নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাইল্যাকাডা

দিনমজুর

নাইল্যাকাডা ১ম বর্ষ, ২য় সংখ্যার প্রাপ্তিস্থানঃ আজিজ সুপার মার্কেট ১। বইপত্র/ ২। জনান্তিক/ ৩। শ্রাবণ/ ৪। প্রথমা (একুশে)/ ৫। তক্ষশীলা/ ৬। লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গন লোক/ ৭। বিদিত/ ৮। পলল/ ৯।পাঠশালা মুক্তিভবন (পুরানা পল্টন) ১০। জাতীয় সাহিত্য প্রকাশন

দিনমজুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাষ্ট্র ব্যাবস্থার বিশাল ফাটলে ‘গ্রামীণ বা ব্র্যাক পোশাকশিল্প শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ গুজে দেয়ার ইউনুসীয় প্রস্তাব

০৯ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

সংকটকে পুজি করে ব্যাবসা ফেদে বসার প্রতিভায় ড.ইউনুসের যে কোন জুড়ি নেই, সেটা তিনি আবারও প্রমাণ করলেন গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলমান কাঠামোগত গণহত্যার (ইউনুস সাহেবের ভাষায় ‘গণমৃত্যু’) প্রেক্ষিতে মালিক শ্রেণী, সরকার এবং বিদেশী ক্রেতাদের ভাবমূর্তি সংকটের মুশকিল আসান হিসেবে ‘গ্রামীণ বা ব্র্যাক পোশাকশিল্প শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ এর প্রস্তাবনা হাজির করে। ‘সাভার ট্র্যাজেডি, পোশাকশিল্প ও বাংলাদেশ’ নামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ড.ইউনুসের প্রস্তাবনা অনুসারে রানা প্লাজার ফাটল ফেটে ভবন ধসে তারা ভাষায় আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যে ‘বিশাল ফাটল’ ধরা পড়েছে, তার সমাধান হিসেবে সিটিজেন অ্যাকশান গ্রুপ, ঘন্টায় ৫০ সেন্ট ন্যূনতম মজুরী এবং পোশাক প্রতি বিদেশী ক্রেতাদের ৫০ সেন্ট করে সহায়তায় গঠিত ‘গ্রামীণ বা ব্র্যাক পোশাকশিল্প শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ বা ‘অন্য কোনো আন্তর্জাতিক আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান’কে উপস্থাপন করেছেন।



ড.ইউনুসের প্রস্তাবনা অনুসারে- “এই অতিরিক্ত ৫০ সেন্ট দিয়ে যদি আমি উন্নত বিশ্বের কনজ্যুমারদের কাছে পরিচিত ও আস্থাভাজন একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় বাংলাদেশে একটি ‘গ্রামীণ বা ব্র্যাক পোশাকশিল্প শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করতে পারি, তাহলে শ্রমিকের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তার শারীরিক নিরাপত্তা, সামাজিক নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, অবসরকালীন নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, সন্তানের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সন্তানের দেখাশোনা, উপার্জন, ভ্রমণ—সবকিছু এর মাধ্যমে করা সম্ভব।……

কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান যদি বলে, এর ফলে আমার বিক্রি কমে যাবে, আমার লাভ কমে যাবে, তাদের আমি বলব, এর জন্য যাতে আপনার বিক্রি না কমে, বরং যাতে বাড়ে, সে ব্যবস্থাও করা যায়। আপনার জামায় আমরা একটা ট্যাগ লাগিয়ে দেব: এতে লেখা থাকবে From the Happy Workers of Bangladesh, with Pleasure. Workers wellbeing being Managed by Grameen অথবা BRAC অথবা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে সুন্দর একটা লোগো থাকবে, দেখলেই বুঝতে হবে, এই কারখানার শ্রমিকেরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে, উষ্ণতার সঙ্গে, এই জামা তৈরি করে দিয়েছেন। তাঁদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য অতিপরিচিত এবং আস্থাভাজন একটি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নিয়েছে। ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এটা তাদের বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করতে পারবে।“



গার্মেন্টস এ আগুণ লেগে, ভবন ধ্বসে যখন একের পর এক শ্রমিক হত্যার ঘটনা ঘটছে, যখন দেশে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বিভিন্ন কাঠামোগত সমস্যা যেমন: শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে না দেয়া, কারখানার কর্মপরিবেশ রক্ষায় রাষ্ট্রের ন্যূনতম ভূমিকা না থাকা, মালিকের মুনাফাবাজিতে শ্রমিক নিরাপত্তায় অবহেলা, বিদেশী ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার স্বার্থে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের দাস শ্রমিকে রুপান্তর ইত্যাদি প্রসঙ্গ যখন সামনে আসছে, যখন শ্রমিকরা সোচ্চার হচ্ছে তখন শ্রমিকের ট্রেডইউনিয়নের অধিকার কিংবা রাষ্ট্রীয় তদারকি কঠোর করার বিষয়গুলোকে পাশ কাটিয়ে বেসরকারি শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট স্থাপনের প্রস্তাবটা গার্মেন্টস মালিক, মালিকদের স্বার্থ রক্ষাকারী শাসকদের জন্য বেশ স্বস্তি দায়কই হতে পারে!



প্রথমত, কারখানার ভবনের নকশা ঠিক আছে কিনা, ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যাবস্থা যথাযথ কিনা ইত্যাদি শ্রমিক নিরাপত্তা মূলক ব্যাবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও আইন কানুন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রয়োজন। এর সাথে অর্থকড়ির সম্পর্ক সামান্যই। ফলে কোন এক গ্রামীণ শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট কে বিদেশী ক্রেতারা কাপড় প্রতি ৫০ সেন্ট করে দিলেই এই কাঠামোগত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। এতদিন আমাদেরকে শোনানো হয়েছে, বেসরকারি খাত ব্যাবসা করবে, সরকারি খাত নিয়ন্ত্রণের কাজটা করবে। বেসরকারি খাতের লুটপাট আর শ্রম শোষণে শ্রমিকদের জীবন যখন বিপন্ন , সরকারি খাত যখণ মালিক শ্রেণীর স্বার্থ দেখতেই ব্যাস্ত, তখন আবার বেসরকারিখাতের নিয়ন্ত্রণের জন্য আরেক বেসরকারি খাত, শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্টের কথা বলা হচ্ছে! জনাব, ঐ শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্টকে কে নিয়ন্ত্রণ করবে?



দ্বিতীয়ত, কারখানা জিনিসটা বাংলাদেশে নতুন না, সারা দুনিয়াতেই আছে। সেসব দেশে বাংলাদেশের মতো অবহেলাজাত দুর্ঘটনা(অর্থাৎ হত্যাকান্ড) না ঘটার কারণ বেসরকারিখাতে শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন। শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমেই পৃথিবীর দেশে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি মজবুত হয়েছে, মালিকরা বাধ্য হয়েছে কারখানায় নূন্যতম কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে। ইউনুস সাহেব তার লেখায় ‘দাসের মত’ শ্রমিকদের নিয়ে এত কাদুনি গাইলেন কিন্তু শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিয়ে একটা কথাও বললেন না!



তৃতীয়ত, তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই, শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট শ্রমিকদের সকল মুশকিল আসান করবে, তাহলেও সমস্যা হলো তার প্রস্তাবিত এই শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট একটা ঐচ্ছিক ব্যাবস্থা যা বিদেশী ক্রেতাদের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করবে। তীব্র ব্যাবসায়িক প্রতিযোগীতার এই দুনিয়ায় সমস্ত ছোট বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইউনুসের আহবানে সাড়া দিয়ে কাপড়ের গায়ে “হ্যাপি বাংলাদেশী ওয়ার্কার” ট্যাগের বিনিময়ে কাপড় প্রতি ৫০ সেন্ট করে বাড়তি দিতে রাজী হয়ে যাবে, এটা ড. ইউনুসের স্বপ্ন বিলাস ছাড়া আর কিছু নয়। কর্পোরেট স্যোসাল রেসপন্সিবিলিটির নামে দুই একটা বড় প্রতিষ্ঠান হয়তো ইউনুসের ইমেজে আকৃষ্ট হয়ে নিজেদের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে এই উদ্যোগে সাড়া দিতে পারে, যা নিয়ে হয় ড. ইউনুস সারা দুনিয়ায় লেকচার দিয়েও বেড়াতে পারেন। কিন্তু তিনি যখন এই দুই একটি দৃষ্ঠান্ত নিয়ে সারা দুনিয়ায় তার স্বপ্ন ব্যাবসা করবেন, তখন দেশের আনাচা কানাচে ছোট বড় কন্ট্রাক্টিং সাবকন্ট্রাক্টিং গার্মেন্টস এর শ্রমিকরা পুড়ে মরবে, ভবন ধ্বসে চিড়ে চ্যাপ্টা হবে।



চতুর্থত, দারিদ্র বিমোচন এবং কর্মসংস্থান যেমন রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব,ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে যেমন এই কাঠামোগত সমস্যার সমাধান হয় না, তেমনি কারখানায় কর্ম পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা, মজুরী ইত্যাদি সম্পর্কিত কাঠামোগত সমস্যা সমাধানেরও দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রীয় দ্বায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে, মালিক শ্রেণীর দ্বায়িত্বকে এড়িয়ে গিয়ে কোন বেসরকারি তথাকথিত শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট এর মাধ্যমে এই কাঠামোগত সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। ইউনুসের ক্ষুদ্র ঋণ মডেলে আত্মকর্মসংস্থান কিংবা সামাজিক ব্যাবসা দিয়ে দারিদ্র বিমোচন সম্ভব হলে গ্রামের নারীদেরকে গার্মেন্টস পুড়ে কিংবা ভবন ধ্বসে মরতে আসতে হতো না, শ্রম দাস হিসেবে মানবেতর জীবন যাপন করতে হতো না।



পঞ্চমত, ইউনুস সাহেবকে ধন্যবাদ ন্যূনতম মজুরীর কথাটা তোলার জন্য । তবে তিনি যেভাবে ২৫ সেন্ট থেকে ৫০ সেন্ট বাড়ানোর কথা বলেছেন, আমরা এরকম কোন ঐচ্ছিক প্রকৃয়ার সাথে একমত নই। আমরা মনে করি,শ্রমিকের নূন্যতম মজুরী হবে বাচার মতো মজুরী, ফলে একবার মজুরী যা ইচ্ছা তাই বাড়ালেই হবে না, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার দর, শ্রমিক পরিবারের আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বাবদ খরচ হিসেব করে সেই মজুরী নির্ধারণ করতে হবে এবং বছর বছর সমন্বয় করতে হবে।



ষষ্ঠত, ড. ইউনুস প্রস্তাবিত ‘সিটিজেন্স অ্যাকশন গ্রুপ ফর প্রটেক্টিং গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বার্থে কাজে আসতে পারে তবে তা ইউনুস প্রস্তাবিত বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, বিদেশী সরকার, দেশের ভেতরে মালিক ও সরকার পক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করে চিঠি লেখার মাধ্যমে সেরকম কিছু ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার কোন নাগরিক কমিটি যদি শ্রমিকদের সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেতে পারে, যদি সরকার ও মালিক পক্ষের উপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করতে পারে তাহলেই সেটা সত্যিকার অর্থে শ্রমিকে অধিকার নিশ্চিত করতে নাগরিকদের তরফে দ্বায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে। কিন্তু ইউনুসের মতো শ্রমিক আন্দোলনের বিকল্প হিসেবে দাড় করাতে চাইলে নাগরিক কমিটি ওয়াচ ডগের নামে আসলে পোষা বিড়ালই হবে।



ড.ইউনুস তার প্রস্তাবনায় শ্রমিকের ‘শারীরিক নিরাপত্তা, সামাজিক নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, অবসরকালীন নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, সন্তানের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সন্তানের দেখাশোনা, উপার্জন, ভ্রমণ’- ইত্যাদি যেসব সমস্যার সমাধানের কথা বলেছেন, তা শ্রমিকের অধিকার, বিদ্যমান পুজিবাদি ব্যাবস্থায় যার ব্যাবস্থা করার দ্বায়িত্ব কারখানা মালিকের আর তদারকির দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের। পুজিবাদি রাষ্ট্রের যেখানেই এই সবের ন্যূনতম অধিকার যেখানে যতটুকু আদায় করা সম্ভব হয়েছে, তা হয়েছে শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও মালিক শ্রেণীকে বাধ্য করার মাধ্যমে, ক্রেতাদের দয়ায় কোন বেসরকারি শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে নয়। যে রাষ্ট্র ব্যাবস্থা শ্রমিকের এই ন্যূনতম অধিকার গুলো নিশ্চিত করতে পারে না, সে রাষ্ট্রের চরিত্র আমুল পাল্টানো ছাড়া উপায় নাই।



ভবনের ফাটলে চুন-সুড়কি গুজে যেমন ভবন ধ্বস ঠেকানো যায় না, তেমনি রাষ্ট্র কাঠামোর বিশাল ফাটলেও গ্রামীণ বা ব্র্যাক পোশাকশিল্প শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠান গুজে দিয়েও রাষ্ট্র ব্যাবস্থার ধ্বস ঠেকানো যাবে না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার কোন নাগরিক কমিটি যদি শ্রমিকদের সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেতে পারে, যদি সরকার ও মালিক পক্ষের উপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করতে পারে তাহলেই সেটা সত্যিকার অর্থে শ্রমিকে অধিকার নিশ্চিত করতে নাগরিকদের তরফে দ্বায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে। কিন্তু ইউনুসের মতো শ্রমিক আন্দোলনের বিকল্প হিসেবে দাড় করাতে চাইলে নাগরিক কমিটি ওয়াচ ডগের নামে আসলে পোষা বিড়ালই হবে

++++++++++++++

মিউ মিউ নয়, চাই বাঘের হালূম ;)

২| ০৯ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৫

প্রািন্ত বলেছেন: এবিষয়ে ইউনুস সাহেবকে তাচ্চিল্য করাটা মোটেও সসচিন নয়। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শুধু ফাটল নয়, বলতে হবে চুরি হতে হতে মহাসাগর আকারের খাল তৈরী হয়েছে। রাষ্ট্র যেখানে পুরোপুরি ব্যর্থ, সেখানে কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। ইউনুস সাহেব যদি সেটা করতে চান তাহলে তাকে সাধুবাদ জানাই। কারণ এদেশের রাজনৈতিক চোরেরা কোন দিনই দেশটাকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না।

৩| ০৯ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

নােয়ফ চৌধুরী বলেছেন: From the Happy Workers of Bangladesh, with Pleasure. Workers wellbeing being Managed by Grameen অথবা BRAC এই লাইনটিতে হয়ত আপনার আপত্তি, আপনি চাইলে " অন্য কোনো আন্তর্জাতিক আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান" গ্রহন করতে পারেন, তবে সামগ্রিক ভাবে সুন্দর প্রস্তাব ।

৪| ০৯ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:০৩

মনে নাই বলেছেন: সামগ্রিকভাবে ডঃ ইউনূসের প্রস্তাবটা বেশ ভালো লেগেছে।

৫| ০৯ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: বৃহত্তর স্বার্থে চিন্তা করলে মনে হয় বামেরা অংক জানে না বা অটিমাত্রায় মূর্খ। তারা কথায় কথায় বলে

ধণিক শ্রেনী, শোষক শ্রেনী, সম্রাজ্যবাদী ইঙ্গ মার্কিন ষড়যন্ত্র, পশ্চিমা বিশ্ব, ভোগবাদী সমাজ তাং ফাং

আবার এই পোস্টে সেরম একখান লাইন

সেসব দেশে বাংলাদেশের মতো অবহেলাজাত দুর্ঘটনা(অর্থাৎ হত্যাকান্ড) না ঘটার কারণ বেসরকারিখাতে শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন।

সেসব কোন দেশ? ঐ যে পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে কামলা খাটার জন্য তৃতীয় বিশ্বের মানুষ জন জীবন বাজী রেখে সর্বস্ব বিক্রি করে ইউরোপীয়ান ড্রিমস বা আমেরিকান ড্রিমসের কথা চিন্তা করে।

এখন আমি একটা সাধারন ক্যালকুলেশন দাড়া করাই কিছু লাইনের ভিত্তিতে। কারন লেখক এই পোস্টে নিশ্চয়ই সমাধান দিয়েছেন (বামেরা সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির আশ্রয় নেয় আর সমাধানের জন্য সেই লেনিনের সময়ের কথা বলে বুঝি না পড়া লেখা এরা আদৌ করে কিনা) যেখানে কিছু কথাকে লেখকের তত্ব বলেই ধরে নিচ্ছি।


কারখানার ভবনের নকশা ঠিক আছে কিনা, ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যাবস্থা যথাযথ কিনা ইত্যাদি শ্রমিক নিরাপত্তা মূলক ব্যাবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও আইন কানুন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রয়োজন। এর সাথে অর্থকড়ির সম্পর্ক সামান্যই।

না সেটা সামান্য না। অর্থকড়ীর বড় একটা ব্যাপার আছে। আমাদের দেশে ইপিজেড গুলোর জায়গা খুবই কম। আপনি যদি ইপিজেডে একটা কারখানা ইরেকশন করতে যান সেখানে ওরা নিয়মমত (এখানে নিয়মমত কথাটা একটু কন্ট্রাডিক্টরী কারন সরকারের ওপর নির্ভর করে সরকার কোন পর্যায়ে দুর্নীতি ছড়াতে পেরেছে এবং কে সেসবের মালিক) নিজেদের ইন্জ্ঞিনিয়ার দিয়েই করছে। ইপিজেডের বাইরের বেশীর ভাগ ইন্ডাস্ট্রিই হচ্ছে ছোট। ফলে তারা কনস্ট্রাকশন ফার্ম থেকে যে নকশা বানায় সেগুলো পাশ করাতে সরকারী ইন্জ্ঞিনিয়ারের কাছেই যেতে হয়। সরকারের সেই ইন্জ্ঞিনিয়ার কিন্তু আছে সব জায়গাতেই, দুর্নীতিটা করছে মেয়র বা রাজনৈতিক নেতারা। যদি তারা দুর্নীতি নাও করে তবুও সেই বিল্ডিং উঠবে তাহলে কেন উঠছে? সেটা উঠাচ্ছে যারা মালিক তারা গায়ের জোরে। রাজউককে বললে বলবে তাদের লোকবল নেই। অনেকেই দুর্নীতির কথা বলবেন কিন্তু যখন লোকবল নাই থাকে, রাজউককে ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার বানিয়ে রাখা হয় তখন তারা দুর্নীতিটাই শ্রেয় মনে করে।

তাহলে যদি লোকবল দেয়া হয় আর অটোনোমাস করা হয় তাহলে এই পরিস্হিতি থেকে মুক্তি দেয়া যেতে পারে। কিন্তু এই লোকবল পুষতে কত লাগে? তাদের সরন্জ্ঞামাদি যেসব বাইরে থেকে আনতে হবে সেগুলোর ব্যাপারে?

এর সমাধান এ ভাবে হতে পারে সরকার এনসিসির মতো একটা কোম্পানী খুলে দিলে যারা কন্টাক্টরীর কাজও করতে পারে। কিন্তু সেটা আরও ব্যায়ব হুল আর আমাদের মতো উন্নয়ন শীল এবং মাইক্রো লেভেলের বিজনেস উর্বর পরিবেশে এটা করাটাও উচিত হবে না। সবচেয়ে বড় কথা দুর্নীতি নামের ইউটোপিয়া।

কিন্তু কাজটা সরকারের করতে হবে আর যেহেতু সরকার এটা করছে না বা করতে পারার অযোগ্য তখন বার বার এই ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানোর কি মানে?

বামদেরও তো ক্ষমতায় দেখলাম, এককালের সর্ভারা ডাকাতের লীডার যখন মন্ত্রীদের আসন পায় সেও তখন নীতি রেখে বিশাল চোর হয় হা হা হা।

কারখানা জিনিসটা বাংলাদেশে নতুন না, সারা দুনিয়াতেই আছে। সেসব দেশে বাংলাদেশের মতো অবহেলাজাত দুর্ঘটনা(অর্থাৎ হত্যাকান্ড) না ঘটার কারণ বেসরকারিখাতে শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন।

মূলা খুব ভালো জিনিস কিন্তু ব্যাপার হলো বেশী খেলে পরিবেশ দুর্গন্ধ হয়। ধরা গেলো কাল একটা শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন করলো, তারা বিশাল নীতিমালা দিলো এবং সরকার সেটাকে সমার্থক মনে করলো। ট্রেড ইউনিয়নের হাতে ক্ষমতা দেয়া হলো শ্রমিকের পক্ষ থেকে তারা মালিকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়বে এবং অধিকার আদায়ের কাজ করবে। ফলে কি হবে?

আদমজীর একেকটা শ্রমিক নেতার কথা মনে আছে? বর্তমানে তিতাস, পিডব্লুডি স হ সোনালী ব্যাংকে যেসব শ্রমিক ইউনিয়ন আছে সেগুলো তখন জাতীয় রূপে দেখা দিবে। ও আচ্ছা এসব জায়গা বামেরা মাঝে মাঝে রুটি কাপরে লোভে বয়ানার টানিয়ে কিছু সংগ্রাম টংগ্রাম করতো। তখন ঐ ট্রেড ইউনিয়নেরই উপ শাখা হিসেবে বঙ্গবল্টু পরিষদ, সিপিজি পরিষদ এবং যে যে দলে নাম লেখাবে (এখনকার আই ই বি যেখানে ভিতরে পেছনের বিল্ডিং এ গেলে দেখা যায় সেমি লাস ভেগার, মদ আর জুয়ায় মত্ত সরকারী ইন্জ্ঞিনিয়ারগুলান) আরেকটা শ্বেত হস্তি তৈরী হবে।
কিন্তু কথা এটা না, এই দাবী তো খোদ আমেরিকা সেই কবে থেকে বলছে হঠাৎ আমেরিকার সাথে সুর মেলানো কেন? নাকি ভুল বললাম?


দারিদ্র বিমোচন এবং কর্মসংস্থান যেমন রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব,ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে যেমন এই কাঠামোগত সমস্যার সমাধান হয় না, তেমনি কারখানায় কর্ম পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা, মজুরী ইত্যাদি সম্পর্কিত কাঠামোগত সমস্যা সমাধানেরও দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রীয় দ্বায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে, মালিক শ্রেণীর দ্বায়িত্বকে এড়িয়ে গিয়ে কোন বেসরকারি তথাকথিত শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট এর মাধ্যমে এই কাঠামোগত সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।


আমাদের দেশে একটা ইউটোপিয়া চালু হয়েছে সেটা হলো কিছু হলেই বিদেশ। মর জ্বালা, তারা এইটা বুঝে না কেন বিদেশ আর স্বন্দেশ এক না। ব্যাটারা নিজেরা গবেষনা করে, নিজেরা মালপত্র বানায় কালকা এসএল কাউন্টারে যেই ১০ ০০০ লোক দেশ জুড়ে কাজ করে ৬ মাস পর সবকয়টার বরখাস্ত কইরা মেশিন বসাবে। সরকারের এক বছরে এই ১০ ০০০ কর্মীর জন্য যত টাকা খরচা হইতো তার অর্ধেক টাকায় ভার্সিটিগুলানে ইনভেস্ট কইরা সেই যন্ত্র বসাইয়া তারা তাগো চাকরী খায় কিন্তু দেশের বেকারত্ব সমস্যা খুব বেশী হয় না কারন আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা খুবই কম আর জনসংখ্যার একটা অংশই এই সব গবেষনা করে বলে তাদের অন্য চাকুরী পায়। আর সরকার এই খান থিকা টাকা বাচাইয়া নতুন প্রজেক্ট হাতে নিয়া সেইখানে আরও ২০ ০০০ লোকের সাময়িক বা স্হায়ী কর্মসংস্হান করে। এখন ওরা মজুড়ি বেশী দিতে পারে কারন লোক লাগে কম সবই মেশীনারিজের উপর নির্ভরশীল।

আমাদের দেশে মানুষ বেশী সরকার মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট হাতে নিতে পারে না কারন দেশের সমস্যার আকাল নাই। মেশীনারিজ বানাইতে পারে না কারন সেইখানে টেকনিক্যাল লোক নাই। টেকনিক্যাল লোক বানাইতে পারে না কারন ভার্সিটিগুলানে সেই গবেষনা করানোর উপর সরকারের সেই ফান্ড নাই আর বেসরকারী গুলান রাশেদুল হক মেননের মতো নিজের টাকা পকেটে ভরে, পারলে স্কুলের টাকাও পকেটে ভরে। এখন সব যদি সরকারই করে তাইলে বাইরের দেশের গবেষনা প্রতিষ্ঠান বা ইউনিগুলান টপ রেন্কড বা ভালো গুলান সব বেসরকারী কেন?

সব সমস্যার মূল জনসংখ্যা আর ম্যালথাসের তত্ব অনুযায়ী এখন যা হচ্ছে সেটা আরও প্রকট আকার ধারন করবে। পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে নলেজ সিঙ্গুলারিটির কথা বলে আমাদের সেখানে ম্যাসাকার সিঙ্গুলারিটি হবে।

ইউনুসের মতো লোক অবশ্যই ব্যাবসা দেখবে কারন দুনিয়াতে একজন ইমাম পর্যন্ত ব্যাবসা করে এমনকি একটা দাতব্য প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত ব্যাবসায়িক ধারনা নিয়ে চলে এমনকি একটা রাজনৈতিক গোষ্ঠিও। ইউনূস এই ব্যবসাটা এইজন্যই করবে কারন প্রতিটি পোশাক থেকে গৃহীত টাকা যদি কয়েক বছর থেকে জমায় একসময় মহীরুহ হবে সূদীয় ব্যাংকিং ব্যবস্হার মাধ্যমে কারন রোবাস্ট প্রফিটিবিলিটি এই ক্যাপিটালিজমই জানে আর এটা যত বেশী গ্রো করবে লাভ শ্রমিকদেরই হবে। সেখানে মজুরী বাড়ায় দেয়া ম্যাস এবং ম্যাক্রো লেভেলে টাকার অবমূল্যায়ন বাদ দেন (আভ্যন্তরীন প্রোডাকশন নাই আবার বড় বড় কথা) যদি মার্কেটে নতুন কিছুর আগমনে পন্য মার খায় তখন সবচেয়ে বড় মার খাবে সরকার এবং সেটা লিগ্যাল ওয়েতে। লিগ্যাল ওয়েতে মার খেলে সেখান থেকে রিটার্ন করা যায় না কিন্তু

আরও অনেক কিছু লেখার ছিলো না, বাট ইউ নো ইওর রাইটিং ইজ আ ক্রাপ!

৬| ১১ ই মে, ২০১৩ রাত ২:৪৩

ঢাকাইয়া০০৭ বলেছেন: এই রকম ধারণা যদি ড. ইউনূস না দিয়ে হাসু আপা দিত তাহলে এইসব দিনমজুরেরা তখন প্রজন্ম চত্বরে এটা বাস্তবায়নের আল্টিমেটাম দিত। পরশ্রীকাতর দিনমজুররা ড. ইউনূসের পায়ের একবিন্দু ধূলিকণার সমানও নয়।
খালি জ্ঞান দেয় !!!!!!

৭| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: গুড ওয়ান দিনমজুর...

৮| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: প্রিয়তে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.