নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"প্রশ্নের মুখোমুখি"

১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৩৮



Say to the believing men that they cast down their looks and guard their private parts; that is purer for them; surely Allah is Aware of what they do. [1]

প্রথমে কিছু বিষয় ক্লিয়ার হয়ে নেওয়া যাক তাহলে অযাচিতভাবে লেখাটা পড়ে বিব্রত হতে হবেনা। বিষয়গুলো হল কিছু প্রশ্ন করি তারপরে মূল আলোচনায় যাওয়া হবে ইন-শা-আল্লাহ। আপনি কি আল্লাহতে বিশ্বাসী? অর্থাৎ আপনি কি বিশ্বাস করেন আল্লাহ আমাদের স্ররষ্টিকর্তা কিংবা সহজ ভাষায় বললে আল্লাহর অস্তিত্বে আপনার বিশ্বাস আছে কি? আপনি কি বিশ্বাস করেন কোর’আনের প্রত্যেকটা আদেশ মানতে আপনি বাধ্য? আপনি কি বিশ্বাস করেন মহানবী (সাঃ) এর দেখিয়ে দেওয়া জীবন ব্যবস্থা আপনার জীবনে প্রতিফলিত করাতে আপনি বাধ্য? আপনি কি বিশ্বাস করেন মৃত্যুর পরে দুনিয়াতে কাটানো আপনার প্রত্যেকটা সেকেন্ড কিভাবে অতিবাহিত করেছেন সেগুলোর হিসাব নেওয়া হবে? এগুলোর প্রত্যেকটার উত্তর “হ্যাঁ” হলে লেখাটা আপনার জন্য। এক কথায় আপনি মুসলিম হলে লেখাটা আপনার জন্য। আর যদি উত্তর “না” হয় তবে লেখাটা আপনার জন্য না। সালাম।

“হ্যাঁ” উত্তর ওয়ালারা চলুন আমার সাথে আরও কিছুটা নিচে নামা যাক।
আমি শুরুতে কোর’আনুল কারিমের একটা ভার্স দিয়ে শুরু করেছি। ভার্সটির সরল অনুবাদ
“ আপনি মুমিন ব্যাক্তিদের বলে দিন তারা যেন, তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করে; এটা তাদের জন্য কল্যানকর। তারা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।“
আয়াতটার প্যাটার্ণ ফলো করা যাক। এই আয়াতটি শুধুমাত্র মুমিনদের উদ্দেশ্য করে আল্লাহ নাজিল করেছেন। এবং মুমিন ব্যাক্তি অর্থাৎ বিশ্বাসী পুরুষ। আপনি যদি বিশ্বাসী সেইসাথে পুরুষ না হন তবে আয়াতটি আপনার জন্য নয় (আক্ষরিক অর্থে)। আয়াতটার অবজেক্ট পাওয়া গেল। এবার নির্দেশনার দিকে তাকানো যাক। প্রথম নির্দেশনা মুমিনদেরকে তাদের দৃষ্টি নিচু/সংযত করতে হবে। এবং লজ্জা স্থানের হিফাজত করতে হবে। এখানে খুব সুক্ষভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় নির্দেশনা দুইটা একইসাথে “কারন (Cause)” ইন্ডিকেট করছে। প্রশ্ন আসবে কিসের কারন নির্দেশ করছে ? ঠিক পরের অংশেই বলা হয়েছে কারনটা। অর্থাৎ আপনি যদি নির্দেশনা দুইটি অনুসরন করেন তবে আপনি কল্যান অর্জন করবেন এবং অনুসরন না করলে কল্যান থেকে বঞ্চিত হবেন। অর্থাৎ আপনার কল্যান পাওয়া এবং না পাওয়ার কারন হিসাবে কাজ করবে নির্দেশনা দুইটি। এখানে আয়াতের শুধুমাত্র এই অংশটুকু নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
কোর’আন হচ্ছে আমাদের জন্য গাইডলাইন। এবং এর প্রতিফলন বা এই গাইডলাইন অনুসরনের পদ্ধতি দেখিয়েছেন আমাদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ)। দৃষ্টিকে নিচু করা অর্থাৎ না তাকানো এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত কিভাবে করতে হবে এই পদ্ধতিটা শিখিয়েছেন আমাদের মহানবী (সাঃ)।

জারীর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) আল্লাহর রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, “কোনো মহিলার ওপর আমার আচমকা নজর পড়ে গেলে আমি কী করবো?” তিনি জবাব দিলেন, “তোমার নজর ফিরিয়ে নাও।” [2]

আরেকটি হাদীসে দেখা যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “একবার নজর পড়ে গেলে আর দ্বিতীয়বার তাকিয়ে দেখো না। প্রথমবারের (অনিচ্ছাকৃত) নজর তোমার জন্য বৈধ। কিন্তু দ্বিতীয়বারের নজর বৈধ নয়।” [3]

হাদীসদুটো সহীহ। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে শুধুমাত্র দৃষ্টি পতিত হলেই চোখ ফিরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এবং যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে চোখ পড়ে যায় তবে সেটা গুনাহ হিসাবে নিলিবদ্ধ হবেনা কিন্তু দ্বিতীয়বার তাকালেই সেটা গুনাহ হিসাবে লিপিবদ্ধ হবে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে যেহেতু প্রথম দৃষ্টি আমার জন্য বৈধ তবে অনিচ্ছাকৃতভাবেই প্রথম দৃষ্টি কতক্ষন স্থায়ী হতে পারে? এর উত্তর প্রথম হাদীসটিতেই দেওয়া হয়ছে। সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চোখ পড়ার সাথে সাথেই তা ফিরিয়ে নিতে হবে। মানে আপনি এক দৃষ্টি বৈধ বক্তব্যটিকে মানদন্ড ধরে এক নজরে ঘন্টা পার করে দিবেন এই সুযোগ নেই।
লজ্জাস্থানের বিষয়টি নিয়ে ইন-শা-আল্লাহ অন্য কোন পর্বে আলোচনা করব।

এবার আত্মসমালোচনায় আসা যাক। আমরা যারা তথাকথিত (ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ) প্রেম করি/ জাস্ট ফ্রেন্ড হিসাবে গল্প করি এবং একইসাথে নিজেকে বিশ্বাসী বলে দাবী করি তারা একটু নিজের দিকে তাকাই। আমরা কি আমাদের প্রেমিকার দিকে তাকাই? যারা প্রেম করি তাদের ৯০% এর উত্তর হ্যা হবে। আর যদি হ্যা হয় তাহলে আমি/আপনি সরাসরি মহানবী (সাঃ) এবং আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করছি। এখন আপনাদের কাছে প্রশ্ন, আপনি যেহেতু শুরুর প্রশ্নগুলোর উত্তর হ্যা দিয়ে এসেছেন অর্থাৎ নিজেকে বিশ্বাসী(মুমিন) বলে পরিচয় দিচ্ছেন সেহেতু আপনি কি আদৌ মুমিন থাকছেন? আপনি কি আল্লাহ এবং রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশ সরাসরি অমান্য করে নিজেকে মুমিন বলে দাবী করার অধিকার রাখেন? আর ইমান ছাড়া ইসলামের ভ্যাল্যু কতটুকু? আপনি কি আদৌ নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দিতে কুন্ঠাবোধ করবেন না? আমরা কি জানি ঈমানের তিনটি দাবী আছে।
১. মুখে স্বীকার
২. অন্তরে বিশ্বাস
৩. কাজে পরিনত করা
এই তিনটা শর্ত পুরন হলেই নিজেকে ঈমানদার বলা সম্ভব।

[1] Al-Quran 24:30
[2] (আহমাদ, মুসলিম, আবূ দাউদ, তিরমিযী)
[3] (আহমাদ, আবূ দাউদ, তিরমিযী)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৫১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর সুন্দর । +

২১ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৪৯

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: জাযাকাল্লাহু খাইরান

২| ১৭ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: এই লেখা কাদের জন্য লিখেছেন? আস্তিক না নাস্তিকদের জন্য।

২১ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৪৯

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: মানবতার জন্য সমাধান এবং আস্তিকের জন্য আবশ্যক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.