নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহিউদ্দিন নসু

মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।

গোলাম মহিউদ্দিন নসু

মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।

গোলাম মহিউদ্দিন নসু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নোয়াখালীর স্মৃতিতে অমম্লান ৭ই ডিসেম্বর

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৬



গোলাম মহিউদ্দিননসু,নোয়াখালী ঃ

ডিসেম্বর জাতীর জীবনে অর্জনের। ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস।
বিজয়ের আনন্দের মাঝে শত হারানোর ব্যাথায় অশ্র“সিক্ত বাঙ্গালীরা বিজয়ের মিছিলে। এই ঢলে পিছিয়ে ছিল না নোয়াখালীর মুক্তি কামীরা। বেমগঞ্জের বগাদিয়া; গোপালপুর. কোমপানীগঞ্জে মুছাপুর ; সুধারামের শ্রীপুরের মতো এলাকায় আতœবলীদানের ফলে সারা দেশে শত্র“ু মুক্ত হতে শুরু হলো। গ্রাম থেকে মফস্বল শহর উঠে আসতে শুরু করলো রাজাকার। নোয়াখালীতে পাকিস্তানী বাহীনির মূল ঘাঁটি ছিল জেলা সদরের পিটিআই স্কুল আর বেগমগঞ্জের টেকনিক্যাল হাই স্কুল। মুক্তিযোদ্ধা চারিদিক মুক্ত করে জেলা সদর মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রস্ততি নিতেছিলেন। ৬ ডিসেম্বর রাতে চোরের মতো পালিয়ে গেল পাকিস্তানিরা।
একাত্তরের ৭ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারদের কাছ থেকে মুক্ত করেছিলেন নোয়াখালী জেলা সদর।

২৬ মার্চ যুদ্ধ শুরুর পূর্বেই নোয়াখালীবাসী স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলো। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্সের ঐতিহাসিক ভাষনের পরই জেলাবাসী প্রস্তুত হতে থাকে একটি সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য। ছাত্র যুবক তরুণদের মাঝে ছিলো ব্যাপক উদ্দমতা। শহর ও গ্রামের আনাচে-কানাচে ছাত্র যুবকরা নিজেরাই গড়ে তুলেছিলো স্বেচ্ছাসেবক টিম। বাঁশের লাঠি নিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এগুলো সামরিক কোনো প্রশিক্ষণের আওতার মধ্যে না পড়লেও এ ছিল যুদ্ধের উন্মাদনা। ২৬ মার্চ থেকে এক মাস নোয়াখালী জেলা সদর হানাদার মুক্ত থকায় মুক্তিযোদ্ধারা সংঘটিত হবার ব্যাপক সুযোগ পেয়েছিল। নোয়াখালী টাউন হলে প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের সদর দফতর। সদর দফতর পরিচালনায় ছিলেন জননেতা আব্দুল মালেক উকিল, সহিদ উদ্দিন এস্কেন্দার (কচি), আব্দুল মালেক (শ্রীপুর), মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন, শহীদ সাহাব উদ্দিন এস্কেন্দার (ভুলু) প্রমুখ। তাঁরা আজ অনেকেই প্রয়াত।
জেলার তরুণরা, অনেক আনসার আর অবসরপ্রাপ্ত সামরিকবাহিনীর লোক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে মুক্তিযুদ্ধে নাম লিখিয়েছেন। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল করিম মুক্তিযুদ্ধাদের সর্বাত্বক সহযোগিতা করতেন। ্য পাকিস্তানীরা সে কারনে তাঁকে অনেক হয়রানি করেছে। বৃহত্তর নোয়াখালীর মুজিব বাহিনীর প্রধান ছিলেন মাহমুদুর রহমান বেলায়েত। তিনি ছাত্র যুবকদের সংঘটিত করে ভারতের দেরাদুনে গেরিলা যুদ্ধের ট্রেনিং গ্রহণ করেন। অন্যদিকে সুবেদার লুৎফুর রহমানের নেতৃত্বে গড়ে উঠে সামরিকবাহিনী থেকে আসা যুবক ও স্থানীয়দের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা দল।নয় মাস মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহসে দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধে অনেকেই শহীদ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ- ডাকসুর সমাজ কল্যাণ সম্পাদক অহিদুর রহমান অদু। মুক্তিযুদ্ধে তিনি নোয়াখালী সদরের মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। শত্র“ মুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে চাপরাশির হাটে এক সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। সাহাব উদ্দিন এস্কেন্দার ভুলু পাকিস্তানীদের হাতে বন্দী হয়ে অমানুসিক নির্যাতনে শহীদ হন। চৌমুহনী কলেজের সাবেক ছাত্র সালাহ উদ্দিন আহম্মদ এক সম্মুখ সমরে শহীদ হন।
নোয়াখালী মুক্ত হওয়ার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা ঘিরে ফেলে নোয়াখালী শহরের চতুর্দিক। ৬ তারিখ রাতের মধ্যেই সমস্ত প্রস্তুতি শেষ হয়। ফিরে আসার মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে রাজাকার আলবদরদের ফেলে পাকিস্তানী বাহিনী গোপনে কুমিল¬া ক্যান্টনমেন্টে পালিয়ে যায়। হানাদারদের প্রধান ঘাঁটি ছিলো মাইজদী পিটিআই ভবন এবং নির্মানাধীন সদর হাসপাতাল। মাইজদী কোর্ট রেল ভবন ও নাহার বিল্ডিং আগেই পতন হয়েছিলো।
৭ ডিসেম্বরে এলো সে মাহেন্দ্রণ। সূর্য উঠার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারদের শেষ ঘাঁটি মাইজদী পিটিআই আক্রমণ করে। ভবনটি যখন ঘিরে রাখা হয়েছিলো তখন তাদেরকে বার বার বলা হচ্ছিলো আত্মসমর্পন করার জন্য। কিন্তু তারা না শুনে উৎসুক জনতার দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুঁড়তে থাকে। তাদের সে গুলিতে তখন অনেক নিরীহ গ্রামবাসি নিহত ও আহত হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে রাজাকার আল বদররা আত্মসমর্পন করে। দুপুরের মধ্যেই পতন হয় শত্রুর শেষ ঘাঁটি। সরকারি-বেসরকারি ভবনে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। ধ্বনিত হতে থাকে জয় বাংলা।#


গোলাম মহিউদ্দিন নসু
০১৭৪৮৪০৮৯৪
তারিখ ৫.১২.১৫

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.