নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেসবুকে আমি - রিয়াদুল রিয়াদ (শেষ রাতের আঁধার)

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার )

কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ মায়া

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

- হ্যালো, মিস নন্দিতা বলছেন?
- মিস নন্দিতা নয়। মিসেস নন্দিতা। আর আমি মিসেস নন্দিতার হাসবেন্ড বলছি। কে বলছেন?
- জ্বি স্যার, মিসেস নন্দিতার একটা পার্সেল এসেছে আমাদের কুরিয়ার অফিসে। আপনি কি নিয়ে যাবেন এসে নাকি আমরা বাসায় পাঠিয়ে দিব?
- কোথা থেকে এসেছে?
- এখানে প্রেরকের শুধু একটা মোবাইল নাম্বার দেয়া আছে। নাম দেয়া নেই। পাঠানো হয়েছে নরসিংদী থেকে।
- আচ্ছা আপনি বাসার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন।

টেলিফোন নামিয়ে চুপ করে কিছুক্ষণ বসে রইল নীল। কী যেন ভাবল। অফিসের রুমটায় এসি চলছে। তবুও কেন যেন কপাল একটু একটু ঘামছে। টেলিফোনটা তুলে বাসায় ফোন দিল নীল। তিন চার বার ফোন বাজার পর ফোনটা তুলল বাসার কাজের মেয়েটা।
- তোর আপা কই?
- আপা তো গোসল করে।
- আচ্ছা বের হলে আমাকে কল দিতে বলিস।
- আচ্ছা।

নীলের চিন্তাটা কমছে না। স্বাভাবিক একটা ব্যাপার তবুও চিন্তা হচ্ছে। খানিক পরে নন্দিতা কল করে, ফোন দিয়েছিলে?
- হ্যাঁ।
- বল।
- কুরিয়ার অফিস থেকে ফোন এসেছিল। তোমার নামে কে যেন একটা পার্সেল পাঠিয়েছে।
- কে?
- জানি না। আবার তোমার নাম লিখেছে মিস নন্দিতা।
- ওওও।
- তুমি কথাটা হালকা ভাবে নিচ্ছ? কী পাঠিয়েছে তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে না?
- ও মা, আমি না দেখে বুঝব কী করে কী পাঠানো হয়েছে? আর চিন্তার কী আছে? তুমি বাসায় ফিরবে কখন?
- জানি না কখন ফিরব। তুমি কী জানতে তোমাকে কেউ পাঠাবে কিছু?
- আমি জানব কী করে?
- তুমি তাহলে ব্যাপারটা এতো স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছ কেন?
- আরে, অস্বাভাবিক কিছু তো আমি দেখছি না। আচ্ছা, আসুক আগে জিনিসটা তারপর বোঝা যাবে।

নীল ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে ফোনটা রেখে দিল। টেবিলের উপর থাকা পেপার ওয়েটারটা বার কয়েক ঘুরিয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল এক দৃষ্টিতে। নন্দিতার সাথে বিয়ে হয়েছে ছয় বছরের মত। ভালবাসার বিয়ে। ভার্সিটিতে এক বছরের জুনিয়র ছিল নন্দিতা। প্রথম দেখার সময়টায় মেয়েটাকে খুব ভাল লেগে যায় নীলের। দূর থেকে দেখত, ক্লাস শেষে পিছু পিছু বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত যেত, ল্যাব শেষে ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকত, উঁকিঝুঁকি দিত। এতো সুন্দরী একটা মেয়ে, না চাইলেও চোখ আটকে যেত। বুঝতে পারত মেয়েটার জন্য একটা ভালবাসার জায়গা তৈরি হয়েছে ভিতরে ভিতরে, ভাবত মেয়েটাকে আমার চাই। চাই আমার মেয়েটাকে, যে করেই হোক।

আকাশে মেঘ করেছে। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশ। বৃষ্টি হয়েই বুঝি নেমে পড়বে ঠাণ্ডা পুরোদমে। ছাতা নিয়ে আসেনি নীল। নিজের প্রাইভেট কারও নেই। ইচ্ছা করলেই কয়েক মাসের বেতন আর কিছু লোন নিয়ে কিনে ফেলতে পারে। কেনা হয় না। এইটুকু দূর অফিস, গাড়ি কিনে কী হবে? রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ। রিকশা যা পাওয়া যায়, যাবে না। হুট করেই ঝুম বৃষ্টি শুরু। হেঁটেই যাবার সিদ্ধান্ত নিল বাসায়। আকাশে বেশ গর্জন দিচ্ছে মেঘ। বিজলি চমকাচ্ছে। এমন এক বৃষ্টির দিনেই বিয়ে হয় নন্দিতার সাথে। বাসর রাতেই ইচ্ছা করছিল সত্যিটা বলে দেয়, বলা হয় নি। বলা হয় নি আজও। হয়ত কখনও বলাও হবে না। বিয়ের পর প্রথম রাতে নন্দিতা জানতে চেয়েছিল, আমাকে বিয়ে করে কি তুমি সুখী?
- অবশ্যই।
- ভালবাসবে সবসময়।
- বাসব।
নন্দিতা নীলের বুকের ভিতর মাথাটা লুকিয়ে বলে তখন, আমি আর কিছু চাই না।
এ কথাটা ছিল প্রচণ্ড আশ্বাসের, খুব বেশী বিশ্বাসের। এই বিশ্বাস ভেঙে কথাটা বলতে একদমই ইচ্ছা করে নি।

নীল কলিং বেল চাপতেই নন্দিতা দৌড়ে এসে দরজা খুলল।
- একদম ভিজে গেছ।
দরজাটা বন্ধ করতে করতে বলল নন্দিতা। একটা তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছে দিয়ে হাতে তোয়ালে ধরিয়ে দিয়ে বলল, ড্রেস চেঞ্জ করে গোসল করে আসো। ক্ষুধা লাগছে। খাবো।
- ঠাণ্ডা লাগছে। গোসল করব না।
- আরে না। বৃষ্টিতে ভিজেছ। গোসল না করলে আরও ঠাণ্ডা লাগবে।
কথা বাড়ায় না নীল। বাথরুমে চলে যায় পোশাক পরিবর্তন করে। শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে গায়ে যখন পানি দেয় খুব ঠাণ্ডা একটা অনুভূতি বয়ে যায় শিরা উপশিরা জুড়ে। এমন ঠাণ্ডা একটা অনুভূতি হয়েছিল সেদিনও। সেদিন শরীরে কোন ঠাণ্ডা পানি ছুঁয়ে যায় নি। তবুও।
বন্ধুরা বলে, মেয়েটাকে এতো ভালবাসিস তুই। ভালবাসার কথা বল।
- আমার এতো সাহস নেই, মাথা খারাপ হইছে?
- মেয়ে তোর জুনিয়র। ভয় পাবার কী আছে?
- মেয়ে তো।
তখনকার সময়ে সবার হাতে ফোন ছিল না। ছিল না নীলেরও। তাই ছোট একটা মেসেজ দিয়ে ভালবাসার কথা বলে দিবে তাও সম্ভব ছিল না। সবচেয়ে কাছের বন্ধু দিদার বুদ্ধি দেয়, একটা চিঠি লিখ। চিঠিতে ভালবাসার কথা এমন ভাবে বলবি যেন, মেয়ে চিঠি পড়েই পাগল হয়ে যায়।
- চিঠি লিখব? সামনা সামনি বলাটাই ভাল না?
- তুই সামনা সামনি বললে সব তালগোল পাকিয়ে ফেলবি। চিঠিতে গুছিয়ে লিখতে পারবি। তুই যদি না দিয়ে আসতে পারিস। আমি দিয়ে আসব।
সেদিন রাতের বেলা, সারারাত জেগে একটা চিঠি লিখে নীল। চিঠি লেখবার সময়টায় বার বার মেয়েটার ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠে। গভীর মমতা নিয়ে চিঠি লেখার পর মনে পড়ে, আরে মেয়েটার নামই তো জানে না। কি বলে সম্বোধন করবে? পুরো চিঠিতে তুমি তুমি লেখা থাকলেও, ছিল না কোথাও নাম। পরদিন দিদারের সাথে দেখা হলে বলে, চিঠি লিখেছিস?
- হ্যাঁ।
- দে।
- সমস্যা আছে তো একটা।
- কী সমস্যা?
- আমি তো ঐ মেয়ের নামই জানি না।
- তুই কি গাধা? নামটাও জানিস না। নাম না জেনে ভালবাসার ব্যাপার গুলো কল্পনা করিস কী করে?
- তুই কী জানিস?
- আমি কি ভালবাসি যে নাম জানব? তুই একটু দাঁড়া আমি নাম জেনে আসি।
চিঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকে নীল। শীতকাল শেষ হচ্ছে, গাছে নতুন পাতা গজাচ্ছে। বেশ মিহি একটা সবুজ ভাব গাছ গুলোও। মানুষ প্রেমে পড়লে আশেপাশের প্রকৃতি খুব ভাল লাগে। ভাল লাগে প্রাকৃতিক সব কিছু। ইচ্ছা করে ভালবাসার মানুষটাকে বলতে, দেখো না, কী সুন্দর।
ফিরে এসে দিদার বলে, নন্দিতা।
- কীসের নন্দিতা?
- মেয়েটার নাম নন্দিতা।
নামটা শুনে কেমন একটা অদ্ভুত ভাল লাগা ছুঁয়ে যায় নীলের মন জুড়ে। "নন্দিতা" কি অসাধারণ নাম।

গোসল করে বেরিয়ে নীল দেখে খাবার নিয়ে বসে আছে নন্দিতা। কাপড় জড়িয়ে শরীরে নীল এসে চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলে, পার্সেলে কী এসেছে বললে না? কে পাঠিয়েছে?
নন্দিতা প্লেটে খাবার তুলে দিতে দিতে বলে, আজ ছোট মাছের চড়চড়ি করেছি। তোমার অনেক প্রিয়।
- আমি এটা জানতে চাইলাম?
- আরে বাদ দাও না। কে পাঠিয়েছে কী করে বলব?
- আচ্ছা পাঠিয়েছেটা কী?
নন্দিতা একটু ইতস্তত করে বলল, একটা লাল শাড়ি আর কতগুলো লাল চুড়ি।
নীল শান্ত চোখে তাকিয়ে থাকে নন্দিতার দিকে। নন্দিতা বলে, খাও। দেখো তো রান্না কেমন হয়েছে?
নীল বলে না কিছু। চুপচাপ মুখে পুড়ে নেয় খাবার।
- সত্যি বিশ্বাস কর আমি জানি না, কে পাঠিয়েছে।
- ঠিক আছে।
- তুমি তো রাগ করছ।
- রাগ করছি না।
- দাঁড়াও আমি ওগুলো ফেলে দিয়ে আসি।
- আরে ফেলতে হবে না। কারও উপহার ফেলতে হয় না। কেউ তোমাকে ভালবেসে কিছু পাঠিয়েছে, ফেলে দিবে কেন?
- আমার তোমার আগে কারও সাথে সম্পর্ক ছিল না।
- আমি জানি। এখন তুমি আমি ছাড়া কাউকে ভালবাসতে না। অন্য কেউ যে তোমাকে তাই বাসতে পারবে না এমন তো কোন কথা নেই।
- বাসলে বাসুক। আমি কী করব? তাই আমার তার উপহার নিতে হবে?
- নন্দিতা। আমি রাগ করছি না। রাগ করলে তো আগেই করতাম। যখন প্রতিদিন ফ্ল্যাটের সামনে তোমার নাম লিখে ফুল দিয়ে যেত কেউ।
বছর খানেক আগে থেকে এই ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল। কেউ একজন প্রতিদিন সকাল বেলা নন্দিতা আর নীলের পাঁচ তলার এই ফ্ল্যাটের সামনে ফুল রেখে যেত। আর সেখানে বেশ জঘন্য রকম হাতের লেখায় লেখা থাকত, "নন্দিতা তোমার জন্য।"
কে দিত সে ফুল জানে না নন্দিতা। জানার কথা না নীলের। প্রথম দিকে একটু আধটু অভিমান অভিমান দেখাতো নীল। এরপর থেকে স্বাভাবিক ছিল। বরং সকাল বেলা নিজে থেকেই দরজা খুলে ফুল নিয়ে এসে নন্দিতার সামনে নিয়ে গিয়ে বলত, তোমার ফুল চলে এসেছে। একই লেখা, নন্দিতা তোমার জন্য। কেউ আর লিখে পাঠাল না, নীল তোমার জন্য। কী ভাগ্য নিয়ে আসলাম।
- দেখো বেশী হচ্ছে। ফেলে দিয়ে আসো তো ফুল। তুমি এতো যত্ন কর, যেন তোমাকেই ফুল গুলো পাঠিয়েছে।
- আমার বউকে কেউ ভালবেসে কিছু পাঠাচ্ছে। কী করে ফেলে দিব বল?
ফুল পর্ব শেষ হবার পর এখন কুরিয়ার পর্ব শুরু। এর আগে চলছিল, মেসেজ পর্ব। নন্দিতার মোবাইলে প্রতিদিন একটা করে মেসেজ আসত, কেমন আছে নন্দিতা। কেমন যাচ্ছে দিন। তুমি ভাল থেকো নন্দিতা। শেষমেশ ভালবাসি নন্দিতা।
নীলের কাছে লুকাতে ইচ্ছা করত না কিছু। তাই সরল মনেই নীলকে দেখাতো তা নন্দিতা। এসব নিয়ে নীল মাঝে মাঝে বলত, নন্দিতা সত্যি করে বল না প্লিজ, কে কে তোমাকে ভালবাসত?
- আমি জানি না।
মোবাইলে কল দিলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যেত।
মেসেজ এরপর ফুল এরপর কুরিয়ারে শাড়ি চুড়ি। কবে না জানি বাসায় এসে পৌঁছায়।
খাওয়া শেষ করে শুয়ে পড়ে দুজন। নন্দিতা চুলটা বেঁধে, নীলের বুকের উপর একটা হাত রেখে বলে, আমি সত্যি কিন্তু জানি না, কে পাঠিয়েছে।
- আমি জানি তুমি আমার সাথে মিথ্যা বল না।
নন্দিতা গুটিসুটি মেরে নীলের শরীরের সাথে মিশে কখন ঘুমিয়ে গেল ঠিক নেই।
নীল জেগে আছে। ভাবনা গুলো মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছে। দিদারের মুখে সেদিন নাম শুনে বলে, কাল আবার ভাল ভাল করে চিঠি লিখে নিয়ে আসি। কাল দিব।
- আচ্ছা নিয়ে আয়। খুব ভাল করে লিখবি। যেন চিঠি পড়ে তোর কাছে আসেই।

সেদিন রাতটায় আবার চিঠি লিখে নীল। সে চিঠির অনেকটা জুড়ে ছিল, নামটার কথা। নন্দিতা। কী মায়াময় একটা নাম। চিঠি নিয়ে পরদিন দিদারের হাতেই দেয়। দিদারকে বলে, বন্ধু কাজ হবে তো?
- হবে না মানে? কিছুক্ষণের মধ্যে দেখবি নন্দিতা তোর সামনে হাজির।
হলও তাই। চিঠি দিয়ে আসার পর, বন্ধুরা সব মিলে আড্ডা দেয়। আড্ডায় মন বসে না নীলের। বুকের ভিতর ধড়ফড় করে। কেমন কেমন যেন লাগে। একটু পর পর এদিক ওদিক দেখে। এই বুঝি নন্দিতা এলো।
- ভাইয়া একটু শুনবেন?
লাফ দিয়ে পিছন ফিরে তাকায় নীল।
- আমাকে বলছেন?
- জ্বি।
- বলেন।
- আপনি তো নীল ভাইয়া, তাই না?
- হ্যাঁ। আপনি?
- আমি আপনার জুনিয়র। আপনি করে বলার দরকার নেই। আমি নন্দিতা। আমাকে তো আপনি দেখা করতে বললেন। চিঠি লিখে।

কথাটা শুনে, নীলের সারা পৃথিবী ঘুরতে থাকে মনে হয়। এক মুহূর্তের জন্য মনে হয় নীল এ পৃথিবীতে নেই, নেই নীলের কোন অস্তিত্ব। শাওয়ারের পানিতে যেমন শরীরে ঠাণ্ডা অনুভূতি বয়ে গিয়েছিল। তেমন শরীর একদম ঠাণ্ডা হয়ে যায়। এই মেয়ে নিজেকে নন্দিতা বলছে। কিন্তু এ তো নন্দিতা না। একে নীল ভালও বাসে না। চিঠিও দেয় নি। পাশ থেকে বন্ধু গুলো বলে, যাও নীল। একটু কথা বল। মেয়েটা এতো করে বলছে। তাছাড়া কত সুন্দরী একটা মেয়ে। সুন্দরীদের কথা ফেলতে নেই।
কথা গুলো শুনে মেয়েটা মাথা নিচু করে থাকে। কথা গুলো যেন সহ্য হয় না। চারপাশে একবার অসহায়ের মত তাকিয়ে, নীলকে ওর চিঠিটা দিয়ে বলে, আপনার চিঠি, আমি আসি।
মেয়েটা দৌড়ে চলে যায়। বন্ধুরা যে কথা গুলো বলেছে জানে নীল ঠিক সে কথা গুলো মেয়েটাকে প্রচন্ড আঘাত করেছে। মেয়েটা দেখতে সুন্দরী না। কালো, মুখের গড়নও যেমন তেমন, চোখেও সমস্যা, হালকা ট্যাড়া রকম। এই মেয়েকে যে কেউ সুন্দরী বলে ডাকলে, মেয়েটা নিজে থেকেই ভেবে নিবে এই সুন্দর বলাটার মাঝে মিথ্যা আছে। তুমি অসুন্দর, কুৎসিত, এই কথাটা সে কথার আড়ালে আছে। একটা ছেলের খাটো হওয়া আর একটা মেয়ের অসুন্দর হওয়ার মত অভিশাপ কমই আছে পৃথিবীতে। সমাজ এ দুটো জিনিস কেন যেন মানতে চায় না।
নীল দিদারের কাছে জানতে চায়, কী হল এটা?
- কী হল বন্ধু?
- এটা কে?
- নন্দিতা। যাকে তুই চিঠি লিখেছিস।
- আমি তো একে চিঠি লিখিনি। এই মেয়েকে পছন্দ করি না।
- এই মেয়েকে না? তাহলে কাকে? তুই বললি নন্দিতাকে চিঠি দিতে। আমি তো নন্দিতাকেই দিয়ে আসলাম।
নীল চুপ করে থাকে। খুব রাগ হয়, কিন্তু প্রকাশ করে না। নীল বুঝতে পারে, পুরোটাই ছিল দিদারের ফাজলামি। নীল যে মেয়েকে পছন্দ করত, তার নাম নন্দিতা ছিল না। অনেক দিন পর পর জানতে পারে, সে মেয়ের নাম ছিল, ঈশা।
নন্দিতার সাথে এরপর মাঝে মাঝেই কথা বলার চেষ্টা করেছিল নীল। নন্দিতা নীলকে দেখলেই দূরে দূরে থাকত। চেষ্টা করত এড়িয়ে যেতে। একদিন নীল সামনা সামনি যায় নন্দিতার।
- নন্দিতা, শোন।
নন্দিতা ধীর পায়ে মাথা নিচু করে নীলের সামনে এসে দাঁড়ায়।
- জ্বি বলেন।
- আমাকে দেখে তুমি এড়িয়ে চল কেন?
নন্দিতা চুপ করে থাকে। নীল একটু এদিক ওদিক তাকায়। নন্দিতার হাতটা ধরে, হাতের ভিতর আবার সেই চিঠিটা দিয়ে দেয়। কেঁপে উঠে নন্দিতা।
- কী এটা?
- চিঠিটা। এটা তোমাকেই লিখেছিলাম।
- আপনি এটা রাখেন। আমি বুঝতে পেরেছি তো, আমি দেখতে ভাল না, তাই আমাকে নিয়ে আপনারা মজা করেন। সেদিনও করেছেন।
- না না, আমার বন্ধুগুলো অমনই। আমি সত্যি তোমাকে চিঠিটা দিয়েছিলাম। মজা করার জন্য না। আর কে বলল, তুমি দেখতে ভাল না? দেখো তোমার আর আমার গায়ের রঙ একই। আমার মাঝে মাঝে কথা বলতে গেলে কথা আটকে যায়, সাহস কম, ঘুমালে নাক ডাকি, বারো মাস সর্দি থাকে। আমাকে ভালবাসা যাবে তো এতো কিছুর পরও?
নন্দিতা আলতো করে একটা হাসি দেয়। নীলের চোখের দিকে তাকাতে খুব লজ্জা করে। চিঠিটা নিয়ে দৌড়ে চলে যায়।
সব বন্ধুদের সকল কথাকে উপেক্ষা করে, নন্দিতার সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যায় নীল। নন্দিতা মাঝে মাঝে খুব বিষণ্ণ হয়ে থাকত। নীলকে বলত, তোমাকে খুব বাজে কথা বলে আমার সাথে প্রেম করাতে তোমার বন্ধুরা। তাই না?
- আরে ধুর। কে কী বলবে? আর কার কথায় কী আসে যায়? আমি ভালবাসি তোমাকে।
এই ভালবাসাটা এসেছিল হয়ত সেদিন রাতেই যেদিন বন্ধুরা খুব অপমান সূচক কথা বলছিল নন্দিতাকে উদ্দেশ্য করে। নন্দিতার প্রচণ্ড অপমানে চলে যাওয়াটা মনের ভিতর গেঁথেছিল নীলের। কেমন একটা মায়া মায়া লাগছিল মেয়েটার জন্য। সে মায়া করুণা হয় নি। হয়েছিল ভালবাসা। সব মায়া করুণা হয় না, কিছু মায়া ভালবাসার প্রকাশ।
ঈশার সাথে দেখা হত এরপর মাঝে মধ্যে। কখনও বুকের ভিতর আর কাঁপন আসে নি, একটা সময় রাত জেগে ভাবত ঈশাকে নিয়ে, সে চিন্তাও আসে নি। মনে হত নন্দিতা বড় ভাল। নন্দিতাকেই বড় ভালবাসে। নন্দিতাকে নিয়ে ভাল আছে নীল। ঈশার সাথে সম্পর্ক হয়েছিল দিদারের। সে সম্পর্ক দেখেই পরিষ্কার হয়েছিল কেন দিদার করেছিল কাজটা। অবশ্য এ জন্য দিদারকে একটা ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ। ঈশার সাথে সম্পর্ক হলে নন্দিতাকে কখনই পেত না নীল। ঈশার সাথে দিদারের সম্পর্ক টিকে নি। এক মাস পরেই ভাঙন। এরপর ভার্সিটি জীবনটায় দেখেছে ঈশার বহুজনের সাথে যাওয়া আসা। কিন্তু নন্দিতার সাথে সম্পর্ক টিকে ছিল, টিকে আছে। নীল জানে সারাজীবন থাকবে এ ভালবাসা।
সকাল বেলা ঘুম ভাঙে নন্দিতার ডাকেই। চা এনে বসে নীলের পাশে। একটু চুমুক দিয়ে নীলের দিকে বাড়িয়ে দেয়, নাও। এই কাজটা প্রতিদিন সকালেই করে। এক কাপ দুজনে ভাগাভাগি করে খায়।
নন্দিতা হাসে মিটিমিটি এ সময়টায়। নীল নন্দিতার হাত ধরে বলে, নন্দিতা, তোমার কী কখনও মনে হয় আমার সাথে খারাপ আছ?
- কী বলছ এসব? খারাপ থাকব কেন?
- এই যে ঘরে তুমি সারাদিন একা থাকো, আমাদের কোন বাচ্চা কাচ্চা নেই।
নন্দিতার মুখটা শুকিয়ে যায়। নীলের হাতটা আরও শক্ত করে ধরে বলে, না। আমি তোমাকে নিয়ে ভাল আছি। তুমি আমাকে অনেক ভাল রেখেছ।
নীল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
- আমাকে যদি কখনও বিরক্ত লাগে বলে দিও।
বলে নীল।
নন্দিতা চায়ের কাপটা রেখে, নীলকে জড়িয়ে ধরে বলে, বিয়ের ছয় বছর পরে এই কথা বলছ? তুমি না আসলেই একটা পাগল।
নীলের মনে আছে, বিয়ের যখন তিন বছর পরেও যখন কোন বাচ্চা কাচ্চা হচ্ছিল না, নন্দিতার। নন্দিতার জোরাজুরিতেই ডাক্তারের কাছে যেতে হয় দুজনের। নীল বলেছিল, থাক না, কী দরকার?
তবুও দুজনে ডাক্তারি পরীক্ষা করায়। রিপোর্ট যেদিন দেয়, নীল রিপোর্ট হাতে এসে ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকে, নন্দিতার দিকে। এতো বড় ছেলে, বাচ্চা মানুষের মত কান্না করে। কান্না করে বলে, নন্দিতা আমাদের কখনও বাচ্চা হবে না। আমি কখনও তোমাকে বাচ্চা দিতে পারব না। ডাক্তার বলেছে আমার বাবা হবার ক্ষমতা নেই।
নন্দিতা শক্ত করে সেদিন নীলকে জড়িয়ে থাকে। নীলকে সান্ত্বনা দেবার বিপরীতে নিজেই কাঁদে। কেঁদে কেঁদে বলে, আরে বাচ্চা না হলে কী হয়? কিছুই হয় না।
এ সংসারে ভালবাসা আছে। সে ভালবাসা বুঝে উঠবার ক্ষমতা সবার নেই।

অফিসের লাঞ্চের সময়ে বের হয় নীল। একটু শপিং মলে যাওয়া দরকার। নন্দিতাকে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দেয়, আমি এখন মিটিং এ আছি। বেরিয়ে কল দিব তোমাকে।
শপিং মল থেকে লিপস্টিক, ক্রিম, পাউডার, পারফিউম, কানের দুল, নাক ফুল কিনে নীল। বিয়ের পরদিনও এমন বেরিয়েছিল নন্দিতাকে নিয়ে। নন্দিতা বার বার বলছিল, নীল আমার ভয় করছে। তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না তো?
- যাবো না, কথা দিচ্ছি।
ভয় হতেই পারে। নন্দিতার ছবি যখন বাসায় দেখায় নীল, পরিবারের কেউ রাজী ছিল না। এই মেয়েকে ঘরের বউ করা অসম্ভব। পরিবারের অমতেই বিয়ে করে নন্দিতাকে নীল। ছোটখাটো একটা চাকরি করে তখন। সে চাকরি দিয়ে কোনমতে ছোট একটা বাসা নিয়ে থাকত। নন্দিতার ভয় ছিল, পরিবারের অমতে বিয়ে করেছে, যদি কখনও হঠাৎ মন বদলে যায়? তখন নন্দিতার কী হবে? মন বদলায় নি। এখনও নন্দিতার সাথেই আছে। সারাক্ষণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, বুঝাতে চাচ্ছে, নন্দিতাকে ভালবাসে, নন্দিতা সত্যি ভালবাসার মত একটা মেয়ে, নন্দিতাকে নিয়ে নীল খুব সুখী, নন্দিতাকে পেয়ে নীল খুব ভাগ্যবান।
শপিং মল থেকে জিনিস গুলো নিয়ে বের হয়ে, একটা কুরিয়ার অফিসে গেল। সেখান থেকে পার্সেল করে জিনিস গুলো নরসিংদী পাঠাল। নরসিংদীর বন্ধু মিশুকে কল করে বলল, যে গুলো পাঠালাম জিনিস হাতে পেয়ে আবার আমার বাসার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিস। ফোন নাম্বার আমি যেটা বলছিলাম ওটা দিবি। তোর নাম দিবি না, ঠিক আছে?
- এতো ভালবাসিস কেন নন্দিতাকে?
- ভালবাসি তাই ভালবাসি। ভালবাসতে কারণ লাগে না। ঘৃণা করতে কারণ লাগে।
- তোদের দেখে মাঝে মাঝে হিংসা হয়। আমার তো মিনার সাথে সারাদিন ঝগড়া। শালা একদিন তোদের সংসারেও ঝগড়া লাগিয়ে দিব দেখিস।
- হাহা আচ্ছা লাগিয়ে দিস।

নীল আবার ফিরে যায় অফিসে। দুই তিন দিন পর আবার নন্দিতার ঠিকানায় একটা কুরিয়ার যাবে, নরসিংদী থেকে। নন্দিতাকে দেয়া থাকবে কিছু উপহার। নীল তখন বলবে, হয়ত তোমাকে কেউ পছন্দ করে সে পাঠিয়েছে।
নন্দিতার তখন একবার হলেও মনে হবে, নন্দিতা নিজেকে নিয়ে যতটা হীনমন্যতায় ভুগে নন্দিতা মোটেও অতটা তেমন হয়। নন্দিতাকে নীল ছাড়াও কেউ কেউ ভালবাসে। নন্দিতাকে ভালবাসা যায়। নন্দিতা ভালবাসার মত মেয়ে। একা থাকা সংসারে নন্দিতার একা দিন রাতে নানা বাজে চিন্তা আসতেই পারে, অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ নিয়ে। নন্দিতা একটু ব্যস্ত থাকুক, অন্য চিন্তায়। নিজের প্রতি সম্মান বাড়ুক। বাড়ুক নীলের ভালবাসা নন্দিতার প্রতি। মোবাইলে মেসেজ গুলোও পাঠাত নীল, একটা সিম থেকে যে সিম কিনা বন্ধ থাকত বাকিটা সময় মেসেজ পাঠাবার। ফুল গুলোও পাঠাত নীল। অফিস থেকে ফেরার পথে কিনে নিয়ে আসত। আর গেটের দারোয়ানকে কিছু টাকা দিয়ে বলত, একদম ভোর বেলা নীলদের ফ্ল্যাটের সামনে রেখে আসতে। আর দারোয়ানকে দিয়েই লেখাতো কাগজের নন্দিতাকে উদ্দেশ্য করে লেখাটা।
নীল চায় নন্দিতা ভাল থাকুক, ভালবাসুক, কখনও কষ্ট না পাক। তাই কিছু মিথ্যে, কিছু অভিনয়ে দিন রাত চলে যাচ্ছে। সবচেয়ে মিথ্যেটা ছিল, ডাক্তারের রিপোর্টটা। সে রিপোর্টে ছিল, মা হবার ক্ষমতা নেই নন্দিতার। সমস্যা নেই কোন নীলের। এ কথা মানতে বা সহ্য করতে পারবে না নন্দিতা। তাই মিথ্যেটা বলেছিল, যেন ঘৃণা আসলে আসুক নীলের প্রতি। আর ঘৃণা না বাড়ুক নন্দিতার নিজের প্রতি।

আবার একটা পার্সেল এসেছে নন্দিতার কাছে। পার্সেলে আছে লিপস্টিক, ক্রিম, পাউডার, পারফিউম, কানের দুল, নাক ফুল। নন্দিতা মাথা দুই পাশে নেড়ে ছোট করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল। খুব যত্ন করে টেবিলে সাজিয়ে রাখল জিনিস গুলো। নীল আসলেই একটা পাগল। নন্দিতাকে ভাল রাখার জন্য, বুঝাবার জন্য নীল ছাড়াও পছন্দ করে কেউ নন্দিতাকে, তাই কত কিছু করছে। নন্দিতা হাসে। নীলের মিথ্যে অভিনয়টা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে নন্দিতা। মেসেজের ব্যাপার থেকেই শুরু। মেসেজ দেখেই কেন যেন মনে হত নীল পাঠায়। শুধু মনে হওয়াই। একদিন নীল অফিসে যাবার আগে যখন বাথরুমে যায় গোসল করতে, নন্দিতা অফিসে যাবার শার্ট প্যান্ট খুঁজে পায় একটা সিম। চালু করে দেখে, এই সিম থেকেই মেসেজ আসে। বলে না কিছু নন্দিতা। ফুলও পাঠাতো নীল, ব্যাপারটা জানে দারোয়ানের কাছ থেকেই কিছু টাকা দিয়ে। আর পার্সেলে পাঠানো শাড়িটা, নীল নন্দিতাকে যে দোকান থেকে সবসময় শাড়ি কিনে দেয় সে দোকানেরই। নন্দিতা জানে মিথ্যা বলেছে বাচ্চা হবার ব্যাপার খানা নিয়েও। নন্দিতার ডাক্তার বান্ধবীকে দিয়ে রিপোর্ট দেখিয়ে আবার জেনেছিল, সমস্যা নন্দিতারই।
নন্দিতার মাঝে মাঝে খুব কান্না পায়। ভাবে এতো ভাল কী করে একটা মানুষ একজনকে বাসতে পারে? নন্দিতা নীলের মিথ্যে গুলো বুঝতে পেরেও কখনও বলে না কিছু। নীল থাকুক ব্যস্ত ওর ভালবাসার মানুষটাকে আরও ভালবাসায়। নন্দিতা থাকুক ব্যস্ত, নীলের মিথ্যে কিছু ব্যস্ততার অভিনয়ে। ভালবাসা বাড়ুক দুজনের মাঝে এ অভিনয়ের মিথ্যে ঘিরে।

কিছু অভিনয়ে , কিছু মিথ্যেতে কিছু হয় না। কিছু অভিনয়, কিছু মিথ্যেতে পাপ নেই। কাউকে ভাল রাখার, কেউ ভাল থাকার যে সুখ গুলো, মায়া গুলো এ অভিনয়, এ মিথ্যে ছুঁয়ে আসে তা অমূল্য। মায়া বড় অদ্ভুত জিনিস। কিছু মায়া এমন ভালবাসা হয়ে ধরা দেয়, তা কাটিয়ে উঠা কখনই হয় না। কখনও পারাও যায় না। বরং আরও বেশী আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে, ভালবাসা বাড়ায়। অভিনয়, মিথ্যে আর মায়ার বেড়াজালে, একটা ঘোরে ভালবাসাকে আটকে রাখে। এ মায়া, এ ভালবাসা হয়ত সবার জন্য নয়।

- শেষ রাতের আঁধার (রিয়াদুল রিয়াদ)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫

অবহেলিত বৃক্ষ বলেছেন: ভাল লাগল পড়ে।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: কিছু অভিনয়ে , কিছু মিথ্যেতে কিছু হয় না। কিছু অভিনয়, কিছু মিথ্যেতে পাপ নেই। কাউকে ভাল রাখার, কেউ ভাল থাকার যে সুখ গুলো, মায়া গুলো এ অভিনয়, এ মিথ্যে ছুঁয়ে আসে তা অমূল্য। মায়া বড় অদ্ভুত জিনিস। কিছু মায়া এমন ভালবাসা হয়ে ধরা দেয়, তা কাটিয়ে উঠা কখনই হয় না। কখনও পারাও যায় না। বরং আরও বেশী আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে, ভালবাসা বাড়ায়। অভিনয়, মিথ্যে আর মায়ার বেড়াজালে, একটা ঘোরে ভালবাসাকে আটকে রাখে। এ মায়া, এ ভালবাসা হয়ত সবার জন্য নয়।

গল্পটি সুখপাঠ্য। আমার ভাল লেগেছে। শুভ কামনা রিয়াদ ভাই :)

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২৪

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১০

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: অসাধারণ! একেবারে মন্ত্র মুগ্ধ যাকে বলে!

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৬

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। চেষ্টা ছিল নিজের ধাঁচে লিখে যাবার। :)

৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৪

Rukhshad Priyo বলেছেন: দাদা,ব্রান্ড নিউ পোষ্ট চাই

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৫

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: দিয়েছি ভাই। :)

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর গল্প , প্রায় রূপকথার মতো। পড়ে প্রথমেই মনে হয়,ধুর, বাস্তবে এমন হয় নাকি? তারপর মনে হয় , না হলে নাই। পড়ে আনন্দ তো পাওয়া গেল।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: হয়ত হয় কিংবা হয় না। ভালবাসার সম্মানের জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা মানুষদের পক্ষে এটা সম্ভব হয় না। হয়ত ভালবাসা গুলো এখন অসম্মানে কলুষিত, তাই এমন ভাবনা আসে।

৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৩

আমি মাধবীলতা বলেছেন: ভালোবাসা তো এমনই হওয়া উচিত...স্বর্গীয়...খুব ভালো লাগলো গল্পটা :)

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০১

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: তাই আশা করি ভালবাসা গুলো এমন হোক।
ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.