নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রথো রাফি লেখালেখি গাণ্ডীব, অনিন্দ্য, শিড়দাঁড়া এবং দ্রষ্টব্যেই । মূলত কবিতা অন্তঃপ্রাণ তবে গদ্যও লিখেছি কিছু। অনুবাদেও আগ্রহ আছে। বই এখনো নাই। জন্ম: দক্ষিণ তারুয়া, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বসবাস ঢাকায়। প্রকাশনা সংস্থায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ফ্রিল্যান্স কাজ করছি। [email protected]
আর সবার মতোই নিজের ব্যর্থতা মেনে নিয়েছে লোকটা। তবু সন্তানের সফলতার স্বপ্ন দেখে দেখে, মাঠে, দিনের পর দিন, লড়ে গেছে সে। তারপর আরো অনেকের মতোই, আবিস্কার করেছে, তারই মতো, এক সিকি সফলতা আর তিন সিকি ব্যর্থতায়, হাওয়ার তোড়ে, কোথায় যে ভেসে গেছে, ওই প্রিয় সন্তানেরা। সে জানতো, এসব, কিন্তু মানতো না।
সে যেমন নিজের তিন সিকি ব্যর্থতা নিয়ে, নিজের মা বাপ থেকে, ছিটকে গিয়েছিলো নিস্প্রদীপ প্লুটোর মতো, অনেক দূরে, নিরুপায়। সাড়া দিতে পারতো না, তাদের ডাকে আর। অথচ ওই সব ডাক ছিলো আর্তনাদেরই নিখাঁদ নম্র প্রকাশ। কিংবা বহুবছরের গভীর স্নেহই কেবল কোমল ডাকে রূপান্তর করে দিতো তাদের ওই আর্তনাদকে। কিংবা ওই সব ডাক শুনে নিজের শিশুর মুখই মনে হতো আরো বেশি জরুরি। কিংবা এবার তার শিশুরাও, তাদের শিশুর প্রতিই হয়ে এলো এবার অনেক অনেক বেশি মনোযোগী। আর নিজের সর্বস্ব দিয়ে গড়া এক পৃথিবীতে, শুধু সেই এখন অর্থকড়িহীন। নিজের বাবার মতো সেও, এবার, নিজের সন্তানদের ডাকছে, আর ডাকছে, আর ডাকছে। আর নিজের শিশুর শিশুদেরই মধুর কোলাহল সে শুধু শুনতে পাচ্ছে চারদিকে, কিন্তু নিজের সন্তানদের একটা শব্দও, সে আর শুনতে পাচ্ছে না, যেনো, কোথাও।
কিংবা সে জানতো, আসলে এমনই হয়, আর ভাবতো, এই পৃথিবীটা আসলে ভিন্নরকমও হতে পারতো। কিন্তু আজও, তেমন হয়ে উঠেনি।
আর তার জন্য তার বাবার বাবার মতোই, এবার, একটা অতি সাধারণ সূর্যাস্ত, কী নিরাবেগ, অপেক্ষা করছে। হ্যাঁ, প্রতিটি মুহূর্তেই। কিংবা তবু একাকিত্বের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে, মানুষ, কিভাবে একা হয়ে যায়, এসব নিয়ে সে ভাবছে না আর।
সেও ভাবছে আগামিকাল হয়তো সূর্যটা একাই জাগবে, কিংবা জেগে তাকে খুঁজে পাবে না আর। কিংবা বহুকাল আগের ওই হলুদ রোদ, হলুদ প্রজাপতির মতো, তখনও খেলা করবে তার শিশুর শিশুদের নিয়ে, সেই আগের মতোই। তার মনে হলো, ওই শিশুরা যেনো ভিন্ন কিছু নয়, আসলে, তার নিজেরই কয়েকটা ছবিমাত্র। যাদের সে দূর অতীতে, কবে, ফেলে এসেছে। কিংবা তাকে একা ফেলে রেখে, তার অতীত থেকে, ওরা দূর ভবিষ্যতের ভেতরে, কখন যে পালিয়ে গেছে। এখন এসব ভেবে বিস্মিত হচ্ছে না সে আর।
আর সবার মতোই, একা একা, সে সূর্যাস্তের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখছে, কিভাবে ধীরে একটা পৃথিবী, প্রতিদিনই, অন্ধকার হয়ে আসে। যার ব্যাতিক্রম, কোনদিনই ঘটেনি। কিংবা তার বাবার বাবার বাবার মতোই এবার সেও অনুভব করছে, নিজের অস্তিত্বহীনতার এই ভার।
১১.০২.২০১৪
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:৪২
তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ভাল লেগেছে আপনার কথাগুলো।