| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৩০ লাখ: সংখ্যা নয়, একটি গণহত্যার নাম
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই বিতর্ক একটি বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে—যেখানে নিহতের সংখ্যা নামিয়ে আনা হচ্ছে ‘মাত্র ২ হাজার’, ‘৫০ হাজার’ বা ‘কয়েক লাখে’। প্রশ্নটা তাই এখন আর সংখ্যা নয়, প্রশ্নটা ইতিহাস অস্বীকারের রাজনীতি।
‘৩০ লাখ’ কি হঠাৎ বানানো?
না। এই সংখ্যাটি স্বাধীনতার পর কোনো আবেগী উচ্চারণ নয়। ১৯৭১ সালেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, কবিতা, বেতার সম্প্রচার এবং বিদেশি রিপোর্টে লাখে লাখে হত্যার কথা উঠে আসে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফেরার আগেই বিশ্বের পত্রিকাগুলো ৩০ লাখ বা তার কাছাকাছি সংখ্যার কথা লিখেছে। কাজেই ‘ভুল করে থ্রি মিলিয়ন বলা’—এই তত্ত্ব ইতিহাসের কাছে টেকে না।
বরং পাকিস্তানি শাসকরাই হত্যার মাত্রা নির্ধারণ করেছিল। জেনারেল ইয়াহিয়া খান-এর কুখ্যাত বক্তব্যই প্রমাণ করে, এটি ছিল পরিকল্পিত গণহত্যা।
আন্তর্জাতিক গবেষণা কী বলে?
সব গবেষণা একই সংখ্যা দেয় না—কিন্তু একটিও গবেষণা ‘হাজারে’ নামে না।
**. জেনোসাইড গবেষকরা নিহতের সংখ্যা বলেছেন ১০ থেকে ৩০ লাখ
**. বিশ্বখ্যাত এনসাইক্লোপিডিয়া ও একাডেমিক বইয়ে বারবার এসেছে ৩০ লাখ
**. জনমিতিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯৭০–৭৫ এর মধ্যে বাংলাদেশে ৬৫ লাখ মানুষ ‘হারিয়ে গেছে’
জলোচ্ছ্বাস ও দুর্ভিক্ষ বাদ দিলেও, এই শূন্যতা কেবল যুদ্ধ দিয়েই ব্যাখ্যা করা যায়।
শরণার্থী শিবির: হিসাবের বাইরে রাখা মৃত্যু
প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভারতে পালিয়েছিল। কলেরা, অপুষ্টি ও চিকিৎসাহীনতায় শরণার্থী শিবিরে ৬–১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়—যা অনেক গবেষণায় বাদ পড়ে গেছে।
কিন্তু যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে মারা যাওয়াও যুদ্ধজনিত মৃত্যু—এটা আন্তর্জাতিক আইনেই স্বীকৃত।
“৯৩ হাজার সৈন্যে ৩০ লাখ সম্ভব?”—এই প্রশ্নটাই ভুল
গণহত্যা কেবল সেনাবাহিনী দিয়ে হয় না। ছিল রাজাকার, আলবদর, আলশামস—স্থানীয় সহযোগী বাহিনী।
আর ইতিহাস বলে, এটা অসম্ভব নয়:
** রুয়ান্ডা গণহত্যা: ১০০ দিনে ১০ লাখ
** নানকিং: ৬ সপ্তাহে ৩ লাখ
** কম্বোডিয়া: জনসংখ্যার ২৫–৩০%
বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪%—যা তুলনামূলকভাবে বাস্তবসম্মত।
আসল প্রশ্ন: সংখ্যা না নৈতিকতা?
৩০ লাখ শুধু একটি অঙ্ক নয়।
এটি বধ্যভূমির নাম,
এটি শরণার্থী শিবিরে কলেরায় মারা যাওয়া শিশুর নাম,
এটি ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করা নারীর নাম।
যারা আজ ‘২ হাজার’ বা ‘২৬ হাজার’-এর তত্ত্ব দেন, তারা গবেষণা করছেন না—তারা ভিকটিমকে অস্বীকার করছেন।
হলোকাস্ট অস্বীকার যেমন অপরাধ,
বাংলাদেশের গণহত্যা খাটো করাও তেমনি ইতিহাস বিকৃতি।
সংখ্যা নিয়ে তর্ক হতে পারে,
গণহত্যা নিয়ে নয়।
৩০ লাখ—এটি কোনো মিথ নয়।
এটি একটি নিষ্ঠুর, দলিলসমর্থিত বাস্তবতা।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১২
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: জি ভাই সঠিক বলেছেন।
২|
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:২২
আলামিন১০৪ বলেছেন: সংখ্যা নিযে তর্ক হতে পারে কিস্তু গণহত্যা নয়- একমত
পাকিরা ২৫শে মার্চ রাতে নির্বিচারে মানুষ মেরেছে, সাধারণ রিক্সাওয়ালাও বাদ পড়েনি..
কিন্তু শেষ লাইনে এটা কি বললেন? ৩০ লাখ- এটা কোন মিথ নয়
আমার উপজেলার কথা বলি- এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ কতক মানুষের সাথে আমি কথা বলেছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে, এঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগার মুক্তি যোদ্ধাও ছিল. কিন্তু পাকিদের হতে নিহত আমার উপজেলায় ১০০ জনের হিসাবও পাই নাই।
মুনতাসীর মামুন রচিত জেলা ভিত্তিক একটা তালিকাও আছে, আমি আমার জেলার তালিকাটাও সংগ্রহ করেছিলাম, তাকে ৬৪ দিয়ে গৃুণ করলে ৩০,০০০ ও হয় না।
অনলাইনে সিরাজগঞ্জের একটা তালিকা পেলাম সিরাজগঞ্জের তালিকা
আসলে পাকিরা ছিল ভীরু-কাপুরুষ-বিশ্বাসঘাতক, এরা অনেক নিরস্ত্র বাঙ্গালীকে মেরেছে শুধু ত্রাশ সৃষ্টি করার জন্য..অথচ মাত্র ৩০০০ ভারতীয় সৈন্যর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে জ্যাকবের সাক্ষাতকার ...এতটাই মৃত্যুভয়ে ভীত ছিল এরা.. আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা। তা নাহলে আরো রক্ত ঝরত।
হামাদুর রহমান কমিশন রিপোর্টে এ কারণে নিয়াজী, ইহাহিয়াসহ বেশ কয়েকজনের মৃতুদন্ডের সুপারিশ করে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪৫
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: গ্রামবাংলার হাজারো মানুষ ঢাকায় এসে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করার মতো অবস্থায় ছিল না। একটি সদ্য স্বাধীন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে, যেখানে যোগাযোগব্যবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত, সেখানে থানায় বা মন্ত্রণালয়ে জমা পড়া অভিযোগের সংখ্যা দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বিচার করা চরম মূর্খতা
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রের (যেমন: নিউজউইক, টাইম, দ্য গার্ডিয়ান) রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে মার্কিন সিনেটে যে রিপোর্ট পেশ করেন, তাতে তিনি উল্লেখ করেন, শরণার্থীদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা ছিল ৫০ শতাংশ এবং তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল ভয়াবহ।
মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে (১৯৭২) দেখা যায়, শরণার্থী শিবিরগুলোতে কলেরার প্রকোপ এবং অপুষ্টির কারণে মৃত্যুর হার ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ বেশি। জন সার নামক সাংবাদিক লাইফ ম্যাগাজিনে লিখেছিলেন, ‘‘শরণার্থীদের পিছে মৃত্যু, সামনে মৃত্যু...শিবিরে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।’’
গবেষকদের মতে, শরণার্থী শিবিরে এবং যুদ্ধের পরোক্ষ প্রভাব তথা কোল্যাটারাল ড্যামেজে ৬ থেকে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই মানুষগুলোর মৃত্যুর প্রত্যক্ষ কারণ পাকিস্তানি বাহিনীর আগ্রাসন। সুতরাং, ৩০ লাখের হিসাবে এই ৬ থেকে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু অন্তর্ভুক্ত করা যৌক্তিক ও আবশ্যক।
৩০ লাখ সংখ্যাটি শুধু একটি অঙ্ক নয়, এটি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শক্তির বর্বরতার প্রতীক। আপনি যদি শরণার্থী শিবিরে কলেরায় মৃত শিশুটিকে, কিংবা বধ্যভূমিতে নাম না জানা কঙ্কালগুলোকে, কিংবা ধর্ষণের শিকার নারীর যুদ্ধপরবর্তী মৃত্যুকে ‘শহীদ’ বা ‘যুদ্ধজনিত মৃত্যু’ হিসেবে গণ্য করেন, তবে ৩০ লাখের সংখ্যাটি কোনো মিথ নয়, বরং নিষ্ঠুর বাস্তব।
৩|
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি চান না আমরা মন্তব্য করি?
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১০
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: অবশ্যই চাই, তবে কমেন্টেস এর নামে বাজে শব্দের ব্যবহার আমি চাই না কিছু বান্দা লোক আছে তারা হামলায়ে পরে, আপনি চিনেন, আমি তাদের নাম নিতে চাই না।, তবে অবশ্যই গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণযোগ্য। তাই কমেন্টস মডারেশন করতে হচ্ছে। আমি কোন ইমেজ আপলোক করতে পারি না, বেশ কিছুদিনতো পোস্ট করতে পারিনি।
৪|
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:২৭
নিমো বলেছেন: এসব লিখবেন না, জা-শির আলামিন ৪২০ দের খুব কষ্ট হয়।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৩
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: হ্যা তাতো হতেই হবে।
৫|
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪১
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৫৬
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সংখ্যা নিয়ে তর্ক হতে পারে,
গণহত্যা নিয়ে নয়।
.................................................
যাদের জন্মর ঠিকানা ঠিক নাই
তারাই আজ এসব প্রশ্ন করে ৫৪ বৎসর পর
জাতিগত দাঙ্গা লাগানোর হীন পরিকল্পনা করছে
যা ইতিহাসের পাতায় উল্লেখ থাকবে ।