বন্ধুদের সাথে রেললাইন ধরে হাটা,খুনসুটি,বাচ্চাদের মত ঝগড়া,ছেলেবন্ধুদের সিগারেট খেতে দেখে রাগ করে নিয়ে ফেলে দেয়া,আমতলা সব মনে পড়ছে।ঐদিন গুলো ফিরিয়ে আনার আর কোন ব্যবস্হা নেই কেনো?
স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় সবকিছুর মাঝখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা অনেক বেশী মধুর,অন্তত আমার কাছে এমনটা মনে হয়েছে।আবার অনেক বেশী কষ্টেরও।পরিনত বয়সের সম্পর্ক,পরিবেশ অনেকাংশেই আমাদের মনে অনেক গভীর প্রভাব রাখে,যার বিশাল একটা অংশ জুড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়।
যাইহোক,বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদায় জানানোর সময় অনেক কাছে চলে এসছে।
ঈদের আগে আগে এইসব মনে পড়ার একটা বড় কারন হচ্ছে হলে বসে মন খারাপ হলে সাথে সাথে বন্ধুদের কাছে ছুটে যেতাম,কিছুদিন পর এই উপায় আর থাকবেনা।
এইটা মনে পড়তেই মনের পর্দায় ভেসে উঠে বন্ধুদের চেহারা।যদিও অনেক সময়ই অনেক সিরিয়াস ঝগড়া আমরা করেছি কিন্তু এখন বুঝতে পারছি ওদের ছেড়ে আসতে কেমন লাগবে।পহেলা বৈশাখ,পহেলা ফাগুন,ভ্যালেন্টাইনস ডে অথবা ফ্রেন্ডশিপ ডে অথবা কারো বার্থডে উফফফফ কতরকমই না লাল-নীল-সবুজ দিনগুলা গেছে!!
একটা রেসটুরেন্টে বসে একবার খাচ্ছি,বিভিন্ন কথার মাধ্যমে এ ওকে খোঁচা দিচ্ছি ও ওকে খোঁচা দিচ্ছি এমন সময় আমাদের এক বান্ধবী খোঁচা সইতে না পেরে দিলো একবন্ধুর গায়ে হঠাত করে মুখভর্তি পানি উগড়ে।
আমরা তো ভাবছি কি মাইন্ডই না করবে বেচারা!!হঠাত বন্ধুটি হাঃ হাঃ করে হেসে উঠে,আমরাও হাসতে শুরু করি।
আমাদের ঘোরার জন্য প্রিয় জায়গা ছিল চারুকলা এলাকা,রেললাইন ধরে হাঁটা।প্রথম যখন হাঁটতে যাই তখন হঠাত হাঁটতে হাঁটতে আবিস্কার করি যে রেললাইনের নিচে একটা খালের মত আর ঠিক সে জায়গাতেই কয়েকটা পাটাতন নেই
আমরা দুইটা মেয়ে চলে আসব বলে ঠিক করেছি,এইসময় আমাদের একবন্ধু এসে বলে আমার হাত ধরে চোখ বন্ধ করে আয় কিছু হবেনা।প্রথমে রাজি হইনা পরে রাজি হই।হাত ধরে চোখ বন্ধ করে হেটে এসে দেখি,খালটা পার করে এসেছি!!ওয়াও কি মজা!!
আমরা কোথায় খুশি প্রকাশ করব বন্ধুটি বলে কি মজা আমি আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
ক্লাসে বসে কত শয়তানী যে করেছি
যেসব টিচারদের ক্লাস ভালো লাগতোনা সেইক্লাসে বসে গান শোনা,আর খাতা চালাচালি করে চলত কমেন্ট লেখা।উফফফফফফফ! কি যে একেকটা ফাজলামো করতাম।
লিটারেচার ক্লাসে একে অপরের মতের অমিল হলে রীতিমত টিচারের সামনেই ঝগড়া।
আমতলায় ঝগড়া,পরীক্ষার ডেট নিয়ে ঝগড়া।কেউ আগে পরীক্ষা চাই কেউ পরে,আমাদের সিদ্ধান্তেই যেনো পরীক্ষা হবে এমন ভাব!!
পরীক্ষার হলে বসেও কম না কেউ।
এইবার রবিবারে একটা পরীক্ষা ছিল।পরীক্ষার খাতায় ডেট লিখতে হয়।আমার পাশে বসা রূপালীকে মারিয়া জিগ্গেস করে কিরে রুপালী আজ কি বার?
রবিবার।
আরে গাধী রবিবারের ইংরেজী বল
রবিবারের ইংরেজী?
জানিনা!!
এরকম লক্ষ কোটি ঘটনা আছে মনে পড়ে,আর মনে পড়লেই চোখ পানিতে ভিজে আসে।
সেই প্রথম বছর থেকে এখন পর্যন্ত কখনো মনে আসেনি আমার শেষটা বিয়োগান্তক হতে পারে,আজ শেষটা বিয়োগান্তক সব দিক দিয়ে।
বন্ধুদের সাথে যোগাযোগটা অনেক কমেছে ইদানিং।এই মোবাইল,নেটের যুগেও,হয়তবা এটা আমারই ব্যর্থতা।
জীবন কোথায় যাচ্ছে,যাবে কিছু বুঝতে পারিনা।গত পনেরটা দিন যে জিনিসটা বেশী ভাবাচ্ছে সেটা হল হয়তবা জীবনে সফল হতে পারবনা।কোনদিক দিয়েইনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার মুল উদ্দেশ্য ছিল পড়ালেখা,আর পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো।আজ সে আশা আমার কাছে সুদূর পরাহত।আর এই ব্যর্থতার দায়ভারও আমার!!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১২ রাত ২:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




