| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের রাজনীতি: জোট, বৈদেশিক প্রভাব ও অনিশ্চয়তার গভীর সন্ধিক্ষণ
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এখন বহুমুখী অনিশ্চয়তার এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে আছে। নির্বাচন সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সম্পর্ক, সম্ভাব্য জোট গঠনের আলোচনা, প্রশাসনিক আচরণ, আন্তর্জাতিক চাপ এবং ডিপ স্টেটের পর্দার আড়ালের কৌশল—সব মিলিয়ে রাজনীতির অঙ্ক কঠিনতম জটিলতায় পৌঁছেছে। এই সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, যার ফলাফল দেশের ভবিষ্যৎ ক্ষমতার রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিএনপি–জামায়াত–এনসিপি: অনিশ্চিত সমীকরণ
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি—তিনটি শক্তি বর্তমানে রাজনৈতিক আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রে। জামায়াতের ভোটব্যাংক বা সংগঠনগত শক্তি নিয়ে সংশয়, এনসিপির নতুন মুখ হিসেবে সীমিত মূল্যায়ন, আর বিএনপির উপর জটিল প্রশাসনিক চাপ—সব মিলিয়ে তাদের রাজনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্লেষকদের মতভেদ স্পষ্ট।
আওয়ামী লীগ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাড়তি দৃশ্যমানতা
রাজনীতির এই পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে ঘিরে নতুন এক মাত্রার আলোচনা সামনে এসেছে—আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের সক্রিয় কূটনৈতিক উপস্থিতি এবং দৃশ্যমান প্রভাব বৃদ্ধি।
বিশেষত—
** শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার ও উপস্থিতি,
** এসব গণমাধ্যমের প্রচার কাভারেজের মাত্রা,
** এবং কাতারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপদেষ্টা খলিলের অংশগ্রহণ, যেখানে বাংলাদেশ নির্বাচন–সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্রীয় আলোচনা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে,
এসব ঘটনাকে বিশ্লেষকরা আওয়ামী লীগের কৌশলগত বৈদেশিক সক্রিয়তার নির্দেশক হিসেবে দেখছেন।
এতদিন বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সাধারণত মানবাধিকার, স্বৈরাচার বা সংকট—এসব আলোচনার মাধ্যমে দেশটিকে ফ্রেম করত; কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তারা শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার, নীতি ও বক্তব্যকে উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করছে, যা দলটির বিশ্বমঞ্চে পুনরুত্থানশীল কূটনৈতিক উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।
সুতরাং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষণে আওয়ামী লীগের এই বৈদেশিক কৌশল ও প্রভাবকে এড়িয়ে গেলে পুরো প্রেক্ষাপট অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
বিদেশি ব্যবস্থাপনা ও সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিকল্পনা
এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিছু শক্তি যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে—এমন ধারণাও আলোচনাকে আরও জটিল করেছে। কেউ দাবি করছে, আন্তর্জাতিক শক্তির কিছু অংশ ইসলামপন্থী রাজনীতিকে "সহনশীল শক্তি" হিসেবে বিবেচনা করছে; আবার অন্য অংশটি আওয়ামী লীগকে স্থিতিশীলতার শক্তি হিসেবে দেখছে। ফলে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান এখন আর একরৈখিক নয়; বরং বহুস্তরীয়।
জামায়াতের সম্ভাব্য উত্থান ও বিতর্ক
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার কাছে গেলে দেশের প্রশাসনিক কাঠামো কঠোর বা নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে উঠতে পারে—এই আশঙ্কা পুরনো হলেও বর্তমানে আরও জোরালো। দলটির ভেতরে বৈচিত্র্যময় বক্তব্য এবং কিছু নেতার উগ্র মন্তব্য মধ্যপন্থী ভোটারদের মধ্যে তীব্র দ্বিধা তৈরি করছে।
বিএনপির সামনে দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জ
বিএনপি জাতীয় বিকল্প হিসেবে জনসমর্থন ধরে রেখেছে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন, নেতৃত্ব-সংক্রান্ত জটিলতা এবং জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে রাজনৈতিক প্রশ্ন আরও দৃঢ় হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বিএনপির গণতান্ত্রিক অবস্থানকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে, যদিও আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ দলটির কৌশলকে সীমিত করছে।
জোট রাজনীতিতে সতর্কতা প্রয়োজন
জামায়াত ইস্যুতে বিএনপির কৌশলগত সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে তাদের গ্রহণযোগ্যতার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এদিকে আওয়ামী লীগ বৈদেশিক অংশীদারদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ বজায় রেখে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করছে—যা জোট ও নির্বাচনের ক্ষমতার ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে।
নির্বাচনি পরিবেশ: নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা নাকি নিরপেক্ষ প্রতিযোগিতা?
যদি নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হয় এবং বিএনপি জয়ী হয়, তাহলে রাজনৈতিক উত্তেজনা হ্রাস ও গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু যদি নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা থাকে বা বিদেশি প্রভাব নির্দিষ্ট দলের পক্ষে সক্রিয় হয়, তাহলে দেশ আরও অস্থির ও জটিল বাস্তবতার দিকে ধাবিত হতে পারে।
শেষ কথা: নতুন আন্তর্জাতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
সবকিছু মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে—
** আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয়তা,
** বিএনপির অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের প্রয়োজন,
** জামায়াত–এনসিপি জটিল সমীকরণ,
** বিদেশি স্বার্থের সম্ভাব্য ভূমিকাগুলো,
** এবং প্রশাসনিক অস্থিরতা—
এই পাঁচটি শক্তিই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে পরস্পরবিরোধী দিকে টানছে। ভোট হবে কি হবে না—এখনও অস্পষ্ট; তবে অবস্থা যে সংবেদনশীল, অনিশ্চিত এবং দুশ্চিন্তাপূর্ণ—তা অনস্বীকার্য।
বাংলাদেশ এখন সত্যিই এক গভীর সন্ধিক্ষণে—যেখানে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বৈদেশিক সম্পর্ক এবং নির্বাচনি প্রক্রিয়ার প্রতিটি পরিবর্তন দেশের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক গঠনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে।
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৯
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন:
ইউনুসের "ব্যর্থতা" বলতে যদি অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জগুলোকে বোঝান, তাহলে হ্যাঁ, এগুলো বিএনপি/জামায়াতের মতো দলগুলোর সুবিধা দিচ্ছে, এবং পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের "ভালো দিনের" আশা জাগাচ্ছে (কারণ তারা "অভিজ্ঞতাসম্পন্ন" বলে দাবি করে)। কিন্তু এটি সীমাহীন নয় – নির্বাচনী সংস্কার সফল হলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে নিবার্চনী সংস্কার কি সফল?
২|
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫৩
ঊণকৌটী বলেছেন: দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ভূ বিশৃঙ্খলা অঞ্চল বাংলাদেশ
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২১
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: এই মুহুর্তে এটা সত্যি।
৩|
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:০০
ঊণকৌটী বলেছেন: এই অঞ্চলের সমীক্ষা অনুযায়ী সবচেয়ে বড় আশঙ্কা দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: হতে পারে যদি এভাবেই চলতে থাকে।
৪|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: দেশের রাজনীতি নষ্ট করে দিলো ইউনুস গং।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২০
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: সহমত প্রিয় রাজীব নুর ভাই।
৫|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:০৩
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: খালেদা জিয়া বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বটবৃক্ষ
................................................................................
উনার অনুপস্হিতি রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় একটি ধাক্কা আসবে
যা বি.এন.পি সামলাতে পারবে কি ???
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৮
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: বর্তমান বিন্যাস অনুযায়ী, নেতৃত্বের শূন্যতা দেখা দিলে:
১. তারেক রহমান (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান / সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান)
২. দলীয় অভিজাত ও সিনিয়র নেতা-পদ (যেমন মহাসচিব, স্ট্যান্ডিং কমিটি
দলীয় সাংবিধানিক গঠন অনুযায়ী সিনিয়র নেতৃত্ব
** বিএনপির স্ট্যাটাস অনুযায়ী, যদি চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান না থাকেন, তাহলে মহাসচিব বা স্ট্যান্ডিং কমিটি নেতারা দল সামলাতে পারেন।
নতুন প্রজন্মের সম্ভাব্য নেতা–উদ্যোগ
** দীর্ঘ সময় প্রতিপক্ষের দমাতে গেলেও, নতুন প্রজন্ম দলের অভিজ্ঞতা ও কর্মীদের সঙ্গে মিলিয়ে বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে সামনে আসতে পারে।
দলীয় পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া
** বড় সাংগঠনিক সমাবেশ বা কংগ্রেস আবেদন করে, নতুন চেয়ারম্যান বা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচন করা যেতে পারে।
** সংগ্রামী–ভোটের পদ্ধতির পরিবর্তন + জন-ভোটাভিমুখী নেতাদের গুরুত্ব পারিবারিক উত্তরাধিকার থেকে দলকে সরিয়ে এনে, জনগণ-ভোটাভিমুখী নেতা ও কার্যকর্মীদের গুরুত্ব দিতে পারে।
চ্যালেঞ্জ ও জটিলতা
** পরিবারভিত্তিক ঐতিহ্য ও নেতা–পরিচয়: বিএনপিতে জিয়া পরিবার — খালেদা-তারেক — ইতিহাসগতভাবে দলীয় নেতৃত্ব। এই বিন্যাস ভেঙে নতুন কে-ই বা গ্রহণ করবে?
** অভ্যন্তরীণ মতভেদের সম্ভাবনা: নেতৃত্বের শূন্যতায় দল অভ্যন্তরীণ বিভাজন, গোষ্ঠীগত লড়াইয়ের শিকার হতে পারে।
** জনমত ও বিশ্বাসের প্রশ্ন: নতুন নেতা হলে, সাধারণ মানুষের মধ্যে সবাই কি একই পরিমানে শ্রদ্ধা ও আস্থা রাখবে?
ব্যক্তিগতভাবে আমার মূল্যায়ন: সম্ভাব্য নেতারা ও দৃষ্টিকোণ
** প্রথমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান / সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান — কারণ সাংগঠনিক স্থিতি, দলগত অভিজ্ঞতা, এবং দলীয় নেতৃত্বে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।
** তবে দীর্ঘস্থায়ী দৃষ্টিকোণ থেকে — নতুন প্রজন্মের তরুণ, প্রতিশ্রুতিশালী নেতা ও জনগণ-ভিত্তিক কার্যকর্মীদের অনুসন্ধান — প্রয়োজন।
** যদি সাংগঠনিক পুনর্গঠন হয়, তাহলে দল গণতান্ত্রিকভাবে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করলে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬
কামাল১৮ বলেছেন: ইউনুসের সীমাহীন ব্যর্থতা আওয়ামী লীগককে ফিরে আসতে সাহায্য করছে।