নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা ও আয়ের সম্পর্ক

১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:১৭

পত্রিকার একটি প্রতিবেদন দেখছিলাম- "যত বেশি শিক্ষা তত বেশি আয়"।
একজন প্রশ্ন করলেন- "স্যার, এটা কি আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? জব পারস্পেক্টিভ বিবেচনায়?"
এক বড় ভাই বললেন- "অসততা, দুর্নীতি, ঘুষ এগুলো বিবেচনা না করলে সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।"

আসলেই কি তাই?

একটা সৎ, ন্যায়বান, ঘুষ না নেওয়া রিকশাওয়ালা, সিএনজিওয়ালা, কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী, মুদিদোকান ব্যবসায়ী, এমনকি অনেকক্ষেত্রে কাজের বুয়াও- দেশের অনেক স্নাতক/স্নাতকোত্তর পাশ করা প্রাইভেট জবহোল্ডারের প্রথম ১০/১২ বছরের বেতনের চাইতে বেশি আয়-উপার্জন করে, কম খরচ করে, এমনকি সঞ্চয়ও বেশি করে।

এই দেশে পড়ালেখা করে আপাতদৃষ্টিতে আধিপত্যের সাথে আয় করছে যারাঃ-

১) বিসিএস পাশ করা যারা
২) অন্যান্য সরকারি বড় চাকরিতে যারা
৩) MNC তে যারা
৪) বড় NGO তে যারা
৫) UN ও অন্যান্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গে যারা
৬) সামরিক বাহিনীতে যারা
৭) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের উচ্চপদে যারা
৮.) ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের ব্যবসার সাথে জড়িত ডাক্তাররা
৯) রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ও বিভিন্ন সরকারি প্রজেক্টের সাথে জড়িত ইঞ্জিনিয়ারেরা
১০) ব্যাংক, ফাইনান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন, টেলিকম, টিভি চ্যানেল, ইত্যাদিতে যারা ভালো পদে

এই ক্যাটাগরিগুলো ও অন্যান্য যারা আছে, যারা পড়ালেখা করে ভালো আয় করার মত জবে যাওয়ার যোগ্য হয়েছে। কিন্তু এগুলোতে কম্পিটিশন শতে ১ জন থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে ১০ লাখে ১ জন।
এখানেও অনেক প্রশ্ন আছে। উদাহরণস্বরূপঃ অমুক সরকারি দপ্তরের কাজের পরিমাণ ও পরিধির তুলনায় নিয়োগ এত বেশি কেন; অমুক চাকরিতে কৃতকাজ ও দায়িত্বের তুলনায় বেতনভাতা-সুবিধাদি পাহাড়সম কেন।

সবচেয়ে বড় কথা, উপরের ১০টা ক্যাটাগরিতে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার চাইতেও বেশি লাগে পরীক্ষায় পাশ/ভালো করার জন্য নির্দিষ্ট অব্যবহারিক/অপ্রায়োগিক পড়ালেখা; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রমের চেয়েও বেশি লাগে সনদপত্র; এবং পেশাগত জ্ঞান/দক্ষতার চাইতেও বেশি লাগে কিভাবে বাংলাদেশের মত অস্বাভাবিক শ্বাপদসংকুল কর্মক্ষেত্রে Brutally Survive করতে হয়।

মূলত মিডল ক্লাস নিয়েই লিখে যাচ্ছি এই মন্তব্যে; আসলে সোশ্যাল ক্লাস একটাই- মিডল ক্লাস। গরীব ঘরে জন্মানো বাচ্চাটা লোয়ার ক্লাসের হয়ে জন্মায়; ধনীর ঘরে জন্মানো বাচ্চাটা আপার ক্লাসের হয়ে জন্মায়। ধনীর বাচ্চাটা রেডিমেড গ্রুপ অব কোম্পানিজের এমডি বা সিইও হয়ে জন্মায়; তার ধনী থাকার চান্স বেশি। আর বস্তির সদ্যজাত বাচ্চাটার কপালে কি আছে কেউ জানে না।

সমাজের (যেকোন ক্লাসের) একটা বড় অংশ পড়ালেখা করুক বা না করুক, তাদের পেশাতে পড়ালেখার কোন কিছুই লাগে না। সেই পেশা হলো- মধ্যস্থতাকারী। এই মধ্যস্থতাকারীটা আবার যেকোন পেশার সাইনবোর্ডে হতে পারে। ছোট্ট উদাহরণ দিই একটা।

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা, বিদেশী নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তর- এদের সমন্বয়ে কোন একটা বিশাল উন্নয়নযজ্ঞ (!) হচ্ছে। এর সামান্যতম নির্দিষ্ট একটা অংশে ইকুইপমেন্ট লাগবে। এই প্রজেক্টে ইকুইপমেন্ট কেনার জন্য আলাদা কোম্পানি আছে। ঐ কোম্পানি টেন্ডার দেয় ইকুইপমেন্ট কেনার আহ্বান দিয়ে; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকদেখানো। কাজ পায় পছন্দের আরেক প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠান বাজেট দেয় ইকুইপমেন্টের ক্রয়মূল্য হিসেবে; এবং বাজেট পাশ হয়ে গেলে সেই টাকা বরাদ্দ পায়। ঐ টাকা পুরোটা তারা রেখে দিয়ে তার একটা "অংশ" দিয়ে যন্ত্র কিনতে দেয় অন্য এক বা একাধিক ছোট প্রতিষ্ঠানকে।

মোদ্দাকথা, "উন্নয়ন" এর নামে এই দেশে যত জনের ঘর চলছে, "উচ্চশিক্ষা" দিয়ে তার কানাকড়িও চলেনি/চলবে না। উন্নয়নের বরাদ্দের টাকা এভাবে ভাগাভাগি হয় বলেই সবাই এই গাটবন্ধনকে ভাঙতে দিচ্ছে না, দিবে না। সিস্টেম লস দিয়ে গেইন হচ্ছে বলে, এই সিস্টেম লসই চলতে থাকবে।

এই জন্য কিছু বানানো বা কেনার প্রসঙ্গ আসলে সবাই খুশি; কারণ এই বানানোর বা কেনার টাকাটা এমনভাবে ভাগ-ভাটোয়ারা হবে, সেটা কল্পনাতীতভাবে দীর্ঘ ও জটিল। ভাগ-বাটোয়ারা করতে হলে কিঞ্চিৎ "শিক্ষা" লাগে বৈকি!




একটা সৎ, ন্যায়বান, ঘুষ না নেওয়া রিকশাওয়ালা, সিএনজিওয়ালা, কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী, মুদিদোকান ব্যবসায়ী, এমনকি অনেকক্ষেত্রে কাজের বুয়াও- দেশের অনেক স্নাতক/স্নাতকোত্তর পাশ করা প্রাইভেট জবহোল্ডারের প্রথম ১০/১২ বছরের বেতনের চাইতে বেশি আয়-উপার্জন করে, কম খরচ করে, এমনকি সঞ্চয়ও বেশি করে।

এই দেশে পড়ালেখা করে আপাতদৃষ্টিতে আধিপত্যের সাথে আয় করছে যারাঃ-

১) বিসিএস পাশ করা যারা
২) অন্যান্য সরকারি বড় চাকরিতে যারা
৩) MNC তে যারা
৪) বড় NGO তে যারা
৫) UN ও অন্যান্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গে যারা
৬) সামরিক বাহিনীতে যারা
৭) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের উচ্চপদে যারা
৮.) ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের ব্যবসার সাথে জড়িত ডাক্তাররা
৯) রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ও বিভিন্ন সরকারি প্রজেক্টের সাথে জড়িত ইঞ্জিনিয়ারেরা
১০) ব্যাংক, ফাইনান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন, টেলিকম, টিভি চ্যানেল, ইত্যাদিতে যারা ভালো পদে

এই ক্যাটাগরিগুলো ও অন্যান্য যারা আছে, যারা পড়ালেখা করে ভালো আয় করার মত জবে যাওয়ার যোগ্য হয়েছে। কিন্তু এগুলোতে কম্পিটিশন শতে ১ জন থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে ১০ লাখে ১ জন।
এখানেও অনেক প্রশ্ন আছে। উদাহরণস্বরূপঃ অমুক সরকারি দপ্তরের কাজের পরিমাণ ও পরিধির তুলনায় নিয়োগ এত বেশি কেন; অমুক চাকরিতে কৃতকাজ ও দায়িত্বের তুলনায় বেতনভাতা-সুবিধাদি পাহাড়সম কেন।

সবচেয়ে বড় কথা, উপরের ১০টা ক্যাটাগরিতে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার চাইতেও বেশি লাগে পরীক্ষায় পাশ/ভালো করার জন্য নির্দিষ্ট অব্যবহারিক/অপ্রায়োগিক পড়ালেখা; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রমের চেয়েও বেশি লাগে সনদপত্র; এবং পেশাগত জ্ঞান/দক্ষতার চাইতেও বেশি লাগে কিভাবে বাংলাদেশের মত অস্বাভাবিক শ্বাপদসংকুল কর্মক্ষেত্রে Brutally Survive করতে হয়।

মূলত মিডল ক্লাস নিয়েই লিখে যাচ্ছি এই মন্তব্যে; আসলে সোশ্যাল ক্লাস একটাই- মিডল ক্লাস। গরীব ঘরে জন্মানো বাচ্চাটা লোয়ার ক্লাসের হয়ে জন্মায়; ধনীর ঘরে জন্মানো বাচ্চাটা আপার ক্লাসের হয়ে জন্মায়। ধনীর বাচ্চাটা রেডিমেড গ্রুপ অব কোম্পানিজের এমডি বা সিইও হয়ে জন্মায়; তার ধনী থাকার চান্স বেশি। আর বস্তির সদ্যজাত বাচ্চাটার কপালে কি আছে কেউ জানে না।

সমাজের (যেকোন ক্লাসের) একটা বড় অংশ পড়ালেখা করুক বা না করুক, তাদের পেশাতে পড়ালেখার কোন কিছুই লাগে না। সেই পেশা হলো- মধ্যস্থতাকারী। এই মধ্যস্থতাকারীটা আবার যেকোন পেশার সাইনবোর্ডে হতে পারে। ছোট্ট উদাহরণ দিই একটা।

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা, বিদেশী নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তর- এদের সমন্বয়ে কোন একটা বিশাল উন্নয়নযজ্ঞ (!) হচ্ছে। এর সামান্যতম নির্দিষ্ট একটা অংশে ইকুইপমেন্ট লাগবে। এই প্রজেক্টে ইকুইপমেন্ট কেনার জন্য আলাদা কোম্পানি আছে। ঐ কোম্পানি টেন্ডার দেয় ইকুইপমেন্ট কেনার আহ্বান দিয়ে; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকদেখানো। কাজ পায় পছন্দের আরেক প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠান বাজেট দেয় ইকুইপমেন্টের ক্রয়মূল্য হিসেবে; এবং বাজেট পাশ হয়ে গেলে সেই টাকা বরাদ্দ পায়। ঐ টাকা পুরোটা তারা রেখে দিয়ে তার একটা "অংশ" দিয়ে যন্ত্র কিনতে দেয় অন্য এক বা একাধিক ছোট প্রতিষ্ঠানকে।

মোদ্দাকথা, "উন্নয়ন" এর নামে এই দেশে যত জনের ঘর চলছে, "উচ্চশিক্ষা" দিয়ে তার কানাকড়িও চলেনি/চলবে না। উন্নয়নের বরাদ্দের টাকা এভাবে ভাগাভাগি হয় বলেই সবাই এই গাটবন্ধনকে ভাঙতে দিচ্ছে না, দিবে না। সিস্টেম লস দিয়ে গেইন হচ্ছে বলে, এই সিস্টেম লসই চলতে থাকবে।

এই জন্য কিছু বানানো বা কেনার প্রসঙ্গ আসলে সবাই খুশি; কারণ এই বানানোর বা কেনার টাকাটা এমনভাবে ভাগ-ভাটোয়ারা হবে, সেটা কল্পনাতীতভাবে দীর্ঘ ও জটিল। ভাগ-বাটোয়ারা করতে হলে কিঞ্চিৎ "শিক্ষা" লাগে বৈকি!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:১৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: শিক্ষার সাথে ইনকাম পুরাটাই রিলেটেড। তবে এটা বুঝতে হলে আগে শিক্ষা কি তা বুঝতে হবে। একজন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাইয়া গিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দর্শনে ভর্তি হলো, আর একজন গিয়ে গাড়ি সারাইয়ের কাজ শিখলো। দুইজনের কাকে আপনি শিক্ষিত বলবেন তার সাথে ইনকাম রিলেটেড কি রিলেটেড না তা নির্ভর করবে।

২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: এজন্য শিক্ষিতরাই বড় চাকরী করে। বেশি ইনকাম করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.