নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"সায়েন্স ফিকশনঃ মানোবট/৩"

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫০



চিত্রঃ গুগল

(২০১৬ সালে প্রকাশিত ''গল্পদূত'' গ্রন্থে আমার প্রকাশিত সায়েন্স ফিকশন ''মানোবট'' এর ৩য় পর্ব আজকে। যারা আগের পর্ব দুইটি পড়েননি তারা অবশ্যই পড়ে নিবেন। নয়তো না বুঝার সম্ভাবনা বেশী। )

৩.

বর্তমান পৃথিবীতে মানোবটরা এখন গুটিকয়েক মানুষের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে। পুর্বে যদিও তাদেরকে মানব সম্প্রদায় নিয়ন্ত্রন করত। কিন্তু এখন এই নিয়ন্ত্রন সম্পুর্ণ মানোবটের হাতে। তারা শুধুমাত্র মানুষকে নিয়ন্ত্রনই করে না ঘৃনাও করে। নিউরোলজি সাবজেক্ট সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাতিল করার সিদ্ধান্তও তাদেরই গ্রহন করা। মানোবটরা এখন উন্নত এলাকাতে থাকে। মানুষদেরকে তারা নির্দিষ্ট এলাকাতে আবদ্ধ করে রেখেছে। কেউ নিজ এলাকা থেকে বাইরের কোন এলাকায় যেতে চাইলে তাকে অবশ্যই মানোবটের অনুমতি নিতে হবে। এই মানোবটরা বছরে একবারই মানুষের এলাকায় আসে পাঁকা যব উত্তোলনের সময়। তারা ফলনকৃত মোট যবের দুই তৃতীয়াংশ নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার সময় মানুষের দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকায় মনে হয় একটা মানুষ কোন মাকড়সার দিকে তাকাচ্ছে। তাদের চোখে ঘৃনাটা এতটাই তীব্র ভাবে প্রকাশ পায়।এবারও যব পাঁকার সাথে সাথেই মানোবট কৃদের এলাকায় আসল। যথারীতি তাদের স্পেস সিপ উত্তর মাঠের খোলা প্রান্তে ল্যান্ড করল। স্পেস সিপ থেকে নেমে সবাইকে যব আনতে নির্দেশ দিল। যব পরিমাপ চলছে এই ফাঁকে কৃ আর পৃহা মানোবট একজনের সাথে কথা বলার জন্য প্রস্তুতি নিল। তারা মাঝারি আকৃতির একটা মানোবট ঠিক করল কথা বলার জন্য। কৃ মানোবটটার দিকে এগিয়ে গেল এবং জিজ্ঞাস করল স্যার একটু কথা বলতে পারি?মানোবটটা এরকম প্রশ্ন শুনে কেমন যেন ভেবাচেকা খেয়ে গেল। চোখ অন্য দিকে সরিয়ে বলল কি প্রশ্ন?
আপনাদের জন্ম কিভাবে হয়??প্রশ্ন শুনে মানোবট উত্তর দিল তোমাকে কেন বলব? কৃ যুক্তি দেখাল আপনিতো জানেনই স্যার মানুষের কৌতুহল একটু বেশীই হয়।
কিন্তু আমি কোন মানুষের সাথে কথা বলি না। কৃ দেখল এই মানোবট সহজে গলবার পাত্র নয়। সে পৃহাকে বলল কিছু করার জন্য। পৃহা যব পরিমাপের কাজ কতটুকু হয়েছে একবার আড়চোখে দেখে নিল। তারপরে নরম স্বরে বলল স্যার আমার অনেকদিনের সখ মানোবটদের সাথে কথা বলা। একটু গাছটার আড়ালে আসবেন? মানোবট ইতস্তত করা শুরু করল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে রাজি হল। গাছের আড়ালে নেয়ার পর পৃহা উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করা শুরু করল। এভাবে অনেকক্ষন সময় নষ্ট করার পর মানোবট গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে দেখল স্পেস সিপ সব চলে গেছে। স্পেস সিপ নেই দেখার সাথে সাথে মানোবটটি দিশেহারা হয়ে গেল। পৃহা মানোবটটির কাছে গিয়ে তাকে বুঝিয়ে বলল এভাবে অস্থির হলে তো আর স্পেস সিপ ফিরে আসবে না।
পৃহা বলল চলুন আপনাকে আমাদের বাসাই নিয়ে যায়।তারা আপনাকে নিতে আসবে। যাবেন তো আমাদের সাথে? মানোবটটি সন্দিহান দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলেও শেষে ঘাড় কাত করে সম্মতি জানাল।
যাক কৃর উদ্দেশ্য সফল হয়েছে মানোবটটাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও কাছে পাওয়া গেছে। এখন শুধু নিউরোলজি আর মানোবটের মধ্যে যোগসুত্রটা খুঁজে বের করার পালা।
ভাগ্যিস মানোবটটিকে আড়ালে নেওয়ার বুদ্ধিটা পৃহার মাথা থেকে এসেছিল।
কৃ মানোবটকে তার বাসায় নিয়ে গেল। মা মানোবটকে দেখেই আঁতকে উঠলেন। তুই কি করেছিস এটা? মানোবট নিয়ে এসেছিস কেন বাসায়?
এরা খুব খারাপ হয়। মানুষকে এরা ঘৃনা করে।ও আমাদের বাসায় এসেছে এই খবর পাওয়ার সাথে সাথে ওরা আমাদের ধ্বংস করে দেবে। মা তুমি বেশী চিন্তা কর। আমার ভিষন ভয় করে বাপু। আর ভয় পেয়ে কাজ নেই। মানোবটটাকে কিছু খেতে দাও তো? ও কি আমাদের যবের ধাপড়া খাবে?? দিয়েই দেখ। ধাপড়া দেওয়ার পর দেখা গেল মানোবট খুব সুন্দর করে তৃপ্তি সহকারে খেল।
বিকালের দিকে কৃ মানোবট থেকে কিছু তথ্য পাওয়া যায় নাকি সেই চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু বিশেষ একটা সুবিধা করতে পারল না। সন্ধ্যার কিছুক্ষন পরে মানোবটটা কোথা থেকে একটা খেলনা জাতীয় জিনিস নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করল। এটা দেখে মা চিৎকার করে উঠলেন। সাথে সাথে মানোবটের কাছ থেকে খেলনাটা ছিনিয়ে নিলেন। কৃ পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। সে খুবই অবাক হয়ে মাকে জিজ্ঞাস করল মা সামান্য একটা খেলনার জন্য তুমি কি করতিছ? এটা সামান্য খেলনা না এর সাথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এই খেলনার সাথে তোর বোনের স্মৃতি জড়িয়ে। এই খেলনায় তোর বোনের হাতের ছোঁয়া আছে।আজকে কৃ একটা সুযোগ পেয়ে গেল। মা নিজ মুখেই আজ বোনের কথা তুলেছে। কৃ মাকে বলল আজকে তুমি আমার বোনের সব কথা বলবে। বল মা কি হয়েছিল আমার বোনের?
মা শুরু করলেন। মানোবটও একটু এগিয়ে বসল মায়ের কথা শোনার জন্য।

(চলবে)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রথম দুই পর্ব পড়েছিলাম; এজন্য এ পর্বটি পড়তে সুবিধা হয়েছে। তবে পর্বগুলো ধারাবাহিক হলে ভাল হয়; আর প্যারা আকারে লেখলে পড়তে সুবিধা হবে। ধন্যবাদ

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২৭

এখওয়ানআখী বলেছেন: পড়তে ভাল লাগছে। সাইন্স ফিকশান আমার খুব পছন্দ। এখানে খুব সামান্য দেওয়া হয়েছে।

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: একটা অনুরোধ ধারাবাহিক লেখা নিয়মিত পোষ্ট করলে যারা পড়ে তাদের সুবিধা হয়।
আর দেরী করে-করে পোষ্ট করলে ভুলে যাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.