| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।
চৌমুহনী পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থীরা প্রস্তত, বিএনপি নিষ্ক্রিয়
গোলাম মহিউদ্দিন নসু নোয়াখালী সংবাদদাতাঃ
দেশের প্রসিদ্ধ এবং নোয়াখালী জেলার বিশাল বানিজ্যিক শহর চৌমুহনী বাজার। চৌমুহনী বাজারের আশপাশ এলাকা নিয়ে ২০ বর্গ কিলোমিটারে বর্তমান জন সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজারের অধিক। বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার।
১৯৭২সনে প্রতিষ্ঠিত চৌমুহনী পৌরসভায় প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন মুসলীম নেতা মরহুম ছেরাজুল হক বি এ। ধারা বাহিকভাবে আওয়ামীলীগ নেতা আক্কাছ মিয়া, জাতীয় পার্টির এবিএম ইউছুপ, বিএনপি-র শাহ আলম, বিএনপি-র এডঃ আবদুর রহিম,আওয়ামীলীগের বর্তমান নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন এবং বর্তমান মেয়র সাবেক ছাত্রলীগ-যুবলীগনেতা,চৌমুহনী পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি আক্তার হোসেন ফয়সল ক্ষমতায় আসেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষনে বেগমগঞ্জ তথা চৌমুহনী এলাকা আওয়ামী বিরোধীদের সংখ্যাধিক্য দীর্ঘদিন । নানা সময়ে আওয়ামীলগের পক্ষ থেকে দলীয় সূযোগ থাকলেও আভ্যন্তরিন কোন্দলের কারনে তাদেরকে ক্ষমতার বাহিরে থাকতে হয়েছে।
বর্তমান মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সল ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতিতে নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন।বর্তমানে তিনি চৌমুহনী পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, নোয়াখালীর প্রস্তাবিত গভর্ণর মরহুম নুরুƒলহক এর নাতি হিসাবে পারিবারিক ঐতিহ্য টেনে চলেছেন। বিগত সেশনের মেয়র মামুনুর রশিদ কিরন ৫ জানুয়ারী/১৪এর নির্বাচনে নোয়াখালী -৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মেয়র পদ শূন্য হয়।’১৪ সালের উপনির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
আক্তার হোসেন ফয়সল পূনরায় নিজেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে কাজ করে চলেছেন। সমপ্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান,বর্তমান সময়ে নির্বাচিত হয়ে নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতা,পারিবারিক পরিচয় এবং স্থানীয় সাংসদসহ জেলার নেতা-মন্ত্রী ও ক্ষতাবানদের কাজে লাগিয়ে ২ বছরে অন্তত ২শ কোটি টাকার পৌর উন্নয়ন কাজ করেছেন। আরো ৫০ কোটি টাকার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে । তিনি তাঁর অসমাপ্তকাজ সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা নিয়ে আবারো মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে জানান ।
তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী। তবে কিভাবে দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হবেন ,এখনো এ বিষয়ে কোন নীতি মালা আসেনি।
প্রসঙ্গত তিনি আরো জানান, তাঁর প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিনের সমস্যা চৌমুহনীর যানজট নিরসনে এমপি-মন্ত্রীর সহায়তায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার ফোরলেন রাস্তার ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছেন। ফোর লেন কাজ সমাপ্ত করা, চৌমুহনীকে আধুনিক নগরায়নে রুপ দেয়া, স্থায়ীভাবে বাস র্টামিনাল, সিএনজি ষ্ট্যান্ড ও ট্রাকের মালামাল লোড- আনলোডে ডাম্পিং ষ্ট্যান্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে। চৌমুহনী ব্যবসায়ীক শ্রী বৃদ্ধি করতে পৌর অর্থায়নে দুইটি ৫ তলা আধুনিক ভবন নির্মান কাজ চলছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা গুলো মেরামতের জন্য প্রস্তাবিত ২৪ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্ধের অনুমোদন পাওয়া গেলে অচিরেই কাজ শুরু করা, চৌরাস্তার কালাপোল এলাকায় সুইপারদের জন্য একটি বহুতল ভবন নির্মানের অনুমোদনের জন্য চেষ্ট করছেন। তিনি নির্বাচিত হলে এসব কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করবেন বলে জানান।
নোয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরনের বড় ভাই, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম ,বর্তমানে গ্লোব এগ্রোভেটের পরিচালক খালেদ সাইফুল্লাহ মেয়র পদে প্রার্থী হবেন বলে গুঞ্জন চলছে। তাঁর সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, এলাকাবাসী চাইলে তিনি ভোট করতে রাজি আছেন। তিনি দলীয় রাজনীতিতে দায়িত্বশীল কোন পদে নেই। দলের সমর্থক হিসাবে কাজ করছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র ভোট করবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন সময়ে এলাকাবাসী যে ভাবে চাইবেন সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে আপাতত তিনি প্রার্থী হবেন বলে এলাকাবাসীর পক্ষে প্রচারনার পরামর্শ দেন। তিনি নির্বাচনে অংশ গ্রহনের লক্ষ্য -উদ্দেশ্য নিয়ে সাংবাদিকদের পরে জানাবেন।
চৌমুহনী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক টিপু জানিয়েছে তিনি মেয়র ভোট করতে আগ্রহী। এ জন্য তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন।
এছাড়া নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক বাদশা দলীয় মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আবার ওমর ফারুক বাদশার সহ ধর্মিনী সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ বেগম প্রার্থী হতে পারেন বলে স্থানীয় দৈনিক প্রতিকায় সংবাদ দেখা গেছে। এ ছাড়া জালাল উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, ইঞ্জিনিয়ার শেখ শহীদ নির্বাচন বিষয়ে এখনো মূখ খোলেননি। তবে তারাও আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে দলের কাছে মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপি সমর্থক সম্ভাব্য মেয়র প্রাথী চৌমুহনী পৌর বিএনপি-র সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন জানান, পৌরসভায় নির্বাচন করার বিষয়ে দলীয় কোন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। তিনি সহ দলের পক্ষে সম্ভাব্য বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধ চৌমুহনীর হত্য মামলাসহ নান ধরনের মামলা রয়েছে। মামলার আসামীরা কোন নির্বাচন ভাবনা করছেন কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন দলীয় সিদ্ধান্ত হলে মামলার জামিনে থেকে বা জেলে থেকেও নির্বাচন করা হতে পারে। বেগমগঞ্জ উপজেলার বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি শাহ আবদুল্্যাহ বাকি, জেলা সহ-সভাপতি জুলফির আলী ভূট্রো, সাবেক ছাত্র নেতা মঞ্জুরুল আজিম সুমন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে একাধিক সূত্রে আবাস পাওয়া গেছে। তবে তাদের কাছ থেকে কোন ধরনের প্রচারনা দেখা যায়নি।
নোয়াখালী জেলা জামায়েতের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক, বেগমগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা বোরহান উদ্দিন জানান, নির্বাচনী পরিবেশ থাকলে পৌর নির্বাচনে পৌর জামাতের আমির নাছিমুলগনি মহল ভোটে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। তবে বিষয়টি অবশ্যই জোটের বৈঠকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
স্থানীয় প্রবীনজদের সাথে আলাপে তাারা বলেন,কেন্দ্রিয়ভাবে বিএনপি-জামাত দলীয় জোটবদ্ধ, তাছাড়া বেগমগঞ্জে আওয়ামীলীগ বিরোধী সকল দল বরাবরেই এক হয়ে ভোট দেয়। সে ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ অন্তর্দ্বদ্ধে থাকলে বিপদ সংকুল অবস্থায় পড়বে। তবে এখন পর্যন্ত আওয়ামীলীগে তেমন কোন কোন্দল নেই। কিন্ত ব্যাক্তি পছন্দের কিছু বিরোধ থাকলেও এখনো তেমন মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেনি। #
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
০১৭১৪৮৪০৮৯৪
তারখি ১.১১.১৫
©somewhere in net ltd.