somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা শহরের রাস্তা কাদা পানিতে ডুবে থাকার যত্তো সুবিধা

২৪ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঢাকা শহরের কোন কোন রাস্তা পানিতে ডুবে থাকে। তাই আপনারা অনেক বিরক্ত...এটা কি ঠিক ?
দেখুন এর কত্তো কত্তো ভালো দিক আছে...

প্রথম ছবিটি দেখুন। যেখানে ঢাকা শহরে পাশের বাড়ির খবরই আমরা রাখি না সেখানে একই ভ্যানে কয়েকজন মিলেমিশে যাওয়ার ফলে মিল মহব্বত বাড়বে । এতে সম্প্রীতি বাড়বে ।

ঢাকা শহরের অনেক রাস্তাতেই প্রয়োজনে রিক্সা, গাড়িকে পানিতে ভেসে চলার উপযুক্ত করে তৈরি করা উচিত ।
প্রথমেই আপনার বাহনকে কাদা পানিতে চলার উপযোগি করে তোলা প্রয়োজন। এতে আপনার লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। দেশেরও লাভ।
কী লাভ দেখুন-

আপনি আপনার ব্যক্তিগত গাড়িটিকে বা রিক্সা মহাজনরা বা বাস মালিকরা যখন তাদের বাহনটিকে কাদা পানিতে চলার উপযুক্ত করার জন্যে যে ব্যবস্থা নিবে তার জন্যে কোন সার্ভিস সেন্টার লাগবে। আর এতে করে ঢাকা শহরে এরকম অনেক সার্ভিস সেন্টারের ব্যবসা চালু হবে। বেকারত্ব কিছুটা হলেও ঘুচবে ।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ভালো অভ্যাস গড়ে উঠবে।


কাদা পানিতে রাস্তা ডুবে থাকলেতো ভালো। ধুলা উড়বে না। গায়ে পানির ঠান্ডা হাওয়া পেতে সুবিধে হবে।
আবার পানিতে ডুবে থাকা কাদা লাগলে নিয়মিত রিক্সা, গাড়ি পরিষ্কারের প্রয়োজন পড়বে।
আপনি কি প্রতিদিন আপনার বাহনটিকে গোসল করান ? নিশ্চয়ই না। অথচ নিয়মিত পরিস্কার রাখাতো স্বাস্থ্যসম্মত ব্যাপার ।
বাথরুমের কমোডে যেই পরিমাণ জীবানু থাকে শুনেছি গাড়িতে তার চেয়ে বেশি পরিমান জীবানু থাকে । (রেফারেন্স খুঁজতে টাইম লাগবে)
কাজেই নিয়মিত পরিষ্কারের ফলে স্বাস্থ্যসম্মত ভালো একটি অভ্যাস গড়ে উঠবে।

আপনার মনোযোগ, ধৈর্য বৃদ্ধি পাবে।
খানা খন্দে ভরা ডুবো রাস্তায় চলাচলে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে মানুষের মাথা বাজে চিন্তা না করে সতর্ক হওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকবে । আর তাতে মনোযোগ বাড়বে। এই ডিজিটাল দুনিয়ায় আপনি যখন টিভিতে কোন অনুষ্ঠানে স্থির হতে পারেন না। ব্লগের কোন পোস্ট পুরোটা না পড়ে (;)) চোখ বুলিয়েই মন্তব্য করে ফেলছেন তখন এই কাদা পানির রাস্তাই আপনার মনোযোগ বাড়াতে দারুণ সহযোগিতা করবে।
আমরা অনেক বেশি ধৈর্যশীল হবো ।

আমিষের যোগান বেড়ে যাবে
মাছের চাষ করতে পারি । এই আইডিয়া আমার দারুণ পছন্দ হয়েছে।
তাই সোৎসাহে বলেছি, এই সুযোগে মাছের দাম তবু্ও যদি কিছু কমে। আর দাম কমা মানেই মাছে ফরমালিনের ব্যবহার কমে যাবে।
মানুষ ফরমালিন মুক্ত মাছ খাবে।
ভাবছি মৌচাক এলাকার রাস্তার মাগুরের চাষ করা যায় কিনা।
ওখানে যতদিন যাই ততদিনই কাদা পানিতে সয়লাব হয়ে থাকে।
এতোদিন ভাঙ্গা রাস্তা, কাদা পানির কারণে বিরক্ত হয়েছি...কিন্তু এখন এই কাদা পানির রাস্তাই শাপে বর হয়েছে।
হ্যাঁ, ইলিশের চাষ করতে পারি। এই ইলিশ লোনা পানির হবে না, হবে কাদা পানির। এতে করে হাজার টাকা দিয়ে ইলিশ কিনে খেতে হবে না। আপনি চাকরী থেকে ফেরার পথে রাস্তায় চাষ করা তাজা ইলিশ সস্তায় কিনে ঘরে ফিরতে পারবেন। পুরুষ হলে আপনার গিন্নি মহা খুশি হবে। এতে আপনার দাম্পত্য জীবনে সুখ বেড়ে যাবে। আর নারী হলে আপনার বাজারের টেনশন কমে যাবে ।

শায়েস্তা খাঁর আমলের দামে চাল


চালের দাম এখন কতো বলুন তো?
কেজিতে ৩৫ থেকে শুরু করে ৪৫, ৫২, ৮০ আরো রকমফের আছে চালের দামের।
অথচ এমন কিন্তু হওয়ার কথা ছিল না।
এই রাস্তায় ধানের চাষ করলে দেশে চালের যোগান বেড়ে যাবে । তাতে চালের মূল্য কমে যাবে। ডিজিটাল আমলে থেকেও আপনি শায়েস্তা খাঁর আমলের দরে চাল কিনতে পারবেন। দারুণ না ? (প্লিজ অধিক সুখে মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন না।)

কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়ে যাবে
মেয়েদের পায়ে দুই ফিতার পাতলা সেন্ডেল বা হিল দেখলে কেমন জানি উসখুশ লাগে আমার :|
মনে হয় এই সেন্ডেলে প্রয়োজনে তো তুমি মেয়ে দৌড়াতেও পারবে না!
নাহ সেই দিন শ্যাষ।
এবার মেয়েদেরকে শক্তপোক্ত সেন্ডেল সু/জুতা পরতে হবে। কাদা পানিতে তো আর পাতলা সেন্ডেল বা হিল পরে চলতে পারবে না। মেয়েদের জুতার ডিজাইনে আসবে রকমফের । আরো অভিনব ডিজাইনে আরো নতুন নতুন জুতার কোম্পানি তাদের নিত্য নতুন জুতার আইডিয়া নিয়ে হাজির হবে। এতে দেশে বেকারত্বরে হার কমে যাবে । আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের থেকে এগিয়ে যাবে সামনের দিকে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে ।

ছিনতাইকারীর দৗেড়াত্ব কমে যাবে।
আপনার পায়ে যখন শক্ত পোক্ত বেল্ট ওয়ালা জুতা থাকবে তখন ছিনতাইকারী এলে আপনি খিঁচে দৌড় লাগাতে পারবেন।
এই দৌড়ের দু'টো সুবিধা।
১. এভাবে নিয়মিত দৌড়াতে পারলে ছিনতাইকারী বাধ্য হয়ে ছিনতাই ছেড়ে রাস্তার পাশে সবজি বিক্রিতে মন দিবে।


এতে সমাজে ছিনতাইকারীর প্রকোপ কমে যাবে। কর্মসংস্থানবৃদ্ধি পাবে। সমাজে সৎ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। চুরির সুযোগ না পেলে মানুষ বাধ্য হয়েই সাধু থাকবে।
২. আর নিয়মিত দৌড়ানোর প্র্যাকটিস থাকার কারণে অলিম্পিকে দৌড়ের বিশ্বজোাড়া নাম কামানোর সুযোগ হয়ে যাবে ।

সাহিত্য প্রতিভা বিকশিত হবে


শাড়ির কদর বেড়ে যাবে । সালোয়ারের ডিজাইনে আসবে ভিন্নতা। প্যান্টের নিচের দিকটা হবে বেশি ঢোলা। জরজেট টাইপের কাপরের কদর বেড়ে যাবে ।
শাড়ির কদর বেড়ে যাওয়ার কারণে কবি, সাহিত্যিকদের সাহিত্য প্রতিভা বিকশিত হবে । দেখুন সালোয়ার কামিজ নিয়ে সাধারণত কোন সাহিত্য রচনা হয়না কিন্তু। ;)

মানুষজন বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়ে উঠবে
আপনার দামী কাপড়ে কাদা পানি লেগে যাবে এমনটি আপনি নিশ্চয়ই চান না। মেয়েরা সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবে । জরজেট টাইপের কাপরের চাহিদা বেড়ে যাবে । আর এতে করে কাপড় ইস্তিরি করার ধকল কমে যাবে । বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে মানুষজন। ব্যয় কমে যাবে । ইলেকট্রিক বিল কম আসলে সেই বাড়তি টাকা দিয়ে আপনারা জায়া-পতি মিলে সিনেমা হলে গিয়ে পপকর্ন খেতে খেতে "বেলাশেষে" দেখে দু'জনে প্রেমে গদগদ হয়ে ঘরে ফিরবেন। জীবনে সুখ আর সুখ।

সাঁতার শিখুন জীবন বাঁচান


আপনাকে কারি কারি টাকা খরচ করে আপনার বাচ্চাদের সাঁতার শেখাতে হবে না। আর মহিলা কমপ্লেক্সের বাথরুমের ফুটা দিয়ে ভিডিও হবার দুশ্চিন্তাও করতে হবে না। আপনার বাসার কাছের রাস্তাতে জমে থাকা পানিতে বাচ্চাদের সাঁতারের ব্যবস্থা করুন ।
এতে করে আপনি যখন ইদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাবেন তখন উপচে পড়া মানুষের লঞ্চ ডুবে গেলেও নো টেনশন। আপনি আর আপনার পরিবারের প্রিয় মানুষগুলো সাঁতরে ঠিকই জীবন বাঁচাতে পারবে। ওয়াও ...এর আগে কখনো এভাবে ভেবে দেখেছেন? সময় এসেছে ভাববার। সামনেই কিন্তু বর্ষাকাল...রাস্তা ডুবে আরো পানি জমবে। এখনই বসে যান পরিকল্পনা করতে।

কৃতজ্ঞতা: ব্লগার শোভন, শাহ আজিজ, ফেরদৌসা রুহী, কলমের কালি শেষ এবং আমার কন্যা এবং
বিশেষ কৃতজ্ঞতা : বিজন রয়।

------------------
একটি পর্যবেক্ষণ: ক্ষমতাধর যে কেউই ক্ষমতা প্রদর্শন করলে তা মেনে নেয়াই উত্তম। তা ভালো না মন্দ সেই বিচার করতে যাওয়া বোকামী।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৮
৫৪টি মন্তব্য ৫৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×