= ফুড ব্যাংকের অনৈতিক ব্যবহার =
কানাডায় কেউ না খেয়ে মরে না। যাদের ঘরে খাবার নেই তারা নিকটতম এলাকায় ফুড ব্যাংক কোথায় আছে তার খোঁজ নিয়ে সেখানে গেলে খাবার দাবারের একটা ব্যবস্থা হয়ে যায়। সেখানে চাল, ডাল, রুটি, ডিম, ফলমূল, ইত্যাদি বিনামূল্যে পাওয়া যায়। ডোনাররা এসব দান করে থাকেন। স্পষ্টতই, এটা আর্থিক দুর্দশাগ্রস্থদের জন্য সাময়িক ব্যবস্থা। স্বচ্ছলদের এ সুযোগ কাজে না লাগানোই প্রত্যাশিত।
প্রজাপতি নামের ভারতীয় এক ছাত্র (international student) সম্প্রতি ফুড ব্যাংকে গিয়ে তার প্রয়োজনমতো খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে তার ভিডিও দিলো ইউটিউবে। উদ্দেশ্য, তার মতো যারা নানা দেশ হতে কানাডায় পড়াশোনা করতে এসেছে তারাও যেন বিনামূল্যে ফুড ব্যাংক থেকে খাবার সংগ্রহ করে খরচ বাঁচায় সে কাজে উদ্বুদ্ধ করা। পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হবার ধান্ধাও হয়তো ছিল।
ভিডিওটি সম্প্রচারের পর কানাডায় অনেকেই তার খোঁজখবর নিতে শুরু করলেন। অবশেষে জানা গেলো, পড়াশোনার পাশাপাশি বাৎসরিক ৯৮,০০০ ডলারে কানাডার একটা নামি ব্যাংকে সে খণ্ডকালীন চাকুরিও করছে। সে একজন ডাটা সায়েন্টিস্ট। বেতন বেশ ভালোই বলা চলে। কারণ, কানাডার বেশিরভাগ মানুষই মিনিমাম ওয়েজ, অর্থাৎ, বছরে ৩৫,০০০ বা তার কাছাকাছি আয় করে থাকে। সে হিসেবে তার আয় মিনিমাম ওয়েজের প্রায় তিনগুন। স্বভাবতই এমন একজন স্বচ্ছল মানুষের ফুড ব্যাংকে যাওয়া কানাডিয়ানরা সহজভাবে মেনে নেয়নি।
অধিকন্তু, একজন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট যখন কানাডায় পড়তে আসে তখন সে ঘোষণা দিয়ে আসে যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে যত খরচ প্রয়োজন তা তার আছে। অর্থাৎ, সে যথেষ্ট স্বচ্ছল। তাই, নৈতিক বিবেচনায় এমন ছাত্ররা ফুড ব্যংকে যাবার কথা নয়। প্রজাপতিও একজন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট। এ বিষয়টিও তার মাথায় রাখা দরকার ছিল।
ঘটনা জানার পর যে প্রতিষ্ঠানে সে চাকুরী করতো সে প্রতিষ্ঠান তাকে চাকুরিচ্যুত করেছে। পাশাপাশি, সংক্ষুদ্ধ কানাডিয়ানদের কেউকেউ অনলাইনে তাকে কানাডা ছেড়ে চলে যাবার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ফলে, সে এখন নিজ বাসা হতে রাস্তায় বেরুতেও ভয় পাচ্ছে।
কানাডায় যারা পড়াশোনা করতে এসেছে সচেতন করার লক্ষ্যে তাদের সাথে এ তথ্যটি শেয়ার করুন। ভুলেও যেন কেউ এমনটি না করে।
এম এল গনি, RCIC-IRB
কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৫