নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদ্ভুত ছেলেটি

মেহেদী আনোয়ার

জানিনা

মেহেদী আনোয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বি ডি আর বিদ্রোহ ও পিলখান হত্যাকান্ডের কিছু অপ্রাকাশিত সত্যঃ (পর্ব ০৩)

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৯


প্রধানমন্ত্রীর বাড়ীতে বিকেলের দোদুল্যমান বৈঠক যখন চলছিল তখন নানক লাউড স্পীকার এ পীলখানা বিডিআর সদর দফতরের তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অবস্থানকারী সকল এলাকাবাসীকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নেবার নির্দেশ প্রদান করে। পরে রাতের দিকে বিডিআর সদর দফতরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ দরকার ছিল ভাড়াটে ও স্থানীয় হত্যাকারীরা যাতে নিরাপদে সরে যেতে পারে। তোরাব আলী ও তার ছেলে অবৈধ অস্ত্রের ডিলার, সন্ত্রাসী লেদার লিটন এর মাধ্যমে বেসামরিক পোষাক পরিচ্ছেদ সরবরাহ সহ হত্যাকারীদের পালিয়ে যাবার খরচাদি প্রদান করা হয়। উক্ত লিটনকে র‍্যাবের এর আটকাবস্থা থেকে তাপস ও নানকের হস্তক্ষেপে জানুয়ারী মাসে মুক্ত করা হয়। ঐ দিন রাত ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে স্পীড বোট যোগে হত্যাকারীদের বুড়িগঙ্গা নদী পার করিয়ে দেয়া হয়। এই পারাপারে হাজী সেলিমের সহায়তায় তার সিমেন্ট ঘাটকে ব্যবহার করা হয়। হাজী সেলিম এই কাজে পুরোপুরি সমন্বয় সাধনের দ্বায়িত্ব পালন করে। হাজী সেলিমের লোকজন সেই সময় স্থানীয় লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। ঢাকার একটি টিভি চ্যানেল ২৫ তারিখ রাত ১টার সংবাদে উক্ত ঘটনার খবর প্রচার করে। সেই রিপোর্টে ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য তুলে ধরে বলা হয় যে বেশ কিছু স্পীডবোর্টকে তারা আসা যাওয়া করতে দেখেছে; কিন্তু তারা কাছাকাছি যেতে পারেনি যেহেতু কিছু রাজনৈতিক কর্মী তাদেরকে সেদিকে যেতে বাধা দেয়।

হাজী সেলিম ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে বেশ কিছু গোলাবারুদ ক্রয় করে যা বিদেশী ভাড়াটে খুনীরা প্রথমে ব্যবহার করে। ঢাকার দৈনিক প্রথম আলোর এক সাংবাদিক এটা জানার পর সে এন এস আইকে এই মর্মে অবহিত করে যে পীলখানায় কোন ধরনের ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি চলছে যার সাথে বিডিআর ও আওয়ামীলীগ রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ জড়িত। ষড়যন্ত্রের নীল নকশামত উক্ত সাংবাদিককে এনএসআই থেকে বলা হয় যে তিনি যেন আর কারো সাথে বিষয়টা নিয়ে আলাপ আলোচনা না করেন। বিষয়টির সত্যাসত্য যাচাই বা তদনত্দ না করে এনএসআই গোটা বিষয়টি চাপিয়ে যায়।

পরের দিন সকালে সদর দফতরের কিছু বাসাবাড়ী থেকে উদ্ধার করতে ভাগ্যাহত অফিসারদের পরিবার পরিজনকে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মীর্জা আজম এই মর্মে সতর্ক করে দেয় যে তারা যেনো কেনো অবস্থাতেই সংবাদ মাধ্যমকে কিছু না বলে কেননা তখনও তাদের স্বামীরা বিদ্রোহীদের হাতে আটক আছে। নতুন করে এই ধরনের ভয়-ভীতি আতংক ভাগ্যাহতদের পরিবার পরিজনের মনে ঢুকিয়ে দেয়া এবং তার সাথে কিছু আশার সংমিশ্রন ঘটানোর পিছনে সেই দু'ব্যক্তির লক্ষ্য ছিলঃ
(১) পীলখানার অভ্যন্তরে বর্বর হত্যাকান্ডের পাশাপাশি পরিবার পরিজনদের নির্যাতন, ধর্ষন সহ অন্যান্য অপরাধের খবর যেন দেশবাসী খুব সত্বর জানতে না পারে।
(২) এটা নিশ্চিত করা যে সেনা অভিযান যেন না করা হয় এবং মৃতদেহগুলো সরিয়ে ফেলা সহ রক্তপাত ও ধ্বংসযজ্ঞের সকল চিহ্ন মুছে ফেলার জন্যে যেন প্রয়োজনীয় সময় ও সুযোগ পাওয়া যায়।

২৬ তারিখ রাতেও নানকের নির্দেশে পীলখানায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। সেই সময় সকল ধরনের প্রমাণাদি নিশ্চিহ্ন করার জন্যে হত্যা করা সেনা অফিসারদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা সহ হত্যার প্রমানাদি মুছে ফেলার কাজে বিডিআর এর হিন্দু জওয়ানদের নিয়োজিত করা হয়।আটকাবস্থাধীন মনোরঞ্জন নামে এক হিন্দু জওয়ান ঐ কাজে জড়িত ছিল। হিন্দু জওয়ানদের এই জন্যই এই কাজে নিয়োগ করা হয় এমন আশংকায় যে মুসলমান জওয়ানরা লাশ পুরে ফেলার ব্যাপারটা নাও মানতে পারে। এই রাতে সব কিছু ধুয়ে মুছে সাফ করা সহ বাকী বিদ্রোহীরা নিরাপদে সড়ে পড়ে। সব পরিকল্পনা অতি সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করা হয়।

অপরাধ ঢেকে ফেলা দুইদিন পরে তথা ২৭ তারিখে সরকারী সন্ধানকারী দলকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এ্যাম্বুলেন্সযোগে নিহত ও আহতদের পারাপার করতে দেখা যায়। কিন্তু বিডিআর এর প্রধান প্রবেশ পথ দিয়ে ৩ দিন ধরে অপেক্ষামান বিডিআর এর নিকট আত্নীয় স্বজনদের কাউকেও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি কিংবা ভেতর থেকেও কাউকেও বের হতে দেয়া হয়নি। এমন অবস্থা বজায় রাখার মধ্যেও যে অন্য কোন লক্ষ্য লুকায়িত থাকতে পারে এটা শোকাতুর ও হতভাগ্য লোকদের বুঝার কোন উপায় ছিলনা। এটা তাদের নিকট যৌক্তিক বলেই মনে হয়েছে যে ভাগ্যাহত মৃত ব আহতদের যথাযথভাবে সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত এবং হত্যাকারীদের ধরতে তল্যাশি অভিযান ও হত্যাকান্ডের প্রমাণাদি সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত বধ্যভূমি এলাকায় সাধারনের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ থাকাই শ্রেয়। এতবড় ধ্বংসযজ্ঞের পিছনে যে সরকার ও সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা জড়িত এটা কারোর পক্ষে আঁচ করা সম্ভব হয়নি। বরং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিডিআর ইউনিট সমুহ বিদ্যমান উত্তেজনার জন্য সাধারন্যে উদ্বিগ্নভাব স্পষ্টতই পরিলক্ষিত হতে পারে।

আসলে সেই সময়ও নিঃসন্দেহ জনগণ এটা বুঝতে পারেনি যে সরকার ও সেনাবাহিনীর উচ্চ মহল যারা এমনিতেই একটা বিশেষ সুবিধাভোগী এবং যারা তাদের সেই অবস্থার সুযোগে জাতির সাথে যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সেই বিশ্বাসঘাতকতাকে বেমালুম চাপিয়ে রাখার জন্যই ২৭ তারিখও তারা তৎপর থাকে। এই বিশ্বাসঘাতকতার চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য প্রয়োজনছিল গোটা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চাইতে আরও নিষ্ঠুর ও ভয়ংকর পদক্ষেপ। একই দিন অর্থাৎ ২৭ শে ফেব্রুয়ারী যখন দ্বিতীয় গণকবর আবিস্কারের মধ্যদিয়ে বিদ্রোহীদের নৃশংস মহা অপরাধের মানচিত্র প্রমানিত হতে শুরু করে তখন নানক ডিজিএফআই এর ডাইরেকটর (সিআইবি) ব্রিগেডিআর জেনারেল মামুন খালেদকে এই মর্মে পরামর্শ দেয় যে প্রচার মাধ্যমকে না জানিয়ে কোন রুপ রাষ্ট্রীয় দাফন অনুষ্ঠান ব্যাতিরেকেই যেন নিহতদের বিচ্ছিন্ন ও ক্ষতবিক্ষত লাশ অবিলম্বে আত্নীয়স্বজনদের নিকট হসত্দানত্দর করা হয়। নানকের সেই প্রতারনাপূর্ন পরামর্শের কথা সেই সময় উপস্থিত অন্যান্য সেনা কর্মকর্তাদের নজর এড়ায়নি। এমন পরামর্শে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের এক অফিসারতো রাগের মাথায় রীতিমত নানককে আক্রমন করতেও সচেষ্ট হয়। অন্য সেনা কর্মকর্তারা তাকে অবশ্য নিবৃত্ত করে। পরিস্থিতি আরও অগ্নিশর্মা হয়ে উঠতে পারার আশংকায় নানক দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অপেক্ষমান বিডিআর এর নতুন ডিজি বিগ্রেডিআর জেনারেল মঈনুল ইসলামও জেনারেল হেড কোয়াটার এ বসে বসে এই ষড়যন্ত্রের বাকী নীল নকশা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠে। তিনি পীলখানার ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য সেনাবাহিনীর একদল অফিসারকে একটি বৈঠকে জড় করেন। তিনি তাদেরকে বলেন যে ব্যক্তিগতভাবে তিনি মনে করেন যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও সেনাপ্রধান সম্পূনভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। না হলে সেনাবাহিনীর এত জন অফিসার এমনভাবে নিহত হতোনা।

তিনি তার বক্তব্যের সমর্থনে কিছু কিছু যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকে উপস্থিত সেনা অফিসাররা যখন তাদের মতামত উপস্থাপন করতে শুরু করে তখন তিনি তাদেরকে তাদের বক্তব্য লিখিতভাবে তার নিকট প্রদানের কথা বলে এই মর্মে আশ্বাস প্রদান করেন যে তিনি তাদের বক্তব্য সেনাবাহিনীর উচ্চ মহলে পেশ করবেন। তিনি সেইসব মতামত অবিকলভাবে তখন সিজিএম পদে কর্মরত লে: জে: আমিনুল করিম এর নিকট দাখিল করে এবং তাদের সাথে সেনাপ্রধানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানায়। মঈনুল পরের দিন সেনাকুঞ্জে অনুষ্ঠিত সেনা প্রধানের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট অফিসারদেরকে তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের পরামর্শ জ্ঞাপন করে। সেই বৈঠকে অফিসাররা সেনাপ্রধানের মুখের উপর তার কঠোর সমালোচনা করলে বৈঠকে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে সেনা নিরাপত্তা ইউনিট এর সহায়তায় আতংকগ্রস্থ সেনাপ্রধান সভা স্থল ত্যাগ করে। সে বৈঠকের পর পরই পূর্ব নির্ধারিত জানাযায় অংশগ্রহনের জন্যে সেনাপ্রধানকে তার পরিচ্ছেদ বদল করতে আসতে হয়। পরিহাসের বিষয় হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ সেনা অফিসারদের উত্তেজিত করার দায়ে মঈনুল এর বদলে দায়ী করা হয় আমিনুল করিমকে। তাকে অবিলম্বে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। একজন সম্মানীয় দেশপ্রেমিককে সেনাবাহিনী থেকে হটিয়ে মঈনুল বিডিআর পুনর্গঠনে তার নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে মশগুল হয়ে পড়েন।

সরকারের বিরুদ্ধে সেনা অফিসারদের উস্কিয়ে দেয়ার কল্পিত ষড়যন্ত্রের তদন্তের সাথে মইনুল করিমকে জড়ানোর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে সক্রিয় বিদ্রোহের হোতাদের যোগসাজসে সরকার আরও একটি ঘটনাকে সঙ্গোপন করে রাখে। ঘটনাটি ছিল ঐ দিন উপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোহেল তাজ পীলখানায় হত্যাযজ্ঞে নিয়োজিত বিদেশী কিলারদের অতি নিরাপদে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। উল্লেখ্য যে ১৮ই ফেব্রুয়ারী থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সোহেলকে তার অফিস কিংবা জনসমুক্ষে দেখা যায়নি। কোন কোন সংবাদ মাধ্যমে এই মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয় যে ২৫ ও ২৬ শে ফেব্রুয়ারী সে তার পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিল। এটা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। সে ১৮ই ফেব্রুআরী গোপনে ভারত সফরে যায় এবং দুই বা তিন দিন পর সে ফিরে এসে পরিকল্পনা মোতাবেক ২৫ তারিখ রাতে বিদেশী ভাড়াটে খুনীদের বিমানযোগে নিরাপদে বিদেশে পার করে দেয়ার কাজে সহায়তা করে। ২৮ তারিখ সন্ধায় সেনাবাহিনীর একটি পরিবহন হেলিকপ্টারে করে সোহেল তাজ সিলেট যায় এবং সে রাতেই ওসমানী বিমান বন্দর থেকে একটি বেসামরিক বিমানে সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়। সেনাবাহিনীর লে: ক: শহীদ সে হেলিকপ্টার চালায় যে কিছুদিন পর নিহত হয়। সে ও ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের মেজর জেনারেল রফিকুল ইসলাম সহ একটি রহস্যময় হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় টাঙ্গাইলের সন্নিকটে তারা নিহত হয়। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাটি ছিল নাশকতামূলক। সোহেল তাজ এর দুষ্কর্ম গোপন রাখতে নিরাপরাধ শহীদকেই কেবল হত্যা করা হলোনা; সেই সাথে হত্যা করা হলো আরো একজন দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে। পরবর্তীতে ডিজিএফআই এর ব্রিগেডিআর জেনারেল মামুন খালেদকে দায়িত্ব দেয়া হয় সেই সব অফিসারের তালিকা প্রনয়নের জন্য যারা সেনাকুঞ্জের বৈঠকে সেনাপ্রধানের সামনে দাড়ীয়ে অভিযোগ জানানোর সাহস দেখিয়েছিল। এমন ৫০ জন অদ্ভূত অফিসারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়; যাদের অনেককে ইতিমধ্যে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে আর বাকীদের ঢাকার বাইরে গুরুত্বহীন পদ সমূহে বদলী করা হয়।



পীলখানা হত্যাযজ্ঞ থেকে যে কয়েকজন নিরাপদে বেরিয়ে আসে তাদের মধ্যে ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: ক: শামস একজন এবং তাকেই কেবলমাত্র টেলিভিশনে উপস্থাপন করা হয় এবং সাধারন্যে তিনি আকস্মাৎ একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। মিডিয়া সমুহে তিনি তার ভাই ভাগ্যাহত অফিসারদের হত্যাকান্ড ও তাদের অত্যাচার যন্ত্রনা সম্পর্কে কেবল গীত গেয়েই ক্ষানত্দ হলেন না; তিনি বলে দিলেন যে সকল অফিসারকে ২৫ তারিখ সকাল ১১টার মধ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার চাক্ষুস বর্ণনা প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান কতৃক সেনা হস্তক্ষেপ ছাড়া বিদ্রোহ দমনের গৃহীত নীতির যৌক্তিকতা নিরুপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ সেনা অফিসাররাতো ১১টার মধ্যেই নিহত হয়ে যায়। অতএব তার পর বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী এগিয়ে গেলে আরো কিছু জীবন হানী ও রক্তপাত ছাড়া আর কি হতো? প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান কর্ণেল শামস এর প্রদত্ত ভাষ্যের ঋন খুব দ্রুতই পরিশোধ করে । তাকে এলিট এস এফ এফ এ বদলী করা হয়। বিদ্রোহ সম্পর্কে গঠিত সেনা তদন্ত টীম শুরু থেকেই বিদ্রোহের ভিন্ন চিত্র পেতে শুরু করে। তারা এটা বের করে ফেলে যে পীলখানা বিদ্রোহীদের মূল উৎস কর্ণেল শামস এর ৪৪ ব্যাটালিয়ান এবং উক্ত ব্যাটালিয়ানের কোন কমান্ডিং অফিসারকে তথা কর্ণেল শামস মেজর মাহাবুব এবং মেজর ইসতিয়াক কে হত্যা করা হয়নি। কিংবা তাদের অফিসও অন্যান্য নিহত অফিসারের অফিস এর ন্যায় লন্ড ভন্ড করা হয়নি। তদন্তে আরও গুরুতর যে তথ্য ফাঁস হলো তা হচ্ছে মিনিট কয়েক পূর্বে বিডিআর এর ৫ নং গেট এর সন্নিকটে কর্ণেল শামস কে একদল বিডিআর সেনাকে কি যেনো ব্রিফিং করতে দেখা যায়। যখন কেউ একজন চিৎকার দিয়ে উঠে যে অফিসাররা সৈনিক থেকে আলাদা হয়ে যাও তখন সে খুব তাড়াতাড়ি তার ব্রীফিং সমাপ্ত করে দ্রুত সরে পড়ে। ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়ানের গ্রেফতার কৃত বিদ্রোহীদের কেউ কেউ জিজ্ঞাসাবাদে এই মর্মে উল্লেখ করেছে যে বিদ্রোহ পরিকল্পনার ব্যাপারে কর্ণেল শামসকে জিজ্ঞাসা করা হোক। তারা পরিকল্পনার কথা কিছুই জানেনা বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। সেনা তদন্ত বোর্ড এই ব্যাপারে কর্ণেল শামসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমতি চাইলে প্রধানমন্ত্রির অফিস সে অনুমতি প্রদানে অসম্মতি জ্ঞাপন করে। আবার বিডিআর এর যোগাযোগ ইউনিট এর কোন অফিসারও নিহত হয়নি। এর অধিনায়ক কর্ণেল কমরুজ্জামানকেউ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেনা তদন্ত বোর্ডের অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর অফিস প্রত্যাখান করে।

সেনা তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে র‍্যাবের নিম্ন পদস্থ অফিসাররা যখন বিদ্রোহের আগে পরের সন্দেহভাজনদের ফোন কল রেকর্ড পরীক্ষা শুরু করে তখন এমন অনেক তথ্য তারা লাভ করে যার মধ্যে বিডিআর হত্যাযজ্ঞের সাথে আওয়ামীলীগ নেতাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। আওয়ামীলীগ নেতা তোরাব আলী বিদ্রোহের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিদেশে কারো সাথে তাদের পরিচয় গোপন করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির এর বেনামে বহু চিঠি অনেক সেনা কর্মকর্তার নিকট প্রেরন করে। এমন ঘটনা সমুহের অন্যতম একটি উল্লেখ্য ঘটনা হচ্ছে ২৪ শে ফেব্রুয়ারি ফোনে ডিএ ডি তৌহিদের সাথে নানকের ২০৪ মিনিটের কথোপকোথন। এই কথোপকোথন ও নানকের আরো কিছু দোষনীয় কার্জকর্মের প্রমাণ পওয়া যায় এবং ২৫শে মার্চ রাতে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুন পীলখানায় অস্ত্র সংবরণ নাটক মঞ্চস্থ করছিল তখন নানক কি করছিল তা জানার জন্য নানককে সেনা তদন্ত বোর্ড জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করলে নানক তা থেকে বাঁচার জন্যে হঠাত বুকের ব্যথার ভান করে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তী হয় এবং দ্রুত সেখান থেকে সিঙ্গাপুর চলে যায়। হত্যাযজ্ঞের দিন কয়েকপর ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব মেনন এক অনির্ধারিত সফরে ঢাকায় আগমন করে এবং জরুরী ভাবে প্রধানমন্ত্রী ও সেনা প্রধানের সাথে গোপন শলা পরামর্শে মিলিত হয়। এদিকে সেনা তদন্ত বোর্ড ঘটনা তদন্তে নানকের সাথে কথা বলা দরকার এটা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হলে তিনি তা সরাসরি প্রত্যাখান করেন। শুধু তাই নয় ব্রিগেডিআর জেনারেল হাসান নাসির যিনি সেনা তদন্ত বোর্ডের সদস্য ছিল এবং তিনি নানকক জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিল বিধায় তাকে সেনা তদন্ত টীম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। নানক যখন জানতে পরলো যে তাকে জিজ্ঞাসা বাদ না করার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে এবং তাকে আইনের উর্দ্ধে রাখা হবে তখনই সে দেশে ফিরে আসে। আর অত্যন্ত পরিশ্রমী ও দ্বায়িত্ববান অফিসার নাসিরকে প্রতিহিংসার শিকার হতে হলো।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:০৫

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আম্লিগকে নিষিদ্ধ ছাড়া কোন উপায় নেই।

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: না এগুলো সত্য নয়। ৭৫% বানোয়াট।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৪

মেহেদী আনোয়ার বলেছেন: জি ভাই. আপনাদের কাছে সবই মিথ্যা, সবই বানোয়াট। আয়নাঘর স্ক্রিপ্টেট, ৫ আগস্ট ষড়যন্ত্র, হেলিকপ্টার দিয়ে গুলি করা মিথ্যা, আবু সাঈদ AI দিয়ে বানানো, মুগ্ধ ইমাজিনেশন, রিয়া গোপ মিথ্যা, শহীদ ইয়ামিন সন্ত্রাসী, বাংলাদেশ নতুন জঙ্গিস্থান, রিকশার পা-দানিতে থাকা শহীদ নাফিস মিথ্যা, শহীদ নাইমা-নাফিসা মিথ্যা, স্নাইপার দিয়ে গুলি চালানো বানোয়াট, কোটি জনতা মিথ্যা!! শুধু সত্য হচ্ছে আপনাগো নেত্রী, পিও আপার অমর বাণী- "কি দোষ ছিল আমার?"
"স্বজন হারানোর বেদনা যে কত কঠিন...... " আর সত্যি চট করে ঢুকে পট করে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এবং স্লোগান "জিতবে এবার নৌকা"

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.