নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টির গল্প

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪১

ক্রিষ্টান লেকের এই দিকটা আমার খুব ভাল লাগে । যদিও এখানে লেখা যে প্রবেশ নিষেধ তবুও আমার মত দেখলাম অনেকেই এখানে বসে আছে । দুরে দাড়িয়ে এক পুলিশ আপন মনে সিগারেট ফুঁকছে । আমাদের কে দেখেও যেন দেখছে না ।

আমিও আপন মনে লেকের টলটলা পানির দিকে তাকিয়ে রইলাম । এখান কার যে বাতাসটা আসে সেটা মন প্রান সব জুড়িয়ে দেয় ! সপ্তাহের এই ছুটির দিন গুলোতে এভাবে সময় কাটাতে নেহাত মন্দ লাগে না ।



-ভাই সাহেব ?

আমি ফিরে তাকালাম । আমারই মতই বয়স হবে লোকটার কিংবা একটু বেশি । আমার আমার পেছনে দাড়িয়ে । আমি বললাম

-জি ? আমাকে বলছেন ?

লোকটাকে একটু যেন বিব্রত মনে হল । বলল

-জি । আপনাকে একটা অনুরোধ করতে চাচ্ছি ? করবো ?

এতো বিনয়ী অনুরোধ ফেলা যায় না । আমি অনুরোধ করা অনুরোধে সম্মতি জানালাম । লোকটি বলল

-আপনি কি এই জায়গাটা ছেড়ে উঠবেন একটু ? আমি আর আমার বউ এখানে নিয়মিত বসি ।

একটু বিরক্ত হলাম মনে মনে । এটা কোন কথা হল ?

দেখতেছে একজন বসে রয়েছে কি বেকুবের মত এসে বলল আমি আর আমার বউ এখানে নিয়মিত বসি !!

কিন্তু মুখে বললাম

-এখানেই বসবেন ?

লোকটি আবার খানিকটা লজ্জিত কন্ঠে বলল

-আসলে আমার কোন সমস্যা নাই । এক জায়গায় বসলেই হল কিন্তু বৃষ্টির এই জায়গা ছাড়া চলেই না ।

-বৃষ্টি ?

লোকটা এবার একটু হাসলো । বলল

-বৃষ্টি আমার বউয়ের নাম ।

আমি কখন থেকে লক্ষ্য করছি লোকটি বারবার কথার সময় কেবল বউই বলছে । স্বাধারনত অপরিচিত কারো সাথে কথা বলার সময় কেউ বউ শব্দটা ব্যবহার করে না ।

এই লোকটা কেন করছে কে জানে ? আমি বললাম

-এখনই উঠবো ?

লোকটি বলল

-নাহ । এখনই উঠতে হবে না । বৃষ্টি এখনও আসে নি । ও আসলে উঠলে চলবে ।

-আচ্ছা ।



আমি আবার লেকের পানির দিকে মনোনিবেশ করার প্রস্তুতি নিলাম । দেখলাম লোকটি আমার পাশেই বসে পড়লো । আমাকে বলল

-ভাইজান যদি বিরক্ত না হন তাহলে একটু কথা বলি । বৃষ্টি না আসা পর্যন্ত ।

আপনার স্ত্রী কোথায় গেছে ?

-মনে হয় ওর বাবার বাসায় গেছে ।

-মনে হয় কেন বলছেন ? আপনি সিওরলি জানেন না ?

লোকটিকে একটু বিভ্রান্ত মনে হল । খানিকটা চিন্তিতো মনে হল । নিজের স্ত্রী কোথায় যেতে পারে সেটা নিয়ে খানিকটা চিন্তায় আছে । আমি বললাম

-ফোন দেন ।

আমার কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে লোকটা বলে উঠলো

-না না । এই কাজটা করা যাবে না । ও এখন আমার উপর রেগে আছে । এখন ফোন দিলে আরো রেগে যাবে । তখন ওর রাগ ভাঙ্গানো দুস্কর হয়ে যাবে । বুঝছেন বাচ্চা মেয়েতো কিচ্ছু বুঝতে চায় না । কি যে এক ঝামেলায় পরেছি ! বিশাল যন্ত্রনায় আছি ।



লোকটা যদিও বলল যে বড় যন্ত্রনায় আছে কিন্তু তার মুখ দেখে তো সেই রকম মনে হল না । কেমন একটা সুখি সুখি ভাব তার চেহারায় । আমি বললাম

-সে কি আপনার উপর প্রায়ই রাগ করে ?

-আর বলবেন না । বাচ্চা মেয়েগুলো নিয়ে এই হয়েছে সমস্যা । কথা নাই বার্তা নাই একটু উনিশ বিশ হলেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে । আমার কি মনে হয় জানেন ভাইসাহেব ?

-কি ?

-মনেহয় আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের পূর্ব পুরুষের সাথে কোন যাযাবর গোষ্ঠীর সম্পৃক্তা ছিল । হাহাহা ।



নিজের রসিকতায় নিজেই হেসে ফেলল । আমার কেন জানি এই কথাতেই লোকটাতে পছন্দ হয়ে গেল । মনে হল লোকটা বেশ রসিক । আমি বললাম

-তা এতো যখন যন্ত্রনা দেয় বিয়ে করার আগে ভাবেন নাই ?

লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল

-আর বইলেন না । আগে জানবো কিভাবে ? আর এই মেয়ের সাথে আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছাই ছিল না । বলতে পারেন ফেসে গেছি ।

-মানে ? ঠিক বুঝলাম না ।



লোকটা একটু এদিক ওদিক তাকালো । দেখে নিল আশে পাশে কেউ আছে কি না । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে গলা খানিকটা নামিয়ে বলল

-ভাই আপনার সাথে কথা বলে ভাল লাগছে । আপনাকে একটা গোপন কথা বলতে চাই । অনেক দিন ধরেই কাউকে বলবো বলবো ভাবতেছি । কিন্তু পরিচিত কাউকে বলতে সাহস হচ্ছে না । আপনাকে বলা যায় । বলব ?

-বলুন । সমস্যা নাই ।

লোকটা বলল

-আমার তারেক । তারেক আহমেদ ।

-আপনি ?

-আমি তানভীর ।

লোকটা তার গল্ছোপ শুরু করলো !

-ছোট বেলা থেকেই আমার মেয়েদের সাথে প্রেম করার একটা দারুন ঝোক ছিল । এমনও হয়েছে একসাথে চার-পাঁচ জনের সাথে এক সাথে প্রেম করেছি । আমার চেহারা দেখছেন মোটামুটি খারাপ না । আর তখন মেয়েরা কেমন যেন এই চেহারা দেখে পটে যেত ।

আমি লোকটার চেহারার দিকে ভাল করে তাকালাম । এখন বেশ সুদর্শন তিনি। তারেক আহমেদ বলল

-যাই হোক এমন একটা অবস্থা যে আসে পাশের কোন মেয়েই বাদ নাই । কারো কারো আগে থেকেই রিলেশন আছে তবুও তার পেছনে লেগেছি এবং সফলও হয়েছি । এমন যখন সময় তখন বৃষ্টিরা আমাদের এলাকায় আসলো । একটা এলাকায় কোন সুন্দর মেয়ে আসলে কি হয় ? এলাকার যত চ্যাংড়া পোলাপাইন আছে সব পেছনে লেগে যায় ! বৃষ্টির পেছনেও সবাই লেগে গেল ।

কিন্তু এই মেয়ে কারো দ্বারাই পটলো না । শেষে আমি প্রজেক্ট হাতে নিলাম ।

আমি খানিকটা কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম

-তারপর ।

তারেক আহমেদ বলল

-সত্য কথা বলতে কি বৃষ্টি আমার দ্বারাও ঠিক মত পটছিল না । সঠিক কারনটা বুঝতে পারলাম কয়েক দিন পরে । বৃষ্টির এক খালাতো ভাইয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে । সেই খালাতো ভাই এখন আমেরিকায় থাকে । খুব জলদি তাদের বিয়ে হয়ে যাবে । এই জন্য সে কারো সাথে রিলেশন করবে না ।

-তারপর ?

-আমি তবুও পিছু ছাড়লাম না । আমার সাথে রিলেশন করবে না বললেও ঠিকই আমার সাথে কথা বলত । মাঝে মাঝে দেখাও করতো । আমি ঠিক বুঝতে পারতাম যে বিয়ের ঐ ব্যাপারটা না থাকলে বৃষ্টি রাজি হয়ে যেত । এভাবেই চলতে লাগলো । দু তিন মাস পরে একদিন সন্ধ্যার দিকে বৃষ্টি আমাকে ফোন দিল । বলল

-কোথায় আপনি ?

-এই তো । কি ব্যাপার ?

-আপনি এখনই আমাদের ছাদে আসেন ।

-এখনই ?

-এখনই ।

আমার জন্য একটা ধাক্কা অপেক্ষা করছিল । আমি ছাদে পৌছেছি আর বৃষ্টি সোজাসুজি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো । আমি এতোটাই অবাক হলাম কিছুক্ষন কোন কথাই বলতে পারলাম না ।

-কি হয়েছে ?

কোন মতে বললাম । বৃষ্টি বলল

-আজকে সব বাঁধা দুর হয়ে গেছে ।

-মানে ?

তারপর বৃষ্টি যা বলল তার সারমর্ম হল তার খালাতো ভাই যার সাথে তার তার বিয়ে ঠিক ছিল সে এক বিদেশি মেম বিয়ে করে ফেলেছে । এই জন্য তার আর কোন বাঁধা নেই ।

এই টুকু বলেই তারেক আহমেদ থামলেন কিছুক্ষন । আমি একটু হেসে বললাম

-আরে তাহলে তো কেললা ফটে ! আপনি তো জিতে গেলেন ।

-তা গেলাম । কিন্তু আসল জিনিসটা আর কয়দিন পরে টের পেলাম ।

-কি রকম ?

-না দেখুন , আমি যেমন ছিলাম সবার সাথেই টাইম পাস করতাম । কোন সিরিয়াস কিছু ছিল না । কিন্তু বৃষ্টি খুব সিরিয়াস ছিল । কদিন পরেই আমি টের পেলাম ।

-কি রকম ?

-তারও মাস খানেক পরের কথা । সন্ধ্যার সময় আমার এক বন্ধু আমাকে ফোন করে বলল বৃষ্টি হাসপাতালে । যতই টাইমপাস করি সে তখন আমার রানিং গার্লফ্রেন্ড । হাসপাতালে ছুটে গেলাম । কিন্তু ওর কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না । বারান্দায় বিরস মুখে দাড়িয়ে আছি এমন সময় আমার সেই বন্ধুটি বৃষ্টির বাবাকে নিয়ে হাজির ।

-তুমিই তারেক ?

আমি খানিকটা ইতস্তত করে বললাম

-জি ।

এরপর তিনি আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে গেলেন । বললেন

-বৃষ্টি হাতের রগ কেটে সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিল ।

আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম এই কথা শুনে । আমি বললাম

-সেকি ! কেন !

তিনি আর কিছু বলতে পারলেন না । কাঁদতে লাগলেন । আমার বন্ধুটি এসে বলল যে বৃষ্টি নাকি আমার আগের রিলেশন গুলোর ব্যাপারে সব শুনেছে । সেটা শুনে কিছুতেই স্থির থাকতে পারে নি ।

কি বলবো তানভীর সাহেব, জীবনে অনেক প্রেম করেছি অনেক টাইম পাস করেছি কিন্তু কেউ যে আমার কারনে তার জীবন দিয়ে দিতে পারে এইটা কোন দিন ভাবতেই পারি নাই ।



দেখলাম তারেক সাহেবের চোখ ভিজে উঠেছে । তিনি সেটা লুকানোর চেষ্টা করলেন না । আমি বললাম

-তারপর ?

-তারপর আর কি ? বেশি দিন অপেক্ষা করি নি । বৃষ্টিকে বিয়ে ফেলি । আর তখন থেকেই এই এই যন্ত্রনা বয়ে বেড়াচ্ছি ।

আমি লক্ষ্য করলাম তারেক সাহেবের চোখটা ভেজা আর মুখে একটা অদ্ভুদ হাসি লেগে আছে সুখি মানুষের হাসি ।

-কি আমি তোমাকে যন্ত্রনা দেই ।

আমরা দুজনেই একসাথে পিছনে ঘুরে তাকালাম । বাইশ তেইশ বছরের এক তরুনী দাড়িয়ে । মুখে কপট রাগের তাব । দেখলাম তারেক সাহেব হই হই করতে করতে উঠে গেল । মেয়েটির কাছে গিয়ে বলল

-আরে কে বলে তুমি আমাকে যন্ত্রনা দেও ! তুমি তো আমাকে ...

-থাক আর ঢং করতে হবে না । তুমি আবার সেই পুরানো কথা মানুষকে শোনাচ্ছ ?

-আরে !! তুমি আসছিলা না তাই তানভীর ভাইয়ের সাথে একটু গল্প করছিলাম ।

-হয়েছে । মানুষ এক গল্প আর কতবার করতে পারে ।

তারপর মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে খানিকটা লজ্জিত কন্ঠে বলল

-আপনাকে নিশ্চই অনেক বিরক্ত করেছে । তাই না ?

আমি বললাম

-না না ঠিক আছে । আমি একদম বিরক্ত হই নি । বরং আরো ভাল লেগেছে ।

-এতো কথা বলতে পারে ও । শুনুন ওর কথা আপনি একটুও বিশ্বাস করবেন না । মানুষকে এতো গল্প দিতে পারে ও ।

তারেক সাহেব বলে উঠল

-আমি গল্প দেই ? আমি ?

-শুনো কথা বলবা না ।......



আমি আর বসে থাকি না । ওরা দুজন এখন মনের সুখে ঝগরা করুক । আমি ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম ।

হাটতে হাটতেই হঠাৎ আমার মনটা কেন জানি বিষন্ন হয়ে গেল । মনে হল এমন এমন যন্ত্রনা দেওয়ালী থাকলে মন্দ হত না !



ফেবু লিংক

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪৮

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন... মধুর যন্ত্রনাময় জীবন! :)

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:১২

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ !!

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:০৩

আতিকুল০৭৮৪ বলেছেন: ahare..amar o temon keo nai

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:১২

অপু তানভীর বলেছেন: হুম !! আমার কিন্তু আছে ;)

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:০৫

রাতুল_শাহ বলেছেন: সুন্দর

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:১৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ ! :):):)

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:১৯

শীলা শিপা বলেছেন: sundor likhesen vaia.

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪০

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ আপু !! :):):)

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩০

শ্রাবণ জল বলেছেন: গত ৪/৫ টা পোস্টের সাথে তুলনা করলে, এটা সবচাইতে ভাল লেগেছে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪০

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ ! ভাল থাকবেন ! :):)

৬| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:০৯

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আরও একটি সুন্দর গল্প +++++++++

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:২৩

অপু তানভীর বলেছেন: :):):)
ধন্যবাদ !!

৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৩৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনার লেখার হাত আছে। লেখার ফ্ল নেই বললেই চলে, আর লেখার ফ্লো অসাধারণ। মনে হচ্ছিল চা খেতে খেতে গল্প শুনছি।

চালিয়ে যান।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:১৯

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ ! :):):)

৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৫০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: দারুন লাগছে! আপনার এই লেখাটা অন্যান্য লেখার তুলনায় বেশ ভাল হয়েছে।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ !! অনেক ধন্যবাদ !

৯| ০৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১:২৬

সানফ্লাওয়ার বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা। মনে হল চোখের সামনে ঘটনা টা ঘটছে

২১ শে মে, ২০১৩ রাত ২:০৬

অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.