| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নতুন নকিব
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?
ইয়াতিমদের সাথে ইফতার অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া, ছবি https://www.risingbd.com/ থেকে সংগৃহিত।
তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রীও তিনি। তাকেই তার বৈধ বাসস্থান ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, টেনে-হিচড়ে। তার কণ্ঠরোধ করার জন্য ফরমায়েশি আদালতের মাধ্যমে “তিনি কথা বলবেন না” বলে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। বালুর ট্রাক ফেলে তার চলার পথ আটকে দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় বছরের পর বছর মিথ্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে বাধ্য করে তাকে সীমাহীন হয়রানি করা হয়েছে, শারীরিক ও মানসিক কষ্টে ফেলা হয়েছে। তিনি এবং তার পরিবারের একান্ত ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তাকে বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। এগুলো ছিল ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাকে তার প্রাপ্য অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এত এত অন্যায়ের পরেও তিনি ছিলেন নির্বিকার, স্থির, অটল। যেন ঢেউহীন শান্ত সরোবর, যার পানি টলে না। কঠিন বিপদেও তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন। কারও কারও মত পাগলের প্রলাপ বকেননি, খিস্তি-খেউড়ের তো প্রশ্নই ওঠে না।
ক্ষমতায় থাকাবস্থায় হোক অথবা বিরোধী দলে থাকাবস্থায়, কখনো তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে কথা বলতে দেখা যায়নি। অন্যদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার যে বাজে প্রথা আমাদের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে, এটা বলা চলে, তার স্বভাববিরুদ্ধ ছিল। বিপরীত মতের মানুষদেরও যে শ্রদ্ধাপূর্ণ ভাষায় সমালোচনা করা যায়, সেটা তিনি করে দেখিয়েছেন। সর্বোপরি, তিনি দেশকে তার বাবার কিংবা স্বামীর রেখে যাওয়া তাল্লুক ভাবতেন না কখনোই। কথায় কথায় অহংকার, অহমিকা, দম্ভ ইত্যাদি তার থেকে দেশবাসী পায়নি।
এদেশের মানুষ স্বভাবতই ধর্মপ্রাণ। লাখো আলেম-হাফেজ, তালেবে ইলমের পদচারণায় মুখরিত এই পুণ্যভূমিতে শুয়ে আছেন অলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল মুজাররেদে ইয়ামেনি (রহ.), হযরত শাহ পরান (রহ.), হযরত খান জাহান আলী (রহ.), হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.), হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (রহ.), হযরত শাহ আমানত (রহ.), হযরত শাহ সুলতান রুমি (রহ.), হযরত শাহ বাদর আউলিয়া (রহ.), হযরত শাহ মক্কী (রহ.), হযরত শাহ গরিবুল্লাহ (রহ.) সহ নাম না জানা অসংখ্য আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ।
বেগম খালেদা জিয়া এই মাটি ও মানুষের হৃদয়ের ভাষা বুঝতেন। এ কারণেই তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তাকে এদেশের কোনো বরেণ্য আলেমের সাথে বেআদবিমূলক আচরণ করতে দেখা যায়নি। তার শাসনামলে আলেম-ওলামারা তার সরকারের অনেক কাজের বিরোধিতায় আন্দোলন করেছেন, কিন্তু অন্যদের মতো তার সময়ে আলেমদের হাতে-পায়ে বেড়ি পরিয়ে আদালতে তোলার জঘন্য দৃশ্য চোখে পড়েনি। তিনি নিজের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার স্বপ্নে বিদেশিদের প্রভু হিসেবে গ্রহণ করেননি, তথাকথিত ভিনদেশী প্রভূদের ভূ-রাজনৈতিক খেলায় যোগ দিয়ে এদেশে জঙ্গি নাটকের মহড়াও দেননি। পাইকারিভাবে, যাচাই বাছাই ছাড়া, আলেম ওলামা এবং ইসলামপন্থী সাধারণ মানুষদের জঙ্গি নাটকের বলি বানাননি।
আমাদের দেখা মতে, দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত থেকেও, তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হয়েও অহংকারে তাকে নিমজ্জিত হতে দেখা যায়নি। তিনি স্বভাবতই একজন মার্জিত, ভদ্র, হৃদয়বান এবং বিনয়ী ব্যক্তি ছিলেন। প্রতি রমজানের শুরুতে বেগম জিয়া মাদরাসার ইয়াতিম শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ইফতার করতেন। ইয়াতিমদের প্রতি এই মমত্ববোধ তার একটি অনন্য দিক ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এমন অপবাদও শুনেছি যে, তিনি নাকি সেই ইয়াতিমদের টাকা মেরে খেয়েছেন। শুধু অপবাদই নয়, এই অপবাদকে উপজীব্য করে আজ্ঞাবহ আদালতের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে তাকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছিল, যা ফ্যাসিবাদ পলায়ন পরবর্তী সময়ে খারিজ হয়ে গেছে।
যা হোক, তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। এই ক্ষনস্থায়ী পৃথিবীর সকল মায়া কাটিয়ে তিনি এখন পরপারের বাসিন্দা। শুধু বলব, দোষে-গুণেই মানুষ। আমরা কেউই নিষ্পাপ নই। তিনিও হয়তো তার ব্যতিক্রম নন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তার ভুল-ত্রুটি এবং অপরাধগুলো ক্ষমা করুন এবং তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করুন। আমিন।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩০
নতুন নকিব বলেছেন:
দয়া করে উহার নাম প্রকাশ করা হতে বিরত থাকুন। অন্যথায় মানুষ জেনে যাবে।
২|
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩১
করুণাধারা বলেছেন: আমার ধারণা উনি খুব ভদ্র এবং নরম মনের মানুষ ছিলেন।
৩|
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৪
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: তিনি কেমন মানুষ ছিলেন সেটা সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন তার কাছের মানুষজন। দূর থেকে আমরা অনুমান করতে পারি বটে তবে বাস্তবতা তার চেয়ে ভিন্ন হওয়াই স্বাভাবিক। যেহেতু তিনি গত হয়েছেন তাই তার ব্যক্তিত্ব নিয়ে না জেনে মন্তব্য না করাই শ্রেয় বলে আমার মনে হয়। তারা আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ব্যক্তি আক্রমণে একজন ছিলো সেরা....