পাড়ার ছেলে গোপাল। স্বাস্থ্য ভালো, ভালো খেলোয়ার, খুবই শক্তিশালী।তাকে গান্ডু বল্লে সে তুলকালাম কান্ড করে বসে, কিল থাপ্পর সহ তাড়া করে মারা কিছুই বাদ যায় না। সে ভালো ব্যাট আগে করতো এখন পারে না কারন বাহিরের থেকে যখন গান্ডু বলা হ্য় তখন মাথা এত গরম হয়ে যায়, তখন আউট হয়ে যায়। তার এই অবস্থায় সকলে তাকে টিটকারি করে মজা পায় সে ক্ষেপে যায়।কিছু দিন পরে দেখা গেল সে ভালো খেলছে এবং সবাই তার গান্ডু নামটার কথা ভুলে গেছে। সে যে মুহুর্তে গান্ডু শব্দটাকে ইগনোর শুরু করলো সাথে সাথে তার সমস্যার সমাধান হয়ে গেল।বিদ্রুপ টিটকারি এই সবকিছু এভয়েট করাই হোল সমাধান।
বেশ কয়েক বৎসর আগে আমেরিকার এক শহরে একটা প্রদর্শনিতে একটা বোতলের মধ্যে হলুদ তরল পদার্থের ভিতর যিশু খৃস্টের মুর্তি প্রদর্শন করা হয়। যখন জানাজানি হয় ঐ হলুদ তরল বস্তুটি ছিল মানুষের মূত্র তখন কর্তিপক্ষ বা কোন সংবাদ মাধ্যম বেপারটা পুরো চেপে যায়। যার ফলে ব্যপারটা অঙ্কুরে শেষ হয়ে যায়। যদি এটা নি্যে তারা হট্টগোল করতো তাহোলে গোপালের মতই অবস্থা হোত।তাদের ধর্মকে অন্য কেউ অবমাননা করতো এবং তারা খুন খারাপি করতো যেটা এখন বিকৃত মৌলবাদি ইসলামিরা করছে। তাদের ধর্ম গ্রন্থে এই বিষয়ে কোন নির্দেশ না থাকলে ও নিজের ওজান্তে তারা কোরানের উপদেশ অনুসরন করেছে।সব চেয়ে বড় অস্ত্র যা কোরানে বলা আছে এবং বাস্তবে অন্য ধর্মিরা প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছে সেটা প্রয়োগ করে ।এই কৌশল প্রয়োগ করে খৃস্টানরা হাতে নাতে সুফল পেয়েছে এবং কোরানেও বলা আছে। কৌশলটা হোল পাত্তা না দেওয়া, ইগনোর করা, চুপচাপ থাকা কোন প্রতিক্রীয়া না দেখানো। যে নাড়া দিতে চা্য় সে যখন দেখে কোন ভাবে ফিডব্যাক আসছে না তখন আপনা আপনি নাড়া দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মৌলবাদিরা তার উল্টোটা করে তাই নাড়া দেওয়া পক্ষ আরো উৎসাহ পায় এবং চলতে থাকে অথচ সুরা মোজ্জামেল আয়াত ১০ এবং সুরা নিসার আয়াত ১৪০ সুস্পস্ঠভাবে ইগনোর করার উপদেশ দেওয়া আছে। প্রকৃত ধার্মিক কোরনের উপদেশ মেনে চলে খুন করে না। এখন দেখা যাক কোরান কি বলে ।
ইসলাম ধর্মে বা কোরানে কোন নির্দেশ নাই ইসলাম অবমাননা কারি কে খুন করার।
বিদ্রুপকারীদের জন্য আমিই আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট" (সুরা আল হিজর:৯৫)
সুরা আল আনাম ( ৬--৬৮) ----- যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহ নিয়ে উপহাস করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়, যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না।
সুরা আহযাব ( ৩৩ -৪৮)------ আপনি কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের উৎপীড়ন উপেক্ষা করুন ও আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ কার্যনিবার্হীরূপে যথেষ্ট।
সুরা মোজ্জামেল ( ৭৩--১0 ) কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।
সুরা নিসা আয়াত ১৪0- আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন। -- এখানে বিদ্রুপ গালি গালাজ ইগনোর করার উপদেশ দেওয়া হয়েছে কোন হত্যার নির্দেশ নাই।
বুখারি শরিফে কত গুলো হাদিস আছে যেখানে রসুল (সাল্লিয়ালিউসাল্লাম) কয়েক জনকে হত্যার নির্দেশ দেন ইসলাম অবমাননা করার জন্য। যদি এটা সত্য হ্য় তাহোলে ঐ হাদিস গুলো কোরানের ঐ আয়াত গুলোর সাথে সাংঘর্সিক হয়ে যায়। মওদুদির মত লোক স্বীকার করেছে তাদের হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ইসলামের বিরুদ্ধে স্বরযন্ত্র , বিদ্রোহের মদদ, গুপ্তচর বৃত্তি, বিশ্বাষ ঘাতকতা ইত্যাদির কারনে। শুধু ইসলাম অবমাননার কারন হোলে কোরানে সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। এই সমস্ত হাদিস ৩০০ বৎসর পরে লেখা হয়েছিল - এক মুখ হতে অন্য মুখ হয়ে অনেক কিছু হারিয়ে গিয়েছিল। আসলে তাদেরকে হত্যা করার হুকুম দেওয়া হয়েছিল ইসলাম অবমাননা করার জন্য নয়। একজন ইসলামের শত্রু ইসলামকে গালিগালাজ করবেই তার জন্য কোরান বলেছে এভয়েট করতে কিন্তু কিছু লোক যখন গালিগালাজ সহ স্বরযন্ত্র, বিদ্রোহের মদদ, গুপ্তচর বৃত্তি, বিশ্বাষ ঘাতকতা করে তখন তাকে শাস্তি সবাই দেয়।ইসলাম অবমাননা কারিকে যে রসুল (সা) শাস্তি দেননি এমন হাদিস ও আছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫২