নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো মানুষ

বড় হওয়া বড় ভাল। তার চেয়ে বড় ভাল, ভাল হওয়া।

উল্টো মানুষ

আমি যেন এক উল্টো মানুষ, ভুলো মনে ওড়াই শুধু স্মৃতির ফানুস, যে আমারে দূঃখ দ্যায়, তারে দেই ক্ষমা, কত শত অবহেলা, বূকে রেখে জমা-----------

উল্টো মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথম প্রেম এবং প্রথম সিগারেট-----------------------

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৫





(সংবিধীবদ্ধ সতর্কীকরন : ধুমপান এবং প্রেম স্বাস্হ্যর জন্য ক্ষতিকর)



এই ব্লগে অকপটে স্বীকার করিতে চাই যে, এই এক জীবনে বহুবার প্রেমে পড়িয়াছিলাম। স্বভাবটা এখনো যে পুরোপুরি বদলায়াছে ঠিক তাহা নহে, শুধু সাহসটাই কিন্চিত কমিয়াছে :P ( আমি কিন্তু বউকে ভয় পাইনা মোটেও ;))। ঠিক কখন, কোনখানে এবং কিরুপে প্রথম প্রেমে পড়িয়াছিলাম অথবা প্রেমে পড়া শুরু করিয়াছিলাম তাহা স্মৃতির অতলে চাপা পড়িয়া যাইবার আগেই ব্লগে লিখিয়া ফেলিবার রিস্ক লইলাম। হাজার হইলেও প্রথম প্রেমের স্মৃতি বড়ই মুল্যবান। (কেও ইহাকে অখ্যাত এই ব্লগারের জীবনি ভাবিলে নিজ দায়িত্বে ভাবিবেন)।



তখন স্কুলের সবচাইতে উচু ক্লাসে পড়িতাম। ভেড়ার দলে বাছুর রাজার মতো স্কুলের সিনিয়র ছাত্র হিসাবে বড় ভাই টাইপের ভাব চলিয়া আসিয়াছিল শরীর এবং মনে।। হঠাৎ আবিস্কার কিরিয়াছিলাম যে আমি বড় হইতে শুরু করিয়াছি। আমার সমুখে মায়াবী এবং রহস্যময় এক জগতের দরজা ক্রমশ খুলিয়া যাইতেছে। নিশি স্বপ্নের মাঝে কোন এক ছলনাময়ি নারীমুখ আসিয়া বড় রোমান্টিকতায় ভাসাইয়া নিয়া আমাকে বিব্রতকর করিয়া রাখিয়া যাইতেছে।



আমাদের স্কুল ছিল শহরের বড় রাস্তার নিকটেই। সেই স্কুলে আমরা বালকেরাই শুধু পড়িতে পারিতাম। বালিকাদের স্কুল আমাদের স্কুল ছাড়িয়া আরো অর্ধমাইল দুরে। সেকারনেই তাহাদিগকে আমাদের স্কুলের সামনের রাস্তা দিয়াই যাতায়াত করিতে হইতো। আর ইহায় ছিল আমাদের নিকট সোনাই সোহাগা। যখন নিচু ক্লাসে পড়িতাম তখন স্কুলের বড় ভাইদিগকে ক্লাস শুরুর পুর্বে রাস্তাই দাড়াইয়া থাকিতে দেখিতাম। তখন তাহাদের সে আবেগ ধরিতে না পারিলেও পরে বেশ বধোগম্য হইয়াছিল কারন আমিও ঠিক সেই একই আবেগে ভাসিয়া যাইতে শুরু করিয়াছিলাম।



আমার একজন নেংটো কালের বন্ধু ছিল। একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়িতাম। বসিতে, চলিতে, খেলিতে এবং পড়িতে একসঙ্গে গাঁটবাধিয়া থাকিতাম। দুজন একইসঙ্গে ডাগর হইয়া উঠিতেছিলাম এবং একই সঙ্গে অনুধাবন করিয়াছিলাম যে জগতে আমরা বালকেরা ছাড়াও বড়ই আকর্ষনীয় ও রহস্যময় আরো এক জাতি বিদ্যমান। তাহাতে অবশ্য লাভই হইয়াছিল। মনের ভেতর হঠ্যাৎ জাগিয়া ওঠা অচেনা আর রহস্যঘেরা প্রশ্ন গুলোর উত্তর দুজেনে মিলিয়া খন্ডাইতে চেষ্টা করিতাম।



আমাদের স্কুল বসিত সকাল দশটাই। কোন এক অজানা নেশাই আগে ভাগেই স্কুলে চলিয়া আসিতাম। তাহার পর কোন এক দেয়াল অথবা খুটিতে ঠেস দিয়া দাড়াইয়া পরিতাম বড় রাস্তার ধারে। বালিকারা কত রকম ঢং করিয়া স্কুলের পথে হাটিয়া যাইত। কেও কোমর দুলাইয়া, কেওবা বুকে বই চাপিয়া, মাথা নিচু করিয়া, কেও সখি গনের সাথে হাস্যরসে মাতিয়া পথ চলিত। দেখিতে বড় সুখ হইতো আর একই সঙ্গে বুকের ভেতর হইতে দীর্ঘশ্বাস নির্গত হইতো। হায় ইহাদের কাওকে যদি নিজের করিয়া পাইতাম !! :((



এরকম করিয়াই চলিতেছিল। হঠাৎ গোল বাধিল। পরির মতো দেখিতে এক অচেনা বালিকা আমার মন কাড়িয়া লইলো। আমি প্রেমে পড়িলাম। ফর্সা করিয়া, খয়েরি চোখের মেয়েটি আমাকে পাগল করিয়া দিল। বন্ধুর কাছে কাঁদিয়া বলিলাম এখন কি হইবে?:(( বন্ধু সাহস জুগাইলো। কথা বলিবার সাহস ছিলনা বলিয়া মেয়েটির পিছু পিছু নিয়ম করিয়া হাটিতে লাগিলাম। যদি সে নিজে থেকে কিছু বুঝিয়া লই।



চেষ্টা চরিত্র করিয়া বন্ধু কন্যার সকল খবর বাহির করিয়া লইলো। কোন ক্লাসে পড়িত, কোথাই থাকিতো, মাতা পিতা কাহারা এমন কি ভাই বোনের সংখাও। আমরা মাঝে মাঝে বৈকালের অবসরে তাহার বাড়ির সামনে সাইকেলযোগে চক্রর দিতে শুরু করিলাম। সে দোতালার বারান্দাই দাড়াইয়া আড়চোখে দেখিয়া মুচকি হাসিত। আশার আলো দেখিতাম।



এভাবে ভালোই চলিতেছিল। মেয়েটি আমার পাগলামি বুঝিতে পারিয়া ইশারাই মানিয়া লইতেছিল। তাহার চোখের ভিতর ভালোবাসার আহবান টের পাইতেছিলাম। সবকিছ যেন এক প্রেমময় সন্ধির দিকে আগাইতেছিল। বিধাতা তা সহিলেন না।/:)



একদিন হঠাৎ খবর আসিল, বন্ধু খবর আনিল কন্যার বিবাহ হইয়া যাইতেছে। শহরের নামকরা মাস্তান কন্যার রুপে ভুলিয়া বাহু বলে জোর করিয়া বিবাহ করিতেছে। মাথাই আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়িল। প্রচন্ড দুঃখ পাইয়া মুষড়াইয়া পরিলাম (সত্যি দুঃখ পাইয়া ছিলাম কিনা আজ ঠিক মনে নাই তবে দুঃখ পাওয়ার ভান করিয়াছিলাম)। বন্ধুর সাইকেলের পিছনে চাপিয়া দুরে নদীর ধারে চলিয়া গিয়াছিলাম দুঃখ যাপন করিতে। দেবদাস আর পার্বতির গল্প জানিতাম। দেবদাস দুঃখ ভুলিতে মদ খাইতো। আমারো দেবদাস হইতে ইচ্ছা করিলো। দুঃখ কমাইতে নিষীদ্ধ কিছু খাইতে হইবে। মদতো অনেক বড় ব্যাপার আর আমার দুঃখও নিশ্চই দেবদাসের মতো ততটা বড় নহে। তাই বিকল্প খুজিলাম। বন্ধু দুইটা সিগারেট আর দেশলাই জোগাড় করিয়া আনিলো। দুঃখ ভুলিতে জীবনের প্রথম সিগারাটে টান দিয়া খুক খুক করিয়া কাশিতে লাগিলাম। নিষীদ্ধ কিছু করিতে পারিয়া বড় উত্তেজনাকর আনন্দ হইলো যাহা কোন অংশেই প্রেমের আনন্দের চেয়ে কম নয়।



এ লেখাটিকে যাহারা প্রথম প্রেমের গল্প বলিয়া ভাবিয়াছেন তাহারা ভুল করিয়াছেন।;) ইহা আসলে আমার প্রথম সিগারেট পানের গল্প। আমার এ যাবৎকালের যাপিত জীবনে শুধুমাত্র এই একটি নিষীদ্ধ কাজই করিতে পারিয়াছি।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১০/-১

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৫১

নাঈম বলেছেন: আহারে চুক চুক চুক ;););)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:০১

উল্টো মানুষ বলেছেন: আহারে চুক চুক চুক

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৫৮

সায়েম মুন বলেছেন: :)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:০৫

উল্টো মানুষ বলেছেন: ইমো কি বলে ?

৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১০

পুরাতন বলেছেন: :-* :-* :-*

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:০৬

উল্টো মানুষ বলেছেন: ইমো কি বলে ?

৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩০

হাসান শরিফ বলেছেন: বেশিরভাগ কিশোরের গল্প বোধহয় এটাই। প্রথম প্রেম বা প্রথম সিগারেট এভাবেই সম্পর্কযুক্ত।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:১২

উল্টো মানুষ বলেছেন: কিশোর বেলাটাই এমন। হায় যদি ফিরে পাওয়া যেত!!

৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৭

এখন ও বৃষ্টি ভালবাসি বলেছেন: ভাই তো ভাল লিখেন ।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:১৭

উল্টো মানুষ বলেছেন: অন্তত চেষ্টা করি। ধন্যবাদ।

৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৪২

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: পিলাচ দিছি। এইবার পোস্টটা পইড়া লই।।।।।।।।।।। :):):)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:২১

উল্টো মানুষ বলেছেন: পিলাচের জন্য পিলাচ।

৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৮

পথে-প্রান্তরে বলেছেন: ভালো লাগছে । :)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:২২

উল্টো মানুষ বলেছেন: শুইনা ভালো লাগছে।

৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫০

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: মিয়া অহন আপ্নেরে মাইনাস+উচা হিলের বাড়ি দিতে মন চাইতেছে।।।।।।।।।। X(













"""শহরের নামকরা মাস্তান কন্যার রুপে ভুলিয়া বাহু বলে জোর করিয়া বিবাহ করিতেছে।"""


এর পরও আপনে চুপ কইরা আছিলেন? মেয়েটা যদি আপ্নারে ভালবাইসা থাকতো তাহলে সে অবশ্যই আপ্নার অপেক্ষায় ছিল। সে হয়তো ভাবছিল আপনি তারে বাচাইবেন সেই মাস্তানের হাত থিকা। আর আপ্নে হইছেন দেবদাস। ধুওরো মিয়া!!!!!!!!!!!!!!!!!! X-( X-( X-( X-( X-(

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:২৮

উল্টো মানুষ বলেছেন: তখনতো হাফ প্যান্ট পড়ার বয়স ছিলো। সাহস ছিলো হাটুতে।

৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৫

টংকেশ্বরী বলেছেন: :D

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৩০

উল্টো মানুষ বলেছেন: আচ্ছা---------

১০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৪

প্রচেত্য বলেছেন: সিগারেট টানা ভালোনা

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৩২

উল্টো মানুষ বলেছেন: ইয়েস স্যার ঠিক কইছেন।

১১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৮

ইন্ঞ্জিনিয়ার বলেছেন: আহারে.....:(

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৩৪

উল্টো মানুষ বলেছেন: নাঈম বলেছেন: আহারে চুক চুক চুক

১২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৫

তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: ধুউরো মিয়া! আপ্নে আসলে কোন কামের না। তহন কুন কিলাসে পড়তেন?

১৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১০

ভাবের অভাব বলেছেন: ভালই লিখিয়াছেন জনাব।
ছোটবেলায় আমিও কম ইচড়া পাকামি করি নাই।
ষষ্ঠ শ্রেনিতে থাকিতেই প্রথম বিড়ির সাদ গ্রহন করিয়াছিলাম।
ধরাও পড়িলাম। আমার পিতা রাস্তা হইতে আমার কান দুখানি ধরিয়া হিড় হিড় করিয়া ভর জলসার মধ্যে দিয়া ও পাশের বাড়ির আমার হৃদয়েশ্বরির সামনে দিয়া গৃহে নিয়া আসিলেন। তারপর.....।

এমন অপমান কি আপনাকে কখনও সহিতে হইয়াছে জনাব??

+

১৪| ০৮ ই জুন, ২০১০ রাত ১২:৫১

সান্তনু অাহেমদ বলেছেন: স্টাইলটা সত্যিই চমৎকার আপনার। রবীবন্দ্রনাথ স্টাইল। ভালো। তবে ভাই, ইত্তেফাকের মতো সাধুরে আঁকড়ে ধরে কেন এখনও? এখনযে digitalized mobile যুগ!

১৪ ই জুন, ২০১০ বিকাল ৪:৫৭

উল্টো মানুষ বলেছেন: এটা একটা রম্য লেখা আর সে কারনেই ইচ্ছা করে সাধু ভাষা ব্যাবহারের অপচেষ্টা। এমনিতে চলতি ভাষাই অভ্যস্ত।

১৫| ১১ ই জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০২

দুরন্ত ইসলাম বলেছেন: ইত্তেফাক ২০০১ সালে সাধুভাষা পরিত্যাগ করিয়াছে। এখন কেবল সম্পাদকীয়টা সাধু ভাষায় লিখিত হয়।

এটা একটি ভীরু কাপুরুষের গল্প। এমন যদি হতো আপনি সেই মাস্তানের সাথে ফাটাফাটি করে ফেলতেন!

তারপরও বলছি, আপনার লেখার হাত ভাল।

১৪ ই জুন, ২০১০ বিকাল ৫:০১

উল্টো মানুষ বলেছেন: এটা একটা রম্য লেখা। সিরিয়াসলি নেবার কোনো কারন নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.