ভিডিও ফুটেজ ঃ Click This Link
প্লেয়ার ঃ http://www.soft32.com/download_300.html
ফুঁসে উঠেছে ইরাক
ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসি দেয়ার প্রতিবাদে তার শত শত সমর্থক গত দুদিনে ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ তিকরিত ও সামারায় ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে। প্রতিবাদকারীরা এ সময় দখলদার মার্কিন বাহিনী ও ইরাক সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাদ্দাম তুমি সমগ্র আরবের গর্বিত নেতা, তোমার জন্য আমরা আমাদের আত্দা ও দেহ উৎসর্গ করতে প্রস'ত।
ফাঁসির প্রতিবাদে ইরাক ছাড়া জর্ডানের রাজধানী আম্মানসহ আরো কয়েকটি দেশেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এদিকে গতকাল এক প্রতিবেদনে ইরাক সরকার জানিয়েছে, গত বছর (2006) ইরাকে বিভিন্ন সংঘর্ষে 16 হাজার 273 জন বেসামরিক নাগরিক, সেনা ও পুলিশ নিহত হয়েছেন। খবর: বিবিসি/এএফপি
আম্মানের বিক্ষোভে সাদ্দামের ছোট মেয়ে রাঘাত অংশ নেন। বিক্ষোভ শেষে রাঘাত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, যারা এ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন, আল্লাহ তাদের মঙ্গল করবেন। 2003 সালের এপ্রিলে ইরাক আক্রমণ করার 4 মাস পর থেকে সাদ্দামের ছোট মেয়ে রাঘাতসহ অন্য দুই মেয়ে জর্ডানে অবস্থান করছেন। জর্ডান ছাড়া ফিলিসত্দিন ও ভারত শাসিত কাশ্মিরেও ব্যাপক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া বিবৃতিতে সাদ্দামের ফাঁসি কার্যকর করার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
গতকাল ইরাকি সুনি্নরা বাগদাদের আধামিয়া জেলায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। এতে কয়েকশ সুনি্ন আরব অংশ নেন। সাদ্দামের জন্মস্থান তিকরিতেও গতকাল তৃতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা কারফিউ অমান্য করে এ বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় তারা ইরাকের মার্কিন দখলদার বাহিনী নিপাত যাক বলে স্লোগান দেয়। এছাড়া সুনি্ন অধু্যষিত সামারায়ও সাদ্দামের ফাঁসির প্রতিবাদে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
সাদ্দামের ফাঁসির প্রতিবাদের ইরাকের সুনি্নদের বিক্ষোভে ফেটে পড়ার ঘটনায় যথেষ্ট চাপের মধ্যে পড়েছে ইরাক সরকার। ইরাক যুদ্ধে যে তিনি জিতে উঠতে পারেননি, তা খোলাখুলিভাবেই মেনে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবি্লউ বুশ। কিন' ইরাক থেকে এখনই হাত গুটিয়ে নেয়ার কোনো সম্মানজনক পথও খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি।
ইরাকে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের মৃতু্যর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। সোমবার আরো এক মার্কিন সেনার মৃতু্যর মধ্য দিয়ে ইরাকে মার্কিন নিহতের সংখ্যা 3 হাজার ছুঁলো। এছাড়া গতকাল ইরাক সরকার 12 হাজার ইরাকির নিহত হওয়ার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসে অন্য মাসের তুলনায় বেশি লোক নিহত হয়েছে। এতেই প্রমাণ হয়, সাদ্দামের মৃতু্যদণ্ডকে কেন্দ্র করে ইরাকে সংঘাত ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে।
ইরাক যুদ্ধ মার্কিন অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রসত্দ করেছে। সাম্প্রতিক মার্কিন কংগ্রেস নির্বাচনেও তার প্রভাব পড়েছে। তা সত্ত্বেও বুশ ইরাক থেকে এখনই পিছু হটার লক্ষণ দেখাননি। নতুন বছরের বার্তায় বুশ স্পষ্ট করে বলেছেন, 2007-এ যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াই এবং স্বাধীন, অখণ্ড ও সন্ত্রাসমুক্ত ইরাক গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। কিন' ইরাকে শানত্দি যে অসম্ভব ব্যাপার, তার প্রমাণ মিলেছে সোমবারও। সেদিন ভোরে প্রায় 10টি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বাগদাদ। দেশের জনমতের প্রবল চাপ সত্ত্বেও অবিলম্বে ইরাক থেকে সেনা সরানোর ইঙ্গিত দেননি বুশ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি তার নয়া ইরাকনীতি ঘোষণা করতে পারেন। জনমত উপেক্ষা করেই ইরাকে মার্কিন সেনা বাড়ানোর কথা জানাতে পরেন বুশ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০০৭ ভোর ৬:২৮