| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অপলক
তত্ত্ব, তথ্য ও অনুভূতি ভাগাভাগি করা আমার অভিপ্রায়। কারও যদি ইচ্ছে হয় তবে যে কেউ আমার এই ব্লগের যে কোন কিছু নিজের সংগ্রহে রাখতে পারে।
জনগনকে দেখানোর জন্যে যেখানে খুশি সেখানে ফ্লাইওভার বানানোর কোন মানে হয় না। একটা গ্রাউন্ডেড রাস্তাকে দোতলা মর্যাদা দেবার কোন মানে হয় না। ঢাকা, গাজীপুর বা চিটাগঙে এত এত ফ্লাইওভার যে বানানো হল, কত পার্সেন্ট যানযট কমেছে?
উন্নত বিশ্বে বাইপাস বা ফ্লাইওভার রোড কেন বানায়? একটাই কারন, রাস্তা থেকে যানবাহন দ্রুত গন্তব্যের দিকে সরিয়ে দেয়া। বস্তুত: রাস্তায় যতক্ষণ গাড়ি থাকবে ততক্ষণ জ্যাম থাকবে। আমাদের দেশে এই মোদ্দাকথা মাথায় রাখা হয় না। অন্তত উন্নয়নের বাস্তবায়ীত অংশ থেকে তা বোঝা যায় না।
বাস্তবে এমন দেখা যায় যে, ফ্লাইওভারের নিচেও জ্যাম, উপরেও জ্যাম। আবার ১০০গজ সামনের লিঙ্ক রোডে ঢুকতে হবে, কিন্তু ২ কিমি সামনে গিয়ে ইউট্রান নিয়ে তারপর ঢুকতে হবে। মানে হল, ২ কিমি গিয়ে আবার ২ কিমি ফিরে এসে সেই ১০০ গজ দূরের রোডে ঢুকতে হবে। এর মধ্যে ইউট্রান নিতে গিয়ে পেছনের গাড়িগুলোকে স্লো করে দেয়া হল, নতুন রোডে ঢুকে অন্য গাড়িগুলোকে স্লো করে দেয়া হল। মানে নিজের টাইম নষ্ট করার পাশাপাশি অন্য শতশত গাড়ির যাত্রীদেরও টাইম খেয়ে ফেললাম। নিজের তো ১০ মিনিট খেয়েছি, সাথে অন্য গাড়িগুলো স্লো করে প্রত্যেকের ২ মিনিট করে ধরলে ১০০ গাড়ির ২০০মিনিট খেয়ে ফেলছি। সব মিলিয়ে যদি ১০০০ প্যাসেন্জার ধরি, তাহলে ২ মিনিট করে ২০০০ মিনিট নষ্ট করে ফেলছি, শুধু আমি একটা ইউটার্ন নিতে গিয়ে। কিন্তু কার কারনে?
আবার রাস্তা ৪ লেনের ৬০ফুট চওড়া। কিন্তু দেখা যায়, যানবাহন ২০ফুট বা তার কম জায়গা দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। কারন, দখল। সেটা অবৈধ্য স্ট্যান্ড হোক, ফুটপাতের টেবিল মার্কেট হোক, বা কাঁচাবাজার হোক বা টং দোকান। এর সাথে আছে যেখানে সেখানে স্পিড ব্রেকার, ট্রাফিক সিগন্যাল বা টোলপ্লাজা। VIP দের রোড ক্লিনিং কালচারের কথা তো বাদই দিলাম। সিটি সার্ভিস/সিটিং সার্ভিসের বাস/ম্যাক্সি হল ঢাকা শহরের গুড়া কৃমি মত। নাগারিক সেবা দিতে গিয়ে পুরো শহরটাকে শেষ করে ফেলছে। এদেরকে সামলানো যাবে এমন কোন পদ্ধতি দুনিয়ার কোথাও নেই। ১৫ বছর হল যোগ হয়েছে ব্যাটারী রিক্সা, অটোরিক্সা বা টমটম। চুরি করে কারেন্ট তো খাচ্ছেই, অপরাধও বেড়ে গেছে।
বর্তমানে ঢাকা শহরে ৩৫০টা রুট পরিবর্তন করে ৫০টা করার চিন্তা করছে সরকার। এই সংকোচন করলে নাকি যানযট কমবে, পরিকল্পনাবিদরা সেটাই ভাবছেন। কিন্তু কিভাবে?
তারা বলছেন:
* ওভার ল্যাপিং কিছু রুটের, রুট সার্ভিস বাদ দেয়া হচ্ছে।
* লম্বা রুটে শুধু লোকাল বাস চলবে। সর্ট রুটে বাস বেশি ঘনঘন ঘোরাফেরা করে। তাই জ্যাম বেশি।
* কম সিটের বাসের পরিবর্তে বেশি সিটের বাস নামানোর পরামর্শ দিচ্ছে।
* সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেবার চেষ্টা করা হবে।
আমার চিন্তাধারা এমন:
১). মাল্টিপারপাজ ফ্লাইওভার বানাতে হবে। হতে পারে, একই সাথে বাস ট্রাক চলবে, মেট্রোট্রেন চলবে, গ্যাসের লাইন, কারেন্টের লাইন বা ইন্টারনেটের কেবল বয়ে নেবার ব্যবস্থা থাকবে।
২). ফ্লাইওভারের নীচে যাতে কোন স্পেস না থাকে যাতে উদবাস্তুরা বা নেশাখোররা সেল্টার নিতে পারে।
৩). ইউটার্নগুলো যেন লিঙক রোডের কাছাকাছি রাখা হয়। মনে রাখা দরকার, একটা গাড়ি যত বেশি সময় রাস্তায় থাকবে, তত বেশি সড়ক ব্যস্ত থাকবে। টার্গেট থাকা দরকার, কত দ্রুত গাড়িটাকে সড়ক থেকে সড়িয়ে দেয়া যায়। তাহলে সড়ক থাকবে গতিশীল, থমকে যাবে না মানুষ বা গাড়ি।
৪). সড়কে বাক বা মোচড় কমিয়ে, স্পিড ব্রেকার কমিয়ে, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানো নামানো বন্ধ করে, চৌরাস্তায় সেন্ট্রারইজ ফুটওভার ব্রিজ তৈরী করে, ক্যাস ভিত্তিক টোলপ্লাজা উঠিয়ে দিয়ে, ব্যাটারী রিক্সা/ভ্যান/টমটম/ম্যাক্সি প্রধান সড়কে বন্ধ করে যানযট কমানো যায়।
৫). আবার গ্রিন সিগন্যাল অটোমেটেট করা দরকার, যাতে equity নিশ্চিত করা যায়। যেমন, একটা রোডে ২০০০ গাড়ির জ্যাম লেগে গেছে, অপজিট রোডে হয়ত ৩০০ গাড়ি রয়েছে। তাহলে ২০০০ গাড়ির রোডে ২ মিনিটের জায়গায় ৫ মিনিট গ্রিন সিগন্যাল রাখবে, ৩০০ গাড়ির রোডে ২ মিনিট আর যদি কোন গাড়ি না থাকে, তবে রেড সিগন্যাল জ্বলতেই থাকবে। ইন্টারনেট আর এআই এর যুগে এটা করা কোন সমস্যাই না।
৬). রোড থেকে মনুষ্য ট্রাফিক পুলিশ ডিপেডেন্সি কমাতে হবে। কারন দেখা গেছে, পেপারস চেকিং করতে গিয়ে ট্রাফিক জ্যাম লাগিয়ে ফেলে। ঘুষ খাওয়ার ধান্দা করে। ট্রাফিক পুলিশ স্বশরীরে চেক পয়েন্টে দাড়িয়ে থাকলে অপরাধীরা বুঝে যায় এবং তারা ভিন্ন রাস্তায় চলে যায়। কিন্তু যদি সিসি ক্যামেরার সাথে ট্রাফিক পুলিশও থাকে, তাহলে অপরাধী নিজেই আতঙ্কের মধ্যে থাকবে।
৭). কোন ড্রাইভার স্পিড লিমিট ক্রস করল বা কোথাও মানুষ চাপা দিয়ে আসল, এআই দিয়ে সার্চ করে অটোমেটিক কেস রান করা উচিত। কেস রান হবার পর ৭ দিনের ভেতরে আদালতে হাজির না হলে, দেশের যে কোন জায়গায় সেই গাড়ি এবং ড্রাইভারের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে। গাড়ি ডাইরেক্ট যাবে ডাম্পিং এ আর অপরাধী অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি পাবে। ২০০৫ সালের আগে পর্যন্ত যেসব ছেলেমেয়ে পাছায় বেতের বাড়ি খেয়ে স্কুল জীবন শেষ করছে, তারা হয়েছে সুশিক্ষিত। বেতের বাড়ি ছাড়া বাঙ্গালি সোজা হবার নয়। BRTC কেও বেতের বাড়ি প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। না হলে দুর্ঘটনা কমবে না, সিন্ডিকে্ট ভাঙবে না, যানযট কমবে না।
অটো কেস খাওয়ার ভয়ে গাড়ি যেখানে সেখানে থামাবে না, পার্কিং করবে না, নেশা করে গাড়ি চালাবে না। লাইসেন্স, ফিটনেট সব সময় মত আপডেট থাকবে, রাজস্ব আদায় বাড়বে, জানমালের ক্ষতি কমবে, যানজট কমবে, কর্মঘন্টা বাড়বে। পুলিশদের আর মানবিক হতে হবে না। এক কথায় দুর্নিতি কমবে। ডিজেল/প্রেট্রোলিয়ামের ফুয়েলের ব্যয় কমবে। অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৫
অপলক বলেছেন: হা হা হা... ভাল লাগছে ভাই। সুন্দর করে বলছেন। বাংলাদেশের জন্য সত্যিটা হল, এখানে সব চেয়ারে সবাই বসতে পারে না। বসলেও সবাই টিকে থাকতে পারে না।
দেখুন বাঙ্গালীরা কতটা ট্যালেন্ট হলে, শিকাগোর উইলস টাওয়ার ডিজাইন করে, আইফেল টাওয়ার আধুনিকরন করে, মাস্টার পিস জাতীয় সংসদ ডিজাইন করে, বুর্জ আল খলীফার ইন্জিনিয়ারদের টিমে কাজ করে বা আমেরিকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যানেলের ডিজানার হিসেবে কাজ করে। আর এদেশে আম ওয়ালা ছালা ওয়ালা যদু মদু কদু দিয়ে কাজ করে। বিদেশীদের ডেকে নিয়ে আসে। বাংলাদেশে জিনিয়াস আর্কিটেক্ট ইজ্ঞিনিয়ার বা সিভিল ইজ্ঞিনিয়ারদের কমতি আছে? সরকার করবে না। করে না... যত ভুল তত সংশোধন.. তত বাজেট নবায়ন/সম্বন্বয়...তত টাকা। আর কেউ কিছু করলে তো ভুল ধরবেই... এটাই বাংলিদের স্বভাব।
পদ্মা ব্রীজ বানাতে ইজ্ঞিনিয়ার ডা. রবিন (হংকং জন্ম) কে দেয়া হল, কর্নফুলি ট্যানেল ডিজাইন করল চীনের CCCC কম্পানি লোকাল ইজ্ঞিনিয়ার দেয়া হল... এরকম অনেক উদাহরন আছে। আর না বলি। অনেকেই ক্ষেপে যাবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৫
কলাবাগান১ বলেছেন: রাজাকার শিবির এর সাপোর্টার রা এও বলে যে মেট্রোরেল/পদ্মা সেতুর দরকার ছিল না...মাইক্রস্কোপ দিয়ে খুজে এনে এখন বলছে জাপানের তৈরী বিমান বন্দর এর থার্ড টার্মিনাল এর ডিজাইন নাকি থার্ড ক্লাস...।নিজে কিছু করবে না কিন্তু সমালোচনার সময় .......যারে দেখতে পারি না, তার চলন বাকা