নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই শহরে কাকেরা থাকুক ভয়হীন

০৭ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪


(১)
নব্বইয়ের দশক থেকে হঠাৎ করে ভারতে শকুনের সংখ্যা কমতে থাকে। ব্যাপারটা কেউ প্রথমে সেভাবে খেয়াল করে নি। কিংবা কেউ খেয়াল করলেও পাত্তা দেয় নি। শকুন না থাকলে কী এসে যায়! পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্যে যোগ্যতম প্রাণী হচ্ছে মানুষ। ডোডো পাখিরা হারিয়ে গেছে, সাদা গন্ডার হারানোর পথে, শকুনরাও যাবে না হয়!
কিন্তু কিছু একটা এসে গেল! শকুন না থাকার কারণে মরে পড়ে থাকা প্রাণীগুলিকে কেউ খেয়ে পরিষ্কার করছিল না। ফলে নানারকম জীবাণু বাড়তে লাগল। খাবারের প্রতিযোগিতা কমে যাওয়ায় বন্য কুকুরেরা সংখ্যায় বাড়ল। স্বাভাবিকভাবেই কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বেড়ে গেল এবং জলাতঙ্ক রোগ বাড়ল।
জলাতঙ্ক এমন একটা রোগ, এটা একবার হয়ে গেলে বাঁচার আর কোনো উপায় নেই। এই সময়ে প্রায় ৪৭ মিলিয়ন কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটল আর মারা গেল ৩৪০০০ মানুষ!
শকুনের সংখ্যা কমতে থাকার এই সংকট থেকে ভারত প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হলো।
(২)
শকুনেরা কেন হঠাৎ করে কমতে শুরু করেছিল? অনেকদিন পর্যন্ত এর কারণ কেউ বুঝতে পারে নি। তবে ধারণা করা হতো কীটনাশকের প্রয়োগ আর পরিবেশ দুষণের কারণে শকুনেরা মরতে শুরু করেছে। ২০০৩ সালে জানা গেল মূল কারণ। গবাদি পশুদেরকে ডাইক্লোফেনাক নামক একটা ঔষধ দেয়া হতো হরেদরে। এই পশুরা মারা যাবার পর তাদের খেত শকুনেরা। পশুদের শরীরে থেকে যাওয়া ডাইক্লোফেনাকের অংশ শকুনের শরীর সহ্য করতে পারে নি। তাদের কিডনি বিকল হতে লাগল। তারা মারা যেতে থাকল।
শকুনদের এই নির্বংশ হয়ে যাওয়ার পরিণতি ছিল ভয়াবহ। শুধু বন্য কুকুরের সংখ্যাই বাড়ে নি। ইঁদুরের সংখ্যাও বেড়ে গেছিল। আর নানারকম জীবাণু তো ছিলই! ২০০০ থেকে ২০০৫ এর মধ্যে ভারতে মৃত্যুহার প্রায় ৪% বেড়ে গিয়েছিল। এই সময়টায় শকুনের সংখ্যা ছিল ভারতের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
২০০৩ এর সেই রিপোর্টের পরে ভারতে ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধ করা হয়। মানুষের নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্যে এখন শকুনকে রক্ষা করতে প্রাণপণ চেষ্টা চলছে।
ভারতের শকুন সংকট
(৩)
শুনলাম ঢাকা শহরে কাক কমে যাচ্ছে।
রাজধানী ঢাকায় কাক কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কাক কমে যাওয়ার প্রধানত তিনটি কারণ আমরা পেয়েছি। এগুলো হলো-বাসস্থান ও খাদ্যের সংকট, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং মোবাইল টাওয়ারের মতো প্রযুক্তিগত স্থাপনার আধিক্য। এসবের কারণে কাক প্রাকৃতিক পরিবেশে তার যে সাপোর্ট প্রয়োজন হয় তা ঠিকভাবে পায় না।’ বাংলা ট্রিবিউন
ঢাকায় এখন মানুষ আর ইট-পাথর ছাড়া আছে কী? গাছ নেই, বেজী নেই, খাটাস নেই, শিয়াল নেই, কৃষ্ণচূড়া গাছও নেই। আমরা বিড়ালকে লাথি মারি, কুকুরের গায়ে গরম পানি ঢেলে দেই। কারণ, আমরাই সেরা জীব। আমরা ছাড়া পৃথিবীতে আর কারো থাকার দরকার নেই।
কিন্তু নিজেদের বাঁচতে হলেও কাককে বাঁচাতে হবে। পরিবেশে কাকের ভূমিকাও অনেকটা শকুনের মতোই। কাক কমে গেলে নিশ্চিতভাবেই নানারকম রোগ ছড়িয়ে পড়বে। ইতিমধ্যেই পড়েছে কি না কে জানে! এসব নিয়ে কি দীর্ঘ এবং গভীর গবেষণা হবে?
আসুন, ঢাকা শহরের কাকদের বাঁচাই। বিলুপ্তির সম্মুখীন প্রতিটি প্রাণীকে রক্ষা করি। কথাগুলি যতই বোকাবোকা আর অর্থহীন শোনাক, একদিন আমরা জানব, টাকা চিবিয়ে খাওয়া যায় না।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: কাক নিয়ে চিন্তা বাদ দেন।
এই শহরে বহু মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের কথা ভাবুন।

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:২৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমি কী নিয়ে ভাববো তা আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে না।

২| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৬

ধুলো মেঘ বলেছেন: কাক না থাকার কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ন নয়। নগর থেকে ডাস্টবিন অপসারণ। বিশ বছর আগে ঢাকার রাস্তায় যত্রতত্র ডাস্টবিন দেখা যেত। তখন কাকের অভাব ছিলনা। এখন শহরের যেখানে যেখানে ময়লার ভাগাড় আছে - সেখানে কাকেরও অভাব নেই। তাই কাকের উৎপাত ফিরিয়ে আনতে হলে শহরকে আবার ময়লার ভাগাড় বানানোর বিকল্প নেই।

একটা সুন্দর পরিচ্ছন্ন শহরে কাকের কোনই প্রয়োজন নেই। তবে পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে যদি পার্ক এবং গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়, তবে ঢাকার আকাশে প্রচুর পাখি দেখতে পাওয়া যাবে - সেতা আমাদের জন্য খুবই আকাঙ্ক্ষিত নগরী হবে।

১৪ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:২৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: যুক্তি আছে কথায়। তবে যেহেতু রাতারাতি শহর পরিষ্কার হচ্ছে না, তাই কাকরা থাকুক।

৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৩

সোনাগাজী বলেছেন:


ঢাকার বেশীরভাগ মানুষ বিবিধ চাপের মুখে ও দুষিত পরিবেশে বাস করার কারণে সঠিকভাবে ভাবতে পারেন না।

৪| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৫

শেরজা তপন বলেছেন: মিরপুরের আমার এদিকটা প্রচুর বেজী দেখা যায়। গতকাল একটা বেজী আমার গ্যারেজের পাশের রুমে আচমকা ঢুকে বেকুবের মত কুছহুক্ষন তাকিয়ে থেকে ভোঁ দৌড়। আজ দেখলাম একটা রাস্তায় গারির তলে পড়ে মারা গেছে।
আমিন বাজারে ময়লার ভাগাড়ে সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বেশী ভুবন চিলের বাস( :) আমার ধারনা)
চমৎকার বিষয় তুলে ধরেছেন। তবে পশুপ্রেমীর সংখ্যা বাড়ছে এখন আমির বাসার কাছে এক প্রাইভেট পশু পাখির হাসপাতাল আছে ওখানে, এসি কেবিন, অপারেশন থিয়েটার, চাইল্ড কেয়ার, ডে কেয়ার সহ সব সুবিধা আছে। সেখানে গেলে দেখবেন মানুষ কি পরিমান পশুপাখি ভালবাসেন। কত টাকা এখন খরচ করছে ওদের পেছনে।
আমাদের এখানে খোরশেদ ভাই নামে একজন বর্ষিয়ান মানুষ আছেন, যিনি ভয়ানক কৃপন আর , বদরাগী, কুট- কৌশলের লোক হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রতিদিন রাত বারোটার পরে মাংস আর ভাত রান্না করে রিক্সায় করে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে কুকুর বিড়ালকে খাবার বিলিয়ে গভীর রাতে বাসায় ফিরেন। এমন অনেক গল্প আছে ...

৫| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:০৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: লেখক হিসেবে আপনার এই সচেতনতা এবং প্রকৃতি এবং পরিবেশ নিয়ে লেখাটি ভালো লাগলো। "এই শহরে কাকেরা থাকুক ভয়হীন" শিরোনামটিও অনবদ্য।

ভারতে শকুনের সংখ্যা কমতে থাকার ঘটনাটি জানা ছিলো না। আরো অবাক হলাম এটা জেনে যে এটার কারন ডিডিটি (DDT) বা এ জাতীয় কীটনাশক নয় বরং ডাইক্লোফেনাক নামের একটি এন্টি-ইনফ্লাম্যাটরি ড্রাগ যেটা গরুকে খাওয়ানো হতো। পরিবেশের বিষয়গুলো যে কী রকমের জটিল আর সূক্ষ্ণ হতে পারে এটি তার একটি উদাহরণ।

প্রসাঙ্গন্তরে, আপনি হয়তো জেনে থাকবেন যে ডিডিটির আবিষ্কারক পল মূলার কে ১৯৪৮ সালে তার এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়েছিলো! বহু বছর পরে পাখি-পর্যবেক্ষকেরা লক্ষ করলেন যে পাখির সংখ্যা অনেক কমে গেছে বিশেষ করে বাজপাখি আর ঈগল কমে গেছে অনেক। পরে দেখা গেল এই ডিডিটি মানুষের শরীরে চলে এসেছে - মাতৃদুগ্ধের মধ্যে ডিডিটি পাওয়া গেল।

৬| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪৫

আরিফ রুবেল বলেছেন: মরার শহর যে অনেক আগেই বাসের অযোগ্য হামা ভাই। আসন্ন বিপদ কিন্তু পশু পাখিরাই আগে বোঝে। আমরা না বুঝলেও ওরা ঠিকই বুঝতে পারে যে ঢাকা আর বাসের যোগ্য নেই। তবে কি জানেন কাকেরা কিন্তু এই নগরে আবার ফিরে আসবে। প্রকাণ্ড কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে যখন কোন উদ্ধার তৎপরতাই আর কাজে আসবে না তখন শবের নগরকে মুক্তি দিতে আসমানের ফেরেশতারা কাক হয়ে ফিরে আসবে।

রমনায় কিন্তু বেশ ভালো পরিমান কাক আছে।

৭| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: পশু প্রাণী পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। অথচ পশুর প্রতি অবহেলা দেখেছি আমাদের সমাজে।
শেরজা তপনের মন্তব্যে জানলাম এখন পশুর অনেক হাসপাতাল হয়েছে। তবে করোনা কালেও দেখেছিলাম অনেকে পশুদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছে। অনেকের ভালোবাসা বেশ বাড়ছে প্রাণীর জন্য। বিষয়টি ভালো।
ফসলের ক্ষতিকারক কীটনাশক, পশু পাখি থেকে মানুষের শরীরেও ক্ষতি করছে। একটা ভালো করতে যেয়ে অন্য কিছু ক্ষতি হচ্ছে । বেশ ভালো ক্ষতি হবার পরে সেই অবস্থা বন্ধ হচ্ছে।
ন্যাচারেল থাকার মতন আর কোন ভালো থাকা নেই।
ভালো পোষ্ট

৮| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমি কী নিয়ে ভাববো তা আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে না।

ভাই আসসালামু আলাইকুম।
রাগ করছেন কেন? রাগের কথা কি আমি বলেছি?
আপনি আপনার মতোই করেই ভাববেন, এটাই তো স্বাভাবিক।

৯| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৩

কাঁউটাল বলেছেন: রাজিব নূর একজন বিকৃত মানসিকতার মানুষ। ১ নম্বর কমেন্ট তার প্রমান। উনার একটা ফ্যান্টাসি গল্প পড়ছিলাম অনেকদিন আগে। প্রথম পুরুষে লেখা গল্পটায় গল্পের নায়ক দিনের বেলা একজন ভদ্রলোক কিন্তু রাতের বেলা কবরস্থানে গিয়ে যুবতী মেয়েদের লাশ তুলে ধর্যন করত। তখন থেকেই রাজিব নূরকে আমি অপছন্দ করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.