নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বিয়ে নিয়ে ইয়ে"

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:০৮


চিত্রঃ- গুগল হতে ডাউনলোডকৃত

আজকে অফিসে মিটিং ছিল বিকাল ৫ টায়। শুধু আজকে না প্রায়ই প্রতিদিনই মিটিং থাকে। একই ডিপার্টমেন্টের আমরা সবাই কাজের কতদুর কি হল , কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে পরবর্তীতে এই সব টুকিটাকি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলচনার পর সামান্য হাসি ঠাট্টা হয় সবার মধ্যে। আজকে হাসি ঠাট্টার টপিক্স ছিল বিবাহ নিয়ে। অর্থাৎ বিয়ে করাটা ঠিক কিনা কিংবা বিয়ে কখন করা উচিৎ কিংবা কখন করা উচিৎ নয় এই বিষয়গুলো নিয়ে। আমাদের সিনিয়র ভাই প্রত্যেককে তাদের বিয়ে নিয়ে তাদের মতামত জানাতে বললেন। এদের মধ্যে কয়েকজন বিবাহিত ছিল কয়েকজন অবিবাহিতও ছিল। যদিও আমি অবিবাহিতদের দলে কিন্তু আমি বলার চেয়ে শুনতে বেশী পছন্দ করি। একে একে একেকজন তাদের মন্তব্য দিতে লাগলেন। কারও মতে বিয়ে হোল আগুনে ঝাপ দেওয়া, কারও মত বিয়ে শুধু শারীরিক চাহিদা পুরনের একটা মাধ্যম মাত্র। এক কথায় প্রত্যেকে তাদের জায়গা থেকে বিয়েটাকে সংগায়িত করার চেষ্টা চালিয়েছেন। আমার পোস্টের মূল উদ্দেশ্যে আসি।

তো সেই আলোচনায় দুই একজনের মন্তব্যের উপর আমার আজকের এই লেখালেখির ইচ্ছা। এক ভাইয়ের মন্তব্য ছিল, “ আমার মতে ছেলেদের বিয়ে করা উচিৎ ২৫-৩০ বছরের মধ্যে এর আগে নয়। কারন এর আগে বিয়ে করলে ছেলেদের মেচিউরিটি সৃষ্টি হয় না। এবং ১৭-২৫ বছরের মধ্যে বিয়ে করলে তাদের অধিকাংশের সংসার জীবন শেষ পর্যন্ত সুখের হয় না। ডিভোর্সের মাধ্যমে শেষ হয়। “
এই মন্তব্য আমার কাছে খুবই অযৌক্তিক মনে হয়েছে । আমি কেন অযৌক্তিক এটা নিয়ে ধর্মের রেফারেন্স আপাতত ব্যবহার করছি না। আমি শুধুমাত্র The Daily Star এর একটা প্রতিবেদনকে সামনে আনলেই মন্তব্যটার অসাড়তা বেরিয়ে আসবে। ৭ই আগষ্ট ২০১৭ সালে প্রকাশিত শেষ দশকে ডিভোর্সের হার সঙ্ক্রান্ত এক নিউজের একটা অংশ ছিল
“The incidents of divorce were highest in the 25-29 age group, 2.7 per thousand”. [1]
অর্থাৎ ২৫-২৯ বছর বয়সে বিবাহিতদের ডিভোর্সের হার সবচেয়ে বেশী। যেখানে স্বাভাবিকভাবে বিয়ের মানে বয়োসন্ধি প্রাপ্তির কিছু সময় পরেই বিয়ের ডিভোর্সের হার 1.1 per thousand. খুবই সহজ সমীকরন। এখানে স্ট্যাটিসটিক্স বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত ।

এবার আসি দ্বিতীয় মন্তব্যে। আরেক ভাই বলেছিলেন,” বিয়ে করার মূল উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বংশবৃদ্ধি। “
এই ব্যাপারে আমার কিছু কথা আছে। বিয়ের মূল উদ্দেশ্য প্রজন্ম রক্ষা করা এই থিওরিটার গোড়া আসলে কোথায়। ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব সম্পর্কে আমরা কম বেশী সবাই জানি। তার থিওরিটি ছিল
“all species of organisms arise and develop through the natural selection of small, inherited variations that increase the individual's ability to compete, survive, and reproduce.” [2]
এখানে মুলত তিনটি অংশ রয়েছে আমি সহজভাবে বুঝার জন্য বলছি। সকল জীবের ক্রমান্বয়িক পরিবর্তন হয় প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে এতে যোগ্যতমরা বেঁচে থাকার প্রতিযোগীতায় টিকে থাকে অপেক্ষাকৃত দুর্বলদের তুলনায় এবং তারাই বংশবৃদ্ধি করে। “
এখান থেকেই মুলত reproduce তথা বংশবৃদ্ধি ব্যাপারটা সবার নজরে আসে। এক কথায় বলতে গেলে যোগ্যতম হিসাবে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে হলে প্রজন্ম বৃদ্ধি করতেই হবে।

এখন আবার পয়েন্টে আসি। আসলেই কি শুধুমাত্র বংশ বৃদ্ধি করাই বিয়ের মূল উদ্দেশ্য? আসলে ঠিক তা কিন্তু নয়। বংশবৃদ্ধি বিষয়টা কেন দরকার? মানুষকে কিন্তু সৃষ্টি করা হয়েছে অপোজিট জেন্ডারের প্রতি ন্যাচারাল একটা এট্রাকসন দিয়ে। অর্থাৎ পুরুষের ক্ষেত্রে এই এট্রাকসন টেস্টোস্টেরন এবং নারীর ক্ষেত্রে প্রজেস্টেরন হরমন নির্গমনের মাধ্যমে হয়। মানে আপনার উত্তেজনা বাড়বে কিভাবে এবং কমবে কিভাবে এটা আপনার জিনে বসিয়ে দেওয়া আছে। সোজা বাংলায় প্রজন্মের বিস্তার জিনিসটা সম্পুর্ণ সৃষ্টিকর্তা ঠিক করে দিয়েছেন নারী পুরুরষের মাঝে ভিন্ন এই মেকানিজম দেওয়ার মাধ্যমে। আপনার আলাদা করে বংশবৃদ্ধি বিষয়টাকে বিয়ের মুল উদ্দেশ্য ভাবার কোন কারন নেই। তবে এটা বাই ডিফল্ড বিয়ের একটা পার্ট। অর্থাৎ দ্বিতীয় মন্তব্যেরও অসাড়তা পরিষ্কার।

এবার আমার মতামতে আসি। আমার মতে শারীরিক এবং আর্থিক সামর্থ থাকলে সাথে সাথে বিয়ে করে ফেলা উচিৎ। শারীরিক সামর্থ্য বলতে কি বুঝায় এটা আমরা আশা করি সবাই বুঝি। আর্থিক সামর্থের ব্যাপারটা বলি। ধরুন আপনি ২০ হাজার টাকা স্যালারী ড্র করছেন এই সময়ে। চিন্তা করছেন সামান্য এই টাকায় বউকে খাওয়াবেন কি? এবার চিন্তা করুন এই মুহূর্তে আপনার একজন ভাই বা বোন জন্ম গ্রহন করল। আপনার চিন্তা কেমন হবে এবার? এই ছোট ভাই বা বোনকে কি খাওয়াবেন সামান্য টাকায়? এখানে অবশ্য আপনাদের মন্তব্য থাকবে নিজের ভাইবোন আর পরের বাড়ীর মেয়ে এক না। কিংবা পরের বাড়ির মেয়ের চাহিদা বেশী হলে তখন কি করব? অর্থাৎ আপনি তার খাদ্যের দায়িত্বটা নিজে নিয়ে নিচ্ছেন। ভুলে যাচ্ছেন তাকে যিঁনি পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তিঁনি তার রিযিক্বও সাথে পাঠিয়ে দিয়েছেন সেটা আপনার ঘরে হোক কিংবা অন্য কারও ঘরে।

“বিয়ে করার আসল বয়স কখন? আমাদের এক প্রজন্ম আগেও বিয়ে করত খুব কম বয়সে তাহলে আমরা কেন দেরীতে বিয়ে করা লাভজনক ভাবছি?” এই প্রশ্নের উপরে আমার বেশ অনেক কিছু বলার আছে তবে অন্য কোন এক পর্বে ইন-শা-আল্লাহ।

Link:-
[1]Divorce doubles, separation triples in one decade, The Daily Star 17 Aug 2017
[2]https://en.wikipedia.org/wiki/Darwinism

বিঃদ্রঃ- লেখাটি বেশ ক'মাস আগের।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ২:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


ওটা কি অফিস, নাকি বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের আশ্রয়কেন্দ্র?

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:৪৪

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: দুইটা মন্তব্যই ছিল অভিজ্ঞতার আউটপুট, অর্থাৎ নিজ নিজ পার্সপেক্টিভ থেকে দুইজনের মন্তব্য শেয়ার করেছি। যাইহোক মতের সাথে না মিললে যে, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি হয়ে যায় এটাও জানা ছিল না। যাইহোক ভাল লাগল মন্যব্য পড়ে।

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: হাজার হাজার অফিস। সবাই আলাদা। কারো সাথে কারো মিলে না।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:৪৫

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: এটাই সৌন্দর্য্য ভাইজান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.