| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমন্ত্রণ আসছে বইমেলায় যোগ দেওয়ার জন্য গত কয়েকটি বছর ধরে। প্রতিবারই মনে করি এইতো যাবো কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠে না। প্রথমবারের আমন্ত্রণের পরে শুরু হল করোনার ভয়াবহতা। তারপরে দুই এক বছর পার হওয়ার পরে আবার শুরু হল অনুষ্ঠানে যাওয়ার আমন্ত্রণ। প্রিয়জন যারা আমার লেখা পড়ে আমার সাথে যুক্ত, চিনেন আমাকে লেখক হিসাবে। তারাই চান আমার উপস্থিতি তাদের অনুষ্ঠানে। এত ভালোবাসার ডাক উপেক্ষা করা যায় না। গত বছর মোটামুটি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঝামেলা বেঁধে গেল, যাওয়া হলো না।
যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে অনুষ্ঠিত হবে, ত্রয়োদশ বইমেলা এবং সংস্কৃতি উৎসব। এবছর ফেব্রুয়ারি থেকে মোটামুটি কনফার্ম করে রাখলেন আয়োজক। এবার দাওয়াত আমাকে কবুল করতেই হবে। এবার যেতেই হবে বইমেলায় যোগ দিতে কিছুতেই না করে যাবেনা। এতো ভালোবাসা উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। একজন লেখককে অনুষ্ঠানে পেতে চাচ্ছেন, আমন্ত্রণের মূল্য দেওয়া উচিত। কথা দিয়েই রাখলাম এবার যাবই বইমেলায় যোগ দিতে।
এবছর আর কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা নাই শরৎকালের কাছাকাছি সময়ে বইমেলা উৎসবে যোগ দিতে চলে যাব। কিন্তু আমার যাযাবর ভাগ্য, আমাকে ঘরে থাকতে দেয় না। পরিকল্পনাবিহীন অনেক ভ্রমণ, জড়িয়ে যায় আমার জীবনযাত্রায়।
চৌদ্দ এবং পনের সেপ্টেম্বর হবে বইমেলা বছরের শেষ ভাগে। অনেক সময় পাওয়া যাবে এর মধ্যে লেখালেখির অনেক কাজ করব বছর জুড়ে। কিন্তু হুট করেই চলে যেতে হলো দেশে। প্রায় মাস দেড়েক কাটিয়ে ফিরে আসতে না আসতেই বেরিয়ে পরতে হলো পরিবারের সাথে আবার রোড ট্রিপে। এদিকে কথা দেয়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য টিকেট আগে কিনে রাখতে চাইলেও নিজের সময় মিলাতে পারছিলাম না।
পরিবারের আরেক সদস্য তাদের সাথে নিয়ে যাবে ইউরোপ আমাকে। তাদেরও সময় মিলছে না আমার সাথে। অনেক যোগ, বিয়োগ, ভাগ, গুন করে অবশেষে সকল কর্মরত মানুষের সময় মিলানো হলো এক জায়গায়। যাতে বেড়ানো শেষ করে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারি ঠিক সময়ে।
আগস্টের শেষে বেড়িয়ে পরলাম অবশেষে ইউরোপের পথে।
বারোই সেপ্টেম্বর রাতে ইউরোপ ভ্রমন শেষ করে লন্ডনের পথে রওনা হবো। তের তারিখ পৌছে পরের দুদিন চৌদ্দ ও পনের সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠানে থাকব। আমার কিছু পরিচিত, বন্ধু, আত্মিয় যারা আমার সাথে দেখা করতে চান। তারাও লন্ডনে যাওয়ার অনুরোধ করেন প্রায় তাদের জানিয়ে দিয়েছিলাম অনুষ্ঠানে আসার জন্য। সেখানে তাদের সাথে আমার দেখা হয়ে যাবে।
ঘোরাফেরার মধ্যে থাকায় পৃথিবীর নানারকম ঘটনা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। রাতে যখন রওনা হবো বারো তারিখে, সেদিন সকালবেলা জানলাম লন্ডনে তের তারিখ ডানপন্থী বর্ণবাদীর বিশাল সমাগম হবে।
এই সমাগম সাধারন নয়, এর টার্গেট ধর্ম এবং বর্ণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। বিভিন্ন দেশের জাতী, গোষ্টি, ধর্মের অনেক বেশি মানুষ এখন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী। সেখানে যারা নিজেদেরকে আসল যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী মনে করে । তারা দিন দিন কোন ঠাসা হয়ে পড়ছে, অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কাছে I নিজেদের অধিকার থেকে তারা যেন হারিয়ে যাচ্ছে । এই উপলব্ধি থেকে অন্যদেরকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে নেমেছে বেশ অনেক বছর ধরেI ছোট ছোট প্রতিবাদ হয়ে আসছে I কিন্তু তের সেপ্টেম্বর তারিখের প্রতিবাদটা নাকি বিশাল হবে শেষ মুহূর্তে এই খবর জেনে একটু উৎকণ্ঠিত হলাম I
এখন তো পৃথিবীর কোন প্রান্তেই শান্ত সহনশীলতা খুব একটা নেই। যে কোন সময় যে কোন জায়গায় নানা রকম ঝামেলা প্রতিবাদ অশান্তি যুদ্ধ শুরু হয়ে যাচ্ছে। দুই সপ্তাহ ব্যাপী ইউরোপে র্নিবিগ্নে ঘুরে বেড়ানোর পরে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে কোন ঝামেলার মধ্যে না পড়ে যাই। সেই বিষয়টা ভেবে কিছুটা অস্থির হলাম I নিরাপত্তা জরুরী নিজের নিরাপত্তার বিষয় নিজেকেই ভাবতে হয়। কোথায় কখন কিভাবে কে আক্রান্ত হয়ে যায় তার কোন সঠিক নিয়ম নেই এখন I ব্যক্তিগত ভাবে বা রাষ্ট্রীয়ভাবে হিংসার শিকার হতে পারে যে কেউ I
কথা দিয়েছি অনুষ্ঠানে যাব না গেলে কেমন হয় তাছাড়া আরো দশ বারো দিন পর ফিরে যাওয়া। এতদিন কোথায় ঘুরব নাকি টিকেট বদল করে ফিরে যাবো বাড়ি। সব মিলে একটু ভজঘট অবস্থা হয়ে যাচ্ছিল।
বেশ কিছুটা সময় আলোচনা করে অবশেষে ঠিক করলাম। যাওয়ার জন্য মনোস্থির করে এসেছি তবে চলেই যাই। কিছু হবে না। বাসে করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে টিকিট কাটা হয়ে গেছে প্যারিস থেকে লন্ডনের I আগের সপ্তাহে শুনেছিলাম সবচেয়ে সহজ চলাফেরার জন্য টিউবরেল চলছে না, সেখানে স্ট্রাইক চলছে।
আমি ভেবেছিলাম, অনুষ্ঠানের ভেন্যুর পাশেই একটা হোটেল নিব থাকার জন্য যেখান থেকে হেঁটে অনুষ্ঠানে যেতে পারবো দুদিন। আমার যাওয়ার খবর শুনে আমার এক বোন তার ওখানে থাকার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করল I যে আমাকে সবসময়ই লন্ডনে বেড়াতে যেতে বলে। অবশেষে ওর বাসায় থাকবো সেটাই সিদ্ধান্ত হলো। সে চেয়েছিল আমাকে এসে পিক আপ করবে স্টেশন থেকে কিন্তু আমি জানিয়েছিলাম আমাকে নিতে আসার দরকার নেই। আমি উবার করে চলে যাবো যেহেতু স্ট্রাইক চলছে টিউবরেলে I
লন্ডন যাওয়ার আগের দিন বর্ণবাদীদের প্রতিবাদের সমাগমের খবর জেনে খুব একটা ভালো লাগছিল না I যাহোক শেষ পর্যন্ত যাব বলেই সিদ্ধান্ত নিলাম, যাব বলে থেমে থাকতে নেই I
যখন ওরা জানিয়েছে প্রতিবাদ করবে নিশ্চয়ই তাদেরকে শান্ত রাখার জন্য চারপাশে পুলিশ থাকবে। আমাদের নিরাপত্তার অসুবিধা হবে না। শেষ মুহূর্তে জানতে পারলাম আমাকে স্টেশন থেকে পিকআপ করার জন্য আয়োজকরা আয়োজন করেছেন এটা জেনে স্বস্তি পেলাম I কারণ দিনটা ছিল একটু অস্থিরতার। সম্পাদক উদয় শংকর দূর্জয় জানাল, আমার দায়িত্ব ইমদাদুন খান আপাকে দেয়া হয়েছে। ইমদাদুন খান আমার দেশের বাড়ির মেয়ে হলেও উনার সাথে আমার সরাসরি পরিচয় নেই। কখনো কথা হয়নি। হয়তো বা স্কুলের বয়সে চেনা ছিল। কিন্তু তিনি অনেক বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী। আমাকে তিনি চিনেন এবং আমার যাওয়ার কথা জানার পর থেকে নিজ উদ্যোগে যতটা না করলে চলে তার চেয়ে বেশি করেছেন। উনি সংগঠনের সাথে জড়িত। এবং আমার প্রতি উনার বিশেষ মমতা যে কদিন লন্ডনে ছিলাম প্রতিদিনই উপভোগ করেছি অনুষ্ঠানের বাইরেও।
সময়ের আধঘন্টা আগেই আমাদের বাস লন্ডন স্টেশনে পৌঁছে গেল I যার নাম্বার দেওয়া হয়েছিল আমাকে পিক আপ করতে আসবেন শাহ আলম, উনাকে ফোন করলাম। উনি জানালেন যে কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন I আমি সময়ের আগে পৌঁছে গেছি I আমি রাতভর দীর্ঘ ভ্রমণ আর তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার আশঙ্কায় ঘড়িতে কটা বাজে দেখি নাই I উনার কথা শুনে অপেক্ষায় স্টেশনের ভিতরে বসে থাকলাম I একটার পর একটা বাস আসছে বিভিন্ন গন্তব্য থেকে। সাদার উপর লাল ক্রস দেয়া পতাকা গায়ে জড়িয়ে অথবা পতাকা লম্বা পোস্টে বেঁধে ছোট বড় নানান দলের মানুষ বিভিন্ন গাড়ি থেকে নামতে লাগলো। আমাদের সামনে দিয়ে তারা বেরিয়ে যাচ্ছে। কখনো দল বেঁধে এদিক সেদিক হাঁটাহাঁটি করছে। গাড়ি চড়ে দীর্ঘ ভ্রমণ করে আসা অন্যান্য যাত্রীদের মতন তাদের মাঝে কোন ক্লান্তি নেই। ওরা ভীষণ একটা জোসে আছে । কিছু একটা করে ফেলার পরিকল্পনা তাদের ভিতরে। তাদের দেখে একটু ভয় ভয় লাগছিল যখন পাশ দিয়ে হাঁটছিল। এই ছোট ছোট দলের মানুষ গুলা মিলিত হয়ে এক মিলিয়ন ছাড়িয়ে গিয়েছিল সেদিন লন্ডন শহরের রাসেল স্কোয়ারে। বর্ণবাদ বিরোধী প্রতিবাদ, বিক্ষোভকারীরা কিংসওয়ে, অ্যালডউইচ এবং স্ট্র্যান্ড হয়ে হোয়াইটহলের উত্তর প্রান্তে মিছিল করেছিল। বড় কোন দুর্ঘটনা না হলেও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা এই প্রতিবাদ সমাগম থেকে হয়েছিল সেদিন ।
অপেক্ষার শেষ হলো যখন এবার আমার ফোন বেজে উঠলো। জানলাম আমাকে নিতে আসা ভদ্রলোক বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন I দুই পাশে রাস্তা চলে গেছে স্টেশনের বাইরে ঠিক কোন রাস্তায় যেতে হবে মোটামুটি ধারণা করে নিয়ে বেরিয়ে আসলামI আমরা কেউ আগে কখনো দেখি নাই কাউকে I একটু দূরে দেখলাম দুজন মহিলাসহ একজন ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন, রাস্তার অন্য পাশে। উনারাই হবেন আমাকে নিতে আসা মানুষI এগিয়ে যাওয়ার পর উনারা হাত নাড়লেন, বুঝতে পারলাম উনারাই আমাদের নিতে এসেছেন I সুটকেস টেনে তাদের কাছে পৌঁছানোর পরে দেখলাম, দাঁড়িয়ে আছেন ফুল নিয়েI আমাকে স্বাগত জানাতে, অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার জন্য I স্টেশনের ভিতরে দেখা মানুষগুলোর মুখগুলো ভাসছিল কারো কারো চোখের মধ্যে ছিল হিংস্রতা। কিন্তু যারা আমাকে নিতে এসেছেন তাদের হাসিখুশি মুখগুলো দেখে সমস্ত উদ্বিগ্নতা কেটে গেল I মনে হল এমন কোন বিষয় না এরকম প্রতিবাদ সমাগম এসব সবসময়ই হচ্ছে I উনারা এসব নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নাI তবে শুনেছি, এই প্রতিবাদী দল বিশেষ করে মুসলিমদেরকে টার্গেট করছেI আমি তাদের অভিনন্দন আর তাদের ভালোবাসায় সিক্ত হলাম অন্য সব ভাবনা দূর করে দিয়ে I
পৃথিবীটা সবার বসবাসের জায়গা এখন কেউ কাউকে দূরে সরিয়ে দিতে পারবেনা। এক সময় এই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মানুষ বাণিজ্য করতে, সুদূর ভারতবর্ষে গিয়ে সে দেশটাকে অনেক শোষণ করেছে । এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মানুষ যুক্তরাষ্ট্রকে শোষণ করছে না I বরঞ্চ কাজ করে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে I বিভিন্ন দেশের মানুষ এই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে এবং কাজ করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি অর্থনীতিI যারা এখানে জীবন যাপন করছে তারা শুধুই সুখ ভোগ করছে না তারা যথেষ্ট অবদান রাখছে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয়। একটি দেশের উন্নয়নে তারা ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে I বিদেশ ভূমির উপর নিজের অবস্থান শক্ত কাঠামোয় স্থাপিত করেছে I চাকুরী, ব্যবসা বাণিজ্য, রাজনীতি সব জায়গাতেই এখন সাদাদের পাশাপাশি অন্য সব দেশের মানুষের অবস্থান প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। বাঙালিরা জীবন বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি আয়োজন করছেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান I প্রতিষ্ঠিত করছেন নিজেদের সংস্কৃতি, বিদেশের মাটিতে ভিন্ন ভাষার মাঝে I তারই ভাবধারায় আমি আমন্ত্রিত বাংলা বই এবং সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য।
লন্ডন শহরের বৈশিষ্ট্য হলো মেঘলা আকাশ। সারাক্ষণ মন খারাপ করে থাকা প্রকৃতি। সকালের মেঘলা আকাশ রোদের আলো ছড়িয়ে হাসতে শুরু করল। গুমোট অন্ধকার কেটে গেল যেন ধীরে ধীরে রোদের আলোয়। তেমনি আমার মাথায় জড়িয়ে থাকা বিপদের ভয়টাও কেটে গেল, আমাকে নিতে আসা এই মানুষগুলোর সংস্পর্শে I রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে উনারা আমাকে ফুল দিয়ে বরণ করলেন I ছবি তোলা হল I হাসি আনন্দে পরিচয় হলো শামসুল হক শাহ আলম এবং আসমা মতিন রুবি উনারা দুজনেই লেখালেখির সাথে জড়িত, সংগঠনের কর্মী I ভোরবেলা উঠে এতটা পথ পেরিয়ে আমাকে নিতে আসায়, তাদের মহানুভতায় মুগ্ধ হলাম I সাথে ছিলেন শামসুল হক শাহ আলম,উনার স্ত্রী I
শুরু হলো আমাদের লন্ডন শহরের পথে যাত্রা I প্রায় আধঘন্টা দূরে আমি যেখানে থাকবো সে বাড়ির গন্তব্য। ব্যাগ ব্যাগেজ তুলে ঠিকঠাক হয়ে বসে নার্গিসকে ফোন দিয়ে জানালাম, পৌছে গেছি এবং আসছি দেখা হবে কিছুক্ষণ পরে I
সারা রাতের ঘুমহীন মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর হয়ে গেল I অনেক বছর পরে আবারো লন্ডন শহরের পথে এই নতুন মানুষদের সাথে চলতে বেশ আনন্দ লাগছে I কিছুদূর এসে একটা লম্বা টানেল পাড়ি দিয়ে গাড়িটা বেরিয়ে এলো পথে। অনেকটা পথ চলা হল লন্ডনের বিখ্যাত টেমস নদীর পাড় দিয়ে I
কিছু বিখ্যাত স্থাপনার পরিচয় দিতে দিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন শাহ আলম। আর অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে কথা বলছিলেন আসমা মতিন I এক সময় আমাদের পথচলা শেষ হয়ে গেল । এক দেশ পেরিয়ে অন্য দেশে আসা তারপর বাড়ি পৌঁছানো। এরপরে আমরা বসে গেলাম চায়ের আড্ডায় I গল্পে গল্পে কেটে গেল অনেকটা সময় I যদিও নার্গিসকে বলে রেখেছিলাম বাড়ি ফিরে একটা গোসল দিয়েই আমি ঘুমাবো কিন্তু সারাদিন আর ঘুমানোর সুযোগই হলো না I
শুরু যাত্রা পর্ব ....
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:০৪
রোকসানা লেইস বলেছেন: আহা আপনি একটু মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পরলে প্রকৃতি থেকে জীবন যাপন সব কিছু ভিন্ন হয়ে যায়। এর সাথে মানাতে না পারলে দেশে পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়া ভালো।
ইউরোপের আবহাওয়া লন্ডনের চেয়ে ভালো।
২|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৩৫
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: লন্ডন শহরের পথে এই নতুন মানুষদের সাথে চলতে বেশ আনন্দ লাগছে I
.........................................................................................................
আমরা বাঙালীরা প্রকৃত প্রেমী তেমনি সামাজিক কর্মকান্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকি
এবং ভালো লাগে, তাইতো সামাজিক বন্ধন না পেয়ে মনটা দূর্বল
ভাবছি দূর মানুষ কেন যে ঠান্ডার দেশে বেড়াতে আসে ।
আমন্ত্রিত বাংলা বই এবং সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠানে এর শুভ কামনা করছি ।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:০৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: আড্ডা প্রিয় জাতি হিসাবে খ্যতি আছে বাংলাদেশির।
ভাবছি দূর মানুষ কেন যে ঠান্ডার দেশে বেড়াতে আসে
ভেবে উত্তর পেলে আমাকে জানাবেন।
ধন্যবাদ। অনুষ্ঠান ভালো হয়েছে। আজ বাকিটুকু পোষ্ট করব।
৩|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর একটি লেখা পড়লাম।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:০৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ
৪|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
লন্ডন বই মেলায় অংশ গ্রহন পর্বের একটি সুন্দর প্রাণবন্ত বিবরণ দিয়েছেন । অনেকেই ইউরোপের অন্যতম
প্রাণকেন্দ্র লন্ডনে বাংলা বই মেলা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে অবহিত নন । তাই লেখাটি পাঠান্তে মেলাটি সম্পর্কে
দুচারটি চুম্বক কথা , যথা বই মেলার স্থান কাল ও বিষয় বস্তু এখানে যুক্ত করা প্রাসঙ্গিকমনে করছি ।
আশা করি এ বিষয়ে আপনার কাছ হতে পরবর্তী পর্বে ( যদি দয়া করে লিখেন ) আরো অনেক
মুল্যবান তথ্য ও লেখা পাব ।
সম্প্রতি (২০২৫) ত্রয়োদশ বাংলা-বই মেলা হয়েছে ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর। স্থান ছিল Brady Arts &
Community Centre, Hanbury Street, London E1 5HU।
গত ১৯ অক্টোআর ২০২৫ এ লন্ডনে আরও একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল , মেলাটির নাম ছিল London Bangla
Book Fair , স্থান ছিল Mayfair Venue, Romford (1078 High Road, Romford, RM6 4BD)।
অতীতে, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত মেলায় “Bangladesh Book Fair, Literary & Cultural Festival”
Brady Arts Centre-তেই হয়েছে, যেখানে একটি বিশেষ বুথ ছিল ‘Sheikh Mujibur Rahman Corner’
যেখানে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর জীবনী, কর্ম ও বাংলাদেশের ইতিহাস-ভিত্তিক বই-সংকলন ছিল।
লন্ডনের বাংলা বই মেলাগুলোতে সাধারণত বাংলা বইয়ের স্টল যেখানে বাংলাদেশ ও প্রবাসী বাংলা-প্রকাশনীরা
অংশ নেয়। প্রায় ২০–৩০ টিরও বেশি প্রকাশনী অংশ নেয়। নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয় যেখানে থাকে নতুন
উপন্যাস, কবিতা, জীবনী, প্রবন্ধ, ইতিহাস বা গবেষণাধর্মী বই।
সাহিত্য আলোচনা কবিতা পাঠ আবৃতি; পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন গান, নৃত্য, শিল্প-প্রদর্শনী।
শিশু ও যুবকদের জন্যও বিশেষ আয়োজন থাকে যথা শিশুদের লেখাপড়া, আঁকা-চিত্র প্রতিযোগিতা, শিশুদের
সাহিত্য বা গল্প পড়া , মেলায় এমনসব সুযোগ থাকে। মেলার মাধ্যমে প্রবাসী বাঙালির মধ্যে বাংলা ভাষা-
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখার চেষ্টায় এগিয়ে আসা। যুব-প্রজন্মকে বাংলা কোষগুলি, নতুন রচনা
প্রকাশনা দেখানো।
এই ধরনের মেলা প্রবাসে বসবাসরত বাংলা লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের জন্য একটি মূল্যবান প্ল্যাটফর্ম।
মেলার মাধ্যমে নতুন বই, নতুন লেখক, কবিতা সংকলন বা গবেষণা বই বের হয় , যা অন্যথায় হয়তো প্রবাসে
পাওয়া কঠিন।
সুপ্রিয় লেখিকা রোকসানা লেইসের পোস্টের সুবাদে মন্তব্যের ঘরে কিছু কথা বলার মুযোগ মিলায় বলতে আরো
বলতে চাই, যারা বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ রাখেন ও যারা প্রবাসী , ঢাকাতে অনুষ্ঠিত বই
মেলায় যেতে পারছেন না ,তাঁরা নীজ নীজ সুযোগ অনুযায়ী পূর্বপ্রস্তুতিপূর্ণ লন্ডন বই মেলায় গিয়ে বিভিন্ন
ধরণের বাংলা বই, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, গবেষণাপত্র পেতে পারবেন।বাংলাদেশ থেকে দূরে থেকেও যারা
বাংলা পরিচয় ধরে রাখতে চান , প্রবাসে থাকলেও নিজের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পরিচয় বজায় রাখার একটা
মাধ্যম হিসেবে এই মেলা দারুনভাবে সহায়তা করবে ।
নতুন প্রজন্ম যারা ইংরেজি ভাষায় বড় হয়েছে, বা যারা বাংলা পড়াশোনা কম করেছে ,তাদের জন্য এই মেলা
একটা সেতুবন্ধন। তাই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে এই উদ্যোগ আরও বাড়ানো উচিত। প্রকাশন সংখ্যা,
নতুন বই, কবিতা, উপন্যাস, গবেষণা এবং রোকসানা লেইসের মত অন্যান্য সকল প্রবাসের পাঠকগন বেশি
যুক্ত হতে পারলে, বাংলা সাহিত্য আরও প্রসারিত হবে।
শুভেচ্ছা রইল
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:১৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালোলাগল। বরাবরের মতনই চিন্তাশীল এবং যথেষ্ট তথ্য সমৃদ্ধ।
ধন্যবাদ।
আগের বছর আগেই সামুতে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম বইমেলায় যেতে পারি বলে । ইচ্ছে ছিল লন্ডনে আপনারা যারা থাকেন তাদের সাথে দেখা হয়ে যাবে, অনুষ্ঠানে আসলে। কিন্তু পরে আর যাওয়া হয়নি। এ বছর সামুতে আসাই হয়নি অনেক মাস। তাই অনুষ্ঠানে যাওয়ার বিষয়ে পোষ্ট আগে থেকে করা হয়নি।
আপনি তো ভালোই জানেন বই মেলা সম্পর্কে। কখন কোথায় হচ্ছে। একজন লেখক হিসাবে নিশ্চযই এসে ছিলেন বইমেলায়। র্দূভাগ্য আমার আপনার সাথে সাক্ষাত হলো না।
লেখাটা অনেকদিন আগেই লিখেছি। পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। সামুতে পোষ্ট করার সুযোগ হচ্ছিল না।
লেখাটা অনেক বড় বলে দুই পর্বে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেকেই বড় লেখা পড়েন না।
আজ বাকি অংশ পোষ্ট দি্চ্ছি।
শুভেচ্ছা রইল ভালো থাকুন নিরন্তর
৫|
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আচ্ছা , দেখতে যাব ইনসাল্লাহ ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:২৭
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সারাক্ষণ মন খারাপ করে থাকা প্রকৃতি।
......................................................................
আমিও আছি ইউরোপে
কিন্ত ঠান্ডা আর প্রকৃতির জন্য আমারও মন ভালো নেই
কোথাও ঘুরতে যেতে পারিনা একা একা ।