নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ খুবই বিষাক্ত; বিষাক্ত সাপের চাইতে বিষাক্ত!

০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৫

ছোট থাকতে একবার আমার এক ফুফাতো বোন আমাকে খামছে দিয়েছিলো, তখন তার বয়স ৪ মাস মাত্র। সেই খামছির দাগ মুছতে প্রায় ৪ মাস লেগেছিলো, আর ব্যাথা সারতে প্রায় ৫/৬ দিন।



ঐ সময় একাধিক বার শুনেছি, মানুষের খামছি নাকি কুকুর বিড়ালের থেকে বিষাক্ত। মানুষের নখের ভিতরে নাকি অনেক বিষ। এটাও শুনেছি যে মানুষের কামড়েও নাকি প্রচন্ড বিষ। ঘটনা হয়ত এমন না; আবার হয়ত এমন।

তবে আমি অবাক হই মানুষের মনের বিষাক্ত অবস্থা দেখে। কোন পার্টিকুলার কারণ ছাড়াই আমি দেখেছি একজন আর একজনের কি পরিমান ক্ষতি করে। আমি নিজেও একাধিকবার এর স্বীকার হয়েছি। আমি চেষ্টা করে এর থেকে দূরে থাকতে। কে জানে, হয়ত পারি না; অথবা পারি।

কয়েকদিন আগে আমাকে ভার্সিটির এক সহপাঠি কল করেছে, ফেসবুকে। আমি একটু অবাকই হয়েছি। কারণ পরিচিত কেউ আমাকে সাধারণত কল করে না। তার উপর সেটা যদি হয় ভার্সিটির সহপাঠি, তাহলেতো কথাই নাই।

কল রিসিভ করে বেশ কিছু আলোচনা হলো, এরপর হঠাৎ সে বললো যে তার ছেলে অসুস্থ, হসপিটালে ভর্তি, আর ২৫ হাজার টাকা দরকার একটা অপারেশনের জন্য। আমাকে জিজ্ঞাসা করলো যে কোন ভাবে সাহায্য করতে পারবো কি না। আমি 'চেষ্টা করে দেখি' বলে ফোন রাখলাম।

আমি কয়েকজনের কাছে টাকা পাই, তাদের ফোন দিলাম, এর কাছ থেকে ওর কাছ থেকে ম্যানেজ করে মোট ২০ হাজার জোগাড় হয়ে গেলো, বাকি ৫হাজার আমি পাঠিয়ে দিলাম। এর মধ্যে ঐ সহপাঠি বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করলো, আমি তাকে আস্বস্ত করলাম যে একটা না একটা ব্যবস্থা হবে ইন শা আল্লাহ। তার হাতে টাকাটা মোটামুটি সঠিক সময়েই পৌঁছেছে।

কিন্তু এর মধ্যে আমি মানুষের সেই বিষাক্ততার কিছু নমুনা দেখলাম। ঐ সহপাঠী কল করার পর থেকে আমার ভার্সিটির প্রায় ৭-৮ জন সহপাঠি আমাকে কল করেছে। তারা সবাই আমাকে কল করছে এমন না, তারা সবাই সবাইকে কল করছে। তাদের একটাই চেষ্টা, যেন কেউ ওকে হেল্প না করে।

আমি প্রথমে তাদের কথা শুনছিলাম, ভেবেছিলাম হয়ত সে মিথ্যা বলে টাকা নিচ্ছে। পরে তাদের মুখের কথা থেকেই বুঝতে পারলাম যে ঘটনা সত্য, এবং সত্যিই তার টাকা দরকার।

সবাই যখন বুঝে গেছে যে আমি চেষ্টা করছি টাকা দেওয়ার, সবাই মিলে একজোট হয়ে আমাকে বোঝানোর জন্য গ্রুপ কল পর্যন্ত দিয়েছে। সবার একটাই যুক্তি, এই ছেলের সাথে ভার্সিটিতে আমার গ্যাঞ্জাম ছিলো!

আসলে গ্যাঞ্জাম না, দু-চারবার হাতাহাতি পর্যায়ে গিয়েছে তার সাথে। কিন্তু ১২/১৩ বছর পর এসে সেই কথা মনে রেখে তার ছেলের চিকিৎসার জন্য হাত না বাড়ানোর কোন কারণ আমি পাইনি। খুব অবাক লেগেছে, যে ৭/৮জন আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করছে, তাদের মধ্যে থেকে তিনজনের পাশে দাড়িয়েছি করণার সময়। তাদের কঠিন সময়ে নিজের পকেট থেকে যেমন সাহায্য করেছি, মানুষ থেকে সাহায্য চেয়ে নিয়েও তাদের দিয়েছি। এমনকি আরও কয়েকজনকে ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য পুঁজি পর্যন্ত যোগাড় করে দিয়েছি, সেটাও তারা জানে। কিন্তু অন্যকে সাহায্য করতে দেখে তাদের এত জ্বলে যাচ্ছে কেন সেটা বুঝলাম না।

সৌদী এসেছি প্রায় সাড়ে ৬ বছর, এর মধ্যে কেউ নিজের প্রয়োজন ছাড়া একবার কল করেনি। ২০১৯ এর শেষের দিকে যখন দেশে গিয়েছিলাম, এদের কেউ আমার সাথে দেখা করার সময়ও পায়নি। আজকে অন্য একজনকে সাহয্য করছি দেখে তাদের প্রচুর সময় আছে বাধা দেওয়ার! কি অদ্ভুত বিষাক্ততা!

Photo by Adrien King on Unsplash

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯

বাকপ্রবাস বলেছেন: সওদি আছেন? কোন জায়গায়?

০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: রিয়াদ....

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: বিষাক্ত সাপ এবং মানুষ আমি খুব ভয় পাই।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ভালো!

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৪

সোহানী বলেছেন: দু:খজনক। মানুষের বিষক্ততা অনেক ভয়াবহ, হয়তো চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরী হয়। কখনো প্রকাশ পায়, কখনো পায় না।

সবই বুঝলাম কিন্তু চার মাসের বাচ্চার খাঁমচি চার মাস লেগেছে ঠিক হতে................ হাসবো নাকি কাঁদবো বুঝলাম না। ওরতো নখই থাকার কথা না ;)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: দু:খজনক। মানুষের বিষক্ততা অনেক ভয়াবহ, হয়তো চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরী হয়। কখনো প্রকাশ পায়, কখনো পায় না। - হুম


সবই বুঝলাম কিন্তু চার মাসের বাচ্চার খাঁমচি চার মাস লেগেছে ঠিক হতে................ হাসবো নাকি কাঁদবো বুঝলাম না। ওরতো নখই থাকার কথা না - এইটা আমার জীবনে একটা রহস্য হয়ে আছে! তখনতো ডায়াবেটিকসও ছিলো না আমার এত সময় আসলেই লাগার কথা ছিলো না!

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


টাকা ধার দেয়া খুবই বিপজ্জনক কাজ।
এ কাজটি না করাই উত্তম।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে এই জ্ঞান লাভ করেছি।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমি টাকা ধার দিয়ে বিপদে পড়েছি। তবে আমি যতটুকু বিপদে পড়েছি, তার থেকে বেশী উপকার হয়েছে যাকে টাকা ধার দিয়েছি তার। পাল্লায় মাপলে উপকারের ভার বেশী। তাই আমি টাকা ধার দেই।

মাঝে মধ্যে আমারও টাকার দরকার পড়ে। আমাকেও ধার করতে হয়। "আমি কাউকে ধার দিবো না" মেন্টালিটি নিয়ে চলা মানুষকে অন্য মানুষ টাকা ধার দিবে বলে আমার বিশ্বাস না।

টাকা ধার দেওয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ভালো কাজ। "ঝামেলা হতে পারে" চিন্তা করে বিপদে পড়া মানুষকে টাকা ধার না দেওয়া আমার কাছে খারাপ কাজ মনে হয়।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৭

নতুন বলেছেন: আসল বিষয় হইলো মানুষ চেনা।

মানুষ চিনতে পারলে তখন খারাপ মানুষ থেকে দুরে থাকা যায় এবং ঝামেলা থেকে দুরে থাকা সম্বব।

যারা মানুষ চিনতে পারেনা তারাই বিপদে পড়ে।

আমি জীবনে অনেক টাকা ধার নিয়েছি। আমি হিসাব করেই ধার নেই এবং সময় মতন শোধ দেই তাই ধার পেতে সমস্যা হয় নাই।

আবার বড় অংকের টাকা মানুষ বুঝেই ধার দিয়েছি এবং তারা সময় মতনই ফেরত দিয়েছে।

মানুষ ভালো না হলে যেটুকু আপনি সাহাজ্য হিসেবে দিতে পারবেন সেটা দেওয়া উচিত। তখন ফেরত না দিলে কস্ট হবেনা।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০১

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমার কখনও বড় অংকের টাকা ধার দেওয়ার মত সামর্থ্য হয়নি। সর্বোচ্চ একজনকে দিয়েছি এক লাখ টাকা। সে সময়ের ৯মাস পরে দিয়েছে, তাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি। কারণ আমার ঐ টাকাটা জমানো হিসাবেই ছিলো। টাচ করতাম না কয়েক বছরেও হয়তো। ঐ টাকার জাকাতও দিয়েছি নিজের পকেট থেকেই।

এছাড়া আমি অল্প টাকা মানুষকে ধার দিয়েছি, একাধিক বার মানুষ দেরী করেছে। কিন্তু..... আমি যতটুকু বিপদে পড়েছি, তার থেকে বেশী উপকার হয়েছে যাকে টাকা ধার দিয়েছি তার। পাল্লায় মাপলে উপকারের ভার বেশী। তাই আমি টাকা ধার দেই।

৬| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: আবার এলাম।
কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:০২

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ভালো!

জানেন কি, এই লেখাটা হাফার আল বাতেন বসে লেখা!

৭| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৩

আরোগ্য বলেছেন: আমি দান করার চেয়ে ধার দেয়া বেশি পছন্দ করতাম কারন দান নিজের সুবিধা মত করা যায় আর ধার দেনাদারের সুবিধা মত।এতে মানুষের উপকার করা যায় বেশি। একজন তিন মাসের কথা বলে লাখ টাকা নিয়েছে, এক বছর পার হয়ে গেল। এখন ভাবছি যতটুকু সদকা হিসেবে ছেড়ে দিতে পারবো, এখন থেকে ততটুকুই ধার দিবো।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমিও ধার দেওয়াতে বেশী আগ্রহী। তবে আমার তেমন টাকা পয়সা নাই। সাধারণত আমার কাছে টাকা থাকে না যে ধার দিবো। তবে থাকলে কখনও না করি না। এমনও উদাহরণ আছে যে অন্যের কাছ থেকে ধার করে ধার দিয়েছি!

৮| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:২০

মিরোরডডল বলেছেন:




দুষ্ট লোকেরা যাই বলুক, you did the right thing.


০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫৪

সোনালি কাবিন বলেছেন: টাকা ধার দিলে মানুষ চেনা যায়

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: দিবেন কিছু ধার, চিনে নেন আমাকে!

১০| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৫:১৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: "মানুষ খুবই বিষাক্ত; বিষাক্ত সাপের চাইতে বিষাক্ত" এই শিরোনামের লেখা পড়তে গিয়ে শুরুতেই দেখি চার মাস বয়সী একটু শিশুর কথা বলা হচ্ছে! কি আশ্চর্য!!!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুম, খুবই আশ্চর্য!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.