নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা থেকে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছে একদল তরুণ অনেক দিন পর।
১) পথিমধ্যে ট্রানজিটে যেখানে বাস থেমেছে, সেখানে সব দোকানে কোল্ড ড্রিংক্স সার্ভ করছে বোতল থেকে #প্লাস্টিকের গ্লাসে/কাপে। ৪০ টাকার বোতলের পানীয় গ্লাসে ঢেলে ৪০ টাকাতেই বিক্রি করছে, যেখানে বোতলের সব পানীয় লাগছেও না। সরাসরি বোতল চাইলেও পাওয়া যায় না; শুধু ঐ দোকানে না, ঐ স্পটের সব দোকানে। এমনকি অন্য অনেক লোকেশনেও এই আরোপিত একাধিপত্য। (ওয়ানটাইম প্লাস্টিক যে আমাদের জন্য কি ভয়াবহ রকমের ক্ষতিকর, এটা এদের অনেকে জানে না। এবং অনেকে হয়তো জেনেশুনেই এসব অব্যাহত রেখেছে)
২) কক্সবাজারের বাস স্টেশন থেকে হোটেল পর্যন্ত আসতে ব্যবহৃত টমটম থেকে হোটেলের সামনে নামার পরে- গাড়ির ভেতরে লাগেজ রেখে, গাড়ি থেকে নেমে ভাড়া দেওয়ার সাথে সাথে হাত থেকে টাকাটা টান দিয়ে নিয়ে, টমটমটাও টান দিয়ে নিয়ে লাগেজগুলোসুদ্ধ হাওয়া হয়ে যাওয়া! শুধু একবার বা একজনের ক্ষেত্রে না; একই দিনে একাধিকবার, একাধিক হোটেলের সামনে এই ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। ফোর-স্টার হোটেল হওয়া সত্ত্বেও এর সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে টমটমের নেইমপ্লেটও দেখা বা বুঝা যায়নি; মালামাল উদ্ধারও সম্ভব হয়নি আর।
৩) অনলাইনে ও ফোনের মাধ্যমে হোটেলে অর্ডার দেওয়া রুমের সাথে- বাস্তবে লোকেশনে গিয়ে পাওয়া রুমের মানে আকাশ-পাতাল ব্যবধান! ফোরস্টার হোটেল হওয়া সত্ত্বেও মানুষকে অনলাইন বুকিং এর সময় এক জিনিস দেখানো, ও কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে অন্যরকম বা নিম্নমানের সার্ভিসের সম্মুখীন হতে হওয়া- এগুলো দিনদুপুরে ভদ্রভাবে বাটপারি করা ছাড়া আর কিচ্ছু না।
৪) কক্সবাজার সৈকতে ছোট প্রজাতির ঘোড়াগুলোর উপর মাত্রাতিরিক্ত অত্যাচার করা হয়। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ এগুলোর উপর চড়ানো হয়; সেই পরিমাণ বিশ্রাম ও খাবার দেওয়া ছাড়াই। যারা এই টাট্টু ঘোড়াগুলোর মালিক (বা ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে), তারা শুধুমাত্র নিজেদের অতিরিক্ত লাভের জন্য ও করোনাকালীন সময়ের ক্ষতি পোষানোর জন্য- সহনসীমার অতিরিক্ত মানুষ চড়াচ্ছে এগুলোর উপর। সভ্য দেশে হলে এরকম ঘটনা কল্পনাও করা যেতো না।
৫) দূর-দূরান্ত থেকে আসা, বিচে বিশ্রামরত, প্রাকৃতিক নৈসর্গ্য উপভোগকারী মানুষেরা খুবই ঘন ঘন বিরক্ত, উত্যক্ত ও হেনস্তার শিকার হয়। বিশেষত ভদ্র ও শান্ত গোছের যারা; এবং যারা পরিবার (শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ) নিয়ে আসেন। কফি বিক্রেতা, শামুক বিক্রেতা, ম্যাসাজ বিক্রেতা, ঘোড়সওয়ারকারী, জেট-স্কি সার্ভিসদাতা, এরকম ওয়ান-টাইম, আনসাস্টেইনেবল, ভ্রাম্যমাণ, মুনাফামুখী ব্ল্যাকমেইলিং বিজনেসে ভরপুর পুরো কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
৬) সৈকতে মানুষের বিশ্রাম নেওয়ার জায়গায়, ৪০ থেকে ৫০ ফুট জায়গা জুড়ে বালিতে বিশাল এক অশ্লীল চিত্রকর্মের সম্মুখীনও হতে হয়েছিলো এই ভ্রমণ দলটাকে। ঐ জায়গা দিয়ে পরিবার-পরিজন সহ অন্যান্য ভ্রমণকারীরা কিভাবে গিয়েছে, সেটাই ভাবছিলাম।
এই ট্রাভেলিং টিমটার যেই মানুষটা এগুলো বলছিলো, সে কথাগুলো শেয়ার করতে সংকোচ করছিলো ও #ভয় পাচ্ছিলো। কারণ, সে ভাবছিলো- সে কোন generalization বা Stereotype করছে কিনা। তার মতে- কোন একটা নির্দিষ্ট জায়গার মানুষ নিয়ে কিছু বললে, মনে হতে পারে পুরো জায়গাটার সব মানুষকে উদ্দেশ্য করেই সেটা বলা হচ্ছে।
বিশ্বের সর্বদীর্ঘ বিরতিহীন সমুদ্রসৈকতকে আমরা কি তার সঠিক মর্যাদা দিতে পারছি? শুধু হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে এয়ারপোর্টের মত মেগাপ্রজেক্টগুলো বানিয়ে দেশ-বিদেশের সবাইকে "উন্নয়নের মুলা" দেখালে প্রকৃত উন্নয়ন হবে; ট্যুরিস্ট আসবে, নিরাপদবোধ করবে, সুস্থ ও নির্মল বিনোদন পাবে? নাকি স্থানীয় ক্ষমতাবান ও রাজনৈতিক মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীচক্র ও অপরাধ সিন্ডিকেটগুলোকে কড়াহস্তে দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে? টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসের মত অমানুষের হাতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকলে অবশ্য রক্ষকই ভক্ষকে রূপান্তরিত হবে।
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: মানুষ হিসাবে আমরা প্রায় সবাই নীচু মানষিকতা তথা নৈতিক মূল্যবোধহীন।
সেখানে কার নিকট থেকে আপনি ভাল কিছু আশা করবেন - ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসক-রাজনীতিবিদ-আমলা-কামলা-আমজনতা? যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের নৈতিকতাবোধ না তৈরী হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয়না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: াসল সমস্যা হলো বাংলাদেশের মানুষ গুলো না। কেউ ভালো না। আপনিও ভালো না। আমিও ভালো না।