somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

। । 'বিহারী' দের গল্প::বিষবৃক্ষের করুণ শাখা-2 । ।

০২ রা জানুয়ারি, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




71 এর মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা কামী বাঙ্গালী জন গোষ্ঠি বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী যাদের বেশীর ভাগের জাতিস্বত্বা পাকিস্তানী, পূর্ব পাকিস্তানে পুনবার্সিত 'বিহারী' এবং জামাতে ইসলাম -মুসলিম লীগ-নেজামে ইসলামের মতো ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতাকমর্ীরা যারা জাতিগত ভাবে বাঙ্গালীই ছিলো ।
তিন ঘাতক গোষ্ঠির প্রত্যকের আলাদা আলাদা স্বার্থ ছিলো । 'বিহারী'দের বিবেচনায় ছিলো-- পূর্ব পাকিস্তানে তারা ইতিমধ্যেই ব্যবসা বানিজ্যে ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠিত । বাংলাদেশ রাস্ট্র সৃষ্টি হলে এই অধিকার তারা হারাবে, মুল জন্মভূমি ভারতে ফিরে যাবার সুযোগ নেই-- কারন 'হিন্দু' ভারতকে অস্বীকার করে 'মুসলিম পাকিস্তানে' তারা এসেছে স্বেচ্ছায় ।
যেতে হবে পশ্চিম পাকিস্তানে । কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানে থাকা 'বিহারী' দের নিজেদের অবস্থাই খারাপ । দেশ বিভাগের এতো বছর পর ও মুল স্রোতের সাথে তাদের আত্নীকরন হয়নি । করাচী ন গরীতেই শুধু প্রাধান্য । বাকী সবার কাছে এতোদিন পর ও 'মোহাজের' নামে পরিচিত- 'পাকিস্তানী ' হয়ে উঠা হয়নি ।

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধরে হত্যাকান্ডে স হযোগীতার পর ও এই 'বিহারী' রাআবারো 'বিট্রেড' হলো পাকিস্তানী তথা 'পাঞ্জাবী'দের দ্্বারা । জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আত্নসমর্প নকারী সৈন্যদের পাকিস্তান ফিরিয়ে নিলে ও তাদের স হযোগী বাহিনী 'রাজাকার' 'আলবদর' 'আল শামস' দের ফিরিয়ে নেয়নি । ফলে 'বিহারী' রা আবারো আটকা পড়লো এমন এক ভূ-খন্ডে যার প্রধান জন গোষ্ঠির হত্যাকান্ডে তারা সরাসরি জড়িত ছিলো ।

এরা যেভাবে 'জাতিগত শোধন' চালিয়েছিল বাঙ্গালীর বিরুদ্ধে , বিজয়ী বাঙ্গালী তার প্রতিশোধ নেয়নি । নেয়নি যে তার প্রমান , গত 35 বছর ধরে এরা বেঁচে আছে নিজেদের পরিচয়েই এই রাষ্ট্রে , যে রাষ্ট্রকে জন্মলগ্নে তারা হত্যা করতে চেয়েছিল । এটা সম্ভবত: এ কারনে হয়েছে যে বাঙ্গালী জাতিগত আচরনে প্রতিশোধ পরায়ন বা যুদ্ধংদেহী নয় । জানা ইতিহাসে জাতি হিসেবে বাঙ্গালীরা এই একবারই 71 এ যুদ্ধ করেছিলো । করেছিলো , কারন এ ছাড়া তার বেঁচে থাকার আর কোনো পথ ছিলোনা ।

বাংলাদেশের 'বিহারী' রা 35 বছর ধরে 'রিফিউজি' হিসেবে আছে এ দেশে , অপরদিকে পাকিস্তানের করাচীভিত্তিক 'বিহারী'রা 47 থেকেই আছে 'মোহাজির ' হিসেবে । মুল জন গে াষ্ঠির সাথে এদের আতি্নকরন হয়নি গত 60 বছরে ও । এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাগ্যবান ভারত থেকে আসা বাঙ্গালী মুসলমানেরা । পূর্ব বাংলার মানুষ খুব স হজেই পশ্চিম বাংলা , আসাম থেকে বাঙ্গালী মুসলমানদের গ্রহন করে নিয়েছে ।
এমনকি দেখা যায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গত 35 বছরে শেখ মুজিব ও তার মেয়ে শেখ হাসিনা ছাড়া বাকী সব শাসকই মুলত: পশ্চিম বাংলার বাঙ্গালী । এদের কারোরই শেকড় এই বাংলায় নয় । বিপরীতে পূর্ববাঙ্গালী হিন্দুদের অনেক অনেক বেশী দুর্দশার শিকার হতে হয়েছে পশ্চিম বাংলায় আতি্নকরন হতে গিয়ে । সুনীল গাঙ্গুলীর 'পূর্ব-পশ্চিম ' উপন্যাসে কিছুটা ছবি পাওয়া যায় । 'মেঘালয় ', ত্রিপুরা' 'নাগাল্যান্ড' ও 'আসাম ' এর অনেক জায়গায় এখনো কিন্তু এটা হয়ে উঠেনি । এখনো অনেক জায়গায় বাঙ্গালীদের থাকতে হয় ক্যাম্পের মতো আলাদা জায়গায় । প্রতি বছর বাঙ্গালী- খাসিয়া, বাঙ্গালী - টিপরা, বাঙ্গালী- নাগা, বাঙ্গালী-আসামী রায়ট হয় । এই খবর গুলো গুরুত্বহীন , এমনকি বাঙ্গালীপ্রধান 'পশ্চিমবঙ্গ'ের' মিডিয়ায় ।

যা হোক 80 এর দশকের শুরুতে পাকিস্তানের 'বিহারী' রা আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে 'মোহাজের কওমী মুভমেন্ট' শুরু করে । পাকিস্তানী সামরিক শাসকদের নিযর্াতনের মুখে এই 'মুভমেন্ট' সশস্ত্র হতে বাধ্য হয় । রক্তক্ষয়ী আন্দোলন এখনো চলছে । সমপ্রতি নাম বদলে হয়েছে 'মোত্তাহিদা কওমী মুভমেন্ট' ।

সব মিলিয়ে 'বিহারী' দের গল্প -- একটা 'বিট্রেড' , 'ফ্রাসটেইটেড' জাতিগোষ্ঠির গল্প-- যারা ধমর্ীয় রাজনীতির করুন শিকার ।






[গাঢ়]
এই লেখাটা পড়ে যেনো কারো মনে না হয় , আমি 'বিহারী'দের প্রতি স হানুভূতিশীল । আমার পূর্ব পুরুষের হত্যাকান্ডে সম্মিলিতভাবে অংশ নিয়েছিল যে তিনটি গোষ্ঠি-- পাকিস্তান রাষ্ট্র, পূর্ব পাকিস্তানের 'বিহারী' এবং বাংলাভাষী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক গোষ্ঠি-- সকলের প্রতি আমার ঘৃনা আমৃতু্য ।
তবে আলতাফ হোসেনের 'এম.কিউ.এম' এর প্রতি আমার সমর্থন আছে । 'রিফিউজি' বিহারীরা ফিরে যাক তাদের নিজেদের রাষ্ট্রেযে রাষ্ট্রে লোভের একদিন নিজেদের জন্মভূমি ফেলে তারা চলে এসেছিলো, যে রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখার জন ্যতারা ঘাতক হয়েছিলো -- সে রাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে তারা নিজেদের অধিকার আদায় করুক( একই কামনা বাংলাভাষী রাজাকার ও তাদের আদর্শ বাহকদের জন্য ) ।
[/গাঢ়]

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৫০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×