা বেশ ধরা পড়ে ঐতিহ্যে আর আধুনিকতায় মেশানো একটা ফাঁপা মলাটের মতো যেনো এই সাজ। যেখানে মনটা আর দেহটা মনে হয় আধুনিকতা আর তার বানানো জগতের বিজ্ঞাপিত রুচির মাপকাঠিতে বাজারের দাস হিসেবে নিজেকে আবিস্কার করে পুলক অনুভব করার চেষ্টা করে। আর পোশাকে কেবল ঐতিহ্যকে ধারণের চেষ্টা যা বণিক বৃত্তিরই নিপুণ ফাঁদ যেনো। উপনিবেশিক মনন এখানে রাজত্ব করে চলেছে কিন্তু এই মনন যতই তাকে প্রলোভন দেখাক, বাজারের দাশ বানাক, তার উপর আধুনিকতার এই নির্মিত চাহিদার ব্যাপক চাপ নিবারণে যে অর্থনৈতিক ভিত্তি থাকা দরকার তা কখনই অর্জিত হতে দেওয়া হয় না তাকে। করে রাখা হয় দরিদ্র আর স্বপ্ন দেখানো হয় অনর্গল। এর পাশাপাশি সেও অন্যদের স্বপ্ন দেখাতে বলে এবং দেখতে বলে অপরকে। কিন্তু স্বপ্ন তার হয়ে ওঠে মুক্তবাজারের চাপে বর্ণবাদী ইউরোপীয় মানদন্ডে নিজেকে সৌন্দর্য্য চর্চায় উন্নীত করার দমবন্ধ প্রচেষ্টা। এভাবে তৃতীয় বিশ্বের একদার কলোনিভুক্ত মানুষগুলো নিজেকে প্রাক্তন প্রভূর মতো এবং বর্তমান কর্পোরেট-প্রভুর মতো হয়ে ওঠতে চায়, যেনো তাকে যৌক্তিক, আধুনিক বিজ্ঞানমন্য, মতাময়, সর্বোপরি দ্রুত খাপখাওয়াতে সম, সুশীল, পরিবর্তনময় ও হালফ্যাশনের দেখায়। কিন্তু তার জন্য অপো করে কেবলই চলনসই পন্য হয়ে ওঠার প্রার্থণার দীর্ঘ ব্যার্থতা। পারিবারিক বন্ধন অনুভবের ভেতর লালন করে চলা কিšতু তার প্রতি যত্নবান হতে না পারা। এবং নিজ আত্মীয়ের সাথে যোগাযোগহীনতার প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে শেকড়ের টানে ক্রমে কান্নার হাতে একাকি ধরা খাওয়া। পন্যবাজারের প্রশংসা নিরুপায় চালিয়ে যাওয়া। নিজেকে নিজেই দেখতে পায় বাই প্রডাক্ট হিসেবে এবং চির অনাদায়ী দেনা হিসেবে। দুএকটা মুদ্রা পেলেই আত্মঘাতী কাজে নিজেকে বিলিয়ে দেয় সে বা দেয়ার প্রতিশ্রুতি ছড়ায় এবং চারপাশে জাগিয়ে তোলে ধ্বংসের তীব্র সংকেত বা ছড়িয়ে দিতে চায়। আর এতো কিছুর পরও সে নিজের স্বজনদের সুস্বাস্থ্যের আশ্বাস দিতে পারে না। বরং বলে বসে এবার তোমাদের কুয়োতলায় বসিয়ে দেবো ধুমড়ানো তুবড়ানো মুখ। এমনি অভিমান তার। যেনো ট্রমার পূর্ব পর্যায়। মুক্তবাজার আর এর বিজ্ঞাপন নিমির্ত স্বাধীনতার সারমর্ম ধরা পড়ে এর প্রশংসাকারীর নিজের জীবন পরিচালনার ব্যর্থতায়। আর এই স্বাধীনতা যখন কোন অর্থ বহন করে না তখনো আমরা নিজেকে আক্রন্দন হৃদরহিত যাত্রায় নিজেদের ফাঁপা স্বাধীনতায় ফাঁপিয়ে রাখি। আর এই চেহারাটিই এই গ্রন্থ থেকে বেরিয়ে আসে।

ফলে এই বাজার অর্থনীতির সময়ে তৃতীয় বিশ্বের এক মানব সত্তা অনেক ধরনের দুটানায় ভূগেন। একই সাথে সোভিয়েততন্ত্রের পতন তাকে বিচলিত করে, অবলোকন করেন মায়ের সহাস্যমুখের ধৈর্যের বিভিন্ন আদল অথচ কর্পোরেট পুঁজিবাদের প্রতি ভীষণ টান। আবার নিজে পন্য হবার ব্যর্থতা। এমন কি শেষে আবিষ্কার করে বসেন যে সে যেমন ভাইবোন মা বাবা আত্মীয় স্বজন থেকে ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছে, তেমনি তার বাজার নিয়ন্ত্রিত প্রেমিকাটিও কেবলই দূরগামী এবং এর নিহিত কারণ আর কিছুই নয় তার আর্থিক দূরবস্থা। একই সাথে তার নিরবতা এবং প্রেমিকার যন্ত্রণা ও দুঃখমুখর সময়ে নিজেকে বোবা হিসেবে আবিস্কারও এর কারণ। এবং ভুল ঠিকানায় বারবার নির্জন সম্বন্ধের মৌয়ায়াল হয়ে ওঠা ছাড়া আর গন্তব্য থাকে না এ

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মে, ২০০৮ দুপুর ১:১৪

রথো রাফি বলেছেন: রিমিক্স মৌয়ালের শব্দঠোঁট
(বাকি অংশ)

এবং আবিস্কার করে যে যেখানেই যাকনা কেন সে আসলে সবখানেই উদাবাস্তু বা মণ্ডপহীন। আর ভুল ঠিকানায় শহর উপচানো। এই করুণ গল্প অবশ্যই ইউরোপীয় কোন দেশের বা আমেরিকার কোন প্রদশেরও গল্প কিনা আমি জানি। আসলে এ গল্প একদার কলোনি এবং তৃতীয় বিশ্বভুক্ত দেশ বাংলাদেশ তথা যেকোন তৃতীয় দেশের। এর নাগরিক যে দেশেই যাক না কেন তারও হয়তো বা।

এধরণের চরিত্রের চোখে লোকাল বাজারের ধস চোখে পড়লেও বিজ্ঞাপন নির্ভর বিলাসী সামগ্রির বাজারের দিকে চোখ কেমন লোভীভাবে তাকিয়ে থাকে কিন্তু এই ত্র“টি এই স্ববিরোধ নিজের বেলা দেখতে পায় না কেউ এবং তারা অন্যকেও একই কাজ করতে প্ররোচিত করে চলে ।

সাহিত্য নাকি আত্মার ভাষা আর বলুন তো এতো কিছু ভেবে কি রচনা পড়া যায়। আর কে বিজ্ঞাপনের এই বাজারকে সাহিত্যে(কবিতার) মূলবিষয় করে তুলেছে? সেই কবে শঙ্খ ঘোষ একবার আর্তনাদ করে উঠেছিলেন: মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। কিন্তু আজকের একজন বরং বিজ্ঞাপনে শেষপর্যন্ত মুখ সফলভাবে ঢাকতে না পেরে কাঁদেন কাঁদতে থাকেন এবং পূর্বাপর প্রার্থনা করে চলেন ক্ষুধার্ত পেট নিয়ে তাকে যেনো ক্রেতামুখী পন্য করে দেওয়া হয় কান্না ও হেঁচকি জুড়ে জুড়ে! আর অর্থাভাবে নিরুপায় একের পর এক বাসা বদল করে চলে রাজধানীর এ মাথা থেকে ও মাথায়,দুদণ্ড স্বস্তি মেলে না, প্রতিটি লেনদেন অর্থেও ভাষায় অনূদিত করার ব্যর্থতায়।

কবিতার ভেতর দ্রোহ দেখে চলায় অভ্যস্ত যারা এই ধরনের আত্ম সমর্পন হয়তো তারা মেনে নিতে পারবেন না কিন্তু এইখানে কথক সত্তাটির বিবেকি মন, যা আসলে এই নগরির আর আটদশজন সাধারণ নাগরিক মনের প্রতিনিধি, কোন পক্ষ না নিয়ে বরং নিজের জীবনীর রাখঢাক না করে উপস্থাপনের ভেতর দিয়ে নিজেকে অপরের ও নিজের আয়না করে তুলতে চেয়েছে। যে আয়নায় মুখ দেখলে, যারা সচেতন. নিশ্চয় বলবে, না এই মুখ আমি আমার জন্য চাই নি। জ্যোতি পোদ্দার লিখতে চেয়েছে লিখেছে তার কবিতা বা তার মনের কথা (একসময় সেও আমার সাথে এসবকে কবিতা না বলে কেবল রচনা বা লেখাই বলাতেই সহমত ছিলো) সে কাউকে শিক্ষা দিতে বসে নি আর আমরা পড়তে এসেছি সাহিত্য রচনা বা কিছু লেখা, শিখতে বসিনি,অভ্যস্ত মন যাকে কবিতা বলেই ভাবে কিন্তু তার যে মসৃণ বাক্যরাজির অভাব তা আমাদের তাড়িত করে কবিতার চেয়ে একটু ভিন্ন কিছু ভাবতে। যদি এভাবে ভাবা যায়, পাঠকের নিজের ভাবাদর্শ নিশ্চয় এই বই সম্পর্কে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে দেবে; যেটা বাজারের অনুকূলে বা প্রতিকূলে যাবে। আর কে না জানেন আজকাল পাঠের পরবর্তী কোন সার্বজনীন প্রতিক্রিয়া নেই। শ্রেণী চেতনার ভেতরে থেকে পাঠক পাঠবস্তুর প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে এবং এর ভেতর দিয়ে স্বশ্রেণীর জন্য আহরণ করে আয়ুধ। ফলে পাঠবস্তুতে যেই কথাই ব্যক্ত হোক বা পঠন পরবর্তী যে প্রতিক্রিয়াই বেরিয়ে আসুক তা আর শ্রেণী-প্রভাবমুক্ত থাকে না।
রাজা আর জমিদারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রতিনিধি ছিলো গীতিকবি, পুরোহিতরা। আর বিজ্ঞাপন নির্মাতারা ফাটকাপুজিঁর প্রচার প্রতিনিধি। আর তাদের কণ্ঠই দেখি সপ্তমে চড়া কথক সত্তাটির মুখে কিন্তু আতœজীবনীর পৃষ্ঠাগুলি যখন উড়ে আসে গুলির মতো হননোদ্যত হয়ে, দেখতে পাই স্বরিরোধে আক্রান্ত এক অসহায় সত্তাকে, যে নিজের ইচ্ছায় কর্পোরেটের বানানো জালে ক্রমে ক্রমে আটকে কুচকে যাচ্ছে। আর তাকে যেনো শিকারী গ্রহনও করলো না, ফলে উঠানের জালে আটকে থেকে রোদে শুকায় এবং শুটকি হয়। এই তার নিয়তি। কেবলি আত্মঘাতী কর্মে লিপ্ত থাকা। লভিল জনম আমার সমদর্শী ক্রিয়াকোলে বলে গর্বিত হলেও ক্ষুধার্ত থেকে যাওয়া এবং রোদফাগুন ডিজাইনে অনুক্ত থেকে যাওয়া, এবং যেখানেই যাক মণ্ডপহীন থেকে যাওয়াই কথকটির নিয়তি। আর এসব এই টেক্সটি পড়লে বহুস্তর ভেদ করে কথকের অলক্ষ্যে অসমদর্শী ক্রিয়াকোলেই যে তার জন্ম ও জন্মান্তর আমরা তা দেখতে পাই। পায়ের নিচে মাটি নাইÑ তাই ভাষায় নিয়েছি নিরুপায় আশ্রয়। পূর্বাপর আরো অনেক কবির মতো তারও এমনই উচ্চারণ। এই তো কথকের স্বরূপ। এখানেই সে আমাদের সাথে সাদৃশ্য বহন করে। তৃতীয় বিশ্বের এক অসুখী সত্ত্বা, যে অন্যের মুখোশে নিজেকে ঢেকে সুখি হতে পারে না শেষপর্যন্ত। আর তাই ভাষাবৃষ্টিপাত, আর ভাষার শব্দগুলো বা ফোটাগুলো উর্বরাপ্রদ কিছু নয়, অশ্র“ হয়ে নেমে আসে পলিভূমে। এসব লেখার ভেতর দিয়ে ফের, পুঁজিবাজারের মুগ্ধতা সঞ্চারি ক্ষমতা যেমন টের পাই তেমনি এর ভূয়া রূপটিও অনুভূত হয় আমাদের। তৃতীয় বিশ্বে একজন নাগরিককে এটি কিভাবে আত্মঘাতী করে তুলে সেই রূপটাও। আমাদের স্ববিরোধী স্বরূপ। উঠানামা বাজারদরেই কেবল আমরা এক অপরের কাছে পরিচিত বা বিবেচ্য হয়ে ওঠি। পন্য হিসেবেই একে অপরকে কেবল বিবেচনা করতে পারি আর যাবতীয় মানবিক পরিচয়গুলি কেবলই চাপা দিতে থাকি এবং এক সময় আবিস্কার করি আমার অতীতও নেই, ভবিষ্যৎও নেই। যোগাযোগের কেন্দ্রগুলো হয়ে ওঠে অতীতের সেই বিভীষিকা লর্ড কর্ণওয়ালিশ। ভিন্ন উপায় আমাদের জন্য আর খোলা রাখতে পারি না। নয়া উপনিবেশিক পরিস্থিতির চেহারাটা কেমন বিকট হয়ে ধরা দেয়।

মনে হয় উৎসবের ছোট্ট মঞ্চটি কেবল আলোয় উপচানো আর বাইরের গোটা পৃথিবী গভীর অন্ধকারে তলানো। তাই আলো নয়, আলোর প্রদর্শনীই অধিক মনোলোভা মনে হয়। পৃথিবীব্যাপী উৎসবটি তাই প্রচার পায় আর পুরো পৃথিবীটিই মঞ্চে অনুক্ত থেকে যায়। আমরা জানি কেবল আলোর খবর, অন্ধকারের খবর আর আমরা জানি না এই মঞ্চ থেকে। এই দুই মলাটে ধরা খাওয়া কথকটিও সমদর্শী নয়। কেননা দুই মলাটের মধ্যে সেই অন্ধকারের খবর আসে হঠাৎ হঠাৎ, তবে বিরল নয় কোনভাবেই। উৎসবের মাঝে আলোর খবরের ভীড়ে দুঃসংবাদের মতো, খুব নিচু স্বরে। এ দেখতে ছোট কিন্তু আলোশোষণে এগুলো সত্যিই কৃষ্ণবিবরের মতো।
আর কবিতা তো আরো কতভাবেই পড়া যায়। আমি এভাবে পড়লাম। আর এও সত্য কবিতা জীবনের, সমাজের প্রতি ছুঁড়ে দেয়া সমাধান, বা সত্য নয়, কিন্তু এদের কেন্দ্র করেই এক নিগূঢ় অনুভব রাশি।

আপনি পড়–ন আপনার মতো, যদি ইচ্ছে হয়। আর আমাদের ইচ্ছে হলে জানতে দিয়েন যে আমি কোনকোনভাবে পড়তে পারি নি এই বই। আমাকে পাঠক চুক্ষু দিহ, কেননা: সাঁতার শিখিনি বলে ছদ্ম-মূলকথা পারি নি বোঝাতে! আর মনে হয়, কেননা, যোগাযোগশূন্যতায় স্বাধীনতারও অনুভব নাই। ......................................................................................

বই: রিমিক্স মৌয়ালের শব্দঠোঁট
লেখক: জ্যোতি পোদ্দার
প্রকাশকাল: ১৪০৮ বঙ্গাব্দ
প্রকাশক: কাঠের শরীর
পরিবেশক: জনান্তিক
......................................................................................

স্মরণ: মাঈন মজুমদার, মাসুদ পথিক Ñ যারা জ্যোতির লেখা মুদ্রণ করেছিলো। মুজিব মেহেদী Ñ যার সাথে তার এক ধরনের মতবিনিময় হতো। অমিতা চক্রবর্তী, সুফিয়ান সজল, রিসি দলাই, মুজিব মহম্মদ প্রমূখ Ñ যারা তার বইটি নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছিলো। সুমন সাজ্জাদ Ñ যে বইটি সম্পর্কে লিখেছিলো। এবং আমীর খসরু স্বপন Ñ যে বারবার এটার উপর নিজে লেখার ইচ্ছা আমাকে জানিয়ে আসছিলো, কিন্তু তার হয়ে ওঠলো না আজো।

২| ১৩ ই মে, ২০০৮ রাত ১১:৪৪

আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:

ভাইরে ! এইটা আপনাকে পর্ব কইরা ছাড়ন উচিত আছিলো ! এতো বড় লেখা পড়নের ধৈর্য এইখানে কারোর নাই ।

৩| ১৪ ই মে, ২০০৮ বিকাল ৪:০৪

রথো রাফি বলেছেন: thanks for ur comment.

৪| ১৫ ই মে, ২০০৮ দুপুর ১:৪০

মাঠশালা বলেছেন: @আবদুর রাজ্জাক শিপন,
এর চাইতে বড় পোষ্টও সা.ইনে দেয়া হয়েছে।

@রাফি ভাই,

অনেক দেরিতে পড়লাম। অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বই সামনে আনার জন্য আপনার থ্যাংকস প্রাপ‌্য। আর আপনার লেখাটির কথা বরাবরের মতই। ভাল লেগেছে একটা বইয়ের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আপনি যেভাবে চুলচেরা পদ্ধতিতে এগিয়েছেন তা আমাদের বাজারি রিভিউ পদ্ধতির ভেতর আটকে পড়া পরিস্থিতি থেকে ভিন্নতর এক উদাহরণ হিসেবে থাকল। দৌড়ের উপর পড়লাম, হয়ত বলতে চাই এমন কিছু আর বিরোধীতা করতে চাই এমন কিছু এই পড়ায় মস্তিস্ক নিল না। পরে আবার জানাব।

আপনার কবিতা পড়তে চাই।
ভাল থাইকেন।

১৫ ই মে, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৫

রথো রাফি বলেছেন: ধন্যবাদ।
যেহেতু লেখাটি এখনও স-বিচার ও স-তর্ক মন নিয়ে পড়া হয়নি, সেহেতু মনতব্য কতটা গৃহীত হতে পারে, তা নিয়ে শংসয় থেকেই যায়।
আশা করি একসময় এর পক্ষে ও বিপক্ষে তোমার অবস্থান জানতে পারবো।

৫| ২১ শে মে, ২০০৮ দুপুর ১২:৪৯

মুয়ীয মাহফুজ বলেছেন: অনেক সময় নিয়ে এটা পড়া দরকার।আমি মোটামুটি অর্ধেকখানি পড়লাম,বাকিটুকু পড়ে মতামত জানাব।তবে মতামত দেয়ার আগে আমি আলোচ্য বইটি পড়ে উঠতে চাই।তাই আমি একটু সময় নিলাম।

তাই প্রিয় পোস্টে গেলো।

কেমন আছেন রাফি ভাই।

কবিতা পড়তে চাই।


ভালো থাকুন।

২১ শে মে, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৩

রথো রাফি বলেছেন: ধন্যবাদ। বইখানি জনান্তিকে পাওয়া যাবে। তোমার নতুন কবিতা কই?

৬| ২৮ শে জুন, ২০০৮ দুপুর ১২:১৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: উত্তম প্রগমণতা।

৭| ২৮ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:১৭

আয়শা ঝর্না বলেছেন: রথো জ্যোতির এই বইটা আমার ও ভাল লেগেছিল, কিন্তু লিখব লিখব করে লেখা হয় নাই। যাক অনেকদিন পর তুমি লিখলে। আর একটু সহজ করে বললে কি হতো? যা হোক এ তোমার লেখক স্বাধীন ইচ্ছা। জ্যোতি কেমন আছে ওর লেখা আেনকদিন দেখি না। তোমার লেখার খবর কি?

৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:২২

জেসন বলেছেন: আমি সাধারণ মানুষ, বুঝি না, সম্পূর্ণ লিখাটা পড়ে শেষও করতে পারি না। পরে সময় করে আবার পড়ব।

৯| ১০ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:৫৫

রথো রাফি বলেছেন: পরে সময় করে একদিন পড়বেন_ এ আশ্বাস সম্ভবত আপনি নিজের জন্যই সঞ্চিত রেখেছেন। একইসাথে, আমাকেও আশ্বাসিত করেছেন বলে ধন্যবাদ। আর আপনার ইচ্ছা একদিন পূর্ণতা পাক, তা যত ধীরেই ঘটুক না কেন_এমন ইচ্ছাও আপনার জন্য পোষণ করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.