নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার আর রাশিনের অসমাপ্ত গল্প

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:১৫

-আপনার সমস্যা কি ?

-আমার ?

চেহারায় খানিকটা বোকা বোকা ভাব আনার চেষ্টা করলাম । খুব বেশি লাভ হল বলে মনে হল না । কারন রাশিনের চেহারাটা কঠিনই রয়ে গেল । রাশিন আবার বলল

-হ্যা, আপনার সমস্যা কি ?

-আমার কোন সমস্যা নেই তো ।

-সমস্যা নেই তাহলে বেল বাজাচ্ছেন কেন ?

-আশ্চর্য বেল বাজাবো না কেন ? বেল না বাজালে দরজা খুলবে কে ? আমার বাড়ির লোককে জানাতে হবে না যে আমি এসেছি ।

-ওয়েল, আপনাদের বেল বাজান । আমাদের ফ্লাটের কলিংবেল বাজাচ্ছেন কেন ?

আমি আবার বোকার মত হাসার চেষ্টা করলাম ।

-আপনাদের বেল বাজাচ্ছিলাম বুঝি এতোক্ষন ?

-শুনুন ঢং করবেন না । আপনি খুব ভাল করেই জানেন যে কার বেল বাজাচ্ছিলেন !

-বিশ্বাস করুন আমি ঠিক বুঝতে পারি নি । আসলে সাততলা বিল্ডিং ১৪টা ফ্লাট । ১৪টা ফ্লাটের ১৪টা কলিংবেল । কিভাবে বুঝবো বলুন ?

-আমার সাথে ফাজলামো করবেন না । আপনারা থাকেন তিন তালায় আর আমরা থাকি পাঁচ তলায় । আপনি কচি খোকা না যে ভুল করে বেল বাজাবেন ।

আমি আবার হাসলাম ।

-দেখুন যখন নেমেই এসেছেন আর রাগ করে ভাল কি ? একটু দরজা খুলে দেন প্লিজ ।

রাশিন গম্ভীর মুখে গেটটা খুলে দিল । আমি আবার হাসলাম । কিন্তু রাশিন গম্ভীর হয়েই রইল ।

এই মেয়েটা এতো কঠিন কেন ? একটু হাসলে কি বা ক্ষতি হয় ! এতো সুন্দর চেহারা মেয়েটার , শুধু কেবল একটু হাসি মুখে থাকলেই হল ! চেহারাটা আরো সুন্দর লাগবে ।

কিন্তু না । সবসময় কেবল মুখটা গম্ভীর হয়েই থাকা ।



একদিন সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম । রাশিন ঐদিন বিকেলবেলা ছাদে এসেছিল । মুখ যথারীতি গম্ভীর । আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম

-আচ্ছা আপনি সব সময় এমন গম্ভীর হয়ে কেন থাকেন ?

গম্ভীর রাশিন আরো গম্ভীর ভাবে বলল

-সেটা আপনার সমস্যা হবায় কথা না । আর আমি কেমন থাকবো সেটা আমার বিষয় ।

বাবারে কি কঠিন জবাব ! আমিও ছাড়ার পাত্র নই । বললাম

-না এটা আপনার একার বিষয় না ।

-মানে ?

তাই তো ! মানে কি ? এই প্রশ্নের জবাব কেমনে দেই ?

আমি বললাম

-দেখুন এই মানে বোঝাতে গেলে লম্বা লেকচার দিতে হবে । দিবো ?

রাশিন কঠিন চোখে তাকিয়ে রইল । কিন্তু চলে গেল না । এটা একটা আশার কথা । আমি বললাম

-দেখুন আমাদের ধর্মে আছে প্রতিবেশি দের পাশে থাকতে । সুখে দুঃখে তাদের খোজ খবর নিতে । এখন আপনি আমার প্রতিবেশি । আর আপনি ভাল নেই । আমার দায়িত্ব আপনার খোজ খবর নেওয়া । আপনার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা ।

-দেখুন মিস্টার অপু আপনাকে আমার সমস্যা নিয়ে ভাবতে হবে না । আমি আমার নিজের সমস্যা নিজে দেখবো ।

আবারও সেই কঠিন গলার জবাব । আমি বুঝি না এতো সুন্দর মেয়েটা এতো কঠিনতা পায় কোথা থেকে ?

-তাহলে আপনার আব্বার সাথে কথা বলছেন না কেন ? তাকে বলুন আপনি আপনার নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করতে চান, তার ইচ্ছায় নয় ।

রাশিন তীব্র চোখে তাকিয়ে রইল আমার দিকে ! কিছু বলার জন্য মুখ খুলল কিন্তু কিছু না বলেই চলে গেল ।

হায়রে রাশিন !! কেবল আমার সাথেই পারো, আর কারো সাথে তো পারো না ।



কিন্তু কয়দিন পরই একটা সুসংবাদ পেলাম । রাশিনের সাথে যার বিয়ে হবার কথা ছিল সে নাকি আর বিয়ে করবে না । তার মানে ওর বিয়ে ভেঙ্গে গেছে ! ওয়াও!!

বিকেল বেলা আবার রাশিনের সাথে দেখা হল । আজকেও মুখ গম্ভীর । আমি কাছে গিয়ে বললাম

-আজকে অন্তত একটু হাসি মুখ করা উচিৎ

আবার সেই কঠিন দৃষ্টি !

আমি যাবো কই !!

কিন্তু না । কঠিনতা খানিকতা নমনীয় হয়ে এল । রাশিনকে বললাম

-তাহলে বাবার সাথে কথা বলেছেন ?

-নাহ !

-তাহলে? কিভাবে বিয়ে ভাঙ্গল ?

রাশিন আমার দিকে তাকালো কিরকম এক দৃষ্টিতে ।

-আপনি আমার এতো খবর কিভাবে পান?

-আগে বলেন কিভাবে হল?

-ঐ লোকটার সাথে আমি কথা বলে ছিলাম সরাসরি ।

- কি বললেন?

-বললাম যে আপনাকে আমার পছন্দ নয় । আমি এ বিয়েতে রাজি নই !

-তারপর কি হল?

- কি হল জানি না । তবে আর হয়নি কিছু ।

-আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?

রাশিন কোন কথা বলল না । কিন্তু ওর ভাব দেখে মনে হল যে চাচ্ছে না আমি তাকে কিছু জিজ্ঞেস করি । আমি কিছু জানতে চাইলাম না।

এই মেয়েটা এমন কেন করে ? মেয়েটা কি বুঝতে পারে না যে আমি ওকে কি পরিমান পছন্দ করি । আমি যতদুর জানি মেয়েরা এসব আগে থেকেই বুঝতে পারে...।

অথবা ও হয়তো আগে থেকেই বুঝতে পেরেছে এই জন্যই এমন করছে ।

রাশিন বলল

-আচ্ছা এবার বলেন । আমার কথা গুলো আপনাকে কে বলে বলুন তো ?

-কেন ? কেন জানতে চাচ্ছেন ?

-আমার জানতে হবে কে আমার ব্যাপারে আপনাকে তথ্য দেয় ।

-কেন তাকে প্যাদানী দিবেন ?

-না । তবে আপনি যেন আর কোন খবর না পান সে ব্যবস্থা করবো ।

-দেখুন পছন্দের মানুষ গুলোর খোজ খবর ম্যানেজ করা ই যায় । আপনি যত চেষ্টাই করেন না কেন আমি ...

রাশিন সামনে কেন জানি আর কথা বলতে পারি না । কেবল তাকিয়েই থাকি ওর দিকে । কিছুক্ষন পর রাশিন চলে যায় ।

কি করে যে বলি মেয়েটাকে বুঝতে পারছি না ।



কদিন পর রাশিনের সাথে নিউ মার্কেটে দেখা । হাতে একগাদা ব্যাগ । আজ দেখলাম মুখটা একটু স্বাভাবিক । আসলে জগতে সব মেয়েরাই শপিং করতে ভালবাসে । আমার মনে হল এতো শপিং করেছে বলেই রাশিনের মুখটা একটু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে ।

আমি সামনে গিয়ে বললাম

-একি এতো শপিং ?

রাশিন কিছু বলল না । তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হল ওর চেহারা দেখে মনে হল না যে ও খুব বেশি বিরক্ত ।

বললাম

-বাসায় যাবেন?

-হুম ।

-আমিও যাবো । আপনার সাথে আসবো?

আমি ভেবেছিলাম রাশিন হয়তো মুখের উপর না করবে না । কিন্তু আমার ধারনা ঠিক হল না । রাশিন বলল

-আপনি আগে চলে যান । আামর এখনও কাজ আছে ।

-অপেক্ষা করি ।

-জি না । কোন দরকার নাই ।

-আরে আমার কোন কাজ নাই । আমি অপেক্ষা করি ।

-আপনি কেন বুঝতে পারছেন না যে আপনার সাথে আমার রিক্সার চড়া সম্ভব না । আপনি চলে যান ।

মনটা একটু খারাপই হল । একটু রিক্সার চড়লে কি বা এমন হবে ?

আমি চলে আসি । মনে মনে বলি এই মেয়ের কাছে আর যাবো না । যাবো না ।

কিন্তু হয় না । ঐদিন বিকেল বেলাতেই আবার ওর সাথে দেখা হয়ে যায় । ছাদে ।

তবে আজকে ওর কাছে যাই না । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যে ও নিজেই এল আমার কাছে । বলল

-কি ব্যপার চুপ কেন আজ?

-না আসলে আল্লাহর নাম নিচ্ছে তো তাই!

-মানে?

রাশিন আমার কথা বুঝতে পারল না ।

-আচ্ছা আপনি জানেন আল্লাহ ইব্রাহিম (আ)কে দশটি কাজের নির্দেশ দিয়ে ছিলেন ।

-আপনি কি বলছেন এসব?

আমি বললাম

-তার মধ্যে দুটি কাজ আমি করি ।

-কি কাজ?

-প্রথমটা হল মিথ্যা না বলা । আমি মিথ্যা কথা বলি না ।

-আর দ্বিতীয়তা?

-২য় নির্দেশটা হল প্রতিবেশীকে ভালবাসা...............।

এই কথাটা বলে আমি রাশিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম । দেখলাম রাশিনও আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে একভাবে ।

কতক্ষন তাকিয়েছিলাম জানি না, এক সময় রাশিন চোখ সরিয়ে নিল ।

এই প্রথম আমি ওর চোখে নমনীয় একটা ভাব দেখতে পেলাম । বললাম

-আমি সত্যিই আমার প্রতিবেশী কে ভালাবাসি । কিন্তু.......ঐ প্রতিবেশী এটা বুঝেও না বোঝার ভান করে । আমাকে পছন্দ না এটা বলে দিলেই হয়ে যায় । কিন্তু না।

রাশিন অনেকক্ষন চুপ থাকার পর বলল

-ঐ প্রতিবেশীরটো অনেক সমস্যা থাকতে পারে ! পারে না?

-পারে । পারবে না কেন ?

-অপু সাহেব আমি যাই । আর মিছেমিছি আলেয়ার পিছে লাভ নাই । আমার বাবার বিরুদ্ধ যাবা ক্ষমতা আমর নাই । আমি এমনিতেও কষ্টে আছি । আর বাড়তি কষ্টে নিজেকে জড়াতে চাই না । ভাল থাকবেন ।

রাশিন চলে গেল ।

আমি দাড়িয়েই রইলাম । রাশিন আমার কাছ থেকে দুরেই চলে গেল । ওর নিরব অপারগটা আমার কাছে জানিয়ে দিয়ে গেল যে আলেয়ার পিছনে ঘুরে আর লাভ নাই ।

সত্যি বোধহয় লাভ নাই ।

আমি ছাদের একটা পাশে দাড়িয়েই রইলাম । একা ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:৫৪

sumon2015 বলেছেন: শেষ.........................

ভাল লাগলো......।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:৫১

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:৫৭

গৌরীসেনের কর্মচারী বলেছেন: :| তারপর ?? :|

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:১২

অপু তানভীর বলেছেন: মোটামুটি এখানেই শেষ !!

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:২০

গৌরীসেনের কর্মচারী বলেছেন: :||

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:২২

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:৪৪

রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেন: B:-)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৩

অপু তানভীর বলেছেন: কি হইল??

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৫:৪৫

দিকদর্শন বলেছেন: রাশিন নামে আমার এক খুব পরিচিত একটি নাম আছে। কেন জানিনা, চরিত্র ও অনেকটা মিল রয়েছে। ধন্যবাদ...ছোট গল্পের জন্য। তবে ছোট গল্পের আবেগটা আরও বাড়ালে ভাল হত।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৩

অপু তানভীর বলেছেন: :( :( :(

৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৩৪

আমি তুমি আমরা বলেছেন: এই গল্পটা অন্যরকম। বাস্তবতার সাথে মিল রেখে ফিনিশিং দিলেন বলে প্লাস।

০৫ ই জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:১৮

অপু তানভীর বলেছেন: Thnxx.

৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৪৯

জানালার বাইরে বলেছেন: :|

+++

০৫ ই জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:১৮

অপু তানভীর বলেছেন: :| :| :|

৮| ০৫ ই জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:০৮

রাশান শাহরিয়ান নিপুন বলেছেন: পার্ট টু বের হবে নাকি?? কাহিনীডা হইল কি??

০৫ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৪১

অপু তানভীর বলেছেন: না মনে হয় !! এখানেই শেষ !!

৯| ০৮ ই জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৫৩

বিকেল বলেছেন: বাস্তবধর্মী পরিসমাপ্তির জন্য +++++...

০৮ ই জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:৫৬

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :)

১০| ১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:১৮

অহন_৮০ বলেছেন: ভালো হইছে

১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৩৩

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :)

১১| ০১ লা আগস্ট, ২০১২ ভোর ৪:১১

একজন আরমান বলেছেন: কষ্ট পাইলাম। :((

০১ লা আগস্ট, ২০১২ সকাল ৯:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: কষ্ট পাবার কিছু নাই !! স্রেফ একটা গল্প এটা !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.