| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।
স্বাধীন সাংবাদিকতার বাক রুদ্ধ হলে গনতন্ত্র হুমকির মূখে
------------গোলাম মহিউদ্দিন নসু
পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ন প্রশাসনিক পদ্ধতি গনতন্ত্র। আর সে গনতন্ত্র রক্ষার পূর্ব শর্ত হলো স্বাধীন সাংবাদিকতা।বাংলাদেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রদীপ নিভু নিভু। গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ-চর্চা যেমন অপরিচ্ছন্ন তেমনি অধিকারও হুমকির মূখে।
সরকারের প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পেশাদার সাংবাদিকরা হারাচ্ছে গন মাধ্যমের মালিকানা। ইতোমধ্যে অনেক মালিকানায়ই এখন ব্যবসায়ীদের হাতে।সুকৌশলে ব্যবসার ঢাল হিসাবে ব্যবহৃত হয় গনমাধ্যম। ক্ষেত্র ভেদে পরিচিত রাজনৈতিক নেতারাও প্রত্রিকার মালিক হয়ে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারছে না। নানা কারনেই সত্য প্রকাশ সম্ভব হয় না। স্বাধীন চেতা সাংবাদিকরা কেউ চাকরী ছাড়তে বাধ্য হয়। কেউ জীবিকার তাগিদে চাকরী করে তবে নিজের মতো করে লিখতে পারে না। মফস্বল শহরের এখনো অনেক পত্রিকার মালিক পেশাদার সাংবাদিক । কিন্ত তারা আর্র্থিক ভাবে তেমনটা সচ্ছল নয়। সরকারী-বেসরকারী বিজ্ঞাপন আর আর্র্থিক অনুদান প্রাপ্তীর আশায় সাহস করে তেমন লিখতে পারেন না।
দেশের রাজনীতি অনেকটা ক্যাডার নির্ভর হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হলে মাস্তান আর ক্যাডারদের হাতে নাজেহাল হয় সাংবাদিক। রাজনৈতিক নেতার রোষানলে পড়ে অনেক সাংবাদিক পঙ্গুত্ব বরন করছে। মৃত্যু বরন করেছে অনেকে।
চাঁদাবাজ-সন্ত্রাস,মদ-গাঁজা খোরসহ সমাজ কুলসিত করছে এমন লোকদের বিরুদ্ধে লিখতে গেলে পরিবার পরিজন নিয়ে হুমকির সম্মূখিন হতে হয়। আবার এরাই রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় গিয়ে সূযোগ মতে সাংবাদিকদের আঘাত করে চলেছে।
জন প্রতিনিধি- প্রশাসন, ঘুষ দূর্নীতির চিত্র আজ খোলা মেলা। এসব নিয়ে লেখা লেখি করে সাংবাদিকরা প্রশাসনের কটু দৃষ্টিতে পড়ে অনেক নির্মমতার শিকার হয়েছেন। স্বারকলিপি- মানববন্ধন- মিছিল-মিটিং করে সরকারকে জানান দিয়ে তেমন কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না।
আবার সাংবাদিকদের মধ্যে দলাদলি, ব্যক্তি পছন্দ অপছন্দে গিয়ে গ্র“পিং, বিভক্তি যেন সাংবাদিকতা পেশার দুরাবস্থাকে আরো তরান্বিত করছে। সাংবাদিকদের সূখ-দুঃখ-দুর্দশার সহযোগী সাংবাদিক সংগঠনগুলো দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী করছে। প্রকৃত সাংবাদিকতায় কিছু উন্নয়ন সংবাদ ছাড়া বাকি বেশীর ভাগ সংবাদের কারনে একটা প্রতিপক্ষ গোষ্ঠি তৈরী হয়। নিজেদের অনৈক্যের কারনে স্বাধীন সাংবাদিকতা মারাত্বক ঝুকি বাড়ায়। সরকারী পর্যায়ের সহযোগীতা সমূহ পাওয়া যায় না। এমনকি নাগরিক সুবিধা টুকু পাওয়া যায় না। আবার কিছু সাংবাদিক আছে যারা সত্যিই বড়ো মানের। কিন্ত তাদের মাঝে ফাঁকে কিছু সাংবাদিক না হয়েও অগাধ অর্থের কারনে পত্রিকার মালিক হয়ে অথবা গুরুত্বপূর্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়ে টাকায় সাংবাদিকতা বেচা -কেনা করছে। সরকারী পর্যায়ে কোন নীতিমালার অভাবে এদের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। এদের অপকর্মে পুরো সাংবাদিকতা পেশা কুলশিত হয়। যার পরিনতি সকলকেই ভূগতে হয়।
সাংবাদিকতাকে কুলষ মুক্ত রেখে; স্বাধীন চেতনায় নির্ভয়ে কাজ করার পরিবেশ উন্মুক্ত রাখা সরকারের প্রয়োজন। সরকারকে বুঝা উচিৎ - সঠিক পথের অগ্রগতি ধরে রাখতে গন মাধ্যমের বিকল্প নেই।
আর দেরী নয়- রাষ্ট্রের প্রয়োজন, এ বোধে থেকেই সাংবাদিকতার নীতি মালা তৈরী করে সরকার গনতন্ত্রের মাঠকে সুরক্ষা করবেন।#
লেখকঃ সাংবাদিক ও কলাম লেখক
নোয়াখালী
০১৭১৪৮৪০৮৯৪
[email protected]
©somewhere in net ltd.