"গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক অনুষ্ঠানে নবী করিম হজরত মুহাম্মদ (সা.), পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত সম্পর্কে লতিফ সিদ্দিকী অবমাননাকর বক্তব্য দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। পরে গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদ ও তার কিছুদিন পরে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।"__প্রথম আলো
লতিফ সাহেবের ঐতিহাসিক সেই ভাষনের পর কতো নাটক হয়ে গেলো। সেই সময় শেখ হাসিনা দেশের বাহিরে ছিলেন, তিনি দেশে না ফেরা পর্যন্ত লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাপারে কেউ কোন বক্তব্যই করতে রাজী হননি। তারপর আওয়ামী লীগের সদস্য পদ, আবার সাংসদ পদ বাতিলের কথাও শোনা গিয়েছিল।
লতিফ সাহেব যখন দেশে ফেরেন তখন তার নামে ফ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল, বিমান বন্দর ঘিরে পুলিশ ছিল। কিন্তু শুধু অনুমতির অভাবেই তাকে সন্মানে কিছুটা গার্ড অফ অনার দিয়ে পুলিশই সরিয়ে নিয়েছিল। তারপর তিনি হাওয়া ছিলেন, পরে কোন এক কারণে তিনি আত্বসমর্পণ করেন।
বিমান বন্দরে লতিফকে ধরা না ধরা নিয়ে যখন মিডিয়া সরগম, তখন আমাদের সন্মনিত স্পিকারই বলেছিলেন, 'শুধুমাত্র সংসদ এরিয়ায় কোন সাংসদকে ধরতে তার অনুমতি নিতে হবে, এছাড়া কাউকে গ্রেফতারে স্পিকারের অনুমতির দরকার নেই। '
সেই তিনিই আজ বলছেন, " ‘আওয়ামী লীগ থেকে লতিফ সিদ্দিকীর বহিষ্কারের ব্যাপারে আমি অবহিত নই। আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তিনি আগে যেভাবে সংসদে ছিলেন, এখনো তিনি আমার কাছে সেভাবেই আছেন।’" তবে ব্যপারটি কী দাড়াল, তাকে না জানালো হলে তিনি কিছুই জানবেন না!
২৫শে নভেম্বর আত্বসমর্পণ করে তাকে জেলের ছোট গেট দিয়ে ঢুকাতে পারেনি কারা কতৃপক্ষ, তার সন্মানে জেলের বড় দড়জাটিই খোলা হয়েছিল। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পরদিনই তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর সেখানেই প্রায় ছয় মাস, অসুস্থ। যেই না তিনি সকল মামলা থেকে জামিন পেলেন তিনি হাসপাতাল ছাড়লেন! বহাল তবিয়তেই তিনি বাড়ি ফিরলেন, এখন তিনি সংসদে যোগ দেবার আশায় আছেন। কাল হয়তো তিনি নতুন কোন মন্ত্রীত্ব পাবেন, কারণ পাট ও বস্ত্র খাতে তো তার নামে ৪৮টি দুর্ণীতির অভিযোগ আছে, যদিও মামলা হয়নি (হলেও কাজে দিবে না)।
রমযানে দেশের সবজায়গায় নানা কারণে ইফতার মাহফিল হয়, কাল হয়তো কোন মাহফিলে তাকে বিশেষ অথিতি করে আনা হবে। তিনি যে নবীকে 'আব্দুল্লাহ পুত্র মুহাম্মদ হজ্জকে আরবীয়দের জন্য ব্যবস্যা হিসাবে চালু করে গেছেন' দিলেন সেই নবীর উম্মত হয়ে আমাদেরই কেউ তার সাথে ইফতার করব। ইদগাহে তার জন্য বিশেষ জায়গা রাখা হবে, একমাস রোজা রেখে হয়তো কোন ইদগাহে তারই সাথে নামায পড়বে কেউ। ভাবতেই অবাক লাগে, তাই না।
লতিফ সিদ্দিকীর সাথে এমন আচরণের কারণেই আসিফ মহিউদ্দীনের মতো কেউ কাবাকে সমকামীতার প্রতীক রংধনু্তে রাঙ্গিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেবার সাহস পায়। মুক্তমনার নামে কিছু ব্লগার ইসলামকে অপমান করে। লতিফ, মহিউদ্দীনের মতো কিছু লোকের কারণে ইসলামের মানেই বদলে যায়, আদালত তাদের এমন সন্মান দেয় যে দেশে গুপ্ত হামলা হয়, রাজপথ রঞ্জিত হয় কারো রক্তে।
গুপ্ত হামলার পক্ষে কখনোই ছিলাম না। অভিজিৎ হত্যার বিচারে কথা বলেছিলাম, সিলেটে ব্লগার হত্যায় লিখেছিলাম। কিন্তু আসলেই যা হচ্ছে তাতে এমন গুপ্ত হত্যা কখনোই সামাল দেয়া সম্ভব নয়, আর সরকারের কখনো সামাল দেবার ইচ্ছে আছে বলেও মনে হয় না।