| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।
স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও
গোলাম মহিউদ্দিন নসুঃ নোয়াখালী ঃ
নোয়াখালীর চৌমুহনী কলেজের কৃতিছাত্র,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ছালেহ আহাম্মদ মজুমদার পাকহানাদের সাথে সম্মূখ যুদ্ধে শাহাদাৎ বরন করেন । তাঁর গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করে তাঁকে অবিস্বরনীয় করতে কলেজটির নামকরন করা হয় ‘চৌমুহনী শহীদ ছালেহ আহম্মদ কলেজ’। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও ছালেহ আহাম্মদের ছবি দিয়ে কোন স্মৃতি স্তম্ব নির্মান করা হয়নি।
ছবি সম্বলিত একটি স্মৃতি স্তম্ব কলেজ চত্বরে নির্মানের জন্য মিরওয়ারিশপুর ছালেহ আহাম্মদ স্মৃতি সংসদ বিভিন্ন দপ্তরে চেষ্টা করেও সফল হতে পারছে না। এ কাজে ক্ষমতাবান দায়িত্ব শীলরা এগিয়ে আসতে তারা জোরালো দাবী করছে।
নোয়াখালী জেলা পরিষদ প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্দা ডাঃ এবিএম জাফর উল্যার সাথে এ বিষয়ে আলপে তিনি জানান, আগামী ফেব্রয়ারী-১৬ মাসের মধ্যে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ছালেহ আহাম্মদের ছবিসহ সুন্দর একটি কলেজ গেইট নির্মান করার আশা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে,বাবু আর্যিনাথকে অধ্যক্ষ করে ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নোয়াখালীর প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘চৌমুহনী কলেজ’। মহান মুক্তি যুদ্ধে রাজাকার ও পাক মিলিশিয়ার সাথে সম্মূখ যুদ্ধে চৌমুহনী কলেজের কৃতি ছাত্র ছালেহ আহাম্মদ মজুমদার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে শাহাদাৎ বরন করেন।মরহুম ছালেহ আহাম্মদ ছিলেন ঐতিহাসিক ছয় দফা ও আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের একজন সংগঠক। ১৯৬৯এর গন অভ্যূত্থান সময়ে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তৎকালীন ইকবাল হলে (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) থেকে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেন।১৯৭১এর ২ মার্” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান, ৩ মার্চ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার ইসতেহার পাঠ অনুষ্ঠানে সক্রিয়া ভুমিকা পালন করেন । ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করার নির্দেশ নিয়ে কেন্দ্রিয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পরামর্শ অনুযায়ী নোয়াখালী আসেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় রেখে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সংগ্রাম কমিটি গঠনের কাজ করেন। ২৫মার্চ রাতে ঢাকায় পাক বাহীনির নৃশংস হত্যা কান্ডের পর থেকে স্থানীয় নেত্ববৃন্দের সহায়তায় সুবেদার মেজর আবদুল মান্নান মজুমদারকে দিয়ে ছাত্র-যুবকদের যোগাড় করে প্রশিক্ষন শিবির গড়ে তোলেন। ২২ এপ্রিল পাকবাহীনি নোয়াখালী প্রবেশকালে বজরা ;সোনইমুড়ির একাধিক স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। চৌরাস্তার উত্তরের কালা পুলটি জ্বালিয়ে দিয়ে পাকবাহীনির চলার পথের বিঘœ ঘটায়। সিনিয়রদের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের উন্নত ট্রেনিং নিতে মে মাসের প্রথম সাপ্তাহে ভারতে প্রায় শতাধিক লোক পাঠায় এবং ১২মে আরো একশ লোক নিয়ে নিজেই ভারতের ত্রিপুরা গিয়ে প্রশিক্ষন গ্রহন করেন।পরবর্তীতে (বিএলএফ)মুজিব বাহীনির অধিনে পাক হানাদার ও রাজাকার আলবদরবাহীনিসহ এদেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। আগষ্ট মাসের শেষ দিকে মুজিববাহীনি বেগমগঞ্জ ইউনিটের কমান্ডার আবদুল মান্নান(চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক কমিশনার)এর ডিপুটি কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ৪ঠা সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ১৫ নং সুইচ গেইট এলাকায় পাক মিলিশিয়া ও রাজাকারদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ৪জন সহযোদ্ধাসহ শাহাদাৎ বরন করেন। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের মজুমদার বাড়ীতে ১৯৪৯ সালের ১লা জানুয়ারীতে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর বাবার নাম আবদুস ছালাম মজুমদার ,মাতার নাম বেগমজীবনের নেছা।#
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
নোয়াখালী
তারিখঃ ১৩.১২.১৫
©somewhere in net ltd.