somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিলীমার নস্টালজিয়া এখনও..

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমুদ্রের পাশে নিজেকে অনেক ক্ষুদ্র বলে মনে হয়।আজও মনে হচ্ছে।সমুদ্রের আর একটা আকর্ষণ হচ্ছে যতই পানিতে নামা হয় নির্ভয়ে আরো এগিযে যেতে ইচ্ছা করে।



তবে আজ পানিতে নামার ইচ্ছা নাই,ঝিনুক কুড়াতে কুড়াতে সকালের ঠান্ডা বাতাসটা ভালই লাগছে।আশেপাশে অনেক পিচ্চি ছেলেমেয়ে জীবনের তাগিদে ঝিনুক সংগ্রহ করছে,আর আমি কুড়াচ্ছি শখে।এইরকম করে কুড়াতে কুড়াতে একসময় কত দূরে চলে গেছি নিজেও বুঝিনি।হঠাত দেখি অশেপাশে কেউ নেই।তবে এতটুকু ভয় লাগছেনা আমার বরং অনেক অনেক শান্তি লাগছে।কেউ এখন আর জ্বালাতে পারবেনা এখন,হঠাত কি মনে হলো সেলফোনটাও ছুড়ে ফেললাম পানিতে।আহ!! কি শান্তি!মুক্তি পেলাম যেন সবকিছু থেকে।
হটহাত টাইম মেশিনটা ফিরে গেল পিছনে।
অনির্বাণ দাড়িয়ে আছে এইখানে!
আরে ও কিভাবে এখানে!!
গত কয়েকবছর হল আমিতো ওর পরানো চিঠিগুলোই পড়ে চলেছি!!
মনে পড়ল স্কুলে থাকা অবস্হায় প্রথম চোখাচোখি,তারপর কলেজ জীবনে দুইজন দুই শহরে একদম যোগাযোগবিহীন,ঈদের ছুটিতে বাসায় আসলে,ঈদের বাজার করতে গেলে রাস্তায় মাঝে মাঝে ক্রস করতাম।সেইসময় বসন্তের শিমুলগুলো দেখলে মনে হত যে অনির্বাণের জন্যই এত ফুল ফুটেছে চারিদিকে।
মাঝে মাঝে আসত চিঠি,সত্যি কথা বলতে তখন আমার অনির্বাণ মনে ভালই বাসা বেঁদেছে।
অনির্বাণ ভর্তি হয় ফার্মেসীতে,আর আমি অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে
নৃতত্ত্বে।
অনেক পড়াশোনার মাঝে হয়ত ছিল তই অনেক অনেকদিন চিঠি আসেনি।
আমি দিতাম,হঠাত হঠাত উত্তর আসত।আমি এতেই সন্তুষ্ট ছিলাম।
তবে দু তিন বছর পর অজস্র চিঠি আসা শুরু হল।তখন মুঠোফোনে কথা বলতে এক মিনিট ১০টাকা লাগত।আমার নিজের ফোন ছিলনা।কেনজানি মনে হল ও ইদানিং অনেক বিষন্ন।এক বন্ধুর ফোনে ৩০০ টাকার কার্ড ঢুকিয়ে কথা বললাম ওর সাথে।
আমার জন্য চমক কাজ করছিল আসলে।আমাকে বললো বিয়ে করবা আমাকে,আমি আম্মুকে সব বলছি!!
ঘটনার দ্রুততায় আমি অবাক।৩০০ টাকায় ৩০ মিনিট কথা হল।
আমি কোন কথা দিয়েছিলামনা বিয়ের ব্যাপারে,ভালবাসার চূড়ান্ত বহিপ্রকাশ হয়েছে বলেই আমার মনে হল।
আরো অবাক হলাম ওর মা-বাবা পরেরদিনই আমার মা-বাবার সাথে যোগাযোগ করল দেখে।
৭ দিনের মাথায় বিয়ে!!!!
বলা বাহুল্য আমি পৃথিবীর সবথেকে সুখী মেয়ে তখন।
নতুন জীবন,নতুন সংসার স্বপ্নের মত সুন্দর মনে হচ্ছিল।
অনির্বাণ তখন ফিফথ ইয়ার,আমারও পড়াশোনা শেষ হয়নি।
সংসারে কোন কাজের লোক নেই তাতে আমার কোন অভিযোগ ও নেই।আমি ছোটবেলা থেকে যাকে ভালোবেসেছি,চেয়েছি তাকে পেয়ে আমি সুখী,ভীষণ সুখী।
ওর মা-বাবা ভাই বোনকে আমার করে নিয়েছি প্রথম দিন থেকেই,রান্নাবন্না,ননদের সাথে খুনসুটি,দেবরের আবদার ভাবী আজ এই রান্না কর,কাল সেই,এইসব চাওয়া-পাওয়া মিটাতে পারা আমার কাছে স্বর্গতুল্য সুখের মতই।
কেনজানি মা-বাবা (শ্বশুর-শাশুড়ী) আমার কাছ থেকে কিছুটা দূরে দূরে থাকতেন,জানিনা কেন..যদিও তাঁরা আমাকে পছন্দ করেই এনেছেন।
এইভাবে দেখতে দেখতে গেল ২ বছর।
অনির্বাণ আর মা-বাবা অনেকদিন হল মরিয়া হয়ে উঠেছেন উএসএ গমনের জন্য।আমি কিন্তু দেশে থাকতেই বেশী ইচ্ছুক।যদিও আমার মতামত আমি কখনও বলিনাই।স্বামীর কাছেও না।
একসময় অনির্বাণের উএস গমন চূড়ান্ত হল।
আর আমাদের ডিভোর্সও চূড়ান্ত হল।
কারন আমার স্বামী,শ্বশুর-শাশুড়ী আমাকে আর চাননা।
প্রথমে কিছি বুঝিনাই,পরে বুঝলাম েবং জানলাম যে আমাকে বিয়ের আগে অনির্বাণ এক বিশাল ধনকুরবেরের কন্যার সাথে সম্পর্কে জরিয়েছিল,মেয়েটি শুধুমাএ তাকে ব্যব হার করেছিল কিছুদিন,সেই শোক থেকে ও কিছুতেই বের হতে পারছিলনা,সুতরাং আমাকে বিয়ে করে কিছুদিন কাটানো,মনের কষ্ট ভোলার চেষ্টা।
আর আমার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন এটাই ভাবে যে আমি অনির্বাণের অযোগ্য,অনেক অনেক ভালো মেয়ে অনির্বাণ পাইতে পারে অনায়াসে।
যাইহোক আমার স্বামীও যখন আমাকে আর চায়না,ডিভোর্সটা হয়েই গেল।


অনির্বাণ আজ ১ বছরের বেশী হল উ.এস.এ,শুনলাম ওর যোগ্য একটা মেয়েকে বিয়েও করেছে।
আর আমি অনেক কষ্টে ছোট একটা চাকরি যোগাড় করেছি।
সীবিচে আমি এসেছি ঠিকই কিন্তু অনির্বাণকে দেখা আমার হ্যালুসুনেশন ছাড়া কিছুইনা,এইখানে বিয়ের পর এসেছিলাম বলে হয়ত এমনটা হয়েছে,আর কিছুইনা।
ভাবছি আর কিছুক্ষণ ঝিনুক কুড়িয়ে চলে যাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১২ রাত ২:০১
১৫টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×