নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়। বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে। বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো। অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না। কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়, তারা আর কিছুই করে না, তারা আত্মবিনাশের পথ পরিস্কার

পড়ুয়া_পড়ুয়া

“বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়। বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে। বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো। অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না। কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়, তারা আর কিছুই করে না, তারা আত্মবিনাশের পথ পরিস্কার করে।” ---নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

পড়ুয়া_পড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়লা নীতি নিয়ে কিছু কথা : প্রফেসর নুরুল ইসলামের একটি বিবৃতি

০১ লা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:১৪

কোল পলিসির জন্ম একটা সন্দেহের মধ্য দিয়ে। এটা করা হলো আইআইএফসি নামের একটা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ তাদেরকে কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দ্রুত কোল পলিসি প্রণয়ন করার দায়িত্ব দিল।

১ম সংস্করণ (১ ডিসেম্বর ২০০৫) এবং ২য় সংস্করণ (২৩ জানুয়ারি, ২০০৬) লিখে দেয়া হলো যে ২০১১ সালে বড়পুকুরিয়ার কয়লা খনির ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা তোলা বন্ধ করা হবে। উক্ত খনি থেকে ভারতের টাটা কোম্পানি ২০১০ সাল থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলবে। এশিয়ান এনার্জি ২০০৮ সাল থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা খনি থেকে কয়লা তুলবে। কোল পলিসি সম্বন্ধে ২০০৬ সালের প্রথম দিকে বিভিন্ন সেমিনারে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলা এবং সন্দেহজনকভাবে টাটা এবং এশিয়ান এনার্জিকে কয়লা তোলার পূর্বানুমতি সম্বন্ধে লেখা থাকায় প্রতিবাদ হয়।



পরবর্তীতে আইআইএফসি অতি দ্রুততার সঙ্গে কোল পলিসির ৩য় সংস্করণ (১২ মার্চ, ২০০৬), ৪র্থ সংস্করণ (৪ এপ্রিল, ২০০৬) এবং ৫ম সংস্করণ (৩০ মে, ২০০৬) প্রণয়ন করে। বিদেশি প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কয়লা উত্তোলন এবং অবাধ রপ্তানির সুযোগ প্রদান করে আইআইএফসি কয়লা নীতির খসড়া প্রণয়ন করে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ ৩০ মে ২০০৬-এ আইআইএফসি কর্তৃক প্রণীত খসড়া কোল পলিসির ৫ম সংস্করণ অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করে।



১ আগস্ট, ২০০৬-এ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তা আমার অফিসে এসে আমাকে খসড়া কয়লা নীতির ৫ম সংস্করণের ওপর মতামত দিতে অনুরোধ করেন। আমি চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানাতে বললে উক্ত কর্মকর্তা বলেন বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি এবং চিঠি দেয়ায় একটু অসুবিধা আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছে এসেছি এটাই বিষয়টির গুরুত্ব বুঝায়। আমি তখন তাকে তার অফিসে ফিরে গিয়ে তার বসের মাধ্যমে ফোনে বুয়েটের উপাচার্যকে অনুরোধ করলে আমি কাজটি করে দেব বলি। তখন উক্ত কর্মকর্তা তাই করলেন। বিকেলে উপাচার্য আমাকে ফোনে বললেন প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আমার কাছে কেউ এসেছিল কিনা? আমি বললাম হ্যাঁ, এসেছিল। উপাচার্য বললেন, আপনি তার কাজটি করে দেন।



মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে প্রাপ্ত ২৯ পাতার খসড়া কয়লা নীতি লাইন বাই লাইন পড়ে টেকসইভাবে দেশের কয়লা উন্নয়নে সহায়তার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে আমার লিখিত মতামত ৯ আগস্ট, ২০০৬-এ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসে প্রেরণের ব্যবস্থা করলাম। আমার কয়েকটি উলেখযোগ্য মতামত ও সুপারিশ ছিল নিম্নরূপ।

দেশের জ্বালানি চাহিদা নিরূপণ না করে অবাধ কয়লা রপ্তানির সুযোগ প্রদান করা হলে জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। জাতীয় জ্বালানি নীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কয়লা নীতি প্রণয়ন করা উচিত। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের দুর্বলতার সুযোগে বিশ্বব্যাংকের ইকুইটেলিয়াল প্রিন্সিপাল অনুসারে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করা হলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। বিদেশি কোম্পানিকে কয়লা উত্তোলনের আগাম অনুমতির ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে খনি উন্নয়নের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি প্রাক খনন অবস্থায় পুনরুদ্ধারের পর ফসলের উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করে উক্ত ভূমি পূর্বের মালিকদের কাছে ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত। ভারতের কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের অনুরূপ 'কোল বাংলা' নামে সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব প্রদান করা উচিত।



পরবর্তীতে আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিস প্রফেসর নুরুল ইসলামের মন্তব্য অনুসারে কয়লা পলিসির খসড়াটি যথাযথ সংশোধন করার জন্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেছে। তখন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে সংবাদ মাধ্যমে বলা হলো যে তারা প্রফেসর ইসলামের মতামত অনুসারে কেন সংশোধন করবে? জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে মার্চ, ২০০৭ তারিখে কোল পলিসির ষষ্ঠ সংস্করণ প্রণয়ন করে। যে সংস্করণে কয়লার ভবিষ্যৎ চাহিদা সম্বন্ধে কোনো উপাত্ত ছিল না। পরবর্তীতে কয়লা নীতি সংশোধিত খসড়া প্রণয়নের জন্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। উক্ত কমিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের নির্দেশ অনুসারে প্রফেসর ইসলামের মতামত পর্যালোচনা শুরু করে। এ পর্যায়ে আমি আন-অফিসিয়ালি উক্ত কমিটিকে তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করার আগ্রহ জানাই। এ প্রসঙ্গে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার পান আপডেট-২০০৬ অনুসারে ২০২৫ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে কি পরিমাণ কয়লা প্রয়োজন হবে তার হিসাবের ছক সরবরাহ করি। কয়লা পলিসি প্রণয়নে প্রথমবারের মতো কয়লার ভবিষ্যৎ চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ জুন, ২০০৭ সময়ে খসড়া কয়লা নীতির ৭ম সংস্করণ প্রণয়ন করে। এবং প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে।



গত দুবছরে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ কর্তৃক খসড়া কয়লা নীতির ১ম থেকে ৭ম সংস্করণ পর্যন্ত প্রণয়নের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সমালোচনা প্রেক্ষিতে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে তৎকালীন জ্বালানি উপদেষ্টা জনাব তপন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মতিন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন। উক্ত কমিটিতে পরবর্তীতে প্রফেসর ইসলাম এবং জনাব মোঃ এহসান উলাকে সদস্য হিসেবে কো-অপ্ট করা হয়। প্রফেসর পাটওয়ারী কমিটিতে কাজ করার সময় আমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বদরুল ইমাম অক্টোবর, ২০০৭ কলকাতায় সার্ক আয়োজিত একটি কয়লা সম্বন্ধীয় কর্মশালায় অংশগ্রহণ করি। এবং এ বিষয়ে ২৭ অক্টোবর, ২০০৭ তারিখে কমিটির সভায় একটি প্রতিবেদন দাখিল করি। উক্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কয়লা উন্নয়ন সম্বন্ধে নীতি প্রণয়নে আমাদেরকে অনেক সহায়তা করেছে।



ভারতের ২০০ বছরের কয়লা উত্তোলনের অভিজ্ঞতার আলোকে ভারত আইন করে ১৯৭৩ সাল থেকে কয়লা উন্নয়ন ও উত্তোলন সম্বন্ধীয় সকল কার্যক্রম জাতীয়করণ করে এবং পাবলিক সেক্টর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস্থা করে। ভারতের ৯৫ শতাংশ কয়লা পাবলিক সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং ৫ শতাংশ প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহ উত্তোলন করে। প্রাইভেট সেক্টরের কার্যক্রম শুধু ক্যাপটিভ মাইনের জন্য সীমিত। ভারতে টাটার ব্যবস্থাপনায় যে কয়লা খনি আছে সে কয়লা টাটার স্টিল কারখানায় ব্যবহৃত হয়। বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, বাংলাদেশে যত কমিটিই করেন না কেন সেখানে বিদেশি তেল-গ্যাস ও কয়লা কোম্পানির স্বার্থ দেখার জন্য তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি থাকবেই। কোল পলিসি কমিটিতেও ছিল। আমার নেতৃত্বে এশিয়া এনার্জির প্রস্তাব মূল্যায়নের কমিটিতেও ছিল। তারা নোট-অব-ডিসেন্ট দিয়ে বিদেশি কোম্পানির পে কমিটির সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করতে চেষ্টা করেছে। এসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশের স্বার্থে কমিটির কার্যক্রম সম্পন্ন করা খুবই চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কমিটির সুপারিশে বলা হয় যে আইনগত, প্রযুক্তিগত, পরিবেশগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরি দুর্বলতার কারণে এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত প্রকল্পটি গ্রহণযোগ্য নয়। এশিয়া এনার্জির প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটিতে মোট ১২ জন সদস্যের মধ্যে মোট ৪, জন সব সুপারিশ সম্বন্ধে সম্মতি প্রদান করেছেন। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে প্রথমবার ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৬-এ এবং দ্বিতীয় বার ২৩ ফেব্র“য়ারি, ২০০৯-এ এশিয়া এনার্জি কর্পোরেশন কর্তৃক দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পের ফিজিবিলিটি রিপোর্ট মূল্যায়নের জন্য সরকার কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়নি। এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি বাংলাদেশের কয়লা নীতি প্রণয়নকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেছে।

প্রফেসর পাটওয়ারীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি জুন ২০০৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০০৭ পর্যন্ত মোট ১৯টি উন্মুক্ত সভায় আলোচনার মাধ্যমে খসড়া কয়লা নীতির ৮ম সংস্করণ প্রণয়ন করে জানুয়ারি, ২০০৮ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে দাখিল করে। ইতোমধ্যে জনাব তপন চৌধুরী জ্বালানি উপদেষ্টা হিসেবে পদ ত্যাগ করেন। প্রফেসর পাটওয়ারীর কমিটির খসড়া কয়লা নীতির প্রধান কয়েকটি সুপারিশ ছিল নিম্নরূপ



(১) কয়লা নীতি, জাতীয় জ্বালানি নীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হবে,

(২) পাবলিক সেক্টর প্রতিষ্ঠান ‘কোল বাংলা’ কয়লা উত্তোলনের সার্বিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে বিদেশি সাহায্যের প্রয়োজন হলে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জয়েনভেঞ্চার করা যাবে,

(৩) দেশে বর্তমানে আবিষ্কৃত কয়লা ক্ষেত্রসমূহ থেকে উত্তোলিত কয়লা রপ্তানির কোনো সুযোগ নেই,

(৪) দেশের আগামী ৫০ বছরের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কয়লা রপ্তানির বিষয় বিবেচনা করা যাবে,

(৫) দেশের কয়লার চাহিদার সঙ্গে সমতা রেখে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে,

(৬) খনি উন্নয়নকারীকে খনি মুখে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে,

(৭) কয়লা উত্তোলনের জন্য পরিবেশগত আইন, বিধি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে,

(৮) খনি উন্নয়নের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অধিবাসীদেরকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে,

(৯) কয়লা উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিসমূহ পুনরুদ্ধার করে উৎপাদনের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে এনে ভূমির মূল মালিকদের কাছে ফেরৎ দেয়ার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে,

(১০) কোল পলিসিতে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে বাস্তবসম্মত কয়লার রয়্যালটির হার নির্ধারণ করতে হবে,

(১১) সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা চলবে,

(১২) বাংলাদেশের খনি অঞ্চল পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় এবং বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হাইড্রো-জিওলজিক্যাল অবস্থার কারণে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তর দিকে পরীামূলকভাবে একটি উন্মুক্ত কয়লার খনি বাস্তবায়ন করা যাবে। সন্তোষজনকভাবে উক্ত প্রকল্প বাস্তাবয়ন করা সম্ভব হলে ভবিষ্যতে উন্মুক্ত খনন পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন করা যাবে।





পরবর্তীতে প্রফেসর তামিম দায়িত্ব নেয়ার পর জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ খসড়া কয়লা নীতির ৮ম সংস্করণ পুনরায় সংশোধন করে ৯ম সংস্করণ প্রণয়ন করে কেবিনেটের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করে। উক্ত সংশোধনীতে যে বিষয়গুলো পরিবর্তন করা হয় তা হলো

(ক) পুনরুদ্ধারকৃত ভূমি মূল মালিকদের কাছে ফেরত না দেয়া,

(খ) পরিবেশগত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়গুলো মূল নীতি থেকে স্থানান্তরিত করে গুরুত্বহীন করার উদ্যোগ নেয়া,

(গ) ভবিষ্যতে রয়্যালটি নির্ধারণের জন্য পদ্ধতি বাদ দিয়ে উন্মুক্ত পদ্ধতির জন্য ৬ শতাংশ হারে এবং সুড়ঙ্গ পদ্ধতির জন্য ৫ শতাংশ হারে নির্ধারণ করা।



কয়লা নীতির এ উদ্দেশ্যমূলক পরিবর্তন সম্বন্ধে সংবাদপত্রে প্রতিবাদ ছাপা হয় (দৈনিক প্রথম আলো: ১৩ আগস্ট, ২০০৮)। সম্ভবত সে কারণে কেবিনেট উক্ত কোল পলিসির ৯ম সংস্করণ অনুমোদন করেনি। শোনা যায় যে, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ/ পেট্রোবাংলা ১৫ জুন ২০০৯ তারিখে যমুনা রিসোর্টে অনুষ্ঠিতব্য বিদেশে অবস্থনাকারী বিশেষজ্ঞদের এবং দেশীয় নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে কোল পলিসির ৯ম সংস্করণ উপস্থাপন করেছে।

লেখক : অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, সদস্য, আব্দুল মতিন পাটোয়ারী খসড়া কয়লা নীতি প্রণয়ন কমিটি, অধ্যাপক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:১৮

ফিরোজ-২ বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ঘন্যবাদ। +++

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:১৮

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ । বিষয়টির বর্তমান অবস্থা নিয়ে খোজ খবর এবং মতামত রাখবেন দয়া করে ।

২| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:২৩

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের institute of appropriate technology তে কর্মরত আছেন এবং খসড়া কয়লা নীতি প্রণয়ন কমিটিতে কাজ করেছেন । কয়লা নীতি নিয়ে যারা খোজখবর রাখেন তারা তাঁর নামের সাথে পরিচিত থাকতে পারেন । এখানে তাঁর এই বিবৃতি একজন স্পেশালিস্টের মতামত হিসেবে এবং দেশে কয়লা নীতির বর্তমান অবস্থা আলোচনার জন্য পোস্ট করা হলো । এটি সাপ্তাহিকে ছাপা হয়েছে ।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:১৬

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: এই কথাগুলো আমি আসলে পোস্টের শুরুতেই দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু টাইপিং জনিত সমস্যার কারনে দিতে পারি নি । সেজন্য দূঃখিত ।

৩| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:২৮

পি মুন্সী বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ুয়া আপনাকে।
একটা ভালো পোষ্ট দিয়েছেন।
আমার মন্তব্য নিচের আলাদা পোষ্ট দিয়েছি। দেখতে পারেন।
Click This Link

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:২৪

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: ' অভিজিত বিতর্কের ' কারনে আমি আপনার লেখার সাথে পরিচিত । লিংকের লেখাটি পড়লাম । এখানেও মতামত রাখবেন আশা করি ।
আপনাকে দেখে ভালো লাগছে ।

৪| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:৩৯

নাজিম উদদীন বলেছেন: প্রফেসর তামিম কেন এই কাজ করতে গেল।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৩৫

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: করতে গেল কারন এখানে তার ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত।সে তেল গ্যাস সংক্রান্ত একটি বহুজাতিক কোম্পানীর এ দেশীয় উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে । তামিম ও তামিমপন্থি ব্যক্তিরা যে এইসব নীতি নির্ধারনী কমিটিতেও ঢুকে বসে আছে এবং শুধু বসে নেই নীতিকে ভালোভাবে প্রভাবিত করারও চেষ্টা করছে অধ্যাপক নুরুল ইসলামের লেখা থেকেই সেটা জানতে পারছি ।

>>>>>>>>>>>>>

বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, বাংলাদেশে যত কমিটিই করেন না কেন সেখানে বিদেশি তেল-গ্যাস ও কয়লা কোম্পানির স্বার্থ দেখার জন্য তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি থাকবেই। কোল পলিসি কমিটিতেও ছিল। আমার নেতৃত্বে এশিয়া এনার্জির প্রস্তাব মূল্যায়নের কমিটিতেও ছিল। তারা নোট-অব-ডিসেন্ট দিয়ে বিদেশি কোম্পানির পে কমিটির সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করতে চেষ্টা করেছে। এসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশের স্বার্থে কমিটির কার্যক্রম সম্পন্ন করা খুবই চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।

৫| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৪৫

স্বপ্ন ব্যাকরণ বলেছেন:


অনেক ভালো লেখা।

শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৩৯

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: তামিম শুধু নয় , বর্তমান জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক ই এলাহীর ভূমিকাও সামনে আনা দরকার । তিনি কী করছেন ?
তামিমের থেকে ব্যতিক্রমী কিছু ???

৬| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৪৭

স্বপ্ন ব্যাকরণ বলেছেন:

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ/ পেট্রোবাংলা ১৫ জুন ২০০৯ তারিখে যমুনা রিসোর্টে অনুষ্ঠিতব্য বিদেশে অবস্থনাকারী বিশেষজ্ঞদের এবং দেশীয় নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে কোল পলিসির ৯ম সংস্করণ উপস্থাপন করেছে।


বর্তমান সরকার কি সেই ৯ম সংশোধনী পাস করবে?

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৪৪

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: এ বিষয়ে আলাদা পোস্ট দেয়ার ইচ্ছা আছে । তবে বেশ ঢাক ঢাক গুড় গুড় চলছে !!! আপনার কী মনে হয় ?

৭| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৫০

মার্ক জুবাবের বলেছেন: গুরুত্বপুর্ণ পোষ্ট, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৪৬

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ । মতামত রাইখেন ।

৮| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১২:০৬

মুক্তি মণ্ডল বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ জানাই।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৪৮

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ নিলাম । একটু খোঁজ রাখবেন ।

৯| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৪১

অচেনা সৈকত বলেছেন: প্রফেসর নুরুল ইসলাম আমার সরাসরি শিক্ষক। উনার মত পন্ডিত ও সজ্জন ব্যক্তি বাংলাদেশে বিরল। সরকারের উচিত উনার নেতৃত্বে জ্বালানী নীতি প্রণয়ন করা। উনাকে টেকনোক্র্যাট কোটায় জ্বালানী মন্ত্রী করলে দেশ একশ বছর এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৫০

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: উনি তো তা হতে পারবেন না । টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী হবেন তৌফিক ই ইলাহী ।

১০| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৫৫

অচেনা সৈকত বলেছেন: সেজন্যই বলি বাংলাদেশে যোগ্য লোককে কখনই যোগ্য স্হান দেয়া হয় না। উনার এনার্জি ম্যানেজমেন্টের একটা কোর্স নিয়েছিলাম। এক সেমিস্টারে যা জেনেছি এককথায় 'অসাধারন'।

১১| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ২:২১

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ/ পেট্রোবাংলা ১৫ জুন ২০০৯ তারিখে যমুনা রিসোর্টে অনুষ্ঠিতব্য বিদেশে অবস্থনাকারী বিশেষজ্ঞদের এবং দেশীয় নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে কোল পলিসির ৯ম সংস্করণ উপস্থাপন করেছে।


বর্তমান সরকার কি সেই ৯ম সংশোধনী পাস করবে ?
এই প্রশ্নের উত্তরে আমাদের জ্বালানী সচিব মোহাম্মদ মহসীনের জবান শুনুন ।

>>>
সাপ্তাহিক : ভিন্ন প্রসঙ্গে বলি, আগামী ১৫ জুন থেকে যমুনা রিসোর্টে কয়লানীতি মূল্যায়ন বিষয়ক অনুষ্ঠান হচ্ছে, এর কারণ কি ?

মহসীন : দেখুন কয়লানীতি অনেক বড় একটি বিষয়। আপনারা পত্রিকায় লিখছেন এ বিষয়ে সবই নাকি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। কিন্তু দেশে নতুন সরকার। তারা তাদের মতো করে বিষয়টি দেখবে। না হলে পরে তো আপনারাই বলবেন, ওই সরকারের আমলে কয়লানীতি করা হয়েছিল।

সাপ্তাহিক : তাহলে দেশি বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে শুধু বিদেশি বিশেষজ্ঞদের কেন ডাকা হচ্ছে?

মহসীন : আমাদের দেশের যারা তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। আর যাদেরকে বিদেশি বলা হচ্ছে। তারা আমাদের দেশেরই লোক। বর্তমানে বিদেশি নাগরিক।

সাপ্তাহিক : শোনা যাচ্ছে সেখানে প্রায় ৮০ লাখ টাকা খরচ হবে। এত টাকা ব্যয় কাকে অনেকে অতিরিক্ত খরচ বলছেন?

মহসীন : যে কোনো অনুষ্ঠান করতে গেলে খরচ তো হবেই। এখানে আবার বিদেশি ডেলিগেট থাকবে। আর পুরো ব্যয় সরকার বহন করবে না। এর প্রায় ৫০ শতাংশ একটি বিদেশি ফান্ড থেকে পাওয়া যাবে। আর খরচ ৮০ লাখ নয় আরও কিছু কম হবে বোধ হয়।

সাপ্তাহিক : সেখানে আসলে কি হবে?
মহসীন : কয়লানীতি বিষয়টি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হবে বলে জানি। আর কি হয় তা তো জানতেই পারবেন।

১২| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ২:৩৬

পড়ুয়া_পড়ুয়া বলেছেন: অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক এ কে এম সাদ উদ্দিন, অধ্যাপক অজয় রায়, অধ্যাপক আবু আহমেদ, অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক আবুল বারকাত, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, অধ্যাপক মইনুল ইসলাম, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক এম শামসুল আলম পত্রিকায় যে প্রতিবাদ লিপি পাঠিয়েছেন যমুনা রিসোর্টে অনুষ্ঠিতব্য বিদেশে অবস্থনাকারী বিশেষজ্ঞদের এবং দেশীয় নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে তার উল্লেখযোগ্য অংশ নীচে দিলাম ।

>>>>

.............তা সত্ত্বেও ঘোর বিতর্কিত বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টা ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী মহলবিশেষ জনগণের আন্দোলন ও ফুলবাড়ী চুক্তি উপেক্ষা করে পরিবেশ বিধ্বংসী উন্মুক্ত পদ্ধতিতে উৎপদিত কয়লা নামমাত্র রয়্যালটির বিনিময়ে রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিদেশি বণিকদের হাতে তুলে দেয়ার লক্ষ্যে কয়লানীতি সংশোধন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কথিত স্থানীয় ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়ে যমুনা রিসোর্টে ৮০ লাখ টাকা ব্যয় কয়লানীতির ওপর ৪ দিনের এই পর্যালোচনা সভা তারই প্রমাণ। তেলÑগ্যাসÑখনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং অর্থনীতি সমিতি সভাকে অপ্রয়োজনীয় এবং অপমানকর গণ্য করে ইতোমধ্যে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। উল্লেখ্য যে, কয়লানীতি দেশীয় বিশেষজ্ঞ দ্বারা এর আগে ৮ বার সংশোধন করা হয়েছে। পরিশেষে অধ্যাপক পাটোয়ারী নেতৃত্বে কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটি এ কয়লানীতির খসড়া চূড়ান্ত করে। তাই এ কয়লানীতি পর্যালোচনা সভা এসব দেশিয় বিশেষজ্ঞদের অবজ্ঞা ও অপমানের শামিল বলে মনে করা হচ্ছে। সে জন্য আমরা যমুনা রিসোর্টে অনুষ্ঠিতব্য সভা অপ্রয়োজনীয় এবং অবমাননাকর মনে করে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ সময় এই সভা বিদেশি কোম্পানি ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী কনসালট্যান্টদের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের একটি চক্রান্তের সুযোগ করে দেবে।

.....................

১৩| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:১৭

আবদুল ওয়াহিদ বলেছেন:
চমৎকার, ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.