নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকরাম এইচ রাফি

আকরাম এইচ রাফি

বাস্তবতায় বিশ্বাসী, শান্তি প্রত্যাশী।

আকরাম এইচ রাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মার নিঃসঙ্গতা

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫

গভীর রাত, রাফি একা ছাদে
দাড়িয়ে আছে। ঠিক এমন সময়
তার মনে হলো কেউ ঝেন
ছাদে উঠলো। পিছু ফিরে দেখলো
একটা মেয়ে। মেয়েটা তার
অপরিচিত। নিশ্চয় নতুন কোনো
ভাড়াটিয়া হবে। কিন্তু এতো রাতে
ছাদে কেন এসেছে।
এইদিকে মেয়েটিও রাফিকে দেখে
বেশ
অবাকই হয়েছে বলা যায়। যাইহোক
রাফিই প্রথম শুরু করলো।
.
- এই যে মিস, এই বাসায় নতুন নাকি?
= হ্যাঁ...
- আপনি জানেন না এই বাসায়
রাতের বেলা ছাদে প্রবেশ নিষেধ।
= কই, জানিনা তো। কিন্তু কেন?
-লোকে বলে এই বাসার ছাদে
নাকি ভুত থাকে।।।
=আপনি ভুতকে ভয় পাননা?
-না...
=আপনি কি প্রতি রাতেই ছাদে
আসেন?
-হুম।
=আপনি কি ভুত দেখেছেন?
-(রাফি কিছুক্ষণ চুপ থেকে জবাব
দিল) আপনি কি সেই গল্পটা শুনবেন?
=কোন গল্পটা?
-সেই ভুত ছেলের গল্পটা।
=হুম শুনবো, বলুন।।।
-রাফি একপলক আকাশের দিকে
তাকালো। তারপর শুরু করলো,
:
"ঘটনাটা বছর দুয়েক আগের।
এই বাসার নিচ তলায় তখন মেস
ছিল। সেই মেসে অন্য সব ছেলেদের
সাথে একটি গরীব ছেলেও থাকতো।
ছেলেটি লেখাপড়ার
উদ্দেশ্যে গ্রাম থেকে শহরে
এসেছিল।
গ্রামে থাকতো তার বৃদ্ধ মা বাবা।
শহরে দু-চারটে টিউশনি করে
ভালোই পেট আর পড়ালেখার
খরচ চলছিল। ছেলেটা আকাশ
দেখতে খুব ভালোবাসতো। তাইতো
মাঝে মাঝেই ছাদে উঠে আসতো।
ছোট্ট জীবনের সল্প চাহিদার মাঝেই
সুখ খুঁজে পেয়েছিল ছেলেটি। কিন্তু
সেই সুখটাও স্থায়ী হলো না।
(কিছুক্ষণ নিরব থেকে আবার
শুরু করল) ছেলেটি একদিন
টিউশনি করে মেসে ফিরে শুনতে
পায় পাশের বাসায় চুরি হয়েছে।
সবার সাথে ছেলেটিও চুটে গিয়েছিল।
কিন্তু কেউ একজন ছেলেটিকেই
চোর সাজিয়ে দিল।
চুরির মিথ্যা অপবাদে ছেলেটিকে
কি মারটাইনা মেরে ছিল তারা।
বার বার ছেলেটি বলেছিল,
আমি চোর নই, আমি চোর নই
কিন্তু কেউই তা বিশ্বাস করলোনা।
অপমান আর নির্যাতনে ক্ষত-বিক্ষত
হলো ছেলেটির দেহ মনে।
নাহ আর এ অপমান সইতে পারলোনা
ছেলেটি।।।
রাতের আঁধারে ছাদে উঠে এলো।
ছেলেটির শরিলে বিষন ব্যথা করছিল
আর তার চেয়ে বেশি মনে।।।
কি লাভ বেঁচে থেকে এই পৃথিবীতে।
যে পৃথিবীতে মানুষ আছে কিন্তু
মনুষত্য নেই।
ছেলেটি ছাদের ঠিক এই অংশে
দাড়িয়ে ছিল। আর তারপর,
তারপর দু হাত দু দিকে ছড়িয়ে
ছাদ থেকে লাপিয়ে পড়লো।।।
:
সেই থেকেই রাতের বেলা একাকী
সেই ছেলেটির আত্মাকে অনেকেই
এই বাড়ির ছাদে দেখতে পায়।
বিষন্ন মুখ নিয়ে আকাশ পানে
তাকিয়ে থাকে একটু খানি সুখের
আশায়।
:
মেয়েটি বেশ অবাক চোখেই রাফির
দিকে তাকিয়ে আছে। রাত প্রায়
শেষ হয়ে এলো। দূরের কোনো
মসজিদ থেকে ভেসে আসছে ফজরের
আজানের মধুর ধ্বনি।
রাফি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে
মৃদু হেসে বললো "আমার যাওয়ার
সময় হয়েগেছে" মুহূর্তের মাঝেই
রাফির আত্মা বাতাসে মিলিয়ে গেল।
মেয়েটি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো।
পাশ দিয়ে বয়ে গেল হালকা মৃদু
বাতাস।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.