প্রেম বলতে আমরা কি বুঝি?
সাধারনত একটা ছেলে আর একটা মেয়ে একে অপরকে প্রচন্ড পছন্দ করে বা ভালোবাসে এবং সেই ভালোবাসা থেকে একমত হয়ে একসময় তারা একটা সম্পর্ক গড়ে তোলে যেটাকে আমরা বলে থাকি 'প্রেম'।
আর প্রেম বা ভালোবাসা জিনিসটা তরুনমনে ধরা দিয়ে যায়নি এমন ব্যক্তি খুব কম আছে।
কোন একসময় প্রেম বলতে আমরা বুঝতাম এমন একটা সম্পর্ক যেখানে ছেলে মেয়েটার জন্য বা মেয়েটি ছেলেটার জন্য প্রচন্ড আকর্ষন বোধ করে, এমনকি একে অন্যের জন্য জান দিয়ে দিতে পারে।
বাবা মা, আত্মীয় স্বজনের চোখ রাঙানি, এমনকি মারধর উপেক্ষা করে হলেও একে অপরকে তারা চায়।
লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ,রোমিও জুলিয়েট এই নামগুলো আমাদের মাঝে চিরন্তন হোক না সে কাল্পনিক।
একযুগে প্রেম হত চিঠির মাধ্যমে, একে অন্যের চিঠির জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতো, কালের বিবর্তনে সেই প্রেম রুপ নিয়েছে মোবাইল প্রেম এ, তারপর এখন ইন্টারনেটে চলছে প্রেম আবেদন, নিবেদন।
প্রশ্ন হচ্ছে প্রেম কি সেই আগের মত আছে?
খুব বিস্তারিত কোন আলোচনা তে না গিয়েও যে কেউ বলবেন যে না নেই।
সময় যত এগিয়েছে, যত আধুনিক সংযোজন এসেছে প্রেম র ক্ষেত্র ঊর্বর হয়নি বরং জটিলতা, কপটতা বেড়েছে।
একসময় পাশের বাড়ির ছেলে মেয়ে বা কলেজ এ একই সাথে পড়া কোন ছেলে বা মেয়ের সাথে প্রেম করতে গিয়ে কপটতার কেউ শিকার হয়নি এমন কথা বলবো না। তবে সেই ধরা খাওয়া আর তার পরিনতি হয়তো ছিল দুইজন দুইদিকে সরে যাওয়া
তলানিতে হারিয়ে যাওয়া কিছু ঘটনা আমি একটু অন্যভাবে সামনে আনতে চাই।
তবে শুরু করি সামান্য ভূমিকা দিয়ে, কারন এক্ষেত্রে একটু ভূমিকা না দিলেই নয়
মোবাইল প্রেম
মোবাইল জিনিসটা যখন স হজ লভ্য হয়ে গেলো কয়েকহাজার টাকার সিম হয়ে গেল ১০০/২০০ টাকা, মোবাইল তখন সবার হাতে হাতে, সর্বশ্রেনীর লোকের হাতে।এমনকি কলরেটও খুব কমে গেলো।
মোবাইল হলো এমন একটা জিনিস যা থেকে যেকোন মুহূর্তে যেকোন মিথ্যা বলা যায়। আছি একজায়গায়, বললাম আরেক জায়গার কথা। করি হয়ত কালোবাজারী, বলে দিলাম আমি বিজনেস করি!
বেশীরভাগ মেয়ে আবেগী, বিশেষত কমবয়সী মেয়েরা। এটা হয়ত আমার শত্রুও শিকার করবেন যে প্রকৃতোগতভাবে মেয়েরা শান্ত-শিষ্ট, আর যেসব মেয়ের ঘরের বাইরে যাতায়াত কম তারা বাইরের কঠিন বাস্তবতা, খারাপ দুনিয়াটা সম্পর্কে প্রায়ই জানেন না।
মোবাইল কালচার এমন হয়ে গেছে যে এখন বাড়ির পিচ্চি মেয়েটির হাতেও মোবাইল। অথবা অনেকসময় প্রয়োজনেই হয়ত কোন কোন অভিভাবক মেয়ের হাতে স্কুল বা কলেজ লাইফেই দিচ্ছেন মোবাইল।
এই মোবাইলটিই একসময় একটা মেয়ের জীবনে কাল হয়ে দাড়ায় হয়ত। শুধুমাত্র মোবাইলে নম্বর ভূল করে আসা কোন কল বা বানিয়ে বানিয়ে নম্বর দিয়ে মজা করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্কে জরিয়ে পড়ছে কোন ছেলের সাথে। ছেলেটি ফোনে যা যা বলছে মেয়েটি হয়ত তাই বিশ্বাস করে যাচ্ছে। একটা সময় তাদের সামনাসামনি পরিচয় হয়। এই ধরনের সম্পর্কে প্রায়ক্ষেত্রেই প্রতারিত হওয়ার সুযোগ থাকে। সেই প্রতারনাটা যেকোনরকম হতে পারে। হয়ত কোনসময় বড়লোকের মেয়ের কাছে টাকা আদায়ের জন্য, হয়ত শারীরিক সম্পর্ক করে একসময় সটকে পড়ার জন্য। সত্যি কথা বলতে কোনরকম মায়া, ভালোবাসা এই প্রেমে থাকেনা। থাকে শুধু লোভ, লালসা,প্রতারনা এমনকি জীবননাশের মত ভয়ংকর ঘটনাও এখানে ঘটতে পারে। যা অনেকসময়ই সহজ সরল একটা মেয়ে আঁচ করতে পারেনা।
যেমন পারেনি রুমি।
তরুনীর ২৬ টুকরা লাশ
Click This Link
এই ঘটনা টা পড়ে অনেকদিন আমি অসুস্হবোধ করেছি।
আমার পার্সোনালি যা মনে হয়েছে যে নির্দিষ্ট কোন কারন এই মেয়েটির খুনের পিছনে কাজ করেনি। ছেলেটি শুধু মেয়েটির শরীর ভোগ করতে চেয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি বিয়ের জন্য বারবার চাপ দেয়ায় ছেলেটা মেয়েটিকে কসাইয়ের মত টুকরা টুকরা করে। গরুর গোশত আমরা অনেক যত্নে রাখি। কিন্তু আমার এই বোনটির লাশের কি করুন অবস্হা করেছে এই ঘাতক পুরুষটি!!
প্রশ্ন আসে কি পেলি মেয়েটার এই হাল করে?
আরো একটি ঘটনার লিংক শেয়ার করছি যা খুব দ্রুত ধামাচাপা পড়ে গেছে
এমপি হোস্টেলে তরুনীর লাশ
Click This Link
কিন্তু আজকে আমি এই প্রশ্নটা করবোনা আজকে আমি প্রতিটি মেয়েকে বলবো যে তোমরা সাবধান হও।
মোবাইলের মত সেম ঘটনা ইন্টারনেটের। ইন্টারনেটে আপাতদৃষ্টিতে ফেসবুক বা অন্য কোন সাইটে কাউকে তার ছবি দেখে বা তার লেখা পড়ে শুধুমাত্র কখনোই বিচার করা যায়না যে মানুষটি কেমন। কেউ যদি আজকের এই যুগে সামান্য অল্প সময়ের পরিচয়ে কাউকে কোনকিছু না জেনে ১০০ ভাগ বিশ্বাস করে তাহলে তাকে যেকোন পরিস্হিতির শিকার হতে হতে পারে।
প্রেমিক পুরুষের সাথে হোটেলে অবস্হান
আমি কোনরকম রাখঢাক ছাড়াই এই প্রসঙে কথা বলতে চাই। হোটেলে কোন মেয়ে কোন ছেলের সাথে অবস্হান করছে ইলেগালি জানলে আমরা কি বলবো?
বলবো যে মেয়েটি বেশ্যা।
আসলে কি সব মেয়ে তাই?
সবাইকে জেনারেলাইজড করে একটা শব্দ আমরা বলে দিতে পারিনা, কারন যারা সাথে যাচ্ছে সে পুরুষগুলির আমরা কোন নামকরন করিনি।
বর্তমান যুগে শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া নাকি প্রেম হয়না।( আসলে শুধুমাত্র শরীরের আকর্ষনের প্রেম কতটা সত্যিকারের প্রেম তা প্রশ্নবিদ্ধ)
দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ থেকে শুরু করে, স্বামীর সংসারে সুখী নয় এমন অনেক মহিলা আজকাল প্রেমিক পুরুষের সাথে নির্দ্ধিদায় চলে যাচ্ছেন প্রেমিক পুরুষের সাথে রিলাক্স করতে।
অনেকসময় এই মেয়েগুলো যাচ্ছে প্রেমিক পুরুষের আবদার মিটিয়ে প্রেম কে ধরে রাখতে বা কখনো নিজেই যাচ্ছে। কারনটা খুব স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কের মত একটা বিষয় যেটা আমরা যতই অস্বীকার করিনা কেন এটা মানুষের মৌলিক চাহিদা। আর বর্তমানযুগের বহু জটিলতা যা নিয়ে অবশ্য আরেকটা বীস্তর আলোচনা হতে পারে যেসব কারনে বিয়ের বয়স বেড়ে এখন ছেলেদের হয়েছে প্রায় ৪০! আর মেয়েদেরও সেই সাথে বিয়ের বয়স বেড়েছে।
যাইহোক মূল আলোচনায় আসি।হোটেলে যাবার সময় একজন তরুনী বাংলাদেশের সামাজিক পরিমন্ডলের কারনে হয়তো ভাবছেন সেখানে বাহির থেকে কোন সমস্যা আসে কিনা?
একবারও কি ভেবে দেখেছেন যে সমস্যা ভিতরে হতে পারে কিনা?
মানে যার সাথে যাচ্ছেন তার কারনেই হতে পারে কিনা?
অনেকরকম ভংয়কর ঘটনাই ভেতরে ঘটতে পারে। আপনাকে বিক্রি করা হতে পারে, আপনি খুন হতে পারেন, টুকরা টুকরা করে আপনার লাশ ছিটিয়ে দেয়া হতে পারে, গোপনে অবৈধ ভিডিও করা হতে পারে সেটা ছড়ানো হতে পারে ইন্টারনেটে বা আপনার এলাকার আশেপাশে, অজ্ঞাতসারে আপনার মোবাইল থেকে আপনার বাবা মা বা আপনার আত্মীয়স্বজনের নম্বর চুরি করে নিতে পারে এবং পরে আপনাকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।
আমার এই লেখাটি পড়ে অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন, তবে আমার লেখাটির উদ্দেশ্য জানিয়ে লেখা শেষ করবো---
১। মানুষকে বিশ্বাস করা ভালো কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্হিতি নিজের ভালোর জন্য প্রেমিক সে আপনাকে যতই ভালোবাসুক বলে আপনি জানুন না কেন তার সাথে এমন কোন জায়গায় যাবেন না যা আপনার জন্য ক্ষতির আশঙ্কা বহন করে।
২। তাড়াহুড়া আছে বা টাকা বাচাতে কখনো শেয়ারে কোন ছেলের সাথে ট্যাক্সি বা সিএনজিতে চড়বেন না।
৩। বাংলাদেশে নিজের গাড়ী না থাকলে সর্বোচ্চ রাত ১০ টার পর একা একা না থাকাই ভালো।( এটা শুধু আপনার ভালোর জন্য)
৪।সবশেষে সবচেয়ে মূল্যবান কথাটা বলি মেয়ে হিসেবে নিজের বাবা মাকে বিশ্বাস করুন, এমনকি পাত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। নিজের পছন্দ থাকলে সেটা বাবা মার কাছে সুন্দর ভাবে শেয়ার করুন। একমাত্র বাবা মাই এমন যারা আপনার সববিপদে আপনার পাশে থাকবে, এবং ১০০ ভাগ নির্ভরযোগ্যভাবে। চোখ বন্ধ করে অন্য কাউকে বিশ্বাস করতে ১০০ বার মানা কিন্তু বাবা মাকে ১০০ বার হ্যাঁ।
লেখাটা সব মেয়ের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



