নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাইল্যাকাডা

দিনমজুর

নাইল্যাকাডা ১ম বর্ষ, ২য় সংখ্যার প্রাপ্তিস্থানঃ আজিজ সুপার মার্কেট ১। বইপত্র/ ২। জনান্তিক/ ৩। শ্রাবণ/ ৪। প্রথমা (একুশে)/ ৫। তক্ষশীলা/ ৬। লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গন লোক/ ৭। বিদিত/ ৮। পলল/ ৯।পাঠশালা মুক্তিভবন (পুরানা পল্টন) ১০। জাতীয় সাহিত্য প্রকাশন

দিনমজুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুজিব-জিয়া-এরশাদ-খালেদা-হাসিনা আমলে বিরাষ্ট্রীয়করণ ও বিশিল্পায়নের ধারাবাহিকতা

১৮ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

মুজিব আমলে(১৯৭২-৭৫) সমাজতন্ত্রের নামে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হলেও আসলে জাতীয়করণকে ব্যবহার করা হয়েছিলো দেশীয় লুটরো ও ব্যাবসায়ী পুজির আদিম সঞ্চয়ণে। মুক্তযুদ্ধ পরর্বতীকালে একদিকে জনগণের মাঝে স্বাধীন জাতীয় অর্থনীতি বিকাশের আকঙ্খা ছিল, আওয়ামি লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল জাতীয়করণ অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের ফলে বাঙালি বুর্জোয়াদের বিকাশ না হওয়ার কারণে পাকিস্তানী পুজিপতিদের পরিত্যাক্ত শিল্প কারখানা পরিচালনার জন্য দেশীয় বুর্জোয়াদের সক্ষমতারও ঘাটতি ছলি। এসময় একদকিকে র্কাযকর ভূমি সংস্কাররে মাধ্যমে কৃষির বিকাশ না হওয়া অন্যদিকে সমাজতন্ত্রের নামে রাষ্ট্রের ঘাড়ে বন্দুক রেখে পুজির আদিম সঞ্চয়ণের খেসারত দিতে হয় সদ্য স্বাধীন বাংলাদশেরে শিল্পখাতকে , শিল্পের বিকাশের বদলে এসময় সূচনা হয় বিশিল্পায়নের। রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পের লুটপাটের মাধ্যমে বিশিল্পায়নের এই প্রকৃয়াটি ছিল এরকম:



১) রাষ্ট্রীয় কারখানায় উৎপাদিত পণ্য খুব সামান্য লাভে (অনেক ক্ষেত্রে লস এ) কমদামে জনগণের কাছে বিক্রি করার জন্য সরবরাহ করা হতো ডিলারদের কাছে । ডিলাররা বাস্তাবে চাহিদার তুলনায় সর্বরাহের ঘাটতির সুযোগে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৮০ থেকে ৪০০ শতাংশ বেশি দামে জনগণের কাছে বিক্রি করতো। ফলে জনগণকে অনেক বেশি দরে পণ্য কিনতে হয় কিন্তু সেই বাড়তি দরের সুফলটুকু রাষ্ট্রের কাছে যাওয়ার বদলে চলে যায় ব্যাবসায়ী বুর্জোয়াদের হাতে।



২) বিপরীত ভাবে রাষ্ট্রায়ত্বকারখানার জন্য কাচামাল কেনা হতো বাজার দরের চেয়ে উচ্চ মূল্যে কিন্তু বাস্তবে কৃষক সেই উচ্চ মূল্য পেত না, তার গোটাটাই চলে যেত মধ্যস্বত্তভোগীর কাছে। যেমন কৃষকের সুবিধার কথা ভেবে পাটশিল্পের কাচামাল কাচা পাটের নির্ধারতি ক্রয়মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হলেও তার সুফল কৃষক পায়নি পেয়েছে মধ্যস্বত্তভোগী। তারা চাষীর কাছ থেকে ৫০ টাকা দরে পাট কিনে এনে ১২০ টাকা দরে মিল কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করেছে। মিল কর্তৃপক্ষের ন্যূনতম নির্ধারিত দর ১২০ টাকা থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে। এই ন্যূনতম দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল পাট চাষীদের বাড়তি দাম দেয়ার জন্য কিন্তু রাষ্ট্রীয় শিল্পের এই কম লাভের সুফলটা কৃষক না পেয়ে পেল মধ্যস্বত্তভোগী ব্যাবাসায়ী বুর্জোয়া।



৩) রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পের কাচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি, খুচরা যন্ত্রাংশ ইত্যাদি আমাদানী করা হয় বিদেশ থেকে। আর এই আমদানী রপ্তানির ক্ষেত্রেও বিদেশী সাহায্য, ঋণ ইত্যাদি উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে বিদেশী সর্বরাহকারীদের সাথে যোগসাজশে তাদের কমিশন এজেন্ট হিসেবে অতিরিক্ত মূল্যে বিদেশ থেকে আমদানী করেও ব্যাবসায়ী বুর্জোয়ারা ফুলে ফেপে উঠে। রাষ্ট্রীয় ট্রেডিং কর্পোরেশনের বাইরে নানা ধরণের তৈরী ও কাচমাল যেমন তুলা, সার, সিমেন্ট ইত্যাদি আমদানির টেন্ডার কুক্ষিগত করার মাধ্যমে এরা এই কাজটি করে। ফলে রাষ্ট্রীয় শিল্পের উদ্বৃত্ত দেশী আমদানীকারক ও বিদেশী রপ্তানিকারকের পকেটে চলে গেছে।



(সূত্র: রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের উদ্বৃত্ত বন্টন ব্যবস্থা: বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার আলোকে, রেহমান সোবাহান,আমার সমালোচক আমার বন্ধু রচনা সংকলন সিপিডি, ২০০৭)



৪) লুটপাটরে মাধ্যমে এ সময় কেমন করে বিশিল্পায়ন করা হচ্ছিল তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে মওলানা ভাসনী প্রকাশিত সাপ্তাহিক হক কথার কিছু সংবাদের নমুনা দেখলে:



“কয়েকজন এমসিএ সাহেব কোহিনুর ক্যামিক্যালস্ এর গুদামজাত মালপত্র ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন.. শুধু কোহিনুর ক্যামিক্যালসই নয়, এমনি আরও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সম্পদ কয়েকজন ‘প্রতাপশালীর’ মধ্যে বন্টনের ফিরিস্তি আমাদের হাতে রয়েছে।“ সূত্র: হক কথা, ৩ মার্চ ১৯৭২।



“গুদামে সার আছে। কিন্তু চাবি তো বাঘা ভাই- এমসিএ সাবের কাছে। অবশেষে নির্ধারিত মূল্য দশ টাকা মণ দরে চাষী সার পায় না। তাদেরকে বাজারে যেতে হয়। সেখানে ৪০ টাকা মণ দরে সার বিক্রি হয়।” সূত্র: হক কথা, ১০ মার্চ ১৯৭২



“কাচামালের অভাবে বাঙলাদেশের সুতাকলগুলোর বেশীর ভাগই এখন বন্ধ হয়ে গেছে, যে-কয়টি চালু আছে, তার উৎপাদন শতকরা মাত্র ১৫ থেকে ২০ ভাগ চলছে।” সূত্র: হক কথা, ২৪ মার্চ, ১৯৭২।



“বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃত্বাধীন ২৩টি চা বাগানের পরিচালনা কমিটির জনৈক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোট ৮টি বাগানের ম্যানেজার পদ সহ বিভিন্ন বিভাগে নিজের অনুপযুক্ত আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ করে আমাদের চা শিল্পের সর্বনাশ সাধন করেছেন।“ সূত্র: হক কথা, ২৪ মার্চ ১৯৭২।



“চট্টগ্রামের গুদামজাত প্রায় ১২০ কোটি টাকা মূল্যের কাচামাল স্বাধীনতা পরবর্তী মাত্র এক মাসের মধ্যে ভারত ও বার্মায় পাচার হয়ে যাবার খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রে ফাস হয়ে গেছে।” সূত্র: হক কথা ২ এপ্রিল ১৯৭২ ।

প্রসঙ্গত: ১৯৭২ সালে বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টেও বাংলাদেশের দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি ও পণ্য সংকটের পেছনে ভারতে চোরাচালানের ভূমিকার (

appreciable amount of smuggling to India ) কথা বলা হয়েছিল। (সূত্র: রিস্ট্রাকচারিং দ্যা ইকোনোমি অব বাংলাদেশ , ভলিউম-১, ১৯৭২)



“কালুরাঘাট শিল্প এলাকায় চট্টগ্রাম জুট ম্যানুফেকচারিং কোম্পানির লে অফ’কে কেন্দ্র করে দুটি শ্রমিক সংস্থার মধ্যে উত্তেজনার ভাব বিরাজ করছে। উক্ত কোম্পানির গুদামে এক কোটি ছিয়াত্তর লক্ষ টাকার হোসিয়ান মজুদ থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকদের পাওনা ৫৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।” সূত্র: হক কথা, ৯ এপ্রিল ১৯৭২।



“বাংলাদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম আহমদ বাওয়ানী, শরমিন ও বাংলাদেশ এই তিনটি টেক্সটাইল মিলের যিনি প্রশাসক নিযুক্ত হয়েছেন তিনি একজন গণ পরিষদ সদস্য।… প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আজ পর্যন্ত তিনি যা করেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্ল্যেখযোগ্য কীর্তিটি হলো আহমদ বাওয়ানী মিলের উৎপাদিত ৯০ লাখ টাকার গুদামজাত দ্রব্য আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকায় বিক্রয়। শরমিন ও বাংলাদেশ মিল দুটি মাত্র একমাস চলার পরই কাচামাল ও অব্যবস্থার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। …চট্টগ্রাম হাফিজ জুট মিলস ও টেক্সটাইল মিলসের আওয়ামী ভক্ত প্রশাসক ব্যাপক আলোড়ন তুলেছেন।… তিনি মিলের অসংখ্য টন লোহা, তামা, সিমেন্ট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি কমদামে বিক্রয়লব্ধ অর্থে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ২ শত ৫৬ টাকার আসবাবপত্র নিজের বাড়ীতে উঠিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্ল্যেখযোগ্য যে, ৩০ টাকা পাউন্ডের তামা তিনি মাত্র ৯০ পয়সা মূল্যে বিক্রিয় করেছেন।” সূত্র: হক কথা, ১২ মে,১৯৭২।



এভাবে ব্যাবসায়ী পুজির আদিম সঞ্চয়ণের একটা পর্যায়ে এসে প্রয়োজন হয়ে পড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যাক্তিগত বিনিয়োগের সিলিং তুলে দেয়ার যেন বিভিন্ন লাভজনক খাতে লুটপাট করা পুজির ’বৈধ’ বিনিয়োগকৃত হতে পারে।(সূত্র: মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ইকোনমি, টার্নস অব দ্য ডিকেড, অ্যাডর্ন পাবলিকেশান, ২০০৩)আবার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুটপাটের মাধ্যমে বিকাশ লাভ করা নব্য ধনিক শ্রেণীর এই আশা-আকাঙ্খাকে যুক্তিগ্রাহ্য ও ন্যায় সংগত করার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ’ব্যার্থতা’র কাহিনী ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রচার করা হয়। (সূত্র: রেহমান সোবহান) ফলে মুজিব আমলের শেষের দিকে, ১৯৭৪ সালের জুলাই মাসে বিনিয়োগ নীতি সংশোধন করে বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা ২৫ লক্ষ থেকে ৩ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়, ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে ঘোষিত শিল্পনীতিতে এটি হয় ১০ কোটি টাকা এবং ১৯৭৮ সালের সেপ্টম্বরে একেবারে উঠিয়ে দেয়া হয়।



দুই. ১৯৭২-৭৫ পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় কারখানার উদ্বৃত্ত লুটপাট, চোরাচালান, দুর্নিতী, আমদানী-রপ্তানি ইত্যাদির মাধ্যমে যে লুটেরা ধনিক শ্রেণী গড়ে উঠে, ৭৫ পরবর্তী সময়ে কয়েক দশক ধরে তাদের স্বার্থে এবং বিশ্ব ব্যাংক আইএমএফ এর প্রেসক্রিপশানে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কারখানাগুলোকে পানির দরে বিক্রি করে দেয়া হয় যা শিল্পের বিকাশের বদলে উল্টো বিশিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করে। এই সময়ে বৈদেশিক ঋণ, সহায়তা ইত্যাদির নামে বিদেশী পুজির অনুপ্রবেশ দ্রুততর হয় যার ওপর ও এই মধ্যস্বত্ত্বভোগী বুর্জোয়াদের বিকাশ ও টিকে থাকা নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বৈদেশিক সম্পদ প্রবাহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই মধ্যস্বত্ত্বভোগী শ্রেণীটির অধিকতর বিকাশ ও স্ফীতি সম্ভব করে তোলে। এ সব মধ্যস্বত্বভোগী বিদেশী সরবরাহকারীদের কমিশিন এজেন্ট হিসেবে কাজ করে, তাদের পক্ষ থেকে নানা ধরণের তৈরী ও আধা-তৈরী পণ্য যেমন কাচা তুলা, সিমেন্ট, সার ইত্যাদি সরবরাহের টেন্ডার দাখিল করে থাকে। রাষ্ট্রীয় কারখানার লুটপাট, আমদানী-রপ্তানি-দালালি, চোরাচালানি ইত্যাদি প্রকৃয়ায়র মধ্যদিয়ে যে ব্যাবসায়ী লুটেরা বুর্জোয়ার বিকাশ হতে থাকে তাদের হাতে পুজি থাকলেও তাদের খুব কম অংশই ব্যাবসা-বাণিজ্য থেকে পুজি সরিয়ে শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ছিল যেহেতু শিল্পে বিনিয়োগ আমদানী-রপ্তানি বা লুটপাটের চেয়ে জটিল ও সময় সাপেক্ষ প্রকৃয়ার উপর নির্ভরশীল । ফলে শিল্পের বিকাশের নাম করে ৭৫ পরবর্তী কয়েক দশক ধরে যেসব কারখানা এদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে, সেগুলোতে নতুন করে বিনিয়োগ করার বদলে উল্টো এগুলোর মেশিনপত্র, জমি, কাচামাল, খুচরা যন্ত্রাংশ ইত্যাদি বিক্রি করে দ্রুত আরো বড়লোক হওয়াই ছিল সার।



জিয়াউর রহমানের শাসন কালে (১৯৭৫ – ৮১) মোট ২৫৫টি রাষ্ট্রায়াত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ করা হয় যার মধ্যে ১১০টি ছিল বৃহৎ আকারের পাবলিক সেক্টর কর্পোরেশান এর অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশ শিল্পব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থা সহ সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসময় এসব বেসরকারিকৃত শিল্পের নব্য মালিকদেরকে স্বল্পসুদে ঋণ সরবরাহ করা হয়, সস্তায় কাচামাল আমদানী ও বাজার মূল্যের চেয়ে কমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ, সাত বছরের ট্যাক্স হলিডের সুবিধা দেয়া হয় কিন্তু এভাবে প্রাপ্ত সুবিধাদি শিল্পে বিনিয়োগ এর বদলে বিনিয়োগ করা হয় ব্যাবসা-বাণিজ্য, আমদানী-রপ্তানির কাজে। ফলে ১৯৭৫ থেকে ৮১ সাল পর্যায়ে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থাকর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের ৯৫% এ বেসরকারি খাতে গেলেও, বেসরকারি শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ তেমন বাড়েনি, কারণ ঋণ পুরোটাই অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যাবহ্রত হয়েছে। এভাবে ঋণের টাকা অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যাবহার করে ঋণগ্রহীতা শিল্পপতিরা কিছুদিনের মধ্যেই ঋণ খেলাপি হিসেবে আবির্ভূত হয় ও নিজেদেরকে দেউলিয়া ঘোষণা করে সব দায় দেনা থেকে রেহাই পেয়ে যায়!(সূত্র: পলিটিকস অব প্রাইভেটাইজেশান ইন বাংলাদেশ, মোবাশ্বের মোনেম,২০০৬)



এরপর হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের আমলে (১৯৮২-১৯৯০) এই ধারা অব্যাবহ থাকে এবং ত্বরান্বিত হয়। ১৯৮২ সালের নতুন শিল্পনীতিতে বেসরকারিকরণের উপর আরো জোর দেয়া হয়, মাত্র ৬টি সেক্টর ছাড়া আর সমস্ত সেক্টরে বেসরকারি বিনিয়োগ অবাধ করে দেয়া হয়। দেশীয় পুজিপতি ও বিদেশী সংস্থা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর আস্থায় আসার জন্য অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে বেসরকারিকরণ শুরু হয়। এক বছরের মাথায় ২৭টি টেক্সটাইল মিল ও ৩৩টি পাট কল জলের দরে বেচে দেয়া হয়। এছাড়া ১৬ মাসের মাথায় ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী ২১টি মাঝারি শিল্প বেচে দেয়া হয় যার ৭৮% ই ছিল লাভজনক এবং বিক্রি করার কিছু দিনের মধ্যেই যার ৮০% উৎপাদন হ্রাস ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিশ্বব্যাংকের দলিল অনুসারে, ১৯৮২ সালের শিল্প নীতি অনুসারে পাট ও টেক্সটাইল মিল ছাড়াও আরো ৪৭৪টি শিল্প ও ২টি সরকারি ব্যাংক বেসরকারিকরণ করা হয় (সূত্র: জুট ইন্ডাস্ট্রি রিহ্যাবিলিটিয়েশান ক্রেডিট- প্রজেক্ট কম্প্লিশান রিপোর্ট, ১৯৯০) ।



বেসরকরিকৃত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ১৯৮৬ সালে চালানো এক গবেষণায় দেখা যায়, বেসরকারিকরণের পর পাটকলগুলোর উৎপাদনশীলতা রাষ্ট্রীয় খাতে থাকার সময়ের তুলনায় কমেছে, টেক্সটাইল মিলগুলোর গড় উৎপাদন কমেছে ও আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে এবং সর্বোপরি মিলগুলোর সম্পদ হ্রাস পয়েছে, ঋণ বেড়েছে। এ সময়ে কোটিপতি হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল বেসরকারি শিল্পের নামে ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ না করা। ১৯৯০ সালের জুন মাস নাগাদ বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থার কাছে শিল্প পতিদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০৫০ কোটি টাকা।(সূত্র: পলিটিকস অব প্রাইভেটাইজেশান ইন বাংলাদেশ, মোবাশ্বের মোনেম,২০০৬)



এই সময়কার শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে অধ্যাপক আনু মুহম্মদ ১৯৯২ সালে “মজুরি, উৎপাদনশীলত ও শ্রমিক” শীর্ষক লেখায় দেখিয়েছিলেন বিরাষ্ট্রীয়করণ তুঙ্গে তুলে, অনেক রকম বৈধ-অবৈধ, জানা-অজানা সুবিধা সম্প্রসারিত করে কোটি পতি’র সংখ্যা বাড়লেও শিল্পের বিকাশ ঘটে নি বরং শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধির হার, মূল্য সংযোজন হার, কর্মসংস্থান ইত্যাদির পরিমাণ হয় কমেছে নয়তো বা স্থবির থেকেছে। তার এই লেখা থেকে আমরা দেখি-



১৯৮০/৮১ সালে যেখানে জিডিপির শতকরা ১৫.৯৫ ভাগ শিল্পখাতে বিনিয়োজিত হয় সেখানে ১৯৮৯/৯০ সালে বিনিয়োজিত হয় শতকরা ১১.৮০ ভাগ;১৯৬১-৭৪ সময়কালে শিল্পখাতে গড়পড়তা শতকরা ১.৮ ভাগ হারে কর্মসংস্থান বাড়লেও এর পর বৃদ্ধির হারে স্থবিরতা দেখা দেয়। ১৯৮৭/৮৮ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী বেসরকারিখাতে মোট কর্মসংস্থানের ৯২ ভাগ নিয়োজিত। এই বেসরকারি খাতে যত নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো হলো আনুষ্ঠানিক খাতে, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেখানে শ্রম অধিকার, ন্যুনতম মজুরী, ট্রেডইউনিয়নের সুযোগ ইত্যাদি কোন কিছুই নেই। মূল্যসংযোজনের হিসেবেও শিল্পের অবদান কমেছে- ১৯৮০/৮১ সালের শতকরা ১০.৭১ থেকে কমে ১৯৮৯/৯১ সালে হয়েছে ৮.৭৬। আবার উৎপাদিত শিল্প পণ্যের মধ্যে ৫৩ ভাগ ভোগ্য পণ্য, ৩৭ ভাগ মধ্যবর্তী পণ্য এবং শতকরা মাত্র ১০ ভাগ মূলধনী পণ্য অর্থাৎ দুই দশক পরেও শিল্পে মূলধনী পণ্যের এই দুর্বল অবস্থান দেশের সার্বিক শিল্পয়ানের দুর্বলতাই পরিস্কার করে।



তিন. বিশিল্পায়নের এই প্রকৃয়াটি স্বাধীনতা পরবর্তী দুই দশকে দেশের শিল্প ভিত্তি গড়ে তোলার বদলে ধ্বংস করলেও এবং বিভিন্ন ভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ –প্রতিরোধ হলেও বিশ্বব্যাংক -আইএম এফ এবং বাংলাদেশের শাসক শ্রেণী উন্নয়ণের নামে সেই প্রকৃয়াটিকে অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে যার স্বাক্ষ্য বহন করছে বাংলাদেশের দুর্বল পাট শিল্প। স্বাধীনতার পরপর রাষ্ট্রীয় পাটকল ছিল ৬৮টি। শাসক শ্রেণীর লুটপাট ও অবহেলায় পাটকলগুলোকে লোকসানি বানানো হয়। লোকসান কমানো ও পাটশিল্পের বিকাশের নামে বিশ্বব্যাংকের জুট ইন্ডাস্ট্রি রিহ্যাবিলিটিয়েশান ক্রেডিট প্রগ্রাম চলাকালে ১৯৮২ সালের নতুন শিল্পনীতির আওতায় ৩৫টি বেসরকারিকরণের পর রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল দাড়ায় ৩৩টি। এরপর ১৯৯৪ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে জুট সেক্টর এডজাষ্টমেন্ট ক্রেডিট (জেএসএসি) প্রোগ্রাম যখন হাতে নেয়া হয় তখন ২৯ পাট কলের সম্পূর্ণ মালিকানা সহ পাট খাতের ৭৮% মালিকানা ছিল সরকারি খাতে। বিশ্বব্যাংকের ডকুমেন্ট অনুসারে এই ঋণ প্রকল্পের ঘোষিত প্রাধাণ উদ্দেশ্যগুলো ছিল:



১) রাষ্ট্রায়ত্ব ২৯টি পাটকলের মধ্যে ৯টি’কে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া এবং ২টি পাটকলের ‘বাড়তি’ উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস বা ডাউন সাইজিং;



২) রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল গুলো থেকে ২০ হাজার শ্রমিক ছাটাই;



৩) বাকি ২০টি রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের মধ্যে থেকে কমপক্ষে ১৮টি পাট কল বেসরকারি করণ;



এই কর্মসূচী নেয়ার সময় বিশ্বব্যাংকের ডকুমেন্টেই স্বীকার করা হয়েছে পাট খাতের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ নির্ভরশীল। তারপরও রাষ্ট্রীয় কারখানা বন্ধ করা, ডাউন সাইজ করা ও শ্রমিক ছাটাই করার পেছনে যুক্তি দেয়া হয়েছিলো: লস কমিয়ে শহুরে ও গ্রামীণ কর্মসংস্থানের একটি লাভজনক খাত হিসেবে পাট শিল্পকে প্রতিষ্ঠা করা। বলাই বাহুল্য, বিশ্বব্যাংকের অন্যান্য উন্নয়ণ প্রকল্পের মতোই এই প্রকল্পও শেষ পর্যন্ত পাট শিল্পের বিশিল্পায়নই কেবল ঘটিয়েছে যার মাধ্যমে পাট উৎপাদন কারী চাষী থেকে শুরু করে পাট শিল্পের শ্রমিক এমনকি বেসরকারি খাতও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিশ্বব্যাংক তার মূল্যায়ন প্রতিবেদনে কলকারখানা বন্ধ করে ২০ হাজার শ্রমিক ছাটাইয়ের ‘সাফল্যে’ সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও স্বীকার করছে:



১) বেসরকারি খাতের উৎপাদন ক্ষমতা আগের চেয়ে কমে মোট উৎপাদন ক্ষমতার ২৫% এ নেমে এসেছে, জেএসসি প্রোগাম শুরুর আগে যা ছিল ৩৫%।



২) ৬০টি পাটকলের বেশিরভাগেরই টিকে থাকার স্বক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে



৩) ১৯৯৬ সালে বেসরকারি পাট কল মালিকেরা অভিযোগ করেছে এই প্রোগ্রামের কারণে বেসরকারিখাতের উন্নতির বদলে অবনতি ঘটেছে



৪) টেন্ডার এবং বিডিং এ রফলাফল থেকে দেখা যায় খুব কম বেসরকারি উদ্যোক্তারই পাট কল গুলো কিনে নিয়ে নতুন করে চালানোর ব্যাপারে আগ্রহ আছে। বেশিরভাগেরই আগ্রহ হলো পাটকলগুলোর জমি ও অন্যান সম্পদের দিকে যা তারা অন্যকাজে ব্যাবহার করবে।



৫) এই প্রোগ্রাম নেয়ার সময় পাট উৎপাদন কারী চাষীদের উপর কি প্রভাব পড়বে তা একেবারেই বিবেচনা করা হয়নি।

মূল্যায়ন প্রতিবেদনের এক পর্যায়ে বিশ্বব্যাংক স্বীকার করেছে:



Confronted with the options of a rapid privatization of public mills or close them down, it felt that the Program really implied to do away with jute and the jute industry.(article 28)



অর্থাৎ “হয় সরকারি কলগুলোকে বেসরকারি করণ কর অথবা বন্ধ কর – এরকম একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে এই প্রোগ্রামটিকে বাস্তবে পাট এবং পাট শিল্প ধ্বংসের প্রোগ্রাম হিসেবেই অনুভূত হয়েছে।“



চার. শ্রমিক ছাটাই, ডাউনসাইজিং, বেসরকারিকরণ, সরাসরি বন্ধ করে দেয়া ইত্যাদি প্রকৃয়ার মধ্যে দিয়ে বিশিল্পায়ন এখনও চলছে। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত মোট ৭৫টি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। বাংলাদেশ প্রাইভেটাইজেশান কমিশন ২০১০ সালে বেসরকারিকৃত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে একটি সমীক্ষা করে। “বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সমীক্ষা ২০১০” নামের এই প্রতিবেদন থেকে দেখা যায় ৭৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকেই বন্ধ পাওয়া গেছে। পানির দরে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারি করে দেয়ার ফলে কেমন করে বিশিল্পায়ন হয় তার একটা ধারাণা আমরা পেতে পারি বন্ধ থাকা শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলো সম্পর্কে সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য ও মন্তব্য থেকে:



কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিলস পারিবারিক বিরোধের জের ধরে বন্ধ হয়ে আছে, ঢাকা ভেজিটেবল ওয়েলস বিক্রিয় করা হয় ১৩.৭৫ কোটি টাকায় যার এক টাকাও ক্রেতা পরিশোধ করেনি, ৫৫৯ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের যোগানদাতা এই প্রতিষ্ঠানটি তা ১৯৯৪ সাল থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ক্যারোলিন সিল্ক বেসরকারি করণের আগে ৭২ জনের কর্মসংস্থান করতো, এখন এটিকে হিসেবে গোডাউন ভাড়া দেয়া হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে মাত্র ১১ লক্ষ টাকায় ৪.১৬ একর জমিসহ বিক্রয় হওয়া বিজিবাংলা রাইস মিলস সম্পর্কে সমীক্ষা প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে: “শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির কোন অস্তিত্ব নেই। কারখানা প্রাঙ্গনের ভূমি আবাসিক প্লট আকারে বিক্রয় করা হয়েছে।” ৬.১৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কর্ণ ফ্লাওয়ার মিলস এর যন্ত্রপাতি খোয়া গেছে।



১৬.১১ লক্ষ টাকায় বিক্রি হওয়া বাংলাদেশ অয়েল মিলস সম্পর্কে সমীক্ষাতে লেখা হয়েছে: “প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়নি; এটির যন্ত্রপাতি বিক্রি করে সংকুচিত করা হয়েছে।“ ৩২.২৪৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হাফিজ টেক্সটাইল মিলস লি:, কুমিরা চট্ট্রগ্রাম এর নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে কেডিএস লজিস্টিকৃস লি: যা চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানী রপ্তানি সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু আছে। ঔষধ সামগ্রী নির্মাণ কারী প্রতিষ্ঠান স্কুইব বাংলাদেশ লি: সম্পর্কে লেখা হয়েছে: “ক্রেতার নিকট হতে কয়েক দফা শেয়ার হস্তান্তরিত হয়েছে.. প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব না থাকায় কর্মসংস্থান ও সম্প্রসারণ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় নি।“ মৎস প্রকৃয়াকরণকারী প্রতিষ্ঠান ফিশ এক্সপোর্ট লি: সম্পর্কে লেখা হয়েছে: “প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়নি; এটির যন্ত্রপাতি, ঘরের দরজা জানালা আসবাবপত্র ইত্যাদি লুট হয়ে গেছে…”।



এভাবে একদিকে স্বাধীনতা পরবর্তী চারদশকে বহুজাতিক ও দেশীয় লুটেরা পুজির স্বার্থে ধারাবাহিক ভাবে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পের উদবৃত্ত লুন্ঠন ও রাষ্ট্রত্ব শিল্পের বিরাষ্ট্রীয়করণের মাধ্যমে দেশের শিল্প ভিত্তিকে ধ্বংস করা হয়েছে, কৃষিভিত্তিক হালকা ও ভারী শিল্পের স্বাধীন বিকাশ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে অন্যদিকে স্রেফ সস্তা শ্রম শোষণকারী রপ্তানিমুখী দর্জি শিল্প ও সস্তা শ্রম বিদেশী রপ্তানির মাধ্যমে রেমিটেন্স নির্ভর এক পরনির্ভরশীল দোকানদারি অর্থনীতির বিকাশ ঘটানো হয়েছে।





মন্তব্য ১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৫১

আরিফ রুবেল বলেছেন: স্বাধীন বাংলাদেশের পুঁজিবাদের বিকাশ, লুটেরা ধনিক শ্রেণীর শক্তি সঞ্চয়ের উপর চমৎকার একটি লেখা। কিভাবে বিশ্বব্যাংকের ও আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের শিল্প খাতের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়েছে বারংবার সেটাও উঠে এসেছে। প্রথমে জাতীয়করণের নামে শিল্প খাতকে পঙ্গু করা এবং পরে বেসরকারীকরণের নামে প্রতিষ্ঠানসমূহকে ধ্বংস করে ব্যাক্তি নির্ভর খাতে পরিণত হওয়া।


গণতান্ত্রিক শাসনামলে কিভাবে সরকারী নীতি অনুযায়ী ও বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে গিয়ে কালো টাকার ভিত্তি শক্তিশালী করা হয়েছে এবং কালো টাকার মালিকেরা পুঁজিপতি থেকে নীতি নির্ধারকে পরিণত হয়েছেন, হচ্ছেন তার উপর একটা বিশ্লেষনী লেখা চাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.