নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"দুনিয়াই বেহেস্ত"

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:০৮

শাহেদুল আলম ঘুমাচ্ছে। অনেকটা বাচ্চা ছেলের
মত মুখ হা করে। তার মুখের দিকে এক নয়নে
তাকিয়ে আছে তার সহধর্মিণী মালিহা জান্নাত।
কেমন যেন মায়া জন্মে গেছে মাত্র আটদিন
ছয় ঘন্টা ত্রিশ মিনিটের পরিচিত এই মানুষটার প্রতি।
শাহেদের মুখটাও কেমন যেন মায়ায় ভরা।
সেই প্রথম দিনের রেস্টুরেন্টের কথা মনে
পড়লে এখনও হাসি পায় মালিহার।
.
মালিহা জান্নাত আর শাহেদুল আলমের এরেঞ্জ
ম্যারেজ হয়েছে। কনেকে দেখার পর
শাহেদুলের বাবা কনেকে একটাই প্রশ্ন
করেছিলেন। মা মালিহা তোমার কাছে পর্দা বা হিজাব
কি? মালিহা উত্তর দিয়েছিল পর্দা করা ফরয বিধান। আর
এই পর্দার উদ্দেশ্য হল আল্লাহর পক্ষ থেকে
আমার স্বামীর জন্য নির্ধারিত আমানত মানে
নিজেকে রক্ষনা বেক্ষন করা। আর আল্লাহর এই
আমানত মানে নিজেকে রক্ষা করার মাধ্যম হচ্ছে
পর্দা। শাহেদুল আলমের বাবা এক উত্তরেই
কনেকে মানে মালিহাকে পছন্দ করে
ফেলেন।
.
কনে পক্ষ থেকেও ছেলেকে একটিমাত্র
প্রশ্ন করা হয়েছিল। মালিহার বাবা ছেলেকে প্রশ্ন
করেছিলেন বাবা তোমার এলাকায় ফযরের
জামা'আত কয়টায় তুমি বলতে পারবে? শাহেদুল
আলম নির্লিপ্ত ভাবে জবাব দিয়েছিল চারটা
চল্লিশে। মালিহার বাবা আলহামদুলিল্লাহ বলে
মেয়ের উপর বিয়ের সিদ্ধান্ত ছেড়ে
দিয়েছিলেন।
.
সেদিনই বিকালে কোন এক রেস্টুরেন্টে
তাদের দুই জনকে একান্তে কিছু বলার সুযোগ
করে দেয়া হয়। আগে থেকেই শাহেদুল আলম
চেয়ারে বসেছিল মালিহার অপেক্ষায়। কিছুক্ষন
পর মালিহা কাঁচের দরজা খুলে রেস্টুরেন্টে
প্রবেশ করে।
--আসসালামু আলাইকুম। দেরী করার জন্য দু:খিত।
--ওয়ালাইকুম আসসালাম। কোন সমস্যা নেই আপনি
বসুন।
দুজনেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছে। ভিষন
লজ্জা পাচ্ছে দুজনে। কারন মালিহা এবং শাহেদুল
কেউ নন মাহরাম (যাদেরকে বিয়ে করা হারাম নয়
মানে বৈধ) পুরুষ এবং মহিলার সাথে আগে কখনও
কথা বলে নি। তবুও মাথা নিচের দিকে রেখেই
শাহেদুল আলম বলা শুরু করল।
--যেহেতু আপনি আমাকে বিয়ে করার আগ্রহ
প্রকাশ করেছেন। সেহেতু আমার সম্পর্কে
সব কিছু জানার অধিকার আপনার আছে। নিজের
ব্যাপারে বলতে গেলে আমি এখন একটা চাকরী
করি। বেতন পাই বিশ হাজার টাকা। এই পরিমান টাকায় আমি
আপনাকে রাজরানী করে রাখতে পারব না। কিন্তু
আল্লাহর রহমত থাকলে দুমুঠো ডাল ভাত খাওয়াতে
পারব। আর বাজে কোন অভ্যাস মানে পান
সিগারেট আমার নেই।
--শাহেদুল আলমের এরকম সহজ সরল কথায় মালিহা
মনে মনে খুবই খুশী হল। আর উত্তর দিল আপনি
আমাকে যেভাবে রাখতে পারবেন তাতেই আমি
আলহামদুলিল্লাহ।
.
শাহেদুল আলমকে আড়মোড়া দিতে দেখেই
মালিহা বাস্তবে ফিরে আসল। ছি ছি মুখের দিকে
তাকিয়ে থাকতে থাকতে নাস্তা তৈরি করার কথাই
ভুলে গেছে। মানুষটা খাওয়া দাওয়া করেই তো
অফিসে যাবে। তাড়াহুড়া করে উঠতে যাচ্ছিল মালিহা
আর তখনই শাহেদ তাকে জড়িয়ে ধরল পরম
ভালবাসায়। অনেক জোরাজুরি করল মালিহা
নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার। বলল তোমার নাস্তা
রেডি করতে হবে এখন ছাড় আমাকে। কিন্তু
শাহেদের একটাই উত্তর আজকে আমার
জান্নাতের পরীর কোথাও যাওয়া চলবে না। কখন
যে চোখ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল
মালিহা লক্ষ্যই করল না। পবিত্র ভালবাসার
সম্পর্কগুলো এরকমই মধুর হয়। যেখানে মালিহা
শাহেদুলরা নিজেদের সংসারেই বেহেস্তের
সুশীতল ছায়ার পরশ পায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৩

আরব বেদুঈন বলেছেন: সুবহান আল্লাহ সুবহানাল্লাহ একদম আমার টাইপের যে মেয়ে পর্দা করাই জানে না সে আবার স্বামি ভক্ত করবে কিভাবে.।।।ইনশাল্লাহ আমি এই ধরনের মেয়েই বিয়ে করব

২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৮

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। হুম আসলে বিয়ে করার পুর্বে মেয়ে পরহেজগার কিনা দেখা দরকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.