somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মা

১১ ই মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মা আমার যখন কথা বলতো
সুনীল আকাশের তারারা
থমকে দাঁড়িয়ে মায়ের গল্প শুনে যেত।
আমার মায়ের প্রতিটি নিঃশ্বাস
মুক্তোমালার মত আমাকে জড়িয়ে রাখতো।
গোলাপের পাঁপড়ির মতো গলে গলে
আমাকে ভাসিয়ে রাখতো,
মাকে কখনও আমি
শুকনো মেঘের মতো হতে দেখিনি।

মা যখন চুপিচুপি গল্প করতো
টুপটুপ করে আমাদের বাড়ির আঙিনায় জ্যোৎস্না ঝরতো,
আমার মায়ের নদী উপচানো ভালোবাসার মতো
আমাকে খুব বেশি ভালোবাসতো।

আমি আমার মাকে কখনও কাঁদতে দেখিনি,
যেদিন বাবা আমার মাকে ফাঁকি দিয়ে
তারাদের দেশে ঘর তুলেছিল
সেদিনও দেখেছি
আমার মায়ের চোখে ভালোবাসার সমুদ্র,
রাত্রি গভীর হলেই উঠানে একা বসে
মা মাঝে মাঝে তারাদের সাথে গল্প করতো
আমি পাশে এসে দাঁড়ালেই
মা আমাকে জড়িয়ে ধরে আঁচল দিয়ে চোখ মুছতো
কিন্তু আমি জানি সেই চোখে জল নেই।

আমার মা কখনও কাঁদেনি,
বাবা যেদিন তারাদের দেশ থেকে মাকে নিতে এসেছিল
মনে আছে শুধু সেদিন আমার মা
আমার দিকে নিষ্পলক চেয়ে দু'ফোঁটা অশ্রু ফেলেছিল
আমার মা এখন তারার দেশে
মাঝে মাঝে এখনও আকাশে খুব বেশি তারা জ্বলে
শুনি মায়ের ডাক--
আদরে সোহাগে মা বলে যায় --
তারাদের গল্পকথা।

আমার মা যখন কথা বলতো--
সুনীল আকাশের তারারা
থমকে দাঁড়িয়ে মায়ের গল্প শুনে যেত
আমার মা আমাকে খুব বেশি ভালবাসত।

***

[এই কবিতাটা আমার লেখা নয়। আমার ক্যাডেট কলেজে, আমার চেয়ে দুই বছরের বড়ো এক সিনিয়র ছিলেন। ছোটখাট মানুষ। খুব শান্ত শিষ্ট, এবং সবসময় আমাদের সাথে বড়ো ভাইয়ের স্নেহ দিয়ে বৈরী পরিবেশের আবহ কাটিয়ে দিতেন। ক্লাস নাইনে থাকতে উনি এই কবিতাটি লিখেছিলেন একটি দেয়াল পত্রিকায়। পড়ার পরে জানতে পেরেছিলাম, ওনার মা বেঁচে নেই। মাতৃহীন এক কিশোরের মনে কী খেলা করে, তা আমি জানি না। কখনও হয়তো জানবো না। নিজের না পাওয়া স্নেহ তিনি কোন এক অজানা কারণে আমাদের জন্যে সঞ্চিত রেখেছিলেন। তাঁর নাম আরেফিন। আজকে সকালে উঠে কেন জানি ওনার কথা মনে পড়ে গেল!]

পুরনো পোস্টের লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:২৭
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×