নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

এল আঁধার ঘিরে

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:১২


“তোমাকে নিয়ে একবার হাতিরঝিল গেলাম না?” মধুকে জিগ্যেস করল তূর্য।
“না।” মধু বলল, “ওটা আপনার কল্পনা ছিল। সারা দিন চিন্তায় থাকেন তো, তাই মাথা ঠিক নেই।”

খুব অবাক হলো তূর্য। এমনও হতে পারে? ওর স্পষ্ট মনে হচ্ছে ও মধুকে নিয়ে রামপুরায় হাতিরঝিল গিয়েছিল। কিন্তু কবে গিয়েছে, তা মনে পড়ছে না। কোথা দিয়ে গিয়েছে? মৌচাক-মালিবাগ পার হয়ে না কি বনানী থেকে এসে? মধু ফার্মগেট থেকে এসে কোথায় নেমেছিল? কোনো কিছুই খেয়াল হচ্ছে না।

মধু দুষ্টুমি করছে না; এটা নিশ্চিত। এমন ভুলে যাওয়া রোগটা বেশ কিছুদিন ধরে হয়েছে তূর্য’র। একবার অফিসের মালিকের বাসায় গেল। গিয়ে ঠাহর করতে পারল না কোনটা মালিকের ফ্ল্যাট! অথচ সে মাঝেমধ্যেই সেখানে যায়।

ভুল করে চার তলায় উঠে গেল। কলিং বেল চাপতেই মালিকের বোন বেরিয়ে এলেন। জিগ্যেস করলেন, “কিছু বলবে?”
“নিচে এসেছিলাম। ভাবলাম আপনাদের কোনো দরকার পড়ে কি না।” তূর্য বলল।
“ধন্যবাদ। আপাতত দরকার নেই।” ম্যাডাম বললেন।

তূর্য নিজের প্রত্যুৎপন্নমতিত্বে বেশ অবাক হলো। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।

সে যতবারই বনানী যায় মালিকের বাসায়, ততবারই ফ্ল্যাটের নম্বর ভুলে যায়। বিষয়টা কিংবদন্তি পর্যায়ে চলে গেছে। একবার বনানী গেল। মালিক আসতে বলেছিলেন। গিয়ে কলিংবেল চাপল কিন্তু কেউ বেরোল না। অনেকক্ষণ পর ২৭-২৮ বছর বয়সি এক ছেলে বাইরে থেকে এল। তার হাতে বাজারের ব্যাগ। রুমের তালা খুলতে খুলতে জিগ্যেস করল, “কার কাছে এসেছেন?”
“রেজওয়ান স্যারের কাছে।” তূর্য বলল।
“ওনি তো সিলেট গেছেন।”

হতবুদ্ধি হলো তূর্য। কারণ, স্যার সিলেট গেলে তো বলে যাওয়ার কথা। ওনি আজ সকাল এগারোটার মধ্যে বনানী আসতে বলেছিলেন।

ড্রইং রুমে ঢুকে কিছুক্ষণ বসে ছেলেটার সাথে গল্পগুজব করল। তার নাম শিমুল। হঠাৎ মালিক ফোন দিলেন। জানতে চাইলেন, “তুমি কোথায়?”
“তিন তলায়।”
“ওখানে কী করো? দ্রুত দু’তলায় এসো।” মালিক তাড়া দিলেন।

তূর্য অবশ্য এ রুমে ঢুকেই কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল ভুল জায়গায় এসেছে। কারণ, এখানকার ড্রয়িংরুম অফিসের মতো। অনেক চেয়ার বসানো। মালিকের ড্রয়িং রুম ঠিক এমন না। আঁচ করলেও ও দ্বিধাদ্বন্দে ছিল। কারণ, এখানকার মালিকের নামও রেজওয়ান। বিষয়টা মালিককে বললে ওনি ভর্ৎসনা করে বললেন, “আমার নাম রেজওয়ান বিন আমিন। তুমি তো আমার নামই জানো না।”

মজার ব্যাপার হলো, মালিকের স্ত্রীর নামও শিমুল।

যাহোক, আইন্সটাইনের ভুলে যাওয়া নিয়ে কিংবদন্তি ছড়ালেও তূর্য’র ভুলে যাওয়া কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথা থেকে কোন খবর এলো, কী করতে হবে, কোথায় যেতে হবে- কোনো কিছুই মনে থাকে না। কাজে বারবার ভুল হয়ে যায়। মালিক ডায়েরি রাখতে বললেন। যেন সবকিছু টুকে রাখে। কিন্তু সব কি লেখা যায়?

সেদিন ঘটল এক ঘটনা। তূর্য একটা কাজে বাইরে গিয়েছিল। মালিকের কাছে তার রিপোর্ট পেশ করল। মালিক বললেন, “ঠিক আছে। জলিল আর শহিদুলকে ওপরে পাঠিয়ে দাও।” প্রসঙ্গত জলিল হচ্ছেন গাড়িচালক আর শহিদুল বাসার তত্ত্বাবধায়ক।

তো তূর্য নিচ তলায় নেমে ওদেরকে বলল, “লিফটের তিন চেপে উপরে যান।” হঠাৎ খেয়াল হলো, তিন চাপলে তো পার্লারে চলে যাবে। চার চাপতে হবে। ওখানে প্রিন্সিপাল ম্যাডামের রুম। মালিক ওখানেই আছেন। এটা বলতে দৌড়ে আসতে আসতেই জলিল-শহিদুল উপরে উঠে গেছে।

কিছুক্ষণ ওর মালিক ফোন দিলেন। বললেন, “ওদের তিন তলায় পাঠিয়েছ কেন?”

কী বলবে তূর্য? বলল, “ভুল হয়েছে।”

এমন ভুল তার বরাবরই হয়। লিফটের তিন যে চার তলা; এটা ওর খেয়াল থাকে না।

চলবে...

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:২০

জুল ভার্ন বলেছেন: বাহ! খুব সুন্দর লেখা। শেষ হইয়াও হইলো না শেষ!

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:২৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আচ্ছা!

২| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: মন্দ নয়।

১৪ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৩৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন:

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৩২

আহমেদ জী এস বলেছেন: রূপক বিধৌত সাধু,



ভুল সবই ভুল
এ জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা...............

১৪ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৩৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সংশোধনেরও সুযোগ হয় না।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:০৮

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: মেমোরী ডিজওর্ডার।

অবিলম্বে মেডিকেশন।

২২ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:৫৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এত অস্থিরতার মাঝে মেডিটেশনে মন বসানো তো কঠিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.