somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরতাল-অবরোধের নামে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস ও বিধ্বস্ত করে দেশবাসীকে কী ফায়দা দেয়া হচ্ছে? দেশ-জাতিকে ক্ষতিগ্রস্তকারী রাজনীতিকদের প্রত্যাখান করুন । এদের প্রত্যাখানে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবরোধ আর রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তার ভিখারিরা পর্যন্ত। তাদের ঝুলিতে পয়সা তেমন পড়ছে না। হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে এক বৃদ্ধ নিয়মিত ভিক্ষা করে। কিন্তু কিছুদিন ধরে তার তেমন কিছু জুটছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে এই ঢাকা শহরে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তাই আবার গ্রামে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করছে সে। সারা দেশের চিত্র একই। কেউ বলতে পারছে না, এ অবস্থার অবসান হবে কবে।
একই ধরনের অবস্থার বিবরণ পাওয়া গেল গাবতলী ও সায়েদাবাদ আন্তঃগর বাস টার্মিনালে গিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার সঙ্গে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। টার্মিনালের পরিবহন শ্রমিক, কুলি-মজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ফুটফরমাশ খাটা নিচু আয়ের মানুষের জীবন যেন চলতেই চায় না। এমনিতেই তাদের দিন এনে দিন খাওয়ার অবস্থা। এখন তাদের মরার দশা।
গাবতলী বাস টার্মিনালের পরিবহন শ্রমিক মিন্টু মিয়া জানায়, ‘পেটে পাথর বেঁধে কোনো মতে বেঁচে আছি। মানুষের কাছে হাত পেতেও কিছু পাচ্ছি না। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে না খেয়ে মরতে হবে।’
বুট পালিশওয়ালা বলে, ‘একসময় জুতা পালিশ করার জন্য মানুষ লাইন দিত। এখন মানুষের পেছনে ছুটেও কাজ পাচ্ছি না। সবাই ছুটছে। আতঙ্কে মানুষের চেহারার দিকে তাকানো যায় না।’
বাদাম বিক্রেতা আফজল বলে, ‘প্রতিদিন ভৈরব থেকে ট্রেনে ঢাকায় এসে বাদাম বিক্রি করি। লাভ তো দূরের কথা, পেটে ভাতই জুটছে না। দেশের এ অবস্থায় মানুষ বাদাম খাওয়াও যেন ছেড়ে দিয়েছে।’
শাহজাহানপুর ফ্লাইওভারের কাছে কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক গালে হাত দিয়ে বসেছিল। তারা জানে না কোনো কাজ জুটবে কি না। তাদের অনেকেই এক সপ্তাহ ধরে কোনো কাজ পায়নি। অনেকের পরিবার প্রায় অভুক্ত। তারা জানে না এ অচলাবস্থা কবে কাটবে। নির্মাণ শ্রমিক ইদ্রিস আলী, কাবিল ও পল্টু বলে, ‘দেশের এ অবস্থায় কেউ নির্মাণকাজ করাচ্ছে না। ফলে আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। হাতে টাকা নেই, পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতেও চলে যেতে পারছি না। গ্রামে গেলে চুরি-চামারি করে খেতে হবে।’
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের ব্যবসায় চরম মন্দা চলছে। পসরা সাজিয়ে বসলেও উপর্যুপরি অবরোধের কারণে ক্রেতা নেই বললেই চলে। এভাবে ক্রেতা কমে গেলে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। পল্টন এলাকার ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ী বাবুল বলে, ‘অনেকে বিভিন্ন সমিতি থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছে। কিস্তির টাকা পরিশোধ দূরের কথা, পুঁজি ভেঙে খেতে হচ্ছে এখন।’ হকার আবু বলে, ‘অনেক আগেই বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। টাকার অভাবে সেই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে।’
সরেজমিন অনুসন্ধানকালে ফার্মগেট, গুলিস্তান ও মিরপুর এলাকার বেশ কিছু সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয়। একটার পর একটা হরতাল-অবরোধের ধকল তারা সহ্য করতে পারছে না। রাস্তায় যাত্রী নেই। অর্ধেক ভাড়ায় যাত্রী খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ গাড়ির জমাসহ অন্যান্য খরচ আগের মতোই রয়ে গেছে। সিএনজি অটোরিকশা চালক মোস্তফা বলে, ‘আপনারা বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, গত এক মাস যাবৎ বউয়ের গয়না বিক্রি করে সংসার চালিয়েছি। আর পারছি না। এরপরও আগুনে পোড়ার আতঙ্ক নিয়ে রাস্তায় নামতে হচ্ছে। পেটের জ্বালা বড় জ্বালা। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে না বেরোলেও মহাজন তো ছাড়ে না।’
বায়তুল মোকাররমসহ নগরীর অনেক স্থানে হকাররা শীতের কাপড় নিয়ে বসে আছে। শীত মোটামুটি জেঁকে বসেছে। কিন্তু ক্রেতা মিলছে না। যা বিক্রি হয় তা দিয়ে সংসার চালানো দায়। অথচ অন্য বছর এ সময়ে বিক্রি-বাট্টার ভরা মৌসুম থাকে। সংসার চালিয়ে ধারদেনাও শোধ করে তারা এ সময়ে। প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রির নজিরও রয়েছে। কিন্তু এবার সে অবস্থা নেই। বায়তুল মোকাররমে শীতের কাপড় বিক্রেতা আলী হোসেন বলে, ‘দেশের ভয়াবহ অবস্থা। মানুষ পেটে ভাত দেবে, না শীতের কাপড় কিনবে?’
বেশ কয়েকজন দিনমজুর জানান, তাদের পরিচিত অনেকেই কাজ না পেয়ে শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে ছোটখাটো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কমলাপুর কনটেইনার টার্মিনালে ফুটফরমাশ খাটা এক শ্রমিক কাজ না পেয়ে ট্রেনে পকেটমারের কাজ করতেও দ্বিধা করছে না বলে নিজেই স¦ীকার করে। সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক নাসির উল্লাহ বলে, আয়-রোজগারের স¦াভাবিক পথ রুদ্ধ হলে মানুষের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়াই স¦াভাবিক।
শুধু ঢাকা নগরীই নয়, অস্থিরতা ও নৃশংস রাজনীতির শিকার সারা দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের জীবন আর চলে না। আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ। না খেয়ে বা আধাপেটে দিন কাটছে। জীবনের চাকা বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে অনেকের।
মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌরুটের হাজার হাজার শ্রমিক, খুদে ব্যবসায়ী ও সারেং-মাঝিদের চুলা জ্বলছে না। রুটের পাঁচ শতাধিক স্পিডবোট, ১০০ লঞ্চ ও ১৭টি ফেরি এবং দুই পাড়ের কয়েকশ বাস-মাইক্রোবাসে কর্মরত হাজার হাজার খেটে খাওয়া মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। ঘাটে যাত্রী না থাকার কারণে শুধু সাধারণ কর্মজীবীরাই নয়, বিআইডব্লিউটিসিসহ ঘাটসংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থাগুলোকে আর্থিক দুর্দশায় পড়তে হচ্ছে। ১২ বছর বয়সী চানাচুরওয়ালা হাসানের উপর নির্ভরশীল সাতজনের একটি পরিবার। টানা রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকার কারণে সারা দিনে ৪০-৫০ টাকার চানাচুরও বিক্রি করতে পারছে না সে।
দৌলতদিয়া ঘাট যানবাহনশূন্য। ফলে আর্থিকভাবে বিপাকে পড়েছে ঘাট শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। লাগাতার অবরোধের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা একরকম অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। লঞ্চঘাট ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম মিলন জানায়, যানবাহন না থাকার কারণে নৌযান ও ফেরিগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা। টোলঘরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬০ জন মাস্টার রোলের দিনমজুর কাজও পাচ্ছে না, টাকাও পাচ্ছে না।
এদিকে বগুড়ায় অব্যাহত রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ মরতে বসেছে। অনেকেই সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছে না। অনেকেরই তিন বেলা খাবার জুটছে না। বিশেষ করে হতদরিদ্র মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। যানবাহন বন্ধ থাকার কারণে অন্যত্র গিয়ে তারা কাজ করতে পারছে না। কাজ পেলেও ৩০০ টাকার মজুরির জায়গায় মিলছে ১০০ টাকা।
বগুড়া বাস টার্মিনালে যাত্রী কিংবা পরিবহন শ্রমিক নেই বললেই চলে। ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। ভিক্ষুকরাও অসহায়। প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক জহুরা জানায়, সারা দিনে মাত্র পাঁচ টাকা সাহায্য পেয়েছে। কিভাবে পেট চলবে সে জানে না। গাড়িতে উঠে ভিক্ষাবৃত্তি করে আমির। সে জানাল, তিনজন মানুষ তার উপর নির্ভরশীল। যা আয় হচ্ছে তা দিয়ে নিজেরই চলছে না। মনে হচ্ছে না খেয়ে মরতে হবে।
বিভিন্ন জেলার কুলি-মজুর, হকার, শ্রমিক, ইজিবাইকের চালক, রিকশাওয়ালা ও দোকানদারদের হাঁকডাক তেমন নেই। শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে দিনের বেলায়ই ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে যাত্রী নিয়ে টানাহেঁচড়া নেই। শেরপুরের প্রায় সাত হাজার পরিবহন শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। গরিব মারার এ রাজনীতি আর কত দিন চলবে সেটা তারা জানেন না।
হাবিবুর রহমান নামের একজন শ্রমিক বলেন, ‘আমরা রাজনীতি বুঝি না। খালেদা ও হাসিনার দল করি না। ক্ষমতা কী সেটাও জানি না। এর পরও কেন আমাদের পেটে লাথি দেয়া হচ্ছে!’
নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। হরতালে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে জিনিসপত্রের দামও বেড়ে গেছে। একদিকে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষক বা উৎপাদক তার পণ্য বিক্রি করতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, অন্যদিকে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে পণ্যের সরবরাহ না থাকায় উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাকে। ব্যবসা কমে যাওয়ায় ঠিকমতো বেতন-ভাতা দিতে না পারায় চাকরি হারাতে হয়েছে অনেক শিল্প কারখানার কর্মীকে। হরতাল-অবরোধের কারণে দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। সোহেল নামে মতিঝিলের এক হকার বলেন, প্রতিদিন রাস্তার পাশে কাপড় বিক্রি করে ৩-৪শ টাকা আয় করেন। কিন্তু হরতালের কারণে তার আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম অসহায় অবস্থায় পড়েছেন তিনি। তার মতো একই অবস্থা কয়েক হাজার হকারের। চলতি মাসে হরতালের যেই ধারা শুরু হয়েছে মাস শেষে কোথায় গিয়ে ঠেকে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগের শেষ নেই।
হোটেল মালিক কামাল হোসেন বলেন, হরতাল ও রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। শুধু হরতাল নয়, কোনো রাজনৈতিক সাধারণ কর্মসূচি থাকলেও আতঙ্কের কারণে ক্রেতা কমে যায়। খাবারের হোটেলগুলোতে কেনাবেচা কমে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে।
অটোরিকশা চালক সোহেল জানান, রাজনৈতিক এমন অবস্থায় রাস্তায় বের হওয়া বিপজ্জনক। কিন্তু পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে বের হতে হয়। জীবন বাজি রেখেই হরতালের মধ্যে গাড়ি চালাতে হয় তাদের। তারপরও যাত্রী পাওয়া যায় না। জ্বালাও-পোড়াওয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। এ অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, হরতালসহ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। কারণ কর্মসূচির আগে ও পরে বিনা কারণে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হরতালের কারণে পরিবহন মালিকরা গাড়ির ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেক মালিক রয়েছেন যাদের মাত্র একটি গাড়ি। ওই গাড়ির আয় দিয়েই সংসার চলে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং উপর্যুপরি হরতাল কর্মসূচির কারণে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ায় ব্যবসায়ী সমাজের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তুলে ধরে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে করেছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি সমুন্নত রাখতে, রফতানি বাণিজ্য সচল ও বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ব্যবসায়ীরা যখন বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা নিচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং দেশের ভাবমূর্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। গণতান্ত্রিক অধিকার থাকলেও বর্তমানে উপর্যুপরি হরতাল ডাকার সংস্কৃতি দেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচিতে যে ধরনের সংঘর্ষ চলছে তা অসুস্থ রাজনীতির ধারা। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে এ সংঘাত ততই বাড়ছে। এতে লোকসান হচ্ছে নিরীহ গরিব মানুষের। আর লাভবান হচ্ছেন রাজনীতিকরা। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে নির্মমতার শিকার হতে থাকবেন দেশের নিরীহ মানুষ। তাদের রুটি-রোজগারে হাত পড়বে। তবে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন একমাত্র রাজনীতিবিদরাই। বিশেষ করে দেশের প্রধান দু’দলকেই সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করতে হবে। তা না হলে দেশের অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের স¦ার্থেই রাজনীতিবিদদের সমঝোতা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, রাজনীতির এই অস্থিরতা মানুষের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই পাল্টাচ্ছে না, আমরা সেই পুরনো বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছি। মানুষ যা আশা করেছিল রাজনীতির কাছ থেকে তারা কতটুকু পাচ্ছে তাও ক্রমেই জিজ্ঞাসার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাজনীতি তার নিজস্ বপথেই ঘুরপাক খাচ্ছে। মানুষ আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে না।
অথচ বাংলাদেশ অপার সম্পদ এবং সম্ভাবনায় পূর্ণ একটি দেশ । কিন্তু তারপরও এই দেশ কাঙ্খিত ভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না । এর কি কারণ ? এর মুল কারন হলো সঠিক ও যোগ্য এবং দেশ প্রেমিক নেতৃত্বের অভাব ।আর রাস্ট্রীয় সর্বচ্চো পর্যায় হতে সর্ব নিম্নপর্যায় পর্যন্ত দূর্নীতি ।আমরা সকলেই জানি যে,আমাদের দেশের কোন রাজনৈতিক দলের কোন নেতাই দেশ বা জনগনের জন্য রাজনীতি করে না, আদর্শে জন্য করে না ।সবাই নিজের জন্যেই রাজনীতি করে । বড়জোর নিজ পরিবারের জন্য। সে বর্তমান প্রধানমণ্ত্রীই হোক আর বিরোধীদলীয় নেত্রীই হোক,এরশাদ সাহেবই হোক আর সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরূদ্দোজা চৌধূরীই হোক। সে ৭১'রণান্গনে বীর যোদ্বা আবদুল কাদের সিদ্দীকিই হোক আর দেলোয়ার হোসেন সাইদীই (দেইল্ল্যা রাজাকার) হোক। সাকাচৌই হোক আর তেতুঁল হুজুর(যদিও এদের নামের সাথে হুজুর শব্দটি লেখা ঠিক নয )শফি সাহেবই হোক।
মূলতঃ এরা সকলেই এক ও অভিন্ন আদর্শে (?) বিশ্বাসী। সেটা হলো দেশ ও জাতীর জন্য সর্ব্বোচ্চ ত্যাগের কিছু গৎবাধাঁ বুলি আওড়াও , জণগন নামক একদল গাধাঁর সামনে একগাদা মিথ্যা আশ্বাসের মুলা ঝুলিয়ে ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতায় যাও ।আর দূর্নীতির মাধ্যমে জনগনকে ন্যয্য অধিকার থেকে বন্চিত করে রাস্ট্রের কোটি কোটি টাকা চুরি করে টাকার পাহাড় গড়ে তোল । তাদের সময় কোথায় দেশ ও জনগকে নিয়ে ভাবার ।আর তারই ফলে আজকে বাংলাদেশে কাঙ্খিত উন্নয়ন হছছে না । হচছে আজকের এই জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি ।সুতারাং এখন সময় এসেছে আমাদের সাবধান হওয়ার। নয়তো আরো কঠিন পরিণতি আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে।





সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×