নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন। তাই আরাফাতে পৌঁছেই অধিকাংশ হাজ্জ্বী ব্যক্তিগতভাবে নফল ইবাদতে মশগুল হয়ে গেলেন। উচ্চঃস্বরে ঘন ঘন তালবিয়া এবং নিচুস্বরে তাসবিহ, তাহলিল ও দরুদ শরীফ পাঠ করতে থাকলেন। বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষাভাষী হাজ্জ্বীগণ দলে দলে আরাফাতের ময়দানে এসে জড়ো হতে থাকলেন। তার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের হাজ্জ্বীগণকেই দেখলাম, হাতে নিজ নিজ এজেন্সীর পরিচিতি ব্যানার সহকারে বিভক্ত হয়ে তাঁবুর অভন্তরীণ এলাকায় দড়ি দিয়ে সীমারেখা টেনে নিজেদের জন্য জায়গা দখল করে নিতে। হজ্জ্বে এসেও তাদের এ দখলদারী মনোবৃত্তির প্রদর্শন দেখে আমি রীতিমত তাজ্জব বনে গেলাম। তাদের কিছু নেতা ও পাতিনেতার হাতে হ্যান্ডমাইক ধরা ছিল। সেটা দিয়ে মাঝে মাঝেই তারা অনাবশ্যক ওয়াজ নসিহত করতে শুরু করলেন। নিজস্ব ইবাদতে বিঘ্ন ঘটায় এতে অনেক হাজ্জ্বী বিরক্ত বোধ করতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই কয়েকজন হাজ্জ্বী সাহেব তাদের নেতাদেরকে এসব থামাতে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলেন। এতে অবশ্য কাজ হয়েছিল, তবে প্রবণতাটা মাঝে মাঝেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল।

আমার একটা দুশ্চিন্তা ছিল ওয়াশরুম ব্যবহার ও গোসলের ব্যবস্থা নিয়ে। তাই সকাল সকাল ওয়াশরুম ব্যবহার করে গোসল সেরে নিলাম। নিজ হাতে এহরামের কাপড় ধুয়ে নিয়ে রৌদ্রে শুকাতে দিলাম এবং দ্বিতীয় সেটটা পরে নিলাম। সেদিন অত্যধিক গরম পড়েছিল। প্রখর সূর্যতাপে এক ঘণ্টার মধ্যেই এহরামের মোটা কাপড়ও শুকিয়ে গেল। ওয়াশরুম ও গোসলের ব্যবস্থাপনা যতটুকু আশা করেছিলাম, তার চেয়ে ভালোই ছিল। তারপর তাঁবুতে ফিরে ইবাদতে মনোনিবেশ করলাম। যোহর ও আসরের নামায তাঁবুর ভেতরেই জামাত বেঁধে পড়ে নিলাম। মাঝে মাঝে ক্লান্তিজনিত কারণে ঘুমে চোখ বুঁজে আসছিল। দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে ন্যূনতম বিশ্রাম নিয়ে পুনরায় উঠে অযু করে ক্ষণে ক্ষণে প্রার্থনায় আত্মনিয়োগ করতে থাকলাম।

মধ্যাহ্নের পর আমরা এসি’র তাঁবু ছেড়ে বের হয়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে যে যার মত প্রার্থনা করতে থাকলাম। প্রচন্ড দাবদাহে যেন প্রাণ ওষ্ঠাগত, তথাপি প্রার্থনায় একাগ্রতা আনার জন্য সবাই একটু নিরিবিলি জায়গা খুঁজছিল, যেখানে দাঁড়িয়ে কোন distraction ছাড়াই আপন মনে প্রার্থনা করা যায়। যারা একটু সৌভাগ্যবান, তারা হয়তো কোন গাছের ডালের নিচে একটুখানি সরু ছায়ার আশ্রয় খুঁজে পেয়েছিল। বাকিদের অধিকাংশই কাঠফাটা রোদে উন্মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়িয়েই দু’হাত তুলে মোনাজাত করছিল। এহরাম পরা অবস্থায় মাথা অনাবৃত রাখতে হয়। ফলে, মাথায় সরাসরি রৌদ্রের তাপ পড়ায় মনে হচ্ছিল যেন মাথার মগজও তপ্ত হয়ে বের হয়ে আসবে। তাঁবুর অদূরে দেখলাম চলৎশক্তিহীন এবং অসুস্থ হাজ্জ্বীগণকে এ্যাম্বুলেন্সে করে তারকাঁটার ওপারে একটি খোলা জায়গায় সমবেত করা হয়েছে যেন তারা আরাফাতের ময়দানে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে ইমামের বয়ান শুনতে পান। স্থানীয় এবং প্রবাসী দানশীল ব্যক্তিরা এবং সৌদি হজ্জ্ব মন্ত্রণালয়ের স্বেচ্চছাসেবকরা দফায় দফায় এসে ক্রেটের পর ক্রেট পানি ও সফট ড্রিঙ্কস রেখে যাচ্ছিল সর্বত্র, অতিরিক্ত গরমে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য।

আসরের নামাযের পর থেকে সূর্যের প্রখরতা একটু একটু করে হ্রাস পেতে শুরু করলো। প্রায় সকল হুজ্জাজ তখন একে একে তাঁবু থেকে বের হয়ে আশেপাশের এলাকায় পায়চারি করতে করতে প্রার্থনা করতে থাকলেন। কেউ কেউ ক্বিবলামুখি হয়ে এক জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে নিবিষ্ট মনে দোয়া দরুদ পড়তে থাকলেন। এক সময় তাকিয়ে দেখি আমার স্ত্রী ও পুত্রও আমার কাছাকাছিই রয়েছেন এবং তারা তাদের মত করে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। অন্যরাও কেউ কারও সাথে কথা বলছেন না, খুব প্রয়োজনে ইশারা-ইঙ্গিতে কমিউনিকেট করছেন। সময়টা মহামূল্যবান। এ সময়ে বিশ ত্রিশ লক্ষ লোক একসাথে স্রষ্টার নিকট তাদের চাওয়া পাওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। উদ্দেশ্য, স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও ক্ষমা এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ অর্জন।

নিয়মানুযায়ী আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সশরীরে অবস্থান করতে হয়। তারপর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা হতে হয়। পথিমধ্যে একটি নির্দিষ্ট মাসজিদে থেমে মাগরিব ও এশার নামায একসাথে পড়তে হয়। যানজট কিংবা লোকজটে আটকে গেলে মুজদালিফা এলাকার যে কোন সুবিধামত একটি জায়গা খুঁজে নিয়ে সেখানে মাগরিব ও এশার নামায একসাথে পড়তে হয়। আমি যখন অনুমান করলাম যে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে যাত্রার সময় প্রায় সমাগত, তখন স্ত্রী ও পুত্রকে কাছে ডেকে নিয়ে আমরা একসাথে কিছুক্ষণ মুনাজাত করলাম। ইতোমধ্যে বাসে উঠে আসন গ্রহণ করার আহবান জানানো হলো। আমরা ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে নিয়ে আমাদের জন্য চিহ্নিত বাসে আসন গ্রহণ করলাম। বাস মাগরিবের ওয়াক্তের কাছাকাছি সময়ে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। আরাফাত ময়দান ত্যাগের প্রাক্কালে হুজ্জাজগণ অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষবারের মত আরাফাতের দিকে তাকিয়ে সমস্বরে তালবিয়া পাঠ করতে লাগলেনঃ “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক! ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা-শারিকা লাক”। অর্থাৎ, “আমি হাজির, হে আল্লাহ, আমি হাজির! আমি হাজির, তোমার কোনো শরীক নেই, আমি হাজির; নিশ্চয়ই যাবতীয় প্রশংসা ও নেয়ামত তোমারই এবং রাজত্বও তোমার। তোমার কোনো শরীক নেই”!


ঢাকা
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
শব্দ সংখ্যাঃ ৬৮৫

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। আশা করি ভাল আছেন?
পূর্বের দুটি পর্ব পড়া হয়েছে,পরের পর্ব গুলি পড়ে তারপর এটি পড়ব।আপতত শুধু একটু নিজের উপস্থিতি দিয়ে গেলাম আর কি।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
আচ্ছা, ঠিক আছে।
প্রথম মন্তব্য ও 'লাইক' এর জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম।
শুভ সকাল।

একদিন আমি স্ত্রী আর কন্যাকে নিয়ে হজে যাবো।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
ভালো কথা। ভালো করে এখন থেকেই নিয়্যত ঠিক করে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দিন। হজ্জ্বে শারীরিক শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই শারীরিক সক্ষমতা পুরোপুরি থাকতে থাকতেই হজ্জ্ব পালন করে নেয়া ভালো।

৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১৫

কিরকুট বলেছেন: দিনে দিনে হ্বজের ব্যয় যেভাবে বাড়ছে এতে হ্বজ পালন করা দুঃসাধ্য হয়ে পরছে ।

৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৬

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আরাফাতের ময়দানে আমি পেয়েছিলাম ৪৮ ডিগ্রী। ওজুর জন্য পানিতে হাত দিতেই গরমে চমকে উঠেছিলাম। আরাফাতের ময়দানে খাবার পানি আর খাবারের অফুরন্ত আয়োজন থাকে সৌদি ধনীদের তরফ থেকে। আমাদের সাথের কিছু হাজী যোহর আর আসর ৪ রাকাত করে পড়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেছিলেন। আমাদের ছাউনিতে দু'জন চীনা হাজী ছিলেন। তাঁদেরকে আমাদের জামাতে অংশ নিতে বলার পর তাঁরা প্রথমে রাজী হন নাই। তারপর আঙুল দেখিয়ে জানতে চাইলেন ৪+৪ ? আমি বললাম ২+২। তখন তাঁরা খুশি মনে আমাদের সাথে যোগ দিলেন। তারপর বলা শুরু করেন পশ্চিম কোন দিকে? নিয়াতেই আছে নামাজ কিবলামুখি হয়ে পড়ার কথা। সেখানে পশ্চিম আসে কোথা থেকে সেটাই অবাক লাগে।

৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কবে যে যেতে পারবো আল্লাহ জানেন। আল্লাহ আমাকে কবুল করুন
আমার জন্য দোয়া করবেন ভাইয়া

৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



এই পর্বটিও আলহামদুলিল্লাহ, চমৎকার লিখেছেন। জাজাকুমুল্লাহু খাইরান। পাঠের পরে মনে হয়েছে, এটি কেবল একটি হজ্জ্ববৃত্তান্ত নয়, এটি যেন আরাফাতের প্রখর রৌদ্র, অশ্রুসিক্ত দোয়া এবং আত্মসমর্পণের নীরব আর্তনাদকে হৃদয়ের ভেতর এনে দাঁড় করিয়ে দেয়। আপনার বর্ণনায় কোনো কৃত্রিমতা নেই; আছে একজন বান্দার নিঃশব্দ বিস্ময়, আত্মসমালোচনা এবং রবের দরবারে সম্পূর্ণ সমর্পিত হয়ে যাওয়ার আন্তরিকতা। বিশেষ করে আরাফাতের মাঠে মানুষের ভিড়ের মাঝেও একাকিত্ব, ইবাদতের ব্যাঘাত এবং তীব্র গরমের কষ্টকে ছাপিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অপেক্ষার যে দৃশ্য আপনি এঁকেছেন, তা পাঠকের মনকে গভীরভাবে স্পর্শ করে। শেষ মুহূর্তে তালবিয়ার সমবেত ধ্বনি ও বিদায়ের দৃশ্য সত্যিই চোখ ভিজিয়ে দেওয়ার মত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনার এই কবুলিয়াতপূর্ণ অভিজ্ঞতাকে আমাদের জন্য শিক্ষণীয় ও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কবুল করুন।

আল্লাহ তাআলা আপনাকে সুস্থতা, দীর্ঘ নেক হায়াত, ঈমানের দৃঢ়তা এবং কলমে বারাকাহ দান করুন। আপনার ইবাদত, দোয়া এবং এই হজ্জ্ব কবুল করে নিন। আমিন।

৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:২২

আহলান বলেছেন: আমার জানা মতে আরাফার ময়দানে সূর্যদ্বয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে তারপর মুজদালিফার দিকে রওনা হতে হয়। রাতে উপস্থিত হয়ে আসর পর্যন্ত অবস্থান্কেএটা ঠিক কেমন মনে হলো ...যাই হোক আল্লাহ সবার হজ্জ্বকে কবুল করুন।

৮| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৭

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
আমার বাবা-মা দুজনেই হজ্জ এবং ওমরা করেছেন। প্রথমবার গিয়েছিল মনে হয় ২০০৯ সালে।‌ স্বাভাবিকভাবেই মহিলাদের মতো হজ্জ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা দোয়া আরো নিয়ম-কানুন নিয়ে আমার আম্মুর আদব/আবেগ একটু বেশি।
দুইজনের ইহরামের কাপড় যত্ন করে রেখে দিয়েছেন, যাতে এটা দিয়েই দাফন করা হয়।

বাবার কিছুটা অসুস্থতার কারনে না হয় দুইজনের গতবছর ওমরা যাওয়ার কথা ছিল। আমি ইনিয়ে-বিনিয়ে নানাভাবে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করি। আশে পাশে মানুষের এতো অভাব-অনটন, ইকোনমিক স্ট্রেস একবারে বেশি কারো হজ্জ করার কোন কারন দেখি না। এই টাকা দান করে দেওয়া উচিত।

৯| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৪

কামাল১৮ বলেছেন: হজ্জ্বের অনেক রীতি পৌতলিকদের দ্বারা গঠিত।তার মধ্যে প্রধান হলো সাতপাক ঘোরা।পৌত্তলিকরা নেংটা হয়ে ঘুরতো এখন এক কাপড়ে ঘুরে।কি অসভ্য রীতি।পাথরে চুম খাওয়া।যেটা আবার অনেক দিন পায়খানায় লুকিয়ে রেথেছিলো ইয়েমেনিরা।

১০| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



@কামাল১৮,

আপনার অত্যন্ত আপত্তিকর এবং বিদ্বেষপূর্ণ জঘন্য মন্তব্যটির বিষয়ে কিছু কথা বলা দায়িত্ব মনে করছি। বস্তুতঃ এই ধরনের মন্তব্য মূলত ইতিহাস, ইসলামী আকিদা এবং হজ্জ্বের প্রকৃত তাৎপর্য সম্পর্কে গভীর অজ্ঞতার ফল।

প্রথমত, হজ্জ্বের মূল রীতিসমূহ কাবা তাওয়াফ, সাফা মারওয়া সাঈ, আরাফায় অবস্থান এগুলো কোনো পৌত্তলিক সংস্কৃতি নয়; বরং হযরত ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)–এর মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত ইবাদত। পরবর্তীতে মূর্তিপূজকরা এই পবিত্র রীতিগুলোকে বিকৃত করেছিল। ইসলাম এসে সেই বিকৃতি দূর করে আসল ইবরাহিমি তাওহিদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে।

দ্বিতীয়ত, নগ্ন হয়ে তাওয়াফ করা ছিল জাহেলি যুগের একটি বিকৃত প্রথা, যা ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ হজ্জ্বকে শালীনতা, পর্দা ও তাকওয়ার ইবাদতে রূপ দিয়েছেন। কাজেই বিকৃত আচরণকে ইসলামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ঐতিহাসিকভাবে ভুল এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অসৎ।

তৃতীয়ত, হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা কোনো পাথর পূজা নয়। এটি কেবল রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর সুন্নাহ অনুসরণ। হযরত উমর (রা.) স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, এই পাথর নিজে থেকে কোনো উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না; তিনি শুধু নবী ﷺ–কে তা করতে দেখেছেন বলেই করেছেন। এখানে বিশ্বাস মূলতঃ পাথরের ওপর নয়, বরং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের ওপর।

সবশেষে বলা প্রয়োজন, কোনো ধর্মীয় ইবাদতকে "অসভ্য" বা "জঘন্য" বলা ভিন্নমত প্রকাশ নয়; এটি বিদ্বেষপূর্ণ ও দায়িত্বহীন বক্তব্য। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলেও ধর্মীয় অনুভূতি, ইতিহাস এবং সত্যের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা বজায় রাখা একটি সভ্য সমাজের মৌলিক শর্ত।

অজ্ঞতাসুলভ কটূক্তি নয়, বরং জানার চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের পরিচয়। আপনার শুভবুদ্ধির উদয় হোক। শুভকামনা।

১১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:৫৯

কালো যাদুকর বলেছেন: স্যার:চমৎকার বর্ণনা পরে ফিরে গেলাম আরাফাতের দিনে। এরকমই অসম্ভব গরমের দিনে আমারও মাথার মগজ ফুটছিল। আপনি সৌভাগ্যবান , পরিবার নিয়ে ওখানে যেতে পেরেছেন।

এই আরাফাতের ময়দানেই একদিন কেয়ামত হবে, সবাই এভাবেই দাঁড়াবে একসাথে।
বাঙালি যেখানে যায় ,সেখানেই নেতা গিরি করে। নিজের প্রাওড়িতি বোঝে না।

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.