| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিমন
ভিন্নমত সহ্য করতে পারা এক বিরাট গুণ। সকল ভিন্নমত উদার দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টায় আছি।
সাহিত্যে নোবেলজয়ী কলম্বিয়ান লেখক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস রচিত বিশ্বসাহিত্যের অমর কীর্তি উপন্যাস 'নিঃসঙ্গতার একশ বছর' (one hundred years of solitude)। এর পটভূমিতে রয়েছে মাকোন্দা নামের একটি গ্রাম, আর প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে একটি পরিবারের জীবনধারা। এই পরিবারে হঠাৎ একদিন হাজির হয় রেবেকা নামের এক কিশোরী, সাথে মৃত মা বাবার হাড়গোড়ের বস্তা, সেই হাড়গোড় আবার নড়াচড়া করে।
এই কিশোরী গ্রামের সবাইকে এমন এক অমিয় সুধা পান করিয়ে আবিষ্ট করে রাখে যে, গ্রামের কেউ আর ঘুমায় না, নিদ্রাহীনতার গণরোগ দেখা দেয়। নিঘুমের অবস্বাদগ্রস্ততায় ধীরে ধীরে মাকোন্দা গ্রামের মানুষ স্মৃতিহীনতায় নিমজ্জিত হয়, ধীরে ধীরে সব ভুলতে থাকে সবই। মনে রাখার চেষ্টা হিসেবে সবকিছুর উপর লিখে রাখা শুরু করে, যেমন গরুর গায়ে লিখে দেয়, এর নাম গরু, এর কাজ দুধ দেয়া।
একটি জাতির সম্মিলিত স্মৃতি ও ইতিহাস তার অস্তিত্বের মেরুদণ্ড। ইতিহাস মানুষকে জানায় তারা কোথা থেকে এসেছে, কীভাবে সংগ্রাম করে টিকে আছে, আর কোন মূল্যবোধে নিজেদের গড়ে তুলেছে। যখন কোনো জাতি তার অতি গুরুত্বপূর্ণ অতীত তাচ্ছিল্যের সাথে ভুলে যায়, তখন সে নিজের পরিচয় হারায়, নিদারুণভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে, এবং অপমানের সাথে ভবিষ্যতের পথনির্দেশ হারায়। সম্মিলিত স্মৃতি ও ইতিহাস মানুষকে একসূত্রে বাঁধে- তাদের মধ্যে জন্ম দেয় আত্মমর্যাদা আর ঐক্যের বোধ।
আমাদের একজন পিনাকী আছেন। অসীম ক্ষমতাধর এই ইউটিউবার জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব করার মত যে ঘটনা, যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ বলি, সেটি নিয়ে সীমাহীন তাচ্ছিল্য আর তুচ্ছতার যে বিবরণ কোটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে চলেছেন, তাতে করে এই পিনাকী 'নিঃসঙ্গতার একশ বছর' উপন্যাসের সেই রেবেকা, যিনি বাঙালির সেই গর্বের ইতিহাস ভুলিয়ে দিয়ে সমগ্র জাতিকে মর্যাদাহীন এক বিশৃঙ্খল আর অনৈক্যের অশ্লীল আবরণে মুড়িয়ে দিতে তৎপর।
তবে যে অশেষ রক্ত আর অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করে আমাদের পুর্বপুরুষেরা এই অপার মহিমার ইতিহাস আমাদের এনে দিয়েছেন, আমাদের উচিত হবে না কতিপয় অপরিণামদর্শী মিথ্যাচারী আর প্রতারকের পাল্লায় পড়ে অকৃতজ্ঞের মত সেটি ভুলে যাওয়া।
উক্ত উপন্যাসে যেমন এক রহস্যময় জিপসি মেলকিয়াদেসের আবির্ভাব ঘটে, যিনি সবাইকে তাঁর জাদুকরী রস খাইয়ে গ্রামবাসীদের স্মৃতি ফিরিয়ে আনেন, শেষ হয় সামষ্টিক বিস্মৃতির। আমাদেরও একদিন কোন এক মেলকিয়াদেস আসবেন, ভেঙ্গে দিবেন এই মিথ্যার বেসাতি, আর তখন একাত্তুর চিরদিনের সবার হয়ে যাবে। সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা!
১লা ডিসেম্বর
জাহিদ কবির হিমন
বার্লিন থেকে
২|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩৫
কামাল১৮ বলেছেন: যাদুবাস্তবতার এক অমর কৃত্তি এই নিঃসঙ্গতার একশ বছর।আনিসুজ্জামানের অনুবাদ প্রকাশিত হবার সাথে সাথে পড়েছি।কুলাঙ্গার পিনাকির সাাথে রেবেকার তুলনাটি যথাযথ হয়েছে।
৩|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:০০
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: আসলেই, বইটি পড়া না থাকলে বুঝতে পারতাম না। একটা জেনেরেশনকে কীভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে চোখের সামনে, পড়ার টেবিলে আর ফেরাতে পারেনি, শুধু রাস্তায় নামিয়েই ওনার কাজ শেষ।
৪|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়ে মজা পেলাম।
৫|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: পিনাকী ভালো মানুষ নন।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২
ক্লোন রাফা বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন অল্প কথায়! এখন পিনাকি থেকে , পিংকি গং হয়েছে
আপনাকেও,বিজয়ের শুভেচ্ছা ॥
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু॥