| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অপলক
তত্ত্ব, তথ্য ও অনুভূতি ভাগাভাগি করা আমার অভিপ্রায়। কারও যদি ইচ্ছে হয় তবে যে কেউ আমার এই ব্লগের যে কোন কিছু নিজের সংগ্রহে রাখতে পারে।
আমি ২০১০ এর পরপর বলেছিলাম, সমূদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লেও বাংলাদেশ ডুবে যাবে না। এই সামুতেই আমি পোস্ট দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, কারন সাগরের পানির উচ্চতা বাড়লে উজান থেকে নেমে আসা শতাধিক নদীর পানি স্থির বা গতিহীন হয়ে পড়বে। পলি জমতে জমতে উঁচু হতে থাকবে। যা অন্য নদী বিহীন দেশে সম্ভব না। আমার এই লজিক প্রকাশের কয়েক বছর পর সেটা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমান হয়েছে। মজার কথা হল, বাংলাদেশ এখন সমূদ্রের পানিতে না ডুবলেও বন্যার পানিতে যখন তখন ডুবে যায়।
বঙ্গোপসাগরে এখন নতুন নতুন চর পড়ছে। আয়তন বাড়ছে, আরও বাড়বে। কোথাও কোথাও সাগর তীর ক্ষয়ে যাচ্ছে, সেটা বাঙ্গালীদের মূর্খতার কারনে। তবুও সেটা খুব একটা বেশি নয়। ১ লক্ষ্ ৪৪ হাজার বর্গ কিমি এখন বেড়ে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার বর্গকিমি হয়েছে। ভবীষ্যতে আরও বাড়বে।
যাই হোক এবার আমি বলছি, ভূমিকম্পের কথা। রিক্টার স্কেলের ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে বড় আকারের মৃত্যুর মিছিল দেখা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষ মরবে মূলত: বিশৃঙ্খলার কারনে, বিনা চিকিৎসায় এবং বিলম্ব উদ্ধার তৎপরতার কারনে। ভৌগলিক অবস্থানের কারনে আমাদের এদেশে ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হবে না।
কিন্তু তেমন হতাহত হবে না: কেন বললাম বা লজিকটা কি যে ?
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা দেশে দুটি প্রধান ফাটলরেখা থাকার কথা বলে আসছিলেন। তা হলো ডাউকি ফাটলরেখা এবং ইন্দোবার্মা মেগাথ্রাস্ট (মেগাথ্রাস্ট হলো পৃথিবীর বড় প্লেটগুলো একে অপরের নিচে চাপ দেওয়ার কারণে তৈরি হওয়া বড় ভূমিকম্প-সৃষ্ট ফল্ট বা চ্যুতি)। এর বাইরে সীতাকুণ্ডের উপকূলীয় ফাটলরেখা, মধুপুর, শাহজিবাজার, জাফলং ও কুমিল্লা ফাটলরেখা রয়েছে। আর সবশেষে জামালপুর ও ময়মনসিংহ থেকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত বিস্তৃত ফল্ট।
ইতিহাস বলে, ঢাকা অঞ্চল এবং চট্রগ্রাম অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকশ্প হেয়েছে, যেখানে সবোর্চ্চ ২০০ জন মারা গিয়েছিল এবং রিক্টার স্কেলে ৮ এর নীচে ছিল। আগে মানুষ কম ছিল, সাথে বহুতল ভবনও কম ছিল। বর্তমানে বেশি জনসংখ্যা, সেই অনুপাতে বেশি মৃত্যু হতেই পারে। তবে আগের মত মাটির তৈরী ঘরবাড়ি এখন আর নেই, যে দেয়াল চাপা পড়ে মরবে।
ডাউকি ফাটলরেখা এবং ইন্দোবার্মা প্লেটের ভূমিকম্পের কারনে ঢাকার চেয়ে সিলেট বা চট্রগ্রামে বেশি ক্ষতি হবে। বহু ভবন ধসে পড়তে পারে। তবে আশার কথা হল, ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আফগানিস্তান, তুরষ্ক বা ইরাকে বা পাথুরে দেশ গুলোতে যতটা ক্ষতি করবে, পলি বেষ্টিত বাংলাদেশের মত ব-দ্বীপে তেমন একটা ক্ষতি করবে না। কারন অনেক শক্তি খেয়ে ফেলবে উপরি স্তরের নরম মাটি এবং শত শত নদী-নালা। তার উপর ফাটলগুলোতে শক্তি কতটা জমে আছে সেটাও একটা প্রশ্ন। আমরা তো গভীর অগভীর নলকূপ থেকে দেদারচে পানি উঠিয়ে ফেলেছি, প্রচুর গ্যাস ছিল, যার বড় অংশ উঠিয়ে ফেলেছি। ডাউকি প্লেটে ইন্ডিয়া বডার লাইন ধরে সিলেট থেকে পঞ্গড় পর্যন্ত ৩০০ ফুট পর্যন্ত নুড়ি পাথর উঠিয়ে ফেলেছি। আহা... ভাবতেই ভাল লাগে !!!
একটা ভাইব্রেশন শক্ত বস্তুর মাধ্যমে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যতটা শক্তি না হারিয়ে প্রবাহিত হয়, নরম বস্তুর মাধ্যমে তা কম হয়। ধরুন স্টিল আর ফোম। একটা টেবিলের উপর একটা স্টিলের দন্ড আর একটা শক্ত ফোমের দন্ড দাড় করিয়ে টেস্ট করলে দেখবেন, ফোমে ভাইব্রেশন কম। কিন্তু পুরো টেবিল যখন নড়ছে তখন সেটাতেও কিছুটা কম থাকবেই। জাপান যেমন, তাদের হাইরিচ বিল্ডিংগুলো স্প্রিং এর উপর বসাচ্ছে শক এবজর্ব করার জন্যে। বাংলাদেশের জন্যে অনেকটা করবে মাটি নিজেই, অনন্ত ঢাকা-উত্তারঞ্চল-খুুলনাঞ্চল। কিন্তু সিলেট বা পার্বত্য অঞ্চলের জন্যে সেটা উল্টো হবে পাথুরে ভূ-প্রকৃতির জন্যে।
যেসব বিল্ডিঙের দেয়ালে বা টাইলসে ফাটল ধরেছে, তারা দুশ্চিন্তা করবেন না। যদি ফাটলটা বিম বা কলামে ১ ইঞ্চির বেশি হয়, ইন্জিনিয়ার দিয়ে দেখিয়ে নেবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রিপায়ার বা রিবাইন্ড করে নিতে পারবেন। বিল্ডিঙের বয়স ৪০ বছর পার হলে, আল্লাহু আকবার। কারন, সিমেন্টের একটা লাইফ টাইম আছে।
টিভি চ্যানেলগুলা একটু বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কারন ওটাই ওদের কাজ। সত্য ধামাচাপা দেয়া, মিথ্যা কে সত্য বলে চালিয়ে দেয়া ইত্যাদি। দেখবেন ভূমিকম্পে যদি ১০০০ মানুষ মারা যায়, বলবে ১০ হাজার বা উল্টো টা। মনে রাখবেন, গ্রাউন্ড ফ্লোরে আপনি যতটা দুলুনি অনুভব করবেন, ১০ তলার ফ্লাটে তার চেয়ে ১০গুন বেশি দুলুনি অনুভব করবেন। চলন্ত অবস্থায় তো কিছু বুঝবেনই না। বিল্ডিং কোড ভেঙ্গে ৭ তলা বাসা যারা ১০ তলা করেছেন, তারা প্রেশারের ওষূধ পকেটে রাখবেন। আর যারা ভাড়াটিয়া , তারাও।
সিলেট অঞ্চলে বহু আগে এত হাওড় বাওড় ছিল না। আবার এমনও হতে পারে, ভবিষ্যতে আরও অনেক হাওড় তৈরী হবে। এদিকে মধ্য অঞ্চলে নদীর বেড উঁচু হয়ে যেতে পারে। জমি ডেবে বিল হয়ে যেতে পারে এক রাতেই। বর্তমানে ঢাকা এবং চট্রগ্রাম প্লেটে প্রচন্ড চাপ। ঢাকা শহর পুরোটা কয়েকফুট ডেবে গেলে আমি বিষ্মিত হব না। বগুড়ার মহাস্থান গড় যেমন ৩ ফুট ডেবে গেছে, কিন্তু পাশেই বয়ে চলা করোতোয়া নদীর বেড অনেক উচু হয়ে গেছে। সেখানে নদী এখন আবাদী জমি। এ ঘটনা প্রাকৃতিক কিন্তু ধীর গতির। তাই্ আমরা খালি চোখে বুঝি না।
যাই হোক, সবাই ভাল থাকবেন। মা-বাবা আত্মীয় স্বজনের সাথে অন্যায় করলে মাফ চেয়ে নেবেন। এমনও হতে পারে, শেষ ফোন কলটি করার সুযোগ আর পেলেন না। কার জীবন উপন্যাসের গল্প কোথায় কিভাবে সমাপ্তি হবে, সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন। প্রতি ১১০-১৫০ বছরের মধ্যে বঙ্গীয় অঞ্চলে একটা বড় ভুমিকম্প হয়, কেন যেন মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই আমরা সেটার মুখোমুখি হবো। সেটা হয়ত রিক্টার স্কেলে ৮ চেয়ে বেশি হবে।
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৩
অপলক বলেছেন: আমি বিজ্ঞানী নই। তবে কিছু কিছু কথা অনুমান ভিত্তিক সেটা সত্যি, বাকিটা বাস্তব থেকে নেয়া ।
কিছু দিনের মধ্যে কোন না কোন বিশেষজ্ঞ টিভি চ্যানেলে আমার কথা গুলোই বিজ্ঞানভিত্তিক কথা বলে চালিয়ে দেবে, দেখবেন। আর আমার কথা মনে করবেন। সে পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরুন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্যে।
২|
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৭
সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: ভালো লাগলো এমন হতেও পারে বলা যায়
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৩
অপলক বলেছেন: আল্লাহ না করুন। এমনিতেই আমরা জাতিগত ভাবে অনেক চাপের ভেতরে আছি।
ধন্যবাদ।
৩|
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১২
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো, আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২
অপলক বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।
ধন্যবাদ মশিউর ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যাক, আপনার কাছ থেকে কিছু আশার বাণী শোনা গেল। কিন্তু আপনার লজিকগুলো মনে হচ্ছে অনুমানভিত্তিক। নাকি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত লজিক এগুলো?

মিডিয়াতে ভুল তথ্য প্রচার করলে একটা শ্রেণির ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠতে পারে। মিডিয়া হয়ত তাদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই এটা করে