নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙ্গাল মস্তিষ্কের বি - উপনিবেশিকরন পর্ব ১ঃ গৌতম বুদ্ধ - পাশ্চাত্য দর্শন/তত্ত্বের ঔপনিবেশিক প্রোপ্যাগান্ডার বিরুদ্ধে প্রারম্ভিক নোকতা

০৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২



পৃথিবীব্যাপী বৌদ্ধধর্ম্যালম্বি বন্ধুদের বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ সালে, হিমালয়ের পাদদেশে কপিলাবস্তু নামে একটি ক্ষুদ্ররাজ্যে শাক্যবংশের রাজা শুব্ধোদন ও তার জ্যেষ্ঠ রানী মহামায়ার একমাত্র পুত্রসন্তান হিসেবে জন্ম নেয়া সিদ্ধার্থ গৌতমকেই গোটা পৃথিবী একনামে চেনে গৌতম বুদ্ধ হিসেবে। বুদ্ধের আবির্ভাব ব্রাহ্মণ্যবাদ - এবং জন্মসূত্রে পাওয়া ব্রাহ্মণ - ক্ষত্রিয় - বৈশ্য - শুদ্র - চামার - হাড়ি - ডোম - চণ্ডাল ইত্যাদি জাতপাতের বিচ্ছেদাঘাতে জর্জরিত একটি কালে, আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে। নিরঞ্জনা নদীর তীরে, বোধিবৃক্ষমূলে বসে স্নায়ুক্ষয়ি নিরবচ্ছিন্ন ধ্যানের পর তিনি বোধি লাভ করেন, বুদ্ধ উপাধি ধারন করেন, যার বাংলা - 'আলোকপ্রাপ্ত'।

বুদ্ধের প্রচারিত বিশ্বাসের জন্ম বৈদিক ব্রাহ্মণ্যবাদের কোলে। সত্য লাভের আকঙ্খায় তার প্রাথমিক যে ধ্যান ও যোগচর্চা, শরীরকে নানারূপে কষ্ট দিয়ে স্নায়ু ও তন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রয়াস - তা সে ইংগিতই দেয় আমাদের। বোধিপ্রাপ্তির আগে হিন্দুধর্মের পুন্যস্থান বেনারসে তৈরি হয়েছিল তার খুব সংক্ষিপ্ত এক ভক্তকুল।

উল্লেখ অপ্রয়োজনীয় যে মধ্যপ্রাচ্যের উসর মরুঅঞ্চলে প্রবলবেগে স্রোতস্বিনী আব্রাহামিক ধর্মচর্চার স্রোত, আর গৌতম বুদ্ধের সাধনা, বোধিলাভ, ধর্মশিক্ষার সময়কাল প্রায় এক হলেও - এই দুই ধর্মমতের প্রত্যক্ষ কোন সংযোগ বুদ্ধের জীবদ্দশায় মেলে নি। বৈদিক ব্রাহ্মণ্যবাদের কোলঘেঁসে যে দর্শনের জন্ম , বারো মাসে তেরো পার্বণের মহলে যার হাঁটতে শেখা, হাজারো দেবদেবী, জাতপাত, এবং শ্রেণীবৈষম্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যার বিস্তৃতি, বিচিত্রভাবে বুদ্ধ সেখানে আঘাত করলেন ঈশ্বরের অস্তিত্বের মূলে। তার প্রচারিত ধর্মবিশ্বাস ঈশ্বরের অস্তিত্ববিহীন , মানুষ জীবনকুণ্ডলীর ঘূর্ণায়মান চাকার পরিক্রমায় নিজ কর্মফল পূর্ণ করার মাধ্যমে নির্বাণলাভ তার দর্শনের মূল কথা। তিনি তার ভক্তকুলের মধ্যে প্রচার করলেন তার ধর্মের মূলমন্ত্র - মধ্যপথ, চার আর্যসত্য, এবং অষ্টমার্গ। ভাবতে অবাক লাগে, যেখানে বৈদিক বিশ্বাস জাতিগত, বা রক্তগত আর্যতায় বিশ্বাস করতো, বৌদ্ধ প্রচার করলেন চার সত্যের আর্যতা - জীবন দুঃখময়, দুঃখের কারণ অজ্ঞতা, দুঃখ দূর হয় অজ্ঞতার দূরীকরণে, অজ্ঞতা দূরীকরণ হয় অষ্টমার্গ অবলম্বনে। অষ্টমার্গ হল - সম্যক দৃষ্টি, সম্যক সংকল্প, সম্যক বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক জীবিকা, সম্যক চেষ্টা, সম্যক স্মৃতি, সম্যক সমাধি ( নীরুকুমার চাকমা, বুদ্ধঃ ধর্ম ও দর্শন)

গৌতম বুদ্ধের জীবন ও কর্মকাণ্ডের ধর্মীয় তাৎপর্যের আলোচনা পাশে সরিয়ে রেখে যদি বুদ্ধ সৃষ্ট পরিচয়ের রাজনীতি নিয়ে যদি আলাপ করি, প্রথমে যেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে - বুদ্ধের পরিচয়ের লড়াইয়ের সবচে প্রবল প্রতিপক্ষ ছিল বৈদিক ধর্ম। বৈদিক ধর্ম বলতে আমি ২০২০ সালের হিন্দুধর্মকে বোঝাচ্ছি না। আজকের বাংলাদেশ - ভারত - নেপাল এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হিন্দুধর্ম্যালম্বিদের নিয়ে যে হিন্দুধর্ম , তা আর্যদের সাথে আসা বৈদিক ধর্মের সাথে অনার্য তন্ত্রবাদী ধর্মচর্চার সব মোটাদাগের ও সূক্ষ্মভেদের তফাৎ মোচনের পর যে মিশ্রণ দাঁড়ায় সেটাই। আমাদের বঙ্গঅঞ্চলের লোকদের আদি অরিজিন - অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, আলপিয়। আর্যদের চোখে বৃহৎ বঙ্গের মানুষদের পরিচয় ছিল অসুর হিসেবে। কৃষিভিত্তিক বঙ্গের চাষাভুষা অনার্য ব্রতাচার - আর্যদের ধর্মানুষ্ঠানের তুলনায় ভিন্ন ছিল বলেই আমাদের ব্রাত্য বলে উল্লেখ করা হত। এখন যেমন অ্যামেরিকান বা ব্রিটিশ একসেন্টে ইংরেজি বলাকে স্ট্যাটাস হায়ারারকির র‍্যাঙ্ক হিসেবে ধরা হয়, গৌতম বুদ্ধের সময়ে সে স্ট্যাটাস ভোগ করতো সংস্কৃত ভাষা।

গৌতম বুদ্ধের জীবনদর্শনের রাজনৈতিক আলাপে তার এই দুই কাজ - ঔপনিবেশিক আর্যজাতির প্রচারিত বৈদিক ব্রাহ্মণবাদের সূত্রে সৃষ্ট জাতভেদ অস্বীকার, এবং আর্য ভাষা সংস্কৃতের বদলে ব্রাত্যজনের ভাষা 'পালি' কে ধর্মোপদেশ প্রচারে ব্যাবহার।

এভাবে - জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব, শ্রেণীভেদ মোচন, এবং ব্রাত্যজনের কথ্যভাষাকে আপন করে নেয়ার জন্যে - কলোনিয়ালিজম , অর্থাৎ উপনিবেশবাদী জাতি, তাদের ভাষা, তাদের নির্মিত তত্ত্ব ও চিন্তার বিরুদ্ধে লড়াই করবার জন্যে বুদ্ধের যে রাজনৈতিক চেতনা - তা উপনিবেশবিরোধী তত্ত্বচর্চার আন্দোলনে আমাদের পথিকৃৎ হয়ে থাকবে।

আলাপ একটু ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা যাক।

বাংলাভাষায় চিন্তা করেন এবং লেখেন, অথবা চিন্তা করা ছাড়াই লেখেন - এ জাতীয় একশ্রেণীর মানুষ আছে, যারা বিশ্বাস করেন, এবং প্রচার করতে পছন্দ করেন যে - পাশ্চাত্যের রাজনীতি, লাইফস্টাইল, ইকোনমিক পলিসি কোনোরকম বাছবিচার, কাটছাঁট না করে যদি বাংলাদেশের উপর, বা পাক - ভারত উপমহাদেশের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় , তবে আমাদের এই অঞ্চলের যত সমস্যা, তা ঝাড়ে বংশে নির্মূল করা সম্ভব।

এই চিন্তা অজ্ঞতাপ্রসূত, নিজের পিতৃপরিচয় সম্পর্কে ওয়াকেফহাল না থাকার ফল। এ প্রচারণা কলোনিয়াল হেজিমনি প্রচারের এক ন্যাক্কারজনক পায়তারা।

কিছুক্ষণ আগে শশী থারুরের লেখা , ভারতে ব্রিটিশ রাজের উপর প্রামাণ্যগ্রন্থ - অ্যান এরা অফ ডার্কনেস উল্টেপাল্টে দেখছিলাম। বইটির চতুর্থ পাতায় তিনি একটি পরিসংখ্যান দিয়ে আলোচনা শুরু করেন -

সতেরশো শতকে , মুঘল সম্রাট আওরাঙ্গজেবের আমলে ভারতীয় উপমহাদেশের ইকোনমি ছিল গোটা পৃথিবীর ইকোনমির ২৭ শতাংশ - যা ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, অন্যান্য স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ সহ পুরো ইউরোপের ইকোনমির সমান।

তার ২০০ বছর পর, ব্রিটিশ রাজের অধীনে ভারতীয় উপমহাদেশের ইকোনমি এসে দাঁড়ায় বৈশ্বিক ইকোনমির ৩% এ।

আসুন প্রশ্ন করি - কেন? কিভাবে?

আমাদের যে বন্ধু বাংলা ভাষায় পাশ্চাত্যের জীবনব্যবস্থার গুণকীর্তন করতে করতে কীবোর্ডের বাটন ক্ষয় করে ফেলছেন, তাকে অনুরোধ করি, আপনার ফসটার ফাদারদের আজ যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, তাদের যে উন্নত জীবনব্যবস্থা, তাদের যে নিছক জ্ঞানচর্চার খাতিরে দর্শনের ডুগডুগি, প্রযুক্তির পেছনে ঢালার মত অঢেল টাকা, এর পেছনে আমার - আপনার দাদার দাদার দাদার দাদা'র রক্ত, ঘাম মিশ্রিত অর্থের ইউরোপ অভিমুখী পাচার আছে। ইউরোপের জীবনব্যবস্থা আর তাদের চিন্তা-দর্শন দিয়ে বাংলাদেশ, ভারত বা এই ভারতীয় উপমহাদেশের সামাজিক সমস্যা সমাধানের টোটকা পরামর্শ দেয়ার আগে এই ঐতিহাসিক সত্য যেন ভুলে না যাই।

যেন ভুলে না যাই যে মনুষ্যরূপী শয়তানের মূর্ত প্রতিকৃতি আপনার ইউরোপিয়ান ফসটার ফাদারেরা। ব্রিটেন থেকে লোভী পশুগুলো যখন প্রথমবারের মত অ্যামেরিকা খুঁজে পেয়ে ওখানে গিয়ে ওঠে, তখন নিজেদের উপনিবেশ ছড়ানোর জন্যে সরল সোজা অ্যামেরিকান ইন্ডিয়ান, বা রেড ইন্ডিয়ান (এইটা কিন্তু একটা রেসিস্ট টার্ম, মনে রাখবেন, যেমন কিনা নিগ্রো। রেড ইন্ডিয়ান বলার বদলে অ্যামেরিকান ইন্ডিয়ান, বা ওল্ড অ্যামেরিকান বলা উত্তম, যেমন কিনা নিগ্রোর বদলে কালারড অ্যামেরিকান) দের মধ্যে গিয়ে বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে যে পোশাক এবং কম্বল প্রদান করে, সে পোশাক এবং কম্বলে ছড়ানো ছিল গুটিবসন্তের বীজ। (আহরার আহমেদ, জ্ঞানতাপশ আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন, অ্যামেরিকান রেভলিউশানের ওপর বক্তৃতা)। অ্যামেরিকার আদি অদিবাসিদের ইমিউন সিস্টেম ঐ গুটিবসন্তের সাথে পরিচিত ছিল না বলে বেচারারা ব্রিটিশদের বিশ্বাস করে তাদের উপহার দেয়া পোশাক গায়ে দিয়ে গুটিবসন্তে ভুগে ঝাড়ে বংশে উজাড় হয়ে গেছে। তাদের জায়গায় জায়গা দখল করে তৈরি আজকের অ্যামেরিকা।

মাঝেমধ্যে হালকা চালের কথাবার্তায় - "আরে হালা তুই তো দেখি ব্রিটিশ!" বাক্যে, ব্রিটিশ বলতে আসলে কি মিন করা হয়, হয়তো বুঝেছেন।

পৃথিবীব্যাপী দাসব্যাবসার সবচে বড় নেটওয়ার্ক ছিল ইউরোপের দাসব্যাবসায়িদের হাতে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নাই - যে কথাটা বুদ্ধ বলেছিলেন খৃষ্টপূর্ব ২৫০০ সালে, হজরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন বুদ্ধের জন্মগ্রহণ করার ১০০০ বছর পরে - এই সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্যে অ্যামেরিকায় সিভিল ওয়ার হয় ১৯ শতকে, দাসপ্রথা রদ করার জন্যে।

যারা একটু স্বাচ্ছন্দ্যের জীবনের স্বপ্নে দেশ ছেড়ে বিদেশ-বিভূঁই এ পাড়ি জমিয়েছেন, আমাদের গরীব দেশে বিদেশী রেমিটেন্সের ফ্লো বজায় রেখেছেন তাদের প্রতি ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা। কিন্তু তাদের মধ্যে যে শ্রেণী অজ্ঞাতকুলশীলের কিছুদিন আল্পস পর্বতের হাওয়া গায়ে লাগিয়ে মনে হয় - এবার হিমালয়রে ল্যাং মারা দরকার, বা পাশ্চাত্যের জীবনধারা - দর্শন - চিন্তাচেতনার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়ে তা কোনরকম বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া আমাদের দেশের সমস্যা সমাধানের চূড়ান্ত মাধ্যম বলে প্রচার করছেন, তাদের থামা উচিৎ। এটা নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। আমরা দুটো ভিন্ন ধারার ফলাফল। আমাদের অর্থনৈতিক পঙ্গুত্বের পেছনে ঐ অজ্ঞাতকুলশীল ( ব্রাত্যজনের বাংলায় এর তর্জমা হারামজাদা) রা যে ক্রমাগত আমাদের ধর্মবিশ্বাসকে কুসংস্কার/ অন্ধবিশ্বাসের সমার্থক বলে প্রচার করে এবং দায়ী করে, ওদের কেউ বুঝায়ে বইলেন, এটাও পশ্চিমের তৈরি ঠুলি।

অধ্যাপক নীরুকুমার চাকমা এবং অধ্যাপক রায়হান রাইনের যে বইদুটো পড়ে বুদ্ধ ধর্ম এবং বাংলার চিন্তার আদি ইতিহাস নিয়ে পড়ছি, তারা দুজনেই একটা বিষয়ে একমত - পাশ্চাত্যের জ্ঞানচর্চা কলাকৈবল্যবাদের সমান্তরাল। জ্ঞানচর্চার খাতিরে জ্ঞানচর্চা।

উদাহরণ - "আমি আমার সামনের দেয়ালটাকে দেখছি বলে দেয়ালের অস্তিত্ব স্বীকার করা যায়, কিন্তু আমি যে দেয়ালটা দেখছি - এইটাতো আমি দেখতে পাচ্ছি না। তাইলে আমার অস্তিত্বের প্রমাণ কি? আমি আছি? আমি নাই? তাইলে কি দেয়ালও নাই? তবে আমি আছি কিনা এই চিন্তা যেহেতু আমার মাথায় আছে, তাই আমিও আছি" - এই হচ্ছে পাশ্চাত্য জ্ঞানচর্চার একটা ধারা। এত চিন্তা করার বদলে সামনের দেয়ালে মাথায় দুইটা ধাম ধাম বাড়ি দিয়েও তো আমি আসলে আছি নাকি নাই তা পরীক্ষা করা যায়। জোকস অ্যাপার্ট, ডেকারতের অতিসরলীকরণ করা হয়ে গেল বটে, কিন্তু জ্ঞানচর্চার জন্যে জ্ঞানচর্চাটা কিরকম, তা এরচে সহজ ভাবে কিভাবেই বা বোঝানো যেতো।

বৌদ্ধধর্ম, এবং আমাদের অবিভক্ত বঙ্গের যে ধর্মীয় চিন্তাচেতনা এবং দর্শন - তা জ্ঞানচর্চার খাতিরে জ্ঞানচর্চা না। জীবনের সমস্যা সমাধানের জন্যে প্রায়োগিক দার্শনিক চিন্তা।

কিভাবে?

পড়েন। রেফারেন্স তো উপরে দিয়েই দিলাম।

নিজের মাটির ঘ্রাণছড়ানো দর্শন বাদ দিয়ে পশ্চিমা দার্শনিকদের কথা শেষ কথা মনে করে নিয়েন না। তাদের তৈরি পরিভাষায় নিজেকে মাপতে জায়েন না। ঐটা তাদের ছক, তাদের ট্র্যাপ, তাদের জগতব্যাপি শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রোপ্যাগান্ডা। তার বুদ্ধিবৃত্তিক নিম্নরূপ হচ্ছে ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকা, আর পরিশীলিত রূপ হচ্ছে তাদের জ্ঞান- তত্ত্ব - দর্শনচর্চা।

পরিভাষা হচ্ছে সংজ্ঞা, কোন একটি টার্মের ডেফিনেশন।

ইংরেজি আর বাংলার পরিভাষাগত পার্থক্যের কারণে, ধুপধাপ ইংরেজি থেকে বাংলায় টার্ম অনুবাদ করবার ফলে প্যাঁচ লাগে কিভাবে তার একটা উদাহরণ দেখবেন?

যদি জিজ্ঞেস করি রিলেজিয়ন মানে কি, আপনি বলবেন ধর্ম। যদি বলি রিলেজিয়নের অ্যান্টোনিম কি, বলবেন এথিস্ট। যদি বলি এথিস্ট কারে বলে, বলবেন যে ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। যদি বলি গৌতম বুদ্ধ তোঁ ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো না, তাইলে তো বুদ্ধ এথিস্ট, অধর্মের প্রচারক।

কিন্তু আমরা তো বলি - বৌদ্ধবাদ, একটা ধর্ম। আমাদের পাসপোর্টে , ন্যাশনাল আইডি কার্ডে ধর্মের জায়গায় লেখে - বুদ্ধিস্ট।

সমস্যা কোন জায়গায়?

সমস্যা হইল - পরিভাষার অনুবাদে।

বা ইউরোপের রিলেজিয়নের কনসেপ্টে বাংলার ধর্ম যাচাইয়ের চেষ্টা।

ইংরেজি ভাষায় যে জ্ঞানচর্চা হয়, তার লিটারেল পারিভাষিক অনুবাদ দিয়ে আপনি অঙ্গ -বঙ্গের অনেক কিছুর ব্যাখ্যাই করতে পারবেন না।
যেমন, বাংলায় ধর্ম শব্দের উদ্ভব ধৃ ধাতু থেকে, যার অর্থ ধারন করা। জীবনের পক্ষে যা কিছু ধারণযোগ্য, তাই ধর্ম। এ অর্থে সমস্ত জীবনই ধর্মক্ষেত্র। সংসারধর্ম, রাজধর্ম, পিতৃধর্ম - ইত্যাদি কথা ধর্ম শব্দটির অর্থের বিস্তারকে নির্দেশ করে। সাত্ত্বিক বা রাজসিক সমস্ত কর্মই ধর্ম - পরোপকার, শরীরচর্চা, রাজকার্য পরিচালনা করা, বা ভ্রমণ, এসবই ধর্ম, যদি তা জীবনের পক্ষে হয়, নতুবা তা অধর্ম। অর্থাৎ, বাংলার পরিভাষায় ধর্ম কথাটি দিয়ে যা বোঝানো হয় তা নৈতিকতার সমর্থক। কাজে ধর্ম কথাটির এ অর্থ অন্সারে মানুষের কাজের শ্রেণী তিনটি নয় বরং দুটি - ধর্ম এবং অধর্ম। এ অর্থে ধর্ম নিরপেক্ষ কোন শ্রেণী থাকতে পারে না। ( নিখিলরঞ্জন মতিলাল, রায়হান রাইনে উদ্ধৃত, ২০১৯)। কাজেই ইংরেজি রিলেজিয়ন শব্দটির সাথে এককাতারে ফেলে বাংলার ধর্মচর্চার তুলনা করতে যাওয়াটাই একটা সমস্যা।

এতো গেলো অর্থগত দিক, এবার আসেন পরিভাষার অনুবাদে উদ্ভূত প্রায়োগিক সমস্যা লক্ষ্য করি।

পাশ্চাত্যের দার্শনিক প্রচেষ্টা সেই বানরের মত, যার কৌতূহলের শেষ নাই। যাই সামনে পায় একটু ঝাঁকায়ে দেখে, একটু ঘ্রাণ নেয়, একটু চাটে, কামড়ানোর চেষ্টা করে , তারপর ছুঁড়ে ফেলে দেয়। অর্থাৎ ম্যাটেরিয়ালিস্টিক, অধিকাংশ ক্ষেত্রে। ভাববাদের চর্চাও যে হয় নাই তা না। কিন্তু বঙ্গীয় দর্শনের মূলে দেহসাধনা। দেহাত্মবাদ। দেহের সাথে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যে অ্যানালজি - তারা সে অনুপাতে নিজের আত্মার ভেতরে খোঁজে পরমাত্মা, সহজ মানুষ, মনের মানুষ। তান্ত্রিক নাথপন্থা - সহজিয়া বৈষ্ণব হয়ে একটা ছোট্ট লাফ দিয়ে যদি বাংলার সূফী মুসলিমদের কাছে আসি, যারা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, জিকির করে এবং ছয় লতিফার প্রজ্বলনের অপেক্ষায় থাকে - তারা। এই ছয় লতিফা কিন্তু তান্ত্রিক নাথপন্থী হিন্দুদের ষড়-পদ্মের ধারণা থেকেই উদ্ভূত। যে কুণ্ডলিনীর উদ্ভাসনের অপেক্ষায় থাকে তান্ত্রিক যোগী, মুসলিম ফকির একই জিনিসের অপেক্ষায় থাকে, কেবল তারে উল্লেখ করে নূর হিসেবে। আর লালন বলেন - চাতক থাকে মেঘের আসে/ মেঘ বরিষে সে কোন দেশে / বল চাতক বাঁচে কিসে / ওষ্ঠাগত প্রাণ আকুল/ সমুদ্র কিনারে বসে জল বিনে চাতকি মরল।


বৈদিক ধর্ম যখন সেন আমলে, পালদের অধিকৃত বৃহৎবঙ্গে অনুপ্রবেশ করে, তখনও কিন্তু 'বৈদিক ব্রাহ্মণ্যবাদ অ্যাজ ইট ওয়াজ' প্রচলন করা সম্ভব হয় নাই। আপসরফা করতে হয়েছে বৌদ্ধধর্মের হীনজানি শাখার সাথে। এর ফলে তন্ত্রজানি বৌদ্ধিক চর্চার শুরু হয়, যার ধর্মীয় গ্রন্থ 'অষ্টসাহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতা' পাওয়া যায় বাংলা অঞ্চলের আদি চিত্রকলার প্রথম নিদর্শন। নিরাকার, নিরীশ্বরবাদী বৌদ্ধধর্মের ধর্মগ্রন্থে অবতারের ছবি পাওয়ার আর কি ব্যাখ্যা হতে পারে?

বলতে চাইছি যে - মিলে মিশে কিভাবে বসবাস করতে হয়, বঙ্গের মানুষকে এটা কখনো শেখানো লাগে নাই। কিন্তু এই যে হিন্দু - মুসলমান - বৌদ্ধ - খ্রিস্টান মিলেমিশে থাকতে পারবে না, এই চিন্তার বীজ প্রথমত আমাদের মাথায় ঢুকিয়েছে "বিটিশ"ব্রিটিশরা। মোঘলদের, মুসলমানদের উপর আজকের উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের অনেক ক্ষোভ। ধরেন সঞ্জয় লীলা বানসালির পদ্মাবত মুভিতে আলাউদ্দিন খিলজির যে ইনহিউম্যান বা পশুর মত চিত্রায়ন (ওর তাঁবুতে বসে খাওয়ার দৃশ্যগুলি স্মরণ করেন, বা কুস্তির সিন, বা পুরা মুভিতেই ওর অভিনয়), অথবা মারাঠাদের বীরত্বগাঁথার প্রচার প্রসারে পানিপথ, তানহা জির - মত একটার পর একটা মুভি বানানোর প্রয়াস থেকেই সে ক্ষোভের উদ্গিরন বোঝা যায়। কিন্তু মুঘলদের একটা বিষয় চিন্তা করে দেখেন, তারা কিন্তু এখানে এসে এ অঞ্চলের জনগণের সাথে মিশে গিয়েছিল। বিয়ে করেছিল। সন্তান উৎপাদন করেছিল। ইরান - তুরানে সম্পদ পাচার করে নাই, ঐ মাত্রায়, যে মাত্রায় তাদের পর আসা ব্রিটিশরাজ করেছে। আকবরের দরবারে গুণীজনের কদর ছিল। মারাঠাদের তিনি নিজের ঘনিষ্ঠ অমাত্যের স্থান দিতেন। আওরাঙ্গজেব সে উদারনীতি থেকে সরে আসার ফলে হিন্দু - মুসলিম প্রথমবারের মত সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিতে দেখা শেখে। কিন্তু বিভেদের রাজনীতির সংজ্ঞা আমাদের শিখিয়েছে ব্রিটিশরাজ। ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসির জন্ম তাদের হাত ধরে। অবিভক্ত জনগণের আত্মপরিচয় নিয়ে কনফিউশন তৈরি করার প্রয়োজন ছিল তাদের। এনলাইটমেন্টের আলোয় মূর্খ ভারতবাসীদের আলোকিত করবার দায়িত্ব ছিল তাদের। নিজেদের জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ানোর প্রয়োজন তাদের। তাদের প্রত্যক্ষ প্রচেষ্টার ভাঁটা পড়েছে ১৯৪৭ এ। কিন্তু এত দীর্ঘদিন ধরে আমাদের শোষণ করার ফলে তাদের শ্রেষ্ঠত্বের বীজ আমাদের মাথায় এমনিতেই শেকড় গেড়ে বসেছে। তাই বাংলা ভাষাভাষী বাঙ্গাল পাঠক - লেখকদের অনুরোধ করছি - তাদের ঔপনিবেশিক প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ানোর দায়িত্ব বোকার মত কান্ধে নিয়েন না। পয়সা দিয়ে প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ানোর লোক তারা ভাড়া করে রেখেছে তাদের প্রাক্তন কলোনিগুলোর প্রশাসনে , আকাদেমিয়ায়।

বৌদ্ধধর্ম্যালম্বি বন্ধুদের বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানাতে বসেছি আসরের নামাজ পড়ে। এখন কিছুক্ষণ কোরআন তিলাওয়াত করবো। তারপর, আজান পড়লে ইফতার। একজন আচরি মুসলিম হওয়া সত্যেও গৌতম বুদ্ধের গুরুত্ব স্বীকারে এবং উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এক মহান মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে মেনে নিতে আমার কোন সমস্যা হয় না। কারন আমি জানি, মায়ানমারের বিন লাদেন ভিক্ষু গৌতম বুদ্ধের প্রচারিত বৌদ্ধ না, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চের মসজিদে ঢুকে গুলি করা হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট ক্রাইস্টের মতানুসারি খ্রিস্টান না, ইসলামের নামে বোমা মেরে নিরাপরাধ মানুষকে হত্যাকারি মুসলমান না।

আলাপের শেষ তাহলে কি দাঁড়ালো?

শেষ দাঁড়ালো এই যে - পাশ্চাত্যে তত্ত্বের পিম্পগিরি বন্ধ করতে হবে। পাশ্চাত্যের প্রযুক্তি, ঔষধ তো ব্যাবহার করা লাগবেই। যে দাঁত ক্যালায়ে বলবে - 'অ্যালায় ক্যালা? আয়ুর্বেদ ইউনানি ঔষধ খাও, ইহুদী নাছারাগো বানানো ট্যাবলেট খাও ক্যান?' তারে বলবেন - দুইশ বছর আমাদের রক্ত চুষে খাওয়ার ফলশ্রুতিতে দাঁড়ানো অর্থনীতি, শিল্পবিপ্লব, আর কলকারখানা থেকে তৈরি ওষুধ আবার আমারেই চড়া দামে বিক্রি করতেছে। হালা বিটিশ আর কারে কয়!' পড়তেও যাবেন পাশ্চাত্যে। মাথা উঁচু করেই। ওরা যদি আপনারে স্কলারশিপ দিয়ে নিয়ে যায় - বুঝতে হবে আপনার ব্রেইন নিংরায়ে ওদের নিজেদের কিছু একটা প্রোজেক্ট হাসিল করার জন্যেই আপনারে স্কলারশিপ দিয়েছে। কাজেই এইটা গিভ অ্যান্ড টেক। আপনিও পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরে আবার উপনিবেশবাদের কলার চেপে ধরবেন।




মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ করেছেন। বুদ্ধ যদি খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ সালে বলে থাকেন তবে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর বলার কথা ৩১০০ বছর পর। তবে যে কোনও সভ্যতা থেকেই অন্য সভ্যতার মানুষ শিখতে পারে। প্রাচ্যের থেকে যেমন পাশ্চাত্য শিখতে পারে তেমনি পাশ্চাত্য সভ্যতারও ভালোটুকু শেখা যেতে পারে। প্রাচ্যের মানুষের হীনমন্যতা থাকা উচিত না।

২| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০১

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টা খুব মন দিয়ে পর পর দুইবার পড়লাম।

রবীন্দ্রনাথের চেয়ে গৌতম বুদ্ধ কে আমার বেশি ভালো লাগে।

০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৩০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমার আপনারে আরও বেশী ভালো লাগে।

৩| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:২৮

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: তাহলে আমরা আরবদের ধর্ম পালন করি কেন? তারা আমাদের কি কেড়ে নিছে? আবার প্রতিবছর হজ্বের নামে এত গুলো টাকা দিয়ে আসি!

০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৩২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার সাথে ধর্ম বিষয়ক সিরিয়াস আলোচনা নাই। হালকা চালে বলি - যে হজে যায়, তারে গিয়া জিগান কেন যায়।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ২:২৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আচ্ছা, এভাবে প্রশ্ন এড়ানো অন্যায়। আলোচনা হোক, তার আগে একটা প্রশ্নের উত্তর আমাকে দেন। আপনি আগের এক পোস্টে উল্লেখ করেছিলেন যে কোরআনের হিফজ করা শুরু করেছিলেন, তাই না? এছাড়াও, কোরআন কিভাবে সহিংসতা উশকে দেয় - এসব নিয়ে দলিল প্রমাণসহ লেখার জন্যে তো মাঝেমাঝেই কোরআন ঘাঁটাঘাঁটি করা লাগে। বলুন তো কোন শব্দগুচ্ছ/ ফ্রেইজ কোরআনে ৫- ১০ লাইন পরপর ফিরে আসে?

০৭ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার উত্থাপিত প্রশ্নে কি সমস্যা , তা আমার উপরের লেখায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবুও সংক্ষেপে বললে - 'আরবদের ধর্ম' - বলে ইসলামকে আবারো আপনি রিলেজিয়নের আক্ষরিক অনুবাদ করছেন। আরবদের ধর্ম বাংলায় এসে বাংলার মুসলমানদের ধর্মে পরিণত হয়েছে। কিভাবে হয়েছে, তার একটা সংক্ষিপ্ত ব্যখ্যা উপরে দেয়া আছে। বুদ্ধিবৃত্তিক সততা থাকলে কিভাবে ইসলামকে আরও বেশী বাংলা সংস্কৃতির সাথে মিলিয়ে মিশিয়ে অন্যান্য সব সংস্কৃতির মানুষদের সাথে একটা সহনশীল অবস্থানে আনা যায় তা নিয়ে চিন্তাফিকির করা।

যাক, এই ব্লগে আপনি শুরু থেকে দুটো মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টায় রত ছিলেন। ব্লগের সবার জানা দরকার সে মিথ্যাগুলো কি কি।

আপনার প্রচারিত প্রথম মিথ্যা হচ্ছে - আপনি দাবী করেন আপনি আধুনিকতাবাদী, ধর্মের মুখোশ উন্মোচনকারী। সত্য কথাটি হচ্ছে আপনার টার্গেট শুধু ইসলাম। আপনার কর্মকাণ্ড ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানোর মাধ্যমে প্রোপ্যাগান্ডা রিড করার ক্ষমতাবিহীন মাথাগরম মুসলমানদের দিয়ে আরও ভুল কাজ করিয়ে নেয়া। আপনি তাদের খোঁচান। উত্তেজিত করেন। উত্তেজিত, হিতাহিতজ্ঞান হারা আমজনতা আরএকটা ম্যাসাকার ঘটায়। এটা একটা ভিশাস সার্কেল। আপনি অনেকাংশেই সফল এই কাজে।

আপনার প্রচারিত দ্বিতীয় মিথ্যা হচ্ছে - আপনি মুসলমানের ফ্যামিলিতে জন্ম নিয়েছেন, এবং কুরআনের হেফজ করা শুরু করেছিলেন একসময়। সত্যকথাটি হচ্ছে - আপনি বা আপনার ফ্যামিলি, কেউই মুসলমান না। আপনি অমুসলমান বংশদ্ভুত। কিভাবে বুঝলাম? আমার আগের প্রশ্নটির সূত্র ধরে। আপনি উত্তর দিতে পারবেন না, কোরআনের সবচে বহুল ব্যবহৃত শব্দগুচ্ছ কি।

যাই হোক, বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশে বিবিধ ধর্মসম্প্রদায়ের মধ্যে বৈরিতা - বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করবার যে পরিকল্পনাটি নিয়ে আপনি এগুচ্ছেন - তা যদি আপনার বাবা, মা , জ্যাঠারা জানতে পারে, তারা খুব লজ্জিত হবে আপনার মত একটা সন্তান তাদের পরিবারে জন্মেছে বলে। দেশে ফিরে আসলে ধর্মীয় সহিংসা উস্কে দেয়ার অভিযোগে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।

৪| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৫৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: গৌতম বুদ্ধ একজন শান্তিজনক লোক। শুভেচ্ছা বৌদ্ধধর্মের সবাইকে

৫| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নোকতায় অসাধারন মুগ্ধতা!
টুপি খোলা অভিবাদন।

এখন অক্ষর আর বাক্যের অপেক্ষায় :)
চলুক সিরিজ আপন গতিময়তায়।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ২:৫৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। বেশী লম্বা করার আগ্রহ নেই এ সিরিজ। টেনে টুনে পাঁচ পর্ব। ভালো থাকেবন! : )

৬| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৩২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বটগাছ ফটগাছের নিচে বসে থাকলেই আকাশ থেকে জ্ঞান এসে টুপকরে পরবে না।শয়ে শয়ে বটগাছ এখনো আছে আর বসে থাকতেও কেউ নিষেধ করবে না।চেষ্টাকরে দেখতে পারেন।
কলিঙ্গের যুদ্ধে যখন হাজার হাজার লোকমারা যায়,সেই দৃশ্য দেখে তার মনে এক প্রতিক্রিয়া হয়।তারই ফলশ্রুতিতে তিনি হত্যার বিরুদ্ধে শোচ্চার হন।এটাই তার মূলমন্ত্র।পরবর্তীতে আরো অনেক নিয়ম কানুন ঠিককরেন।তিনি একজন শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী।

৭| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪১

রুদ্র নাহিদ বলেছেন: আমার ছোট মস্তিষ্কের জন্য অনেক হাই লেভেলের লেখা। পরে ঠান্ডা মাথায় আরো পড়তে হবে, বুঝার চেষ্টা চালায় যাওয়া দরকার। আমি একটা কথার সাথে পুরোপুরি একমত, অন্ধভাবে পাশ্চাত্য আদর্শ অনুকরণের কিছু নাই। এইটা নিয়ে আরো লেখা প্রয়োজন।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৩:০২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: বৃহৎ বঙ্গের ইতিহাস নিয়ে খানিকটা পড়াশোনা করলে নিজ জাতিসত্ত্বা বিষয়ক অনেক প্রশ্নের উত্তর এমনি মেলে, অনেক সামাজিক বিভেদ, মনোমালিন্য দূর করা সহজ হয়। আমার এই লেখা আত্মপরিচয়ের সুলুক সন্ধানের আগ্রহ আরও উশকে দিলেই ভাববো এ লেখা তার গন্তব্যে পৌঁছেছে। শুভকামনা।

৮| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১২:১৪

শের শায়রী বলেছেন: হ্যাটস অফ ব্রাদার। আপনি দিন দিন আমাকে মুগ্ধ করছেন, আমি একটা লেখা রেডি করছি, সেই লেখা যেদিন পোষ্ট করব সেদিন আপনার এই পোষ্টের উদ্ধৃতি এবং লিংক পোষ্টে দেব বিধায় আপাতত, পোষ্ট প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।

বাই দ্যা ওয়ে ক্যারেন আমষ্ট্রং এর "বুদ্ধ" বইটা কি পড়ছেন? দারুন এক বই বুদ্ধর ওপর।

আবারো বললাম, আপনার লেখার মুগ্ধ অনুসারী হয়ে গেছি।

লিখুন আরো বেশী করে ব্রাদার।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৩:০৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: এই সিরিজ আপনারই লেখা দরকার ছিল ভাই। আপনি ব্লগের অনেকের প্রিয় মানুষ। আপনি লিখলে আলোচনাগুলো আরও বেগ পেত। এদিকে আমি অসামাজিক ব্লগার। কাজেই আমার এ আলাপ - যেটা সময়োপযোগী তো বটেই, কিন্তু অনেকের চোখের আড়ালে চলে যাবে। আপনি ভালো থাকবেন। ব্লগে আপনার উপস্থিতি অনুপ্রেরণাদায়ক।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৩:১০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ক্যারেন সাহেবের বইটি পড়ি নি। পড়েছি প্রফেসর নীরুকুমার চাকমার বই। নীরু স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ১৯৬৬ সাল থেকে অধ্যাপনা করেন। সুইজারল্যান্ডের জুরিখে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন কমনওয়েলথ স্কলার হিসেবে। ছাত্রজীবনে ওনার লেখা অস্তিত্ববাদ ও ব্যক্তিস্বাধীনতা বইটা পড়ে একজিশ্টেনশিয়াল ফিলসফি বুঝেছিলাম। খুবই সাদাসিধে ভাষায় দর্শন নিয়ে লেখেন।

৯| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ২:১৬

রোদ্দূর মিছিল বলেছেন: এরকম লেখায় মুগ্ধতা প্রকাশ না করাটা অন্যায়। ভালো লেখার জয় হোক। লেখককে ধন্যবাদ। আরও কিছু কথা বলার ছিলো। আরেকদিন হবে খন।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৩:১১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ! ভালো থাকবেন। কথা হবে।

১০| ০৭ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: এই ছবিটা আপনার জন্য।

০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:২৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আর আপনার জন্যে গ্যান্দা ফুল । রোজা রাখলে ইফতারের পর ফুলের ঘ্রাণ নিয়েন।

১১| ০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

পদ্মপুকুর বলেছেন: নীরুকুমার স্যার আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন, পড়াতেন এইথিজম অ্যান্ড দ্য ক্রিটিক অব রিলিজিয়ন। আপনি লিখেছেন- নীরুকুমার চাকমা স্যার খুবই সাদাসিধে ভাষায় দর্শন নিয়ে লেখেন। কিন্তু ক্লাসে স্যারের লেকচারগুলো অতটা সাদাসিধে হতো না। ওনার জানাশোনা-পড়াশুনা অত্যন্ত বেশি বেশি ছিলো। যে কারণে ক্লাসে লেকচারও দিতেন হাই লেভেলের, যা অনেক সময় আমাদের মত নাদানদের জন্য মাথার উপর দিয়ে যেত।

আমি এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হাবিব ভা্ইয়ের দারস্থ হতাম। আমাদের বেশ সিনিয়র কিন্তু সারাদিন লাইব্রেরিতে থাকতেন আর ধর্ম-দর্শন বিষয়ে পড়াশুনা করতেন। আমাদের সময়ে হাবিব ভাইকে লাইব্রেরিকেন্দ্রিক সবাই চিনত। আপনি উনাকে পেয়েছেন কিনা জানি না।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৩৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ক্লাসরুমে , আর বইয়ের পাতায় নীরু স্যারের দুই ভিন্ন মেরুর মানুষ হওয়ার কারণ হয়তো এই যে, ক্লাসরুমে আপনাদের দর্শনের একটা ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড আছে জেনেই স্যার লেকচার দিতেন। কিন্তু ওনার বই তো সাধারণ মানুষের পড়ে বোঝার জন্যে, কাজেই ওগুলো আসলেই খুব সাদাসিধে ভাষায় লেখা। প্রথমা , বেঙ্গল বুকস বা পাঠক সমাবেশ - ওনার পরের জেনারেশনের শিক্ষকদের লেখক হিসেবে পৃষ্ঠপোষকতা করলেও - তার আগের জেনারেশন , অর্থাৎ নীরু স্যার , প্রফেসর আহমদ শরীফ , সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীরা তাদের ইয়াং এইজে এই ধরনের গ্যাংস্টার প্রকাশনা সংস্থার (ব্যবসার সাইজের বিশালত্বের অর্থে) পৃষ্ঠপোষকতা পান নি। তবুও তারা একেকজন কত বড় মানুষ। নীরু স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেজেন্ড জি সি দেবের সমসাময়িক কালে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন - এতেই কি বোঝা যায় না যে কি গোল্ডেন জেনারেশনের মানুষ ছিলেন তিনি। হাবিব ভাইরা বরাবরই থাকে, আমাদের সময়েও দেখেছি এই ধরনের সিনিয়র ভাইদের যারা টেক্সট বইয়ের বাইরের রেফারেন্স বই নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে সময় কাটাতেন। আমাদের সময়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিডিং ক্লাব নামে একটা ওপেন লেকচারের প্ল্যাটফর্ম গড়ে ওঠে যেটা এখন রিডিং ক্লাব নামে সক্রিয়। বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম নামে আর একটা সার্কেল ছিল - যারা বোধয় এখনো ওপেন লেকচার আয়োজন করে। আমি নিজেও মুসলিম লিগের উত্থান ও পতনের ইতিহাস নিয়ে একটা বক্তৃতা দিয়েছিলাম ওদের আয়োজনে , ২০১৬ সালে। আপনি ঢাবির দর্শনের ছাত্র ছিলেন, জেনে ভালো লাগলো। আমাদের ইংরেজিতে ওয়েস্টার্ন ফিলসফির কোর্সটি পড়াতেন আপনার ডিপার্টমেন্টের রাশেদা ম্যাডাম, যিনি এখন রিটায়ারমেন্টে চলে গেছেন। দর্শন ক্লাসরুমে সাবজেক্ট হিসেবে যতটুকু উপভোগ করছি, তার চে' অনেক বেশী উপভোগ করছি এখন - স্বাধীনভাবে একটা রুটিন বানিয়ে নিয়ে পড়তে গিয়ে।

১২| ০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:০০

মা.হাসান বলেছেন: বিলাতের প্রসপারিটি কলোনিয়াল যুগেই হয়েছে। ভারতে আপনি রেভিনিউয়ের বিষয়ে যেমন বলেছেন, ল্যান্ড রিফর্মের নামে সব চুষে নিয়ে গেছে। রায়তওয়ারি, মহলওয়ারি বা সিস্টেমে জমির আবাদের ৫০% থেকে ৯৫% নিয়ে গেছে। বাংলার জমিদারি প্রথার কথা বললাম না। জার্মান রা কৃত্রিম নীল আবিস্কার না করলে নীল চাষ আরো দীর্ঘ দিন চলতো। ভারত থেকে কয়লা যেয়ে বিলেতের লোকদের ঘর গরম হতো। কলোনি চলে যাবার পর শেফিল্ডের লোহার কারখানা বা ম্যানচেস্টারের কাপড় মিল বা ডান্ডির পাট মিল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ততদিনে ওরা সব গুছিয়ে নিয়েছে।

বাইরে থেকে কিছু চাপিয়ে দেয়া হলে কি হতে পারে এটার একটা উদাহরন স্কুলে পড়ানো হয়েছিলো। খরগোস অস্ট্রেলিয়ার নেটিভ জন্তু ছিলো না। ইউরোপিয়রা খরগোস আনার পরে এরা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করতে শুরু করে। পরে মিক্সোমা ভাইরাস দিয়ে সরকার এদের মেরে ফেলতে বাধ্য হয়। কিন্তু এতে আরেক সমস্যা দেখা দেয়। খরগোসের মাংসের উপর নির্ভর করে কিছু শিল্প গড়ে উঠেছিলো। এই লোক গুলো রাতারাতি পথে বসে যায়। চিলিতেও একই ঘটনা ঘটেছিলো।

অন্ধ অনুকরণ ভালো না।
শিক্ষা খাতে কোন গবেষণা ছাড়া পরীক্ষা পদ্ধতি তুলে দেয়া, স্কুলে নৈর্ব্যক্তিক পদ্ধতি চালু করা, অবজেক্ট বেসড এডুকেশন চালু করা , সম্মিলিত শিক্ষা চালু করা - এসব অন্য দেশের অন্ধ অনুকরন মনে করি। নিজের দেশে প্রয়োজন , সামর্থ এবং প্রেক্ষাপট অনুসারে সিদ্ধান্ত (শুধু শিক্ষা খাত না, সব ক্ষেত্রে) নেয়া দরকার।

তবে আমি আইসোলেশন না করে, আত্মিকরণের পক্ষপাতি। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
মনোমুগ্ধকর লেখায় অনেক ধন্যবাদ।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার শব্দগুচ্ছের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

এদেশে আত্মিকরণের প্রকাশ্য রাজনীতি নাই, যদিও থাকা উচিৎ। অপরদিকে এদেশে একগ্রুপ আছে আইসোলেশনের রাজনীতিতে সক্রিয়। আইসোলেশনের পর একধাপ এগিয়ে গিয়ে সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। নৈতিকতা, মানবতাবাদ, ধর্ম, সত্য - এসব বিষয়ে তারা পুরোপুরি পাশ্চাত্যের অনুগামী। এদের রাজনীতি ছেঁটে না ফেললে, অন্তত এক্সপোজ না করে আত্মিকরণের দিকে পদার্পণ মুশকিল। নতুবা আত্মিকরণকেও তারা মিসকিনগিরি প্রমাণ করে ছাড়বে।

১৩| ০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আর আপনার জন্যে গ্যান্দা ফুল । রোজা রাখলে ইফতারের পর ফুলের ঘ্রাণ নিয়েন।

মাত্র ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড। বেশ লাগলো। উপভোগ করলাম।

১৪| ০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:১২

সুপারডুপার বলেছেন:

ভাই আমি মাদ্রাসার ছাত্র না। ছোটবেলার কোরআন পড়া থেকে বলা যায় , কোরআনে আল্লাহ, রব, ক্বুল, কিতাব , ইলম, আলেম, ঈমান , কাফির , রসূল , আয়াত , যিকর , আমল , আখের , আজাব , জুলম /জালিম ইত্যাদি প্রায়ই চোখে পড়ে । যারাই কোরআনের আলিফ বে তে ছে পড়েছে তারাই জানে। আর আপনি এই আলিফ বে তে ছে থেকে উদাসী স্বপ্ন সমন্ধে দুটি নিজের মনগড়া মিথ্যা সিদ্ধান্তে ও ব্যক্তি আক্রমনে পৌছালেন। অথচ উদাসী স্বপ্ন এই পোস্টে শুধু বলেছে " তাহলে আমরা আরবদের ধর্ম পালন করি কেন? তারা আমাদের কি কেড়ে নিছে? আবার প্রতিবছর হজ্বের নামে এত গুলো টাকা দিয়ে আসি!"

যারা যে ধর্মে গড়ে ওঠে তারা সেই ধর্মেরই বেশি সমালোচনা করে। আপনি যদি ডিফেন্ড দিতে চান তার পোস্টে যেগুলো লেখা আছে ঐ গুলোকে ডিফেন্ড দিয়ে মন্তব্য করে আসেন অথবা নিজেই পোস্ট দিতে থাকেন। লজিক্যাল হলে যে কেউই মেনে নিবে।

আর আপনিও উগ্রবাদীদের মত কথা বললেন: "দেশে ফিরে আসলে ধর্মীয় সহিংসা উস্কে দেয়ার অভিযোগে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। "কেউ যুক্তিগত কঠোর ধর্মের সমালোচনা করলে বাংলাদেশের আইনে তার কি শাস্তি ? রেফারেন্স সহকারে উত্তর দিবেন আশা করি। অথবা এই শাস্তির মানে আপনি কী বোঝাচ্ছেন দেশে গেলেই তার পিছনে ইসলামিক জঙ্গিদের লেলিয়ে দিবেন ?

আপনার এই কথা বড়ই পীড়াদায়ক। মাতৃভূমিতে মুক্তমনে কথা বলতে পারা যায় না অথচ পরদেশে পরদেশের ধর্ম সংস্কৃতি নিয়ে মুক্তমনেই কথা বলা যায় । ব্লগে আপনি ছাড়াও অনেকেই এই ধরণের থ্রেট দিতে দেখতেছি। মুক্তিকামী জনগণ কী এই জন্যেই দেশ স্বাধীন করেছিল ?

০৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনাদের সাথে যেকোনো আলাপে যাওয়া সময় নষ্ট, তবুও ...

কোরআনের সবচে বহুল ব্যবহৃত শব্দ কোনটা - এই প্রশ্নের উত্তরের বিবেচনায় ধর্মীয় অরিজিন বিচারের চেষ্টাটা প্রাথমিকভাবে ওভারজেনারালাইজেশন মনে হতে পারে, কিন্তু প্রশ্নটা দেখতে যত নিরীহ, আদতে তত নিরীহ না। এইটা আসলে কোরআনকে কে কিভাবে অ্যাপ্রোচ করে, সেটা জাজ করার একটা লিটমাস টেস্ট।

আপনি বিশাল একটা লম্বা লিস্ট দিলেন রিকারিং ওয়ার্ডের, যেগুলো কোরআনে একটু পর পর ফিরে আসে। উত্তরের প্রসেস ভুল ছিল। আমি একটা শব্দ চেয়েছিলাম। আপনার ছাড়াছাড়া একাধিক শব্দ লেখা দেখেই বোঝা যায় , আপনার কোরআন কি প্রিচ করে, সে ব্যাপারে আইডিয়া কতটুকু। এইটুকু জ্ঞান নিয়ে আবার কোরআনের রেফারেন্স দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন ইসলাম জঙ্গিবাদের ধর্ম। আপনার, আপনাদের মত মানুষদের সাথে কথা বলতে হয়, এটাই তো একটা মানুষ হিসেবে নিজের জন্যে লজ্জার ব্যাপার। না করেও তো উপায় নাই, নইলে তো আবার বগল বাজান - উত্তর দেয় নাই মানে যুক্তিতে পারে নাই। আপনাদের সাথে এই জন্যে কথা বলতে ভালো লাগে না, কারণ, আমি নিজে কখনো বেদ, বা বাইবেল, বা ত্রিপিটকের খুঁত খুঁজে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অন্যধর্মের মানুষকে কষ্ট দিতে চেষ্টা করি নি।

ধরেন একজন রেপিস্টের সাথে এক টেবিলে বসে সৌজন্যতার খাতিরে বসে কথা বলার মতই একটা শাস্তি, আপনাদের সাথে সেইন ওয়েতে কথা বলা।

আমার জিজ্ঞেস করলে আমি বলতাম কোরআনে সবচে বেশী ব্যবহৃত শব্দ 'রাহমান'। শব্দগুচ্ছ - রাহমানুর রাহিম, গাফুরুল ওয়াদুদ, আরহামুর রাহিমিন।

আমি একলাইন আরবির মানে বুঝি না। কিন্তু তিলাওয়াত করলে আমার চোখে এই শব্দগুলিই বারবার আসে। দয়াময়, পরম দয়াময়, পরম ক্ষমাশীল, এমন এক সত্ত্বা যার ক্রোধের উপর দয়া সর্বদা বিজয়ী হয়।

আমি যে ইসলাম চর্চা করি তার মূলমন্ত্র এইটা, ক্ষমাশীলতা, দয়াশীলতা, পরমতসহিষ্ণুতা, মধ্যপন্থা। বেশীরভাগ সাধারণ মুসলমানের ও তাই ই। আপনি মুসলমান না হতে পারেন, আপনার পাশের বাড়ির, পাশের পাশের বাড়ির মুসলমানদের দিকে তাকিয়ে দেখেন, তারা যদি ইসলাম মানে শান্তি না বুঝত, তাহলে আপনার আজকে বিদেশ বিভূঁইএ বসে টাইপ করা সম্ভব হত না।

আমার দৃঢ়বিশ্বাস , কোন মুসলমানের ঘরে জন্ম নেয়া মানুষের পক্ষে কোরআনের কনটেক্সট বিচ্ছিন্ন , বিকৃত আয়াত ও হাদিস নিজের ইসলাম বিরোধী প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ানোর জন্যে ব্যবহার করা সম্ভব না। চশমখোরির একটা সীমা তো আছে। এইজন্যে বললাম আপনার বন্ধু, মুসলমানের ঘরে জন্ম নেয় নাই, যদিও সে দাবী করে যে তার বাপ - মা প্রাকটিসিং মুসলিম।

বাকস্বাধীনতারও সীমা আছে। বাংলাদেশের নাস্তিকদের একটা বড় অংশের অ্যাসাইলাম জার্মানি। জার্মানিতে নাজিবাদের গুণগান করা সম্ভব? হিটলার , ২০২০ সালের পৃথিবীতে কতটা প্রাসঙ্গিক এই নিয়ে তারা সভা সেমিনার করতে দিবে? প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষের সহনশীলতার একটা সীমা আছে। সেটা মেনে কাজ করতে হবে। এইটা বুঝেই আপনারা দুর্গন্ধযুক্ত মিথ্যা ছড়ান যে - বাংলাদেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চার স্বাধীনতা নাই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। পৃথিবীর কোন দেশেই যা ইচ্ছা তাই বলে বেড়ানোর সুযোগ নাই।

আমি উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদের ঘোরবিরোধী। ধর্মের নামে সন্ত্রাসবাদের চর্চা যারা করে, মানুষ হত্যা যারা করে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা উচিৎ বলে মনে করি। জঙ্গিবাদ উস্কে দিচ্ছি - আপনার মন্তব্যে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত আমি যে বুঝি নাই তা না, তবে আনন্দের বিষয় কি জানেন? আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এখন বুঝেছে - মানুষের মাঝে বিভেদ, বিদ্বেষ ছড়িয়ে বেড়ানো এই ধরনের নোংরা কিটদের আর পরজীবীর মত দেশে পোষার প্রয়োজন নেই। দেশেই এখন আইন আছে, মানুষের বিশ্বাসে আঘাত হানে, এবং মিথ্যা বানোয়াট প্রকল্পের প্রণেতাদের এককথায় জেল জরিমানা করবার।

১৫| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৫৪

সুপারডুপার বলেছেন:

প্রশ্ন করলাম একটা উত্তর না দিয়ে ব্যক্তি আক্রমণের সূত্র ধরে ল্যাঞ্জা গুটিয়ে পিছনের গেট দিয়ে পালালেন কেন !

আপনি নিজেও কোরআন সমন্ধে কিছুই জানেন না কিন্তু অন্ধ ধর্মানুভূতির চোটে আলিফ বে তে ছে জাইনাই প্রশ্ন করে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন।

কোরআনে :
মিন - ৩২২৬ বার, আল্লাহ -২৬৯৯ বার, রব -৯৭৫ বার , ক্বুল ১৬১৮ বার, কিতাব ২৬০ বার -কুতিব ৪৯ বার ,ইলম ( আলিফ লাম মীম ) টাইপ ৮৫৪ বার, ঈমান ৫৯৬ বার , কাফির ৪৮২ বার , রসূল ৪৬২ বার, আয়াত ৩৮২ বার , যিকর ২০১ বার , আমল ৩৫৯ বার , আখের ২৪০ , আজাব ৩২২ বার , জুলম /জালিম ৩০৩ বার

যেখানে রাহিম ১১৬ বার , রাহমান ৫৭ বার ও রাহিমি ২৮ বার এসেছে।

আপনি মানুষ নাকি মানুষ নামের ..., কে জানে। আমার সাথে কথা বলতেতো লজ্জা করবেই। ধরেন একজন শিশুকামী জানোয়ারের সাথে এক টেবিলে বসে সৌজন্যতার খাতিরে বসে কথা বলার মতই একটা শাস্তি, আপনাদের সাথে সেইন ওয়েতে কথা বলা। আপনার ভাষায় বোঝা যাচ্ছে আপনি দেশে শিক্ষক নাম কলংক।

ঢাকা ভার্সিটির ইংরেজিতে পড়লেন কেন? আরবি বা ইসলামিক স্টাডি নিয়ে পড়লেন না কেন ? ইসলামের সেবা করে আখিরাতে বেহেস্ত কিনতে পারতেন। আর আপনার ও একটি পোস্টে ইনডাইরেক্ট ইঙ্গিত আছে আপনার মৌলবাদীদের সাথে যোগাযোগ থাকতে পারে। আপনার মত প্রাইভেট ভার্সিটির শিক্ষকের দেশে যেকোনো মুহূর্তে জঙ্গিবাদ উস্কে দেওয়ার আশংকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৪৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ১। ধান্দাবাজ ইসলামবিদ্বেষীদের আলোচনা আগানোর একটা উপায় হচ্ছে তাদের আগ্রাসী শব্দচয়ন। যেমন - "পেছনের দরজা দিয়া পালান কেন" , বা "অমুকে ইনায়া বিনায়া ইসলামের প্রচার করে" । ঐযে যেমন বলে, অফেন্স ইজ দা বেস্ট ডিফেন্স।

কেউ কোথাও পালায় নি। ইসলামকে, বাংলার মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্যে যে নোংরাভাবে আপনারা শব্দ উচ্চারণ, বাক্যচয়ন করেন - এই ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক নীচতা হজম করা যেকোনো সাধারণ মানুষের জন্যেই মুশকিল। সেই কারণে বারবার বলছিলাম যে - আপনার - আপনার মত ধান্দাবাজ ইসলামবিদ্বেষীদের সাথে কথা বলতে মানসিক কষ্ট হয়।
নিজের ধর্ম পরিচয় নিয়ে ইনায়ে বিনায়ে কথা বলার কিছু নাই। আমি টেবিল চাপড়ায়ে যদি বলি আমি মুসলমান। কিন্তু আমি যে মুসলমান, আর আমার পাশের লোকটা সংখ্যালঘু - এই বিভেদটা আমারে আপনাদের মত ধান্দাবাজ ইসলাম বিদ্বেষীদের চেয়ে বেশী আর কেউ স্মরণ করায়ে দেয় নাই।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৫৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ২। আপনারা, ধান্দাবাজ ইসলামবিদ্বেষীরা বিভেদ, বিচ্ছিন্নতা, বিদ্বেষ ছড়ানোর মিশন নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে লেখেন। এই ব্লগে আমার পেছনের লেখা ঘুরে আসেন, ইসলামকে ডিফেন্ড করার কোন মিশন নিয়ে এই ব্লগে আমার যাত্রা শুরু হয় নাই। কারণ, ধর্ম ডিফেন্ড করার মত কিছু নাই। ধর্ম/ ঈশ্বর আছে কি নাই - এইটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক আমাদের এই অঞ্চলে হাজার হাজার বছর ধরে চলে এসেছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। এই বিতর্ক সমাধা হবার না - তা আমি জানি। পাশ্চাত্যে এই বিতর্ক এখন হয়তো আর প্রাসঙ্গিক না। কিন্তু যেহেতু আমাদের অঞ্চলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চর্চার প্রবণতা এখনো আছে, যেমন পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়ার সরকার এখন চালায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশেও অসংখ্য ইসলামী রাজনৈতিক দল আছে, কাজেই পরিশীলিত উপায়ে কিভাবে সব ধর্মের লোক মিলে মিশে একসাথে থাকা যায় - এই নিয়ে আলোচনা সমালোচনা থাকবেই।

কিন্তু আমার আপত্তি আপনাদের ধান্দাবাজি নিয়ে। প্রথমে আপনারা বলেন - আপনারা ধর্মবিরোধী। তারপর নিয়মিত বিরতিতে কেবল ইসলাম নিয়ে জঘন্য ভাষায় লিখতে থাকেন। অথচ, এই অঞ্চলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বাপ হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যদি ক্রমাগত লিখে কোন মতের বিরোধিতা করা প্রয়োজন থাকে বিগত দশ বছরে, তা ছিল বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের পুনরুত্থানের স্বপ্নের বিরুদ্ধে লেখা। বাংলাদেশে আজ ১৪ - ১৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী রাইট নাও বিদ্যমান। রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী কিভাবে ঐতিহাসিকভাবে বছরের পর বছর ধরে নির্যাতিত হয়ে এসেছে আপনাদের উচিৎ ছিল তা নিয়ে লেখা। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় আপনাদের উচিৎ ছিল প্রিয়া সাহার মত উড়া মন্তব্য করা ছাড়া স্পেসিফিক ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করা। এরকম ঘটনায় শিক্ষিত বাঙ্গালী মুসলিম সমাজ আগেও নির্যাতিতদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, এখনো দাঁড়ায়, ভবিষ্যতেও দাঁড়াবো।

কিন্তু আপনারা না করেন মুসলমানদের দ্বারা খুব স্পেসিফিকভাবে কোন জায়গায় সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে, তা নিয়ে প্রতিবেদন, না লেখেন বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশের রাজনীতিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উত্থান , বা মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের এথনিক ক্লিনসিং কিভাবে আমাদের বাংলাদেশেও পরিচয়ের রাজনীতি ও সহিংসতা তৈরি করতে পারে সে নিয়ে কোন সমালোচনা। আপনাদের প্রচেষ্টা থাকে ইসলামকে জঙ্গিবাদ, মধ্যযুগীয় বর্বর চিন্তাচেতনার সমার্থক হিসেবে প্রচারণার, আর নিউটনের থার্ড ল' দিয়ে স্রষ্টার অস্তিত্ব মাপার। আপনারা পরিকল্পিতভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচয় সন্ত্রাস ছড়ান। যাতে বাংলাদেশের কোন মুসলমান জন্ম নেয়ার পর নিজের পরিচয় দেয়ার আগে লজ্জা পায়, লজ্জিত হয়।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৫৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ৩। ইসলাম সংক্রান্ত সবকিছুকেই হেয় করে দেখার রাজনীতি আপনারা কিভাবে করেন, তা আপনার মন্তব্যেই স্পষ্ট।

আমাকে প্রশ্ন করলেন ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা না করে আরবি সাহিত্য নিয়ে পড়লাম না কেন। আরবি সাহিত্য, পালি সাহিত্য, সংস্কৃত সাহিত্য, বা বাংলা - এগুলোকে ইংরেজি সাহিত্যের চে' ছোট করে দেখার নামই কলোনিয়াল প্রোপ্যাগান্ডা। আর আরবি সংস্কৃতি, সাহিত্য নিয়ে যে পড়ে সে একটা মধ্যযুগীয় বর্বর, তার মাথায় ঘিলু বলতে কিছু নাই - আপনাদের এই ধ্যানধারণা, মুসলমান পরিচয়কে হেয় করার ইসলামবিদ্বেষী রাজনীতি।

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৫৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন:
৪। আপনাদের মত ধান্দাবাজ ইসলাম বিদ্বেষীদের রেপিস্ট কেন বললাম ব্যাখ্যা দিই। আপনারা অপ্রয়জনে সাধারণ মুসলিমদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে খোঁচা দিয়ে দিয়ে তাদের মানসিক শান্তিকে ধর্ষণ করেন।

আবার দেখেন, আমাকে বললেন - আমার সাথে কথা বলা নাকি শিশুকামী ব্যক্তির সাথে বসে কথা বলা। মুসলমান মানেই শিশুকামী - আপনাদের রাজনৈতিক প্রচারণার ট্যাগলাইন এইটা। ইসলামের প্রতি সফটকর্নার রাখা মানেই শিশুকামী হওয়া বলতে আপনারা আসলে কি মিন করেন? আপনার ওস্তাদ , যারে এক্সপোজ করার পর ব্যক্তি আক্রমণ করলো বলে বেহায়ার মত আমার ব্লগে এসে কান্না করা শুরু করলেন - এঁর আগেও আপনার মন্তব্যে কোন উত্তর করি নাই সেটা দেখার পরেও, তার বাপ - মা না আচরি মুসলমান ছিল বলে সে দাবী করে? তারে জিজ্ঞেস করেন তার বাপ - মা পেডোফাইল ছিল কিনা।

শিক্ষক হবার পরেও নোংরা ইঙ্গিত পূর্ণ কথা কেন বলছি? আপনাদের , ইসলাম বিদ্বেষী ধান্দাবাজদের কথার সূত্র ধরেই মন্তব্য করছি। আমার নেতা বলেছিলেন - হোয়েন ইউ প্লে উইথ এ বাস্টার্ড , প্লে লাইক এ বিগার বাস্টার্ড।

০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:০৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন:
৫।
আপনার মত ধান্দাবাজ ইসলাম বিদ্বেষীরা বলে গালিগালাজ নাকি কেবল মাথামোটা মুসলমানেরাই করে। যখন আপনারে এক্সপোজ করলাম, আমারে মানুষরূপী কি না কি বলে গালি দিতে চাইলেন।

আমার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ অভিযোগ এই আনতে পারলেন যে, আমি নাকি শিক্ষক নামের কলঙ্ক?

ক্লাসরুমে আমি ধর্ম নিয়ে কখনোই আলোচনা করি না। ধর্মকে আমি প্রচার করে বেড়ানোর বিষয় মনে করি না। এই ব্লগে, গত সাত বছরে প্রথমবারের মত আমি বঙ্গীয় মুসলমানদের পরিচয়ের রাজনীতি নিয়ে লেখা শুরু করেছি আপনার ওস্তাদ যখন সলিমুল্লাহ খানের পোস্টে আমার ক্রিটিকাল লেখা পড়ে আমারে মার্ক করে, এবং পরবর্তীতে আমারে আপনাদের ইসলাম বিরোধী ধান্দাবাজিতে টানার চেষ্টা শুরু করে। ওর নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত ব্লগ যদি আমার চোখে না পড়তো, আমার ইসলাম নিয়ে প্রচার দুই লাইন লেখার প্রয়োজন পড়তো না। আরে ভাই, আমার ধর্ম আমারে শিখায় বাপ - মার দিকে মমতা ভালোবাসা নিয়ে একবার তাকানো হজ্জ করার মত উত্তম কাজ। আমার ধর্ম আমারে শিখায় নিজের স্ত্রীর প্রতি অনুরক্ত থাকা। আমার ধর্ম আমারে শিখায় নিজের প্রতিবেশীরে অভুক্ত রেখে নিজের পেট ভরে যে, সে মুসলমান না। আমার প্রয়োজন আছে এইরকম একটা জীবনব্যবস্থাকে আবার আলাদা করে ক্রিটিক্যালি জাজ করার? এইটা সেই ইসলাম, যেটা ইসলামবিদ্বেষী ধান্দাবাজদের চোখে কখনোই পড়বে না।

আমার ক্লাসরুমে আমার সবচে বেশী স্নেহ পায় ক্রিয়েটিভ ছেলেপেলেরা - যারা বই পড়ে, গান গায়, কবিতা লেখে, ছবি আঁকে। আমি সবচে বেশী আরাম পাই সেই ছেলেপেলেদের সাথে কথা বলে যারা চিন্তা করে, যদি সে নাস্তিক হয় তবুও। কারণ, তাদের মধ্যে এখনো আপনাদের নোংরামির ভাইরাস ঢুকে নাই। আর যাতে ঢুকতে না পারে, শিক্ষক হিসেবে সেই চেষ্টাই আমি আজীবন করে এসেছি, করে যাবো। আমি শিল্পকলার ইতিহাস পড়াই। পেইন্টিং এক্সিবিশন হলেই তার ক্রিটিসিজম করবার জন্যে আমার ডাক পড়ে। ছেলেপেলেদের চিত্র সমালোচনা শিখাই। ওদের র‍্যাগ ডে তে নিজে গিটার কান্ধে নিয়ে গান গাই। আমার সাথে ছেলে পেলের গানের চিৎকার এক স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শোনা যায়। ঢাকা শহর জুড়ে আমার আড়াই হাজার ছাত্রছাত্রী আছে। যে কাউকে র‍্যান্ডমলি আমাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে আমার দাবীর সত্যাসত্য বিচার করা যাবে।

আর আমারে বানাবেন জঙ্গিবাদের প্ররোচনাদায়ী?

ধান্দাবাজি আর কারে বলে।

০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:১২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন:
৬। "আমরা আসলে মুছলমান, কেন্তু আমরা এছলামের সমালোচনা করতে ভালোবাসি" বলে যে মিথ্যাচার আপনারা করেন, সেটা আপনার লেখার সূত্র ধরে এক্সপোজ করি -

কোরআন শরিফে কোনশব্দ কতবার আছে এইটার একটা পরিসংখ্যান যে উপরে দিলেন - এইটা কম্পিউটারে ওয়ার্ড কাউন্ট করে বের করলেন না?

যার জন্ম মুসলমানের ঘরে, সে কোরআনরে একটা সফটঅয়্যার দিয়া যাচাই বাছাই করবার দুঃসাহস দেখাইতে পারে না বলে আমার বিশ্বাস।

আর, "রাহমান" - শব্দটা যদি কোরআনে ৫৭ বার না থেকে একবারও মাত্র থাকতো, আমি সেইটাকেই শক্ত করে চেপে ধরে সেই গুণ নিজের মধ্যে লালন করার চেষ্টা করতাম।

এইটা হচ্ছে পরিচয়সন্ত্রাসী ধান্দাবাজের কোরআন পাঠ , আর মুসলমানের কোরআন পাঠের পার্থক্য। একই কথা পৃথিবীর সকল ধর্মের ধর্মগ্রন্থের ক্ষেত্রে খাটে।

১৬| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৫০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: প্রিয় পাঠক , যারা পোস্ট পড়ার পর, বা পড়া ছাড়াই পুনরায় পপকর্ণ হাতে কমেন্ট সেকশনে চলে এসেছেন - তাদের উদ্দেশ্যে অগ্রিম দুঃখপ্রকাশ করি - কিছু মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যে।

যারা মোটামুটি একটা দীর্ঘসময় ধরে এই ব্লগে লিখছেন, তাদের জানার কথা - স্মার্টনেস, উন্নত চিন্তা, মধ্যযুগীয় বর্বরতা, শিশুকামীতা, ছুপাল্যাঞ্জাধারী - ইত্যাদি শব্দের নিজস্ব পরিভাষা তৈরি এবং ব্যাবহার করে করে এক শ্রেণীর ব্লগার এই ব্লগে দীর্ঘদিন যাবত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এদের দাবী মোতাবেক , পাশ্চাত্যকে দুইটা গালি দিলে , মধ্যপ্রাচ্য, বা আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ইসলামকে চারটা গালি যদি না দিতে পারেন, তাহলে আপনি মধ্যযুগীয় বর্বর, জামাত শিবির, এবং জঙ্গি মদদদাতা।

এদের প্রতি বিরক্তি থেকে কিছু মন্তব্য এদিক সেদিক সরে গেছে। দেখবেন, সে সমস্ত মন্তব্যে আমি ধর্ম বিরোধিতার নাম করে কিভাবে এরা দীর্ঘদিন যাবত মূলত ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে এসেছে , তারা কিভাবে তাদের সংঘবদ্ধ মাস্তানি করে বেড়ায়, তাদের চিন্তার প্যাটার্ন কি - ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করেছি। এদের চিহ্নিত করা ও প্রয়োজন।

এ বিষয়ে আলাদা একটা প্রবন্ধই লেখা যেত, আপাতত কমেন্ট সেকশনেই আলাপগুলি থাক।

ধর্মকে পুঁজি করে কিভাবে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়েও লেখা থামানো যাবে না। এ গুরুদায়িত্ব আপনি - আমি - আমরা সকল সচেতন বাংলাদেশের নাগরিক জীবনভর করে যাবো, এই আকাঙ্খা রাখি।

শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.